দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করছে পুলিশ: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ পুলিশ দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমন, মাদক নির্মূল এবং চোরাচালান দমনে পুলিশের ভূমিকা বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করেছে।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) সারদায় ৩৮তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের প্রশিক্ষণের সফল সমাপ্তি উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, একটি গণতান্ত্রিক সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য একটি দক্ষ পুলিশ বাহিনী অপরিহার্য। তাই সরকার গঠনের পর থেকেই আমরা পুলিশের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।
সরকারপ্রধান বলেন, বাহিনীর জনবল বৃদ্ধি, নতুন নতুন ইউনিট গঠন, ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন, আধুনিক যানবাহন ও লজিস্টিক্স সুবিধা বৃদ্ধি, সর্বাধুনিক প্রশিক্ষণ সুবিধা নিশ্চিতকরণ, পুলিশ সদস্যদের সার্বিক কল্যাণের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট ও ব্যাংক গঠন, আবাসন ও চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশকে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী, দক্ষ ও জনবান্ধব সার্ভিসে পরিণত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন, এন্টি টেররিজম ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটসহ বেশ কয়েকটি রেঞ্জ, মেট্রোপলিটন ইউনিট, সাইবার পুলিশ সেন্টার, ব্যাটালিয়ন, ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার থানা, তদন্ত কেন্দ্র, ফাঁড়ি এবং জাতীয় জরুরি সেবায় ৯৯৯ ইউনিট গঠন করেছি। আমরা নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক চালু করেছি, বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে পুলিশ সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছি।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের সাহসী সদস্যরা উল্লেখযোগ্য প্রশংসনীয় অবদান রেখে চলেছে। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় পুলিশ সদস্যগণ নিজেদের জীবন বিপন্ন করে জনসেবার ক্ষেত্রে নজিরবিহীন ভূমিকা রেখেছে। নবীন কর্মকর্তারা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের পূর্বসূরিদের আত্মত্যাগকে হৃদয়ে ধারণ করে প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে রূপকল্প-২০৪১ সফল বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তথা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন।
প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য আত্মোৎসর্গকারী দেশপ্রেমক বীর পুলিশ সদস্যদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল আত্মত্যাগ ও বীরত্বের স্বর্ণোজ্জ্বল ইতিহাস। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে অকুতোভয় বীর পুলিশ সদস্যরা গড়ে তুলেছিল প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণের সফল সমাপ্তি উপলক্ষে নবীন পুলিশ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান এবং তাদের নিরাপদ জীবন, পেশাগত সাফল্য ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করেন।