সবজির উত্তাপে নাকাল সাধারণ মানুষ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমূল্যে নাকাল সাধারণ মানুষ। চাল-ডাল, চিনি, মাছ-মাংস, সবজিসহ সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে ক্রেতাদের বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে। ক্রেতারা বলছেন, যেভাবে প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ছে তাতে বাজারে আসা দায় হয়ে গেছে। এক হাজার টাকার বাজারে দুই দিন চলা যায় না।

শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সাধারণ ক্রেতারা খাদ্যপণ্য কিনছেন প্রয়োজনের অর্ধেক করে। তাতেও মিলছে না স্বস্তি।

বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন আকলিমা। তিনি জানান, বাজারে প্রতিটি জিনিসের যে দাম তাতে রাস্তায় বিক্রি হওয়া নিম্নমানের সবজিগুলো কিনতে হয়। অনেক সময় কম দাম পাওয়ার আশায় বাজার ভাঙার মুহূর্তে সবজি ও মাছ কিনতে আসার কথা জানান তিনি।

বাজারে ইলিশ ছাড়া প্রায় সব মাছেরই দাম বাড়তি। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে নদীর মাছের দাম। বাজারে প্রতিকেজি দেশি মাগুর ১ হাজার ৫০০ টাকা, দেশি শিং ১ হাজার ৬০০ টাকা ও শোল ১ হাজার টাকা ও নদীর পাঙাশ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া প্রতিকেজি টেংরা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, রুই ৩৯০ থেকে ৪০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, পাবদা ৭০০ থেকে ৮৫০, চিংড়ি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা, কোরাল ৮০০ টাকা ও তেলাপিয়া ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজির বাজারও চড়া। প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। এছাড়া বাজারে ফুলকপি ৬০ টাকা, লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, ঢেঁরস ৯০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, করলা ৮০-১০০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, মরিচ ১৬০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, আলু ৪৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে কলমি শাক প্রতি আঁটি ১৫ টাকা, পাটশাক প্রতি আঁটি ১৫ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পুঁইশাক মান অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে।

খিলক্ষেত বাজারে সবজি কিনতে এসেছেন রেজাউল করিম। তিনি জানান, শুক্রবার এলেই বাজার সবকিছুর দাম চড়া হয়ে যায়। সরবরাহ সংকটের অজুহাত দিয়ে খেয়ালখুশি মতো দাম বাড়ায় বিক্রেতারা।

তিনি আরও বলেন, বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি নতুন কিছু না। প্রতি সপ্তাহেই দাম বাড়ে। ১ টাকা দাম কমলে; দাম বাড়ে ৫ টাকা। সবজির দাম শুনেই ক্রেতাদের ঘাম ঝরে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, যেভাবে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, সেভাবে তো আমাদের ইনকাম বাড়েনি। তিন সদস্যের পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকি। তাতেও চলতে পারি না। দাম কোন হিসেবে বাড়ছে সেটাও ধরতে পারি না। কারো কাছ থেকে উত্তর পাই না। আগে যে পরিমাণ বাজার সদাই করতাম, এখন তার অর্ধেক করেও কুলাতে পারি না।

   

পদ্মা নদী বাঁচলে রাজশাহী বাঁচবে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পদ্মা নদী রক্ষায় দূষণ ও দখলমুক্ত করার দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) রাজশাহী কমিটি।  

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচি হয়।

পদ্মা নদী বাঁচলে রাজশাহী বাঁচবে, পরিবেশ দূষণ থেকে রাজশাহী রক্ষা পাবে মন্তব্য করে কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, যারা পদ্মা নদীকে বিনোদনের জন্য তৈরি করেছে তাদের ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই। এছাড়া কর্মসূচি থেকে, পদ্মা নদী ছাড়াও রাজশাহী অঞ্চলের ছোট ছোট নদ-নদী, খাল-বিল পুকুল জলাশয় দখল ও দুষণ মুক্ত করার দাবি জানানো হয়।

বক্তারা বলেন, পদ্মা নদীর বেশির ভাগ এখন দখল হয়ে গেছে। পদ্মার ভেতরে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে বাণিজ্যিক স্থাপনা, ক্লাব, বিভিন্ন গোষ্ঠীর অফিস দোকানপাট। গত এক দশকে রাজশাহী নগরের অসংখ্য পুকুর জলাশয় ভরাট করা হয়েছে। এখন এসব ভরাট অব্যাহত রয়েছে। পুকুর ও নদী খেকোদের বিরুদ্ধে প্রমাণসহ প্রশাসনে বারবার আবেদন করা হলেও কার্যকরি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেন না। ফলে রাতারাতি পুকুর জলাশয় ও নদ নদী দখলে চলে যাচ্ছে। এসব অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়।

বাংলদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) রাজশাহীর সভাপতি জামাত খানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি লিয়াকত আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবদুল মান্নান, বাপার উপদেষ্টা দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, বাপা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আফজাল হোসেন, নাচোল উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবু তাহের খোকন, আদিবাসী নেতা সুভাষ চন্দ্র হেমব্রন, নারী নেত্রী ডা. সেলিনা বেগম প্রমুখ।

;

রাজশাহীর যুবলীগের দ্বন্দ্ব মিডিয়ার সৃষ্টি!



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহী মহানগর ও জেলা যুবলীগের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। যার কোনো ভিত্তি নেই এবং এটি মিডিয়ার সৃষ্টি বলে দাবি করেছেন সংগঠনের শীর্ষ নেতারা।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন।

নেতারা বলেন, যুবলীগের দ্বন্দ্ব নিয়ে যেসব সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে তা মিডিয়ার সৃষ্টি হতে পারে বা ব্যক্তি কেন্দ্রিক দ্বন্দ্বের কারণেও হতে পারে। এর কোনো ভিত্তি নেই। সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে অনেকে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। তাদের মধ্য থেকে একটি সুন্দর নেতৃত্ব গঠন করা হবে। ক্লিন ইমেজ, সাংগঠনিকভাবে দক্ষ, ত্যাগী, পরীক্ষিতরা মূল নেতৃত্বে আসবে বলে জানান তারা।

দীর্ঘ ৭ বছর পর রাজশাহী মহানগর ও জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের মাধ্যমে আগামীকাল মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নগরীর পাঠানপাড়া শিমুলতলা মোড়ে সকাল ১০টায় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। ইতোমধ্যে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে।

এর আগে, সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৫ মার্চ রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে সভাপতি পদে রমজান আলী ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মোশাররফ হোসেনকে মনোনীত করা হয়।

;

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, বন্যা আতঙ্কে মানুষ



আমিনুল ইসলাম জুয়েল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

অবিরাম ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে তিস্তাসহ কয়েকটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় তিস্তার কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০ সে.মি, বদরগঞ্জের যমুনেশ্বরীর বদরগঞ্জে ১৪ সে.মি ও পুনর্ভবার দিনাজপুর পয়েন্টে ১ সে.মি ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তবে বিকাল তিনটার দিকে পানি কিছুটা কমেছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে।

পাউবো জানায়, দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, আপার করতোয়া, আপার আত্রাই, কুলিখ, টাঙ্গন, যমুনেশ্বরী এবং পুনর্ভবা নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় হ্রাস পেতে পারে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, ভারী বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢল নামতে শুরু করায় ইতিমধ্যে তিস্তাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। পানির স্রোতের কারণে নিয়ম অনুযায়ী তিস্তা ব্যারেজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। নদীর অববাহিকা, চর, দ্বীপচরের মানুষদের সতর্ক থাকাসহ প্রয়োজনে আশ্রয় কেন্দ্রে সরে যাওয়ার বার্তা দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তা নদীর পানি বাড়ায় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা, উত্তর চিলাখাল, সাউথপাড়া, মটুকপুর, গজঘণ্টা ইউনিয়নের ছালাপাক, মহিষাসুর, রমাকান্ত, আলালচর, জয়দেব এলাকা এবং নোহালী ও আলমবিদিতর ইউনিয়ন, নীলফামারীর ডিমলার কালিগঞ্জ, ঝাড়সিংহেশ্বর, খগারচর, জুয়ার চর, বাংলাপাড়া, উত্তর খড়িবাড়ী, বাইশপুকুর ও জলঢাকার ফরেস্টের চর, ভাবনচুর, ডাউয়াবাড়ী, লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ফকিরপাড়া, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ি, কালীগঞ্জের ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারীর মহিষখোচা, পলাশী ও সদরের ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর এবং গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।

লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের কেল্লাপাড় এলাকার এনাম ইসলাম বলেন, কয়েক দিন থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে উজানের ঢল। এতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে ইতিমধ্যে আঙিনায় হাঁটুপানি হয়েছে। বড় বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মিটারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল্লাহেল হাদী বলেন, বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ জন্য চরাঞ্চলের মানুষকে সতর্কাবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা-উদ-দৌলা জানান, বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ বাড়ায় সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

;

বগুড়ায় রাতারগুলের সৌন্দর্য



মাহবুবা পারভীন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেট, বার্তা২৪.কম, বগুড়া
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের মুরাদপুর বাজারে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে ছোট্ট একটি কালভার্ট। কালভার্টে দাঁড়িয়ে দেখা মেলে স্বচ্ছ মিষ্টি নদীর পানি। চারদিকের পরিবেশ দেখে মনে হয় এ যেনো এক টুকরো রাতারগুল।

কালভার্ট থেকে নেমে কিছুটা এগিয়ে দেখা মিলল স্বচ্ছ জলে নৌকা বাইতে আসা ভ্রমণ পিপাসুদের একটি দল। তারা মুরাদপুর ভদ্রাবতী নদী  ও বগুড়ার বুকে এক টুকরো রাতারগুলের নাম শুনেছেন ইউটিউবে। সেখান থেকেই তাদের ইচ্ছে হয় এই ভদ্রাবতী নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে। তাই শহর থেকে ছুটে আসেন মুরাদপুর গ্রামে। আরও খানিকটা এগোতেই চোখে পড়ল এই গ্রামের বাসিন্দারা কেউ মাছ ধরছেন, কেউ আবার স্বচ্ছ পানিতে ঝুপ করে নাইতে নেমেছেন।

দুই ধারে গাছপালা তার মাঝ দিয়ে বয়ে চলেছে ভদ্রাবতী নদী। নদীর দুই ধারের গাছগুলো বেশ ডালপালা ছড়িয়ে আছে। গাছগাছালির ভেতর দিয়ে নদীতে ঘুরতে মনে হচ্ছে এ যেনো রাতারগুল। আহ! রাতারগুল বগুড়ায়! সুন্দর সবুজ মনোরম পরিবেশে ভদ্রাবতী নদী যেনো সেজেছে তার অলৌকিক রূপে। নৌকার তলায় ঢেউয়ের শব্দে অন্য রকম এক আবহ তৈরি হলো। নীরব প্রকৃতি আর মৃদুমন্দ বাতাসে এরই মধ্যে নিস্তব্ধতা ভাঙে গাছে বসে থাকা পাখির ডাকে, হঠাৎ ফুড়ুৎ করে উড়াল দেয় একঝাঁক পাখি।


কোলাহলহীন শান্ত-স্নিগ্ধ ভদ্রাবতী ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদল করে চলে। এই ভদ্রাবতী নদীর উৎপত্তি নিয়ে কল্প কাহীনিও শোনা যায় এলাকাবাসীর মুখে। নন্দীগ্রাম উপজেলা সদর থেকে পূর্ব দিকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে ১নং বুড়ইল ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামের শেষপ্রান্তে রয়েছে ভদ্রাবতী নদী। বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার শাবরুল বিল থেকে উৎপত্তি ভদ্রাবতী নদীর।

এই নদীর সঙ্গে সিংড়ার চলনবিল ও যমুনা নদীর সংযোগ রয়েছে। বুড়ইল ইউনিয়নের চকরামপুর গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ আব্দুর কুদ্দুসের সঙ্গে কথা হয়।

তিনি বলেন, দাদার মুখে শুনেছি রাজার শাসন আমলে শাবরুল দিঘীর বুক চিরে ভদ্রানদীর আবির্ভাব ঘটে। সেন বংশের অচিন্ত কুমার নামের শেষ রাজার আমলে তার কন্যা ভদ্রাবতীর নাম অনুসারে নদীর নামকরণ। আগে বর্ষা মৌসুমে ভরা পানিতে নদী থৈ থৈ করতো। এখন নদীতে পানি থাকেনা। এলাকার মানুষ হিসেবে কুদ্দুসের দাবি, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ভদ্রাবতী খননের মাধ্যমে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা ও একটি সুইচ গেট।

ভদ্রাবতীর সৌন্দর্য দেখতে এসেছেন শেরপুর উপজেলা থেকে শামিম নামের এক ছাত্র। শামিম বলেন,  ইউটিউবে দেখলাম বগুড়ায় রাতারগুল, রাতারগুল সিলেটে অবস্থিত হওয়ার কারণে এবং অনেক খরচের জন্য আমি যেতে পারিনি তাই এলাকার পাশে হওয়ায় দেখতে চলে এলাম। আমার খুব ভালো লেগেছে। ইউটিউবে দেখেছি সিলেটের রাতারগুল, আর এখানে এসে দেখলাম অনেকটাই মিল আছে। এটা আমার কাছে গরিবের রাতারগুল বললে ভুল হবে না।


শামিম হোসেন নামের এক মাঝি বলেন, আমাদের এলাকায় এই ভদ্রাবতী নদী একটি দর্শনীয় স্থানের মত হয়ে গেছে।

বুড়ইল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জবায়ের আহমেদ বলেন জৈষ্ঠ্য, আষাঢ়, শ্রাবণ এই তিন মাস পানি থাকে তারপরে আর পানি থাকে না নদীতে। পানি কম হওয়ার কারণে বাকি সময় নৌকাও চলে না। ১৩ কিলেমিটার জুড়ে নদীটির দুই পাশে সবুজ গাছ পালা দিয়ে যে সুন্দর মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ তৈরি হয়েছে সেটি দেখতে ছুটে আসছে বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনাথীরা।

;