ফসলি জমির টপ সয়েল যাচ্ছে অবৈধ ইটভাটায়

  • সাহিদুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪. কম, জামালপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ফসলি জমির টপ সয়েল যাচ্ছে অবৈধ ইটভাটায়

ফসলি জমির টপ সয়েল যাচ্ছে অবৈধ ইটভাটায়

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় ফসলি জমির টপ সয়েল (উপরের অংশ) যাচ্ছে অবৈধ ইটভাটায়। ভাটার মালিকদের অর্থের লোভে কৃষকরা ফসলি জমি থেকে মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে জমির উর্বরতা হ্রাস পাওয়াসহ জমি হারিয়ে ফেলছে তার স্বাভাবিক উৎপাদন ক্ষমতা। স্থানীয়দের অভিযোগ ফসলি জমি থেকে অবৈধ ভাটায় টপ সয়েল গেলেও রহস্যজনক কারণে স্থানীয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে।

জানা গেছে, উপজেলায় ১২টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র একটিও নেই। এরপরও এসব ভাটায় থেমে নেই ইট পোড়ানো। ইট তৈরির প্রধান কাঁচামাল মাটি। একটি ইট তৈরিতে প্রায় ৪ কেজি মাটির প্রয়োজন। প্রতিটি ইট ভাটায় প্রতি বছর ১৫ থেকে ২০ লাখ ইট উৎপাদিত হয়। বছরের পর বছর কৃষকদের বোকা বানিয়ে ভাটার মালিকরা কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি কিনে নেন।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সদর ইউপির পাঁচবাড়িয়া, পার্থশী ইউপির বলিয়াদহ, ডেংগারঘড়, বানিয়াবাড়ি, বামনা, চরগোয়ালীনি ইউপির ডিগ্রীচর, আকন্দ পাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে চলছে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার উৎসব। গত এক মাস থেকে প্রতিদিন ভোর হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্তত ১০ থেকে ১৫টি স্থান থেকে খননযন্ত্র দিয়ে ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে ট্রাক্টর মেশিনের সাহায্যে মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন ভাটায়।

পাঁচবাড়িয়া গ্রামের জমির মালিক সুমন মিয়া জানান, তার ফসলি জমি মাঠ অন্য জমির চাইতে একটু উঁচু হওয়ায় মাটি বিক্রি করে সমান করে নিচ্ছেন। তিনি বিঘা প্রতি জমির মাটি ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। ভাটার মালিকের সাথে জমির উপরিভাগ থেকে আড়াই থেকে তিন ফুট মাটি কেটে নেওয়ার চুক্তি হয়েছে তার।

বিজ্ঞাপন

বানিয়াবাড়ি গ্রামের মহিজল মিয়া নামে এক কৃষক বলেন, ‘আমি মাটি বিক্রি করতে আগ্রহী ছিলাম না। পাশের জমি থেকে মাটি বিক্রি করায় আমার ফসলি জমি উচু হয়েছে। তাই বাধ্য হয়েই আমি মাটি বিক্রি করে দিচ্ছি’।

উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের সুহেল মিয়া নামে এক ইট ভাটার শ্রমিক বলেন, জমির ওপরের মাটি ছাড়া ইট তৈরি করা কোন ভাবেই সম্ভব না। ভাটার মালিকরা কৃষকদের কাছ থেকে মাটির ওপরের অংশ কিনছেন এবং তা দিয়ে ইট তৈরি হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার এ এল এম রেজুয়ান বলেন, ‘মাটির উপরিভাগ থেকে ৫-১০ ইঞ্চি স্তর পর্যন্ত হলো মাটির প্রাণ, একে টপ সয়েল বলা হয়। এতে জৈব পদার্থ ও অণুজীবের সর্বাধিক ঘনত্ব থাকে এবং মাটির এই অংশে ফসল উৎপাদিত হয়। মাটি খুঁড়ে বিক্রি করার ফলে তা পুনরায় ফিরে আসতে সময় লাগে ৪ থেকে ৫ বছর ’।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর হাসান রুমানের মুঠোফোনে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।