দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে পরিকল্পনা গ্রহণ

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

পাটুরিয়া থেকে গোয়ালন্দে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে প্রাথমিকভাবে ১২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অননুমোদিত প্রকল্পের তালিকায় রাখা হয়েছে। অর্থ পাওয়া সাপেক্ষে প্রকল্পটি অনুমোদন প্রক্রিয়া শুরু হবে।

এবিষেয়ে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদাউস বলেছেন, দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ইআরডি’র মাধ্যমে বৈদেশিক ঋণ চাচ্ছি। এটা ফাইনাল হলেই পরবর্তী পদক্ষেপ।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষ হয়েছে। রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া রুটে এ সমীক্ষা করা হয়েছে।

সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, দেশের মধ্য ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু জেলার বাসিন্দাদের পদ্মা নদী পারাপারে পাটুরিয়া-গোয়ালন্দে অবস্থানের চেয়ে মাওয়া-জাজিরায় অবস্থানে বেশি সময় লাগবে। ঢাকা এবং দেশের পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও নড়াইলের একাংশ, গোপালগঞ্জ, যশোর এবং মাদারীপুর জেলার দূরত্ব কমানোর জন্য পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ অবস্থানে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণ করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রস্তাবিত দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য হবে সাড়ে ৫ কিলোমিটার, প্রস্থ ১৮ দশমিক ১ মিটার। দুই প্রান্তে সংযোগ সড়ক হবে সাড়ে ১৫ কিলোমিটার। নদীশাসনের কাজ হবে দুই প্রান্তে ১৮ দশমিক ৪ কিলোমিটার। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সম্ভাব্য উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে ধরা হয়েছে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক ও জাপান ব্যাংক অব ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি)।

এছাড়া অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ যাতে এখন থেকেই দাতাদের প্রতিশ্রুতির জন্য কাজ করতে পারে সেজন্য প্রকল্পের একটি প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশন থেকে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের জন্য দ্বিতীয় পদ্মা সেতুসহ বড় ধরনের ৯টি প্রকল্পে প্রাথমিক খরচ ধরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) যুক্ত করা হয়েছে। মেট্রোরেল লাইন-২, দ্বিতীয় পদ্মা সেতু, কমলাপুরে মাল্টি মডেল হাব নির্মাণ, ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম টু কক্সবাজার হাইওয়ে উন্নয়ন, বে টার্মিনাল নির্মাণসহ মোট ৯টি মেগা প্রকল্পে প্রাথমিক খরচ প্রাক্কলন করা হয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা।

মেগা প্রকল্পের মধ্যে ২৯ হাজার ৫৭১ কোটি টাকায় মেট্রোরেল লাইন-২ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। মেট্রোরেল লাইন-২ ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ। গাবতলী এমব্যাংকমেন্ট রোড-বসিলা-মোহাম্মদপুর বিআরটিসি বাসস্ট্যান্ড-সাতমসজিদ রোড ঝিগাতলা-ধানমন্ডি ২ নম্বর রোড-সাইন্সল্যাবরেটরি-নিউমার্কেট-নীলক্ষেত-আজিমপুর-পলাশী-শহীদ মিনার-ঢাকা মেডিকেল কলেজ-পুলিশ হেডকোয়ার্টার-গোলাপ শাহ মাজার-বঙ্গভবনের উত্তর পাশের সড়ক-মতিঝিল-আরামবাগ-কমলাপুর-মুগদা-মান্ডা-ডেমরা-চট্টগ্রাম রোড দিয়ে চলবে মেট্রোরেল লাইন-২। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মহাসড়কের উন্নয়নে ১২ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রস্তাবিত ব্যয় ১০ হাজার ৫৬৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা ও ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর পানি সরবরাহ প্রকল্পে খরচ হবে ১৫ হাজার কোটি টাকা। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ১৭ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বে টার্মিনাল করবে। বাংলাদেশ রেলওয়ের কমলাপুরে মাল্টি মডেল হাব নির্মাণ প্রকল্পে খরচ প্রস্তাব করা হয়েছে ২২ হাজার ৫৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের জন্য পরামর্শক নিয়োগ পর্যায়ে রয়েছে।

পিপিপির অন্য প্রকল্পগুলো হলো- আপগ্রেডেশন ঢাকা-বাইপাস চার লেন সড়ক (মদনপুর-দেবগ্রাম-ভুলতা-জয়দেবপুর) প্রকল্প। এটির ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ৫১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বর্তমানে নির্মাণাধীন পর্যায়ে আছে। হাতিরঝিল-রামপুরা-বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ-আমুলিয়া-ডেমরা হাইওয়ে সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ, ব্যয় হবে দুই হাজার ২১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এটি রয়েছে চুক্তি স্বাক্ষর পরবর্তী শর্ত প্রতিপালনাধীন পর্যায়ে। গাবতলী-সাভার-নবীনগর সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের ব্যয় হবে দুই হাজার ৮৯০ কোটি টাকা, এটির বিস্তারিত সমীক্ষা চলমান।