ময়মনসিংহে ভেজাল বিরোধী অভিযান, ৬ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মূল্যতালিকা না থাকা, মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার বিক্রিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ছয় প্রতিষ্ঠানকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। 

বুধবার (৪ অক্টোবর) উপজেলার  বিভিন্ন এলাকায় জেলা স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এই অভিযান চালায়। গফরগাঁও উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. আবিদুর রহমান এই অভিযান পরিচালনা করেন। 

জরিমানা করা প্রতিষ্ঠান গুলো হলো, গফরগাঁও ফিলিং স্টেশন ৫০ হাজার , ফাহিম স্টোর ৫ হাজার, জিলানী স্টোর ৫ হাজার, ভাই ভাই স্টোর ৫ হাজার, মেসার্স স্বপ্ন কসমেটিকস ৫ হাজার, স্বপ্ন কসমেটিকস ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবিদুর রহমান বলেন, অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশ, ওজনে কম দেওয়া, মূল্যতালিকা না থাকা, অনুমোদন না থাকাসহ বিভিন্ন ভেজাল বিরোধী অভিযানে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা করা হয়। এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএসটিআই'র ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ছানোয়ার হোসেন, ফিল্ড অফিসার মো. নজরুল ইসলাম প্রমুখ। অভিযান পরিচালনায় সহযোগিতা করেছেন গফরগাঁও থানা পুলিশ।

 

   

জাল সনদে যেভাবে ১০ বছর প্লেন চালিয়েছেন সাদিয়া



ইশতিয়াক হুসাইন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
জাল সনদে যেভাবে ১০ বছর প্লেন চালিয়েছেন সাদিয়া

জাল সনদে যেভাবে ১০ বছর প্লেন চালিয়েছেন সাদিয়া

  • Font increase
  • Font Decrease

 

বৈমানিক হতে হলে উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞানে পড়তে হয়। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নিয়মানুযায়ী, উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান শাখায় পদার্থ বিজ্ঞান ও গণিতসহ এইচএসসি বা সমমানের সনদ থাকতে হয়।

বিজ্ঞানে না পড়েও জাল সনদ জমা দিয়ে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স বিমানের বৈমানিক হিসেবে নির্বাচিত হন এয়ারলাইন্সটির সাবেক চিফ অব ট্রেনিং ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদের স্ত্রী সাদিয়া আহমেদ। ২০০১ সালে তিনি শহীদ আনোয়ার গার্লস কলেজের মানবিক শাখা থেকে দ্বিতীয় বিভাগে পাস করেও বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা পাসের সনদ জমা দেন।

সাদিয়া প্রথমে জিএমজি এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রু হিসেবে নিয়োগ পেলেও পরবর্তীতে দিয়ে রিজেন্ট এয়ারওয়েজ ও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে চাকরি নেন। এসব জায়গায় প্রায় ১০ বছর চাকরি করেছেন। বিমানে যোগদানের আগে জাল সনদের ম্যাধমে বৈমানিক হওয়া সাদিয়া আকাশে উড়েছেন। যদিও পরবর্তীতে এসব এয়ারলাইন্স থেকে তিনি চাকরিচ্যুত হয়েছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই জাল সনদ দিয়ে কিভাবে কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (সিপিএল) পেলেন সাদিয়া সেটিও খতিয়ে দেখা দরকার। তাছাড়া এর সঙ্গে বেবিচকের কোনো চক্র জড়িত আছেন কিনা তাও তদন্তের দাবি রাখে। তা না হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের বৈমানিকের হাতে পড়ে শতশত যাত্রী প্রাণ হারাতে পারেন। 

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিমান কর্তৃপক্ষ কৃত্রিম বৈমানিক সংকট দেখিয়ে তড়িঘড়ি করে ১৪ জনকে নিয়োগ দেয়। বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ পরিচালনার জন্য ৫ বছরের চুক্তিতে ৮ জন ক্যাপ্টেন ও ৬ জন ফাস্ট অফিসার নিয়োগ করতে ২০২১ সালের ২৩ নভেম্বর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় বিমান। নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে কয়েকজনের যোগ্যতা ও দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এদের মধ্যে অন্যতম সাদিয়া আহমেদ। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিমানের এক বৈমানিক বার্তা২৪.কমকে বলেন, বিমানের ইতিহাসে জাল সনদের মাধ্যমে আজ পর্যন্ত কোনো বৈমানিক নিয়োগ পাননি। ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানটির জন্য এটি লজ্জাজনক ঘটনা। একজন বৈমানিক হিসেবে তিনি নিজেও এ ধরনের গুরুতর অন্যায় মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জাল সনদের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া বৈমানিকেরা শনাক্ত হয়ে চাকরিচ্যুত হয়েছেন। এখন এদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। তবে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া ও জাল সনদের চক্রের হোঁতারা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন।

বিমানের আরেক বৈমানিক বলেন, যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের সবাইকে শুধু চাকরিচ্যুত করলেই হবে না, এদেরকে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। যাতে করে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের কাজ করার আগে বারবার এই ঘটনার শাস্তিকে উদাহরণ হিসেবে নিতে পারে। 

অভিযোগ রয়েছে, সাদিয়া তার স্বামীর প্রভাব খাঁটিয়ে বিমানে নিয়োগ পান। বিমানের চুক্তিতে বলা হয়েছে, তার মূল বেতন ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ও বাড়িভাড়া ৮৫ হাজার টাকা।

অন্যদিকে ফার্স্ট অফিসার হিসেবে নির্বাচিত আল মেহেদী ইসলাম এয়ারলাইন ট্রাস্পপোর্ট লাইসেন্সের (এটিপিএল) জাল সনদ জমা দেন। বেবিচকের সহকারী পরিচালকের সই জাল করে এই সনদ তৈরি করেন তিনি।

বেসামরিক বিমান চলাচল আইন অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি শিক্ষা সনদ, নিবন্ধন সনদ, লাইসেন্স বা পারমিট জাল বা পরিবর্তন করেন বা করার চেষ্টা করেন, তাহলে অনধিক ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড অথবা এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বেবিচকের তদন্তে সম্প্রতি এই দুই বৈমানিকের জাল সনদের বিষয়টি প্রমাণিত হয়। এখন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি প্রমাণিত হয়েছে। এখন তাদের বিরুদ্ধে এমন কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর জালিয়াতি করার সাহস না পায়।

সনদ জালিয়াতি করে নিয়োগ দিয়েই ক্ষ্যান্ত হয়নি এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিমানের কতিপয় কর্মকর্তা। প্রশিক্ষণরত বৈমানিকেরা পূর্ণাঙ্গ বৈমানিক নন, সেই হিসেবে তারা সামান্য কিছু বেতন পান। বিমানের সব নিয়ম ভেঙে প্রথমবারের মতো এদের প্রশিক্ষণ ফ্লাইট নয়, প্রথম ফ্লাইটের তারিখ থেকে পুরো বেতনই শুধু নয়, মোটা অংকের ভাতাসহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। অথচ ২০১৭, ২০১৯ ও ২০২১ সালে নিয়োগ নিয়োগ পাওয়া বৈমানিকদের কেউ এ ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাননি।

;

‘টাকা জমাচ্ছি, আল্লাহর কাছ থেকে বাবাকে কিনে আনবো’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

'টাকা জমাচ্ছি, আল্লাহর কাছ থেকে বাবাকে কিনে আনবো' কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন ২৮ অক্টোবর নিহত কনস্টেবল আমিরুল পারভেজের ৫ বছরের অবুঝ শিশু তানহা।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকালে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা অডিটোরিয়ামে 'মায়ের কান্না ও অগ্নি-সন্ত্রাসের আর্তনাদ' এর যৌথ উদ্যোগে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও এর বিচারের দাবিতে আয়োজিত আলোচনা সভা হয়ে উঠে এমনই নানা দুঃসহ ঘটনার সাক্ষী। পুরো পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে বিএনপি-জামায়াতের আগুন সন্ত্রাসে নিহত পরিবারের স্বজনদের কান্না ও আহাজারিতে।

নিহত কনস্টেবলের স্ত্রী বলেন, যদি আমার মেয়েকে কেউ টাকা দেয়, সে টাকা জমায়। আমি যদি জিজ্ঞেস করি, এই টাকা দিয়ে কী করবে? মেয়ে বলে, এ টাকা দিয়ে আমি বাবাকে আল্লাহর কাছ থেকে কিনে আনবো। এই কথার পরে আমি তাকে কী উত্তর দিব? আমার কাছে তো কোনো উত্তর নেই।

গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশ সদস্য কনস্টেবল আমিরুল পারভেজ নিহত হন। এছাড়াও ২০১৩/১৪ সালে বিএনপি জামায়াতের আগুন সন্ত্রাসে নিহত পরিবারের স্বজন ও ভিক্টিমরাও ছিলেন এ আলোচনা অনুষ্ঠানে। উপস্থিত হয়েছিলেন, ১৯৭৭ সালে সামরিক আদালতে বিচার হওয়া বিমান ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের স্বজনরা। ২১ এ আগস্টের গ্রেনেড হামলার স্বীকার মানুষজনও তাদের কষ্টের কথা বলে কাঁদিয়েছেন উপস্থিত দর্শনার্থীদের।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি গাড়ি নিয়ে যাবার সময় দিনাজপুরে জামায়াত-বিএনপির লোকজন পেট্রোল বোমা মেরে পুরো শরীরে আগুন ধরে যায় জানিয়ে গাড়ি চালক বিল্লাল হোসেন বলেন, আমি তো কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি ছিলাম না। আমি তো কোনো রাজনৈতিক দলের সাথেও যুক্ত ছিলাম না। আমি আমার সংসার চালানোর জন্য গাড়ি চালায়। গাড়ি না চালালে আমার পরিবার খাবে কী? তাহলে কি আমি না খেয়ে থাকবো? আমি এখনো সুস্থ হয়ে হাঁটতে পারি না। আমার হাত, পা'সহ শারা শরীরে ব্যথা। আমার কী দোষ ছিল? আমাকে কেন পুড়তে হলো পেট্রোল বোমায়? এটাই আমার জানতে চাওয়া। 

আমাকে কেন পুড়তে হলো পেট্রোল বোমায়? 

উপস্থিত দর্শনার্থীদের প্রতি প্রশ্ন রেখে বেসরকারি চাকরিজীবী নোমান বলেন, আমার কী দোষ ছিল? ২০১৫ সালে অফিস শেষে বাসা যাবার পথে যাত্রাবাড়ীতে আমাদের গাড়ির উপর জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীরা পেট্রোল বোমা মারে। এতে পুরো গাড়িতে আগুন ধরে যায়। আমার পুরো শরীরেও আগুন লেগে যায়। আমি তো সাধারণ মানুষ। তাহলে আমাকে কেন পুড়তে হলো? শরীর পুড়ে যাবার অসহ্য যন্ত্রণা আজও বেড়াতে হচ্ছে আমাকে।

এসময় ভুক্তভোগীরা বিএনপি-জামায়াতের এই নৈরাজ্য বন্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানান। তারা বলেন, আমরা যে অসহ্য যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি তা যেন আর কোনো মানুষ ভোগ না করে। আমরা এর অবসান চাই। আমরা চাই এই আগুন-সন্ত্রাসীদের কঠিন থেকে কঠিনভাবে বিচার করা হউক। এই বাংলাদেশে এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে কেউ যেন কোনো মায়ের বুক খালি করতে না পারে। স্ত্রী যেন তার স্বামীকে না হারায়। সন্তান যেন পিতা হারিয়ে এতিম না হয়। 

কেউ যেন কোনো মায়ের বুক খালি করতে না পারে 

সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের শাসনামলে স্বামী হারানো এক স্ত্রী বলেন, আমি জানতেও পারলাম না আমার স্বামীর কী দোষ। কেন আমার স্বামীকে বিচারের নামে প্রহসন করে হত্যা করা হলো? আমার স্বামীর লাশটা পর্যন্ত আমি দেখতে পারিনি। আমার শিশু সন্তানকে তার বাবার একটা ছবি দেখাবো, সে ছবিটি পর্যন্ত আমাকে দেয়া হয়নি। কত কান্না করলাম, কিন্তু আমার স্বামীর একটা ছবিও পেলাম না।

ভুক্তভোগীদের অসীম দুঃখের এমন অবর্ণনীয় দুঃখগাথায় ভারী হয়ে উঠে পুরো অডিটোরিয়াম। চোখের কোনায় জল নিয়ে হতবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে দর্শনার্থীরা। এ যেন কষ্টের সাথে কাঁধ মেলানো। দুঃখ তাড়িয়ে একে অপরকে সান্ত্বনা দেয়ার অপচেষ্টা। তবুও একটুখানি দুঃখ তাড়ানোর উপায় পেয়ে, সেটাকেই সম্বল করে সমাপ্তি আসে অনুষ্ঠানের।

;

ছোট্ট ওমরকে এমনভাবে মারতে পারলেন?



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছোট্ট ওমরকে এমনভাবে মারতে পারলেন?

ছোট্ট ওমরকে এমনভাবে মারতে পারলেন?

  • Font increase
  • Font Decrease

দুই বছরের ওমর ফারুক। গোলগাল মিষ্টি চেহেরা। দেখলেই আদর করতে ইচ্ছে করবে যে কারও। সেই একরত্তি বাচ্চাটাকেই দেয়ালে আছড়ে মেরে ফেললেন পাষণ্ড মো. ইয়ামিন। লোমহর্ষক এই ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেড এলাকায়।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকালে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানিয়েছেন নগর পুলিশের বন্দর জোনের উপকমিশনার শাকিলা সোলতানা।

এর আগে, শনিবার (৯ ডিসেম্বর) জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে পুলিশ নগরীর ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের পকেট গেট এলাকা থেকে ইয়ামিনকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার ইয়ামিন শিশুটির মায়ের তৃতীয় স্বামী। আর নির্মম মৃত্যুর শিকার ফারুক ছিল তার মায়ের দ্বিতীয় স্বামীর সন্তান। তাই তার মাকে বিয়ে করলেও আগের সংসারের ছেলেকে সহ্য করতে পারতেন না ইয়ামিন। মায়ের অগোচরে শিশুটিকে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে নির্যাতন করতেন ইয়ামিন। একপর্যায়ে তাকে দেয়ালে আছড়ে মেরেই ফেললেন।

ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হোসেন জানান, রওশনের ছেলেকে ইয়ামিন কোনোভাবেই সহ্য করতে পারতেন না। বিষয়টি আবার রওশন বুঝতে পারতেন না। তিনি যথারীতি ছেলেকে ইয়ামিনের কাছে রেখে কারখানায় কাজে চলে যেতেন। ৬ ডিসেম্বর রওশন কাজে যাওয়ার পর ইয়ামিন শিশুটির গায়ে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়েছিলেন। সেটি বুঝতে পারেননি রওশন। পরদিন ইয়ামিন শিশুটিকে ধাক্কা দিলে দেয়ালের সঙ্গে লেগে মাথার পেছনে গুরুতর আঘাত পায়।

ওইদিন বিকেলে রওশন আরা বাসায় ফিরে সন্তানকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পান। পরে দ্রুত ইয়ামিনকে সঙ্গে নিয়ে শিশুটিকে প্রথমে মা ও শিশু হাসপাতালে এবং পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। শিশুটির অবস্থার অবনতি হতে থাকলে তার আইসিইউ সাপোর্টের প্রয়োজন হয়। চমেক হাসপাতালে আইসিইউ বেড খালি না থাকায় ওমর ফারুককে বেসরকারি হলি হেলথ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মারা যায় ফারুক।

ওসি বলেন, শনিবার সকালে মৃত ওমর ফারুককে হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ইয়ামিন তার দাফনের ব্যবস্থা করছিলেন। তখন রওশন আরা চিৎকার করে কান্না শুরু করেন এবং ছেলের মৃত্যুর জন্য ইয়ামিনকে দায়ী করতে থাকেন। তখন প্রতিবেশীরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশকে বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ইয়ামিনকে আটক করে।

এ ঘটনায় রওশন আরা ইপিজেড থানায় ইয়ামিনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। গ্রেফতার মো. ইয়ামিনের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায়। ইয়ামিন রঙ মিস্ত্রির কাজ করেন।

মৃত্যুর পর ছোট্ট ওমরের কয়েকটা ছবি তুলেছেন স্থানীয়রা। মুখে যেন তখনো লেগে আছে হাসি। নীরব-নিথর শরীরের এখানে ওখানে ছোপ ছোপ কালো দাগ। এই দাগ সিগারেটের ছ্যাঁকের!

;

খালাসের অপেক্ষায় বন্দরে বিস্ফোরক বোঝাই ৬ ট্রাক



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল (যশোর)
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানিকৃত ৮৪ মেট্রিক টন বিস্ফোরকসহ ২ দিন ধরে খালাসের অপেক্ষায় ৬টি ট্রাক।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে ভারতের পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বিস্ফোরকের এ চালানটি আমদানি করেন দিনাজপুরের গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে খালাসের অপেক্ষায় ৬টি ভারতীয় ট্রাক বেনাপোল বন্দরের ৩১ নম্বর ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ডে দাঁড়িয়ে আছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বেনাপোলের মেসার্স নাজমুল অ্যান্ড ব্রাদার্স নামের একটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রতিষ্ঠান পণ্য চালানটি খালাসের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বেনাপোল কাস্টমসে দাখিল করেছে। কাজ সম্পন্ন হলে ভারতীয় ট্রাক থেকে এসব বিস্ফোরক দ্রব্য খালাস করে বাংলাদেশি ট্রাকে নেওয়া হবে। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) ট্রাকগুলো দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে বেনাপোল বন্দর থেকে ছেড়ে যেতে পারে বলে জানা গেছে।

এদিকে সাধারণ ব্যবসায়ীরা জানান, মাঝেমাঝেই এসব বিস্ফোরক পণ্য এপথে আমদানি হয়ে থাকে। সাধারণ পণ্যের সাথে বন্দরে এসব বিস্ফোরকবাহী ট্রাক রাখা হয়। এসব পণ্য আরো নিরাপদ স্থানে নিয়ে দ্রুত খালাস করার ব্যবস্থা থাকা দরকার।

বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (ট্র্যাফিক) রেজাউল করিম জানান, ভারত থেকে ৬টি ট্রাকে ৮৪ টন বিস্ফোরক আমদানি হয়। কাগজ পত্রের আনুষ্ঠানিকতা শেষ না হওয়ায় এখন পর্যন্ত এসব ট্রাক বন্দরে রয়েছে। খনন কাজ পরিচালনার জন্য ভারতের নাগপুর থেকে এ বিস্ফোরক দ্রব্য আমদানি করা হয়। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বন্দর এলাকায় প্রশাসনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

;