চরাঞ্চলের মানুষকে স্বাবলম্বী করছে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প



তরিকুল ইসলাম সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
চরাঞ্চলের মানুষকে স্বাবলম্বী করছে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প

চরাঞ্চলের মানুষকে স্বাবলম্বী করছে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশাল-চট্রগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় ১০৯টি ইউনিয়নের ছিন্নমূল, অসহায়, দরিদ্র মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের পাশাপাশি সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য কাজ করছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। উপকূলীয় চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ৫৪ হাজার ৫০০ সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে বিনামূল্যে হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল ও ভেড়া বিতরণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তাদের অনেকেই গড়ে তুলেছেন খামার। এমনটাই জানিয়েছেন উপকূলীয় চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ডা. এস এম জিয়াউল হক রাহাত।

তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, প্রকল্পটি বরিশাল ও চট্রগ্রাম বিভাগের ৮টি জেলার ২০টি উপকূলীয় উপজেলার ১০৯টি ইউনিয়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রতিটি ইউনিয়নে ৫০০ জন করে মোট সুফলভোগী রয়েছে। এদের শতকরা ৯০ ভাগই নারী। প্রত্যেক সুফলভোগী শুরুতে ৩ দিনের মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে ২০টি করে হাঁস বা ২০টি করে মুরগি দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিনামূল্যে হাঁস, মুরগি ও ভেড়া রাখার জন্য শেড, খাদ্য, মেডিসিন, ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা সুবিধা দেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ২১ হাজার জন সুফলভোগীকে ৪ লাখ ২০ হাজার হাঁস, ৮ হাজর ৯৫০ জনকে ১ লাখ ৭৯ হাজার মুরগি, ৮ হাজার ৩০০ জনকে ২৪ হাজার ৯০০ ভেড়া, ৩০ হাজার ৮০০ জনকে পশুখাদ্য এবং ৩৬ হাজর ৩০০ জনকে ১টি করে শেড দেয়া হয়েছে ।

ফেরদৌস আক্তার বেশকিছু হাঁসকে খাবার দিচ্ছেন, তাকে দেখেই যেগুলো একটু দূরে ছিল তাও এসে জড়ো হয়েছে। ঘিরে ধরেছে ফেরদৌসকে। মনের আনন্দে খাবার দিচ্ছেন। বলছিলাম কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের হাঁস পালন গ্রুপের একজন সুফলভোগীর কথা।

তিনি প্রতিবেদককে জানান, প্রকল্প থেকে তাকে প্রশিক্ষণ ও ২০টি হাঁস দেয়া হয়েছিল। এখন তার খামারে ৮০০টি হাঁস রয়েছে। প্রতিদিন ৫০০টির অধিক ডিম পান যা থেকে প্রতিদিন আয় হয় প্রায় ৫ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় আট লাখ ৬০ হাজার টাকার ডিম বিক্রি করেছেন। তার সফলতা দেখে আরও অনেকে তার মতো হাঁস পালন করতে আগ্রহী হচ্ছেন।

লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার চর কাজল ইউনিয়নে হাঁস পালন গ্রুপের সুফলভোগী কাজল জানান, ২০টি হাঁস দিয়ে শুরু করে এ পর্যন্ত প্রায় ২,১০০ পিস ডিম উৎপাদন ও বিক্রি করেছেন। এখন তার হাঁস ৪২টি। তিনি প্রায় ৪৫ হাজার টাকার ডিম বিক্রি করেছেন। হাঁস পালন করেই তার এখন সংসার চলছে।

খামারি মো. মোখলেছুর রহমান জনান, প্রকল্প থেকে তাকে শেড, খাদ্য, মেডিসিন-ভ্যাকসিনসহ ৩টি ভেড়া দেয়া হয়েছিল। এ পর্যন্ত ১৩টি ভেড়া উৎপাদন করেছেন। পারিবারিক প্রয়োজনে ১১ হাজার টাকায় ৩টি ভেড়া বিক্রি করেছেন। রামগতি উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের ভেড়া পালন গ্রুপের সুফলভোগী এনামুল হক জানান, ৩টি ভেড়া পেয়েছেন। গত কোরবানিতে ২টি ভেড়া বিক্রি করেছেন ১৬ হাজার টাকায়।

ডা. এস এম জিয়াউল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত রূপকল্প ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে সমাজের বঞ্চিত ও অবহেলিত অংশ বিশেষ করে উপকূলীয় চরাঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে অর্থনীতির মূল স্রোতধারায় অন্তর্ভুক্ত করতে এই প্রকল্প কাজ করছে। প্রকল্পভুক্ত ৫৪ হাজার ৫০০ জন সুফলভোগীর ৯০ শতাংশই নারী অর্থ্যাৎ ৪৯ হাজার ৫০ জনই নারী। তারা ঘরে বসে হাঁস, মুরগি ও ভেড়া পালন করে পরিবারের উন্নতি তথা গ্রামীণ অর্থনীতি সমৃদ্ধ করতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছেন।

নারীর ক্ষমতায়ন, চরাঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের বেকারত্ব মোচন ও গুণগত পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে মেধাবী জনগোষ্ঠী গঠনে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

   

যা থাকছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্রাজুয়েশন আয়োজনে



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম রূপপুর (পাবনা)
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ছবি : সংগৃহীত

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মাহেন্দ্রক্ষণ নির্ধারণ করা হয়েছে দুপুর ঠিক আড়াইটায়। তখনই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি হস্তান্তরের সার্টিফিকেট ও মডেল প্রদানের করা হবে।

তারপরেই (ভার্চুয়াল) কথা বলবেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আর সবার শেষে কথা বলবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্রাজুয়েশনের এ আয়োজনে দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ভার্চুয়ালি যুক্ত হলেও সশরীরে থাকছেন দুই দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার কর্তাব্যক্তিরা। এ জন্য প্রকল্প এলাকার বায়েক অফিস সংলগ্ন খোলা মাঠে বিশাল প্যান্ডেল বানানো হয়েছে। বৃষ্টি যাতে বাগড়া দিতে না পারে সেভাবেই এই প্যান্ডেলের ডিজাইন করা হয়েছে।

সামিয়ানার নিচে পাঁচ শতাধিক আসনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যেখানে বসে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের ভার্চুয়াল বক্তব্য শোনা এবং দেখার ব্যবস্থা থাকছে।

বিশাল আয়তনের পরমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিভিন্ন পয়েন্টে পয়েন্টে বসানো হয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের ছবি। রয়েছে বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিও। সঙ্গে স্বারক হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ চুক্তির ছবিও।

পুরো বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় নানা রঙের ব্যানার ফেস্টুন দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। বাদ যায়নি মূল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাইরে মহাসড়কও। সব মিলিয়ে সাজ সাজ বর চলছে প্রকল্প এলাকায়। সফল পরিণতিতে খুশির আমেজ বিরাজ করছে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে।

দেড়টার মধ্যে আমন্ত্রিত অতিথিদের আসন গ্রহণের জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। দুপুর ২ টায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুরুতেই প্রকল্পের পরিচিতি তুলে ধরবেন পরমাণু বিজ্ঞানী ও প্রকল্প পরিচালক ড. মো. শৌকত আকবর।

এরপরেই থাকছে পারমাণবিক জ্বালানি উৎপাদন ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রথম ব্যাচের হস্তান্তর সম্পর্কিত ভিডিও প্রদর্শন।

আনুষ্ঠানিক বক্তৃতা পর্বে শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আলী হোসেন। এরপর ভার্চুয়াল সংযুক্ত থেকে বক্তৃতা করবেন আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি কমিশন (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রসি। বক্তৃতা করবেন রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ।

সভাপতির বক্তব্য রাখবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। মন্ত্রীর বক্তব্যের শেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ
পারমাণবিক জ্বালানি হস্তান্তরের সার্টিফিকেট ও মডেল প্রদান। অনুষ্ঠান সূচিতে ২.২৯ টায় রাখা হয়েছে মডেল হস্তান্তর কার্যক্রম।


রাশিয়ার পক্ষ থেকে রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের হাতে সার্টিফিকেট ও মডেল তুলে দেবেন। এরপর দুপুর ২.৪৪ টায় বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সবশেষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একদিন আগেই বুধবার (৪ অক্টোবর) গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানের সার্বিক প্রস্তুতি পরিদর্শন করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।

তিনি বলেন, আমরা বলতে পারি রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশের চিত্র বদলে দেবে। বাংলাদেশ যে পারে সেটি আবারও প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। এটি জিডিপিতে ২ শতাংশ অবদান রাখবে। এরমধ্যদিয়ে নিউক্লিয়ার ক্লাবের ৩৩ সদস্য গর্বিত সদস্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানির নাম ইউরেনিয়াম। বিশ্বের শক্তিশালী পদার্থের অপর নামও ইউরেনিয়াম। এটি দিয়ে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেমন ভয়ংকর পরমাণু বোমা তৈরি যায়, তেমনি বিশ্বব্যাপী পরিবেশবান্ধব জ্বালানি হিসেবেও বহুল প্রচলিত।

তেল, গ্যাস কিংবা কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে তাতে কমবেশি কার্বন নিঃসরণ অবধারিত। তবে পরমাণু বিদ্যুতে সেই দুষণ প্রায় শূন্যের কোঠায়। বর্তমানে পৃথিবীর ৩০টি দেশে ৪৪৯টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। সেগুলো থেকেউৎপন্ন বিদ্যুতের পরিমাণ মোট উৎপন্ন বিদ্যুতের প্রায় ১২ শতাংশ। ১৪টি দেশে আরও ৬৫টি পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে।

২০২৫ সাল নাগাদ ২৭টি দেশে ১৭৩টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান।

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিশেষ প্রক্রিয়ায় ইউরেনিয়াম বিক্রিয়ায় তাপ উৎপন্ন করা হয়। সেই তাপ থেকে জলীয় বাষ্পের সহায়তায় জেনারেটর ঘুরিয়ে সৃষ্টি হয় বিদ্যুৎ। এক কেজি ইউরেনিয়াম প্রায় ১০০ টন কয়লার সমান তাপ উৎপাদনে সক্ষম। আর একই পরিমান তাপ তেলে উৎপাদন করতে হলে ৬০ টন ডিজেল প্রয়োজন হবে। যে কারনে সহজে পরিবহনযোগ্য বিবেচনা করা হয়।

এই জ্বালানি একবার লোড করে নিরবিচ্ছিন্নভাবে ১৮ মাস বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।একই পরিমান বিদ্যুৎ অন্য জ্বালানিতে পেতে হলে অনবরত সরবরাহ অব্যাহত রাখতে হয়। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব হিসেবে পরিচিত এই বিদ্যুৎ।

রূপপুরের দুটি ইউনিট থেকে ১ হাজার ২ শ মেগাওয়াট করে ২ হাজার ৪শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। চুক্তি অনুযায়ী রূপপুরের লাইফটাইমে (৮০ বছর) এটি সরবরাহ করবে রাশিয়া। তবে প্রথম তিন বছর এই জ্বালানি বিনামূল্যে সরবরাহ করবে দেশটি।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নকশা অনুযায়ী পুরো মেয়াদেই জ্বালানি আনতে হবে রাশিয়া থেকে। এজন্য অন্য আরেকটি চুক্তির মাধ্যমে ইউরেনিয়ামে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে প্রথম তিন বছরে যে জ্বালানি আসবে তার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। প্রথম পর্যায়ে একটি ইউনিটে ১৬৩টি ইউরেনিয়াম বান্ডিল সংযোজন বা লোড করতে হবে।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে রূপপুরে নেওয়া হয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জ্বালানি ইউরেনিয়াম রড। এর আগে রাশিয়ার একটি কারখানা থেকে একটি বিশেষ বিমানে করে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পারমাণবিক জ্বালানির এই চালান আনা হয়। রাশিয়ার নভোসিবিরস্ক কেমিক্যাল কনসেনট্রেটস প্ল্যান্টে (এনসিসিপি) ওই জ্বালানি উৎপাদিত হয়।

;

তিস্তার পানি বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপরে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম রংপুর
তিস্তার ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্ট। ছবি : সংগৃহীত

তিস্তার ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্ট। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত কয়েকদিনে প্রবল বৃষ্টিপাতে ভারতের উত্তর সিকিমে সৃষ্টি হয়েছে আকস্মিক বন্যা। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ভারতে তিস্তা নদীর একটি বাঁধ খুলে দেওয়া হয়েছে।

এতে গত তিন ঘণ্টায় তিস্তার ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৫২ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপরে।

এ ছাড়া তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টের বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি।

এ ছাড়া কুড়িগ্রামের ধরলা নদীসহ উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এদিকে, তিস্তার পানি যতই বাড়ছে ততই আতঙ্ক বাড়ছে তিস্তা পাড়ের মানুষদের মধ্যে। পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের ঘর-বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে।

তলিয়ে গেছে চরের রাস্তা-ঘাট। বন্যার আশঙ্কায় অনেকে গরু ছাগল নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

তবে আগামী ৬ ঘণ্টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানি কমে গিয়ে আবারও পুনরায় বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা প্রিন্স বলেন, ‘ডালিয়া পয়েন্টের পানি আগামী ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত হ্রাস পেয়ে পরবর্তীতে পুনরায় বৃদ্ধি পেতে পারে।আমরা স্থানীয়দের সতর্ক করেছি। এবং বাধগুলোতে নজরদারি বাড়িয়েছি। কোথাও কোন সমস্যা হলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশন প্রস্তুত আছি।’

;

অবৈধ বালুমহাল থেকে ১০ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ



স্টাফ করেসপনডেন্ট বার্তা২৪.কম চট্টগ্রাম
অবৈধ বালুমহাল থেকে জব্দ করা বালু। ছবি : সংগৃহীত

অবৈধ বালুমহাল থেকে জব্দ করা বালু। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে বিভিন্ন বালুমহালে অভিযান পরিচালনা করেছেন উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় বালু উত্তোলনের সরঞ্জামাদিসহ ১০ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করা হয়েছে।

উপজেলার কাঞ্চননগর, শোভনছড়ি ও লেলাং খালে বুধবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে ওই অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাব্বির রহমান সানি।

তিনি বলেন, আজকে বালুমহালটির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় কিছু পাইপ ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। লেলাং খাল বালুমহালে ১০ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করে উন্মুক্ত ও তাৎক্ষনিক নিলাম আহ্বান করতে স্থানীয় ইউপি সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অভিযান চালানো এলাকাগুলোতে মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনে পাহাড়, টিলা ও জমির ভূপ্রাকৃতিক অবস্থা সংকটাপন্ন হয় বলে এমন উপায়ে বালু উত্তোলনের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ইজারাপ্রাপ্ত বা ইজারা বহির্ভূত সকলকে সতর্ক করা হয়েছে।

জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান ইউএনও।

ওই অভিযানে জনসাধারণের উপস্থিতিতে ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহায়তা করেন।

;

নন্দীগ্রামে বৃদ্ধাকে শ্বাসরোধে হত্যা, মাদকাসক্ত নাতি আটক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম বগুড়া
মাদকাসক্ত নাতি মহির। ছবি : সংগৃহীত

মাদকাসক্ত নাতি মহির। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বগুড়ার নন্দীগ্রামে পৌর এলাকায় জরিয়ন বেওয়া জরিনা (৭০) নামের এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এদিকে, জরিনাকে মারধর ও শ্বাসরোধে হত্যার সন্দেহে তার মাদকাসক্ত নাতিকে আটক করেছে পুলিশ।

পৌর সদরের ওমরপুর সড়কপাড়া জেলেপল্লী থেকে বুধবার (৪ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে ষাটোর্ধ বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় থানা পুলিশ।

মরদেহে কাঁদামাটি মাখা এবং গলায় ফাঁসের দাগ রয়েছে বলে জানা গেছে। আটক মহির উদ্দিন (২৫) ওমরপুর জেলেপল্লীর মোহাম্মদ আলীর ছেলে। নিহত বৃদ্ধা মৃত উকিল উদ্দিনের স্ত্রী ও মোহাম্মদ আলীর মা।

স্থানীয়রা জানান, বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের পাশে টিনসেড ঘর তুলে ছেলে এবং নাতিদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছিলেন বৃদ্ধা জরিনা।

নাতি মহির মাদকাসক্ত হওয়ায় শাসন করতো দাদি। অতিরিক্ত মাদক সেবনের কারণে মাঝেমধ্যেই নাতির মানসিক সমস্যা হয়। সে মাদক সেবনের পরপরই রেগে যেতো।

গত মঙ্গলবার স্থানীয় এক শিশুকে উপরে তুলে মাটিতে আছাড় মারে মাদকাসক্ত মহির। বুধবার বিকেল ৫টার দিকে দাদির সঙ্গে নাতি মহিরের ঝগড়া হয়। সে দাদিকে লাথি দিয়ে মাটিতে ফেলে মারধর করে। এক পর্যায়ে গলায় রশি দিয়ে শ্বাসরোধে ওই বৃদ্ধাকে সে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

ঘটনার সময় বাড়িতে কেউ ছিল না বলে জানিয়েছেন বৃদ্ধার ছেলে মোহাম্মদ আলী। বাড়ির উঠানে কাঁদা মাটিতে পরেছিল মরদেহ।

এ প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন জানান, খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে বৃদ্ধার নাতিকে আটক করা হয়েছে। বৃদ্ধাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

;