অনুমতি ছাড়া ডিএনসিসি এলাকায় কেউ গাছ কাটবে না:  আতিক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম,ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো: আতিকুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের গাছের গুরুত্ব অনুধাবন করতে হবে। দুঃখজনক হলো আমরা অনেকে গাছের গুরুত্ব বুঝিনা। পরিবেশ রক্ষায় এবং জীবনের জন্য অপরিহার্য অক্সিজেন পেতে গাছের বিকল্প নেই।’

মেয়র বলেন, ‘গাছ কাটলে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। আমার কাউন্সিলর, ইঞ্জিনিয়ার ও  কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি অনুমতি ছাড়া ডিএনসিসি এলাকায় কেউ গাছ কাটতে পারবে না। গাছ কাটার আগে এলাকাবাসীর সাথে আলাপ করতে হবে, কাউন্সিলরদের সাথে আলাপ করতে হবে, আমাদের সাথে আলাপ করতে হবে।'

শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) অডিটোরিয়ামে নগর সবুজায়ন প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, 'ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন সড়কের মিডিয়ানে ও ফুটপাতে গাছ লাগানো হচ্ছে। বিভিন্ন বস্তিতে প্রায় ৫৫০০ টি গাছ লাগানো হয়েছে। প্রতিটি গাছকে জিপিআরএস অ্যাপের মাধ্যমে আইডি নাম্বার দিয়ে রোপন করে দিয়েছি। গাছকে নাম্বারিং করা ও জিপিআরএস ম্যাপিং করা হচ্ছে। প্রকৌশল বিভাগ এটি তত্ত্বাবধান করছে।

তিনি আরও বলেন, ‘বর্জ্য বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি খালের পাড়ে গাছ লাগাতে হবে। আমরা এখন যে গাছগুলো লাগাচ্ছি একটা সময় পরে সবুজায়ন হবে, গাছে ফুল হবে, ফল হবে, গাছ ছায়া দিবে, অক্সিজেন দিবে।'

মেয়র বলেন, 'গাছ লাগানো অনেক সহজ কিন্তু গাছের পরিচর্যা করে গাছগুলো বড় করে তোলা অনেক কঠিন কাজ। এখন পর্যন্ত আমরা যেসব গাছ লাগিয়েছি, আমাদের কাছে প্রতিটি গাছের ম্যাপিং আছে। গাছ কত ইঞ্চি লাগানো হয়েছে, গাছ কিভাবে বড় হচ্ছে ও গাছের পরিচর্যা করা হচ্ছে। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ আছে। গাছগুলোর পরিচর্যা করা হচ্ছে। আজকে গাছ লাগালে অবশ্যই এর দুই বছর পরে ফল পাওয়া যাবে। আমি নতুন কিছু গাছ লাগাচ্ছি। রসকাউ গাছ রোপন করছি। রসকাউ গাছের ফল পাখির খুবই প্রিয়। আমরা সবুজ ও পাখির কিচিরমিচির দেখতে চাই।'

তিনি আরও বলেন, 'ঢাকাকে দৃষ্টিনন্দন করতে সবুজায়ন প্রকল্পের পাশাপাশি স্ট্রিট আর্ট করে দিচ্ছি। মগবাজার ফ্লাইওভারের পিলারে স্ট্রিট আর্ট করা হয়েছে। মিরপুর জল্লাদখানায় পাকিস্তানিরা মুক্তিযুদ্ধাদের নির্মমভাবে হত্যা করে যে জায়গায় ফেলে রাখত সেটি খুবই ভয়ানক জায়গা ছিল। ওখানে ময়লার ভাগাড় ছিল, মাদকাসক্তরা সেখানে নেশা করতো। আমরা জল্লাদখানাটি দৃষ্টিনন্দন করে সাজিয়েছি। আপনারা গেলে দেখতে পাবেন শিশুদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা করা হয়েছে।'

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফুল ইসলাম, ০৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ জামাল মোস্তফা, সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর হামিদা আক্তার (মিতা), মেটলাইফ বাংলাদেশ এর মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আলা আহমেদ প্রমুখ। 

   

গাইবান্ধায় নারীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন, গ্রেফতার ৪



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা
গাইবান্ধায় নারীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন, গ্রেফতার ৪

গাইবান্ধায় নারীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন, গ্রেফতার ৪

  • Font increase
  • Font Decrease

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে এক নারী তার সাবেক স্বামীকে নিয়ে ঘরে অবস্থান করার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ওই নারীকে নির্যাতন ও মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় হওয়া মামলার প্রধান আসামি মোনারুল ইসলামসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুর ২টার দিকে পালিয়ে থাকা মোনারুলকে (৩৫) উপজেলার রাখালবুরুজ ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। প্রধান আসামি মোনারুল ইসলাম ওই গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে এবং এই নারীর প্রথম স্বামী।

এছাড়া একই ঘটনায় গতকাল সোমবার বিকালে শাহজাহান আলী (৪৮), আব্দুর ছাত্তার (৫৫) ও চামেলি বেগম (৪০) নামের আরো তিনজন আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এর আগে রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার রাখালবুরুজ ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার ৩৫ বছর বয়সী ওই নারীর নাম ছকিনা বেগম। তিনি একই এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ ও মামলার এজাহার এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই নারী তার দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় থাকেন। অসুস্থজনিত কারণে প্রায় ১৫ দিন আগে গ্রামের বাড়িতে আসেন তিনি। প্রতিপক্ষরা তাকে বাড়ি থেকে তাড়ানোর উদ্দেশে দীর্ঘদিন থেকেই বিভিন্নভাবে পাঁয়তারা করে আসছিল। সর্বশেষ গত রোববার রাতে পরিকল্পিতভাবে নারীর প্রথম স্বামী মোনারুল ইসলামকে তার শোয়ার ঘরে ঢুকিয়ে দেয়। মোনারুল নারীর খাটের নিচে লুকিয়ে থাকেন। পরে সুযোগ বুঝে মোনারুল ইসলাম ওই নারীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায়। এসময় প্রতিপক্ষের লোকজন এগিয়ে আসায় মোনারুল পালানোর চেষ্টা করলেও ওই নারী তাকে জাপটে ধরে আটক করেন। ফলে মোনারুল আটক পড়ে। কিন্তু এঘটনার পরিকল্পনাকারী প্রতিপক্ষরা ওই নারীর কাছ থেকে মোনারুল ইসলাম ছিনিয়ে নেয়। পরে সাবেক স্বামীকে ঘরে ঢোকানোর অপবাদ দিয়ে ওই নারীকে দুষ্চরিত্রের প্রশ্ন তুলে তার বাড়ির সামনের একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারপিট করা হয় এবং মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়।

এঘটনায় পরদিন সোমবার ছকিনা বেগম নিজেই বাদি হয়ে মোনারুলকে প্রধান আসামি করে সাতজনের নামে গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গতকাল তিনজন এবং আজ প্রধান আসামি মোনারুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আলম শাহ মোবাইল ফোনে বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্থানীয়দের খবরে ওই রাতেই নারীকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরদিন এ ঘটনায় ওই নারী নিজে বাদি হয়ে সাতজনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। পুলিশ মামলার প্রধান আসামি মোনারুল ইসলামসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। অন্যান্যদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশা করি তারা দ্রুতই গ্রেফতার হবেন।

;

কতদিন পরে এলে…



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মেহেদিরাঙা আঙুল। হাতে নিজের বানানো কেক। আর এক গোছা রজনীগন্ধা। হিজাবের আড়ালে লুকিয়ে থাকা মুখটার উচ্ছ্বাস দেখা না গেলেও আঁচ করা যাচ্ছে সহজেই। জলদস্যুদের ঢেরায় টানা এক মাসের দমবন্ধ টানাপোড়েন, কত শত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, বাঁচা-মরার লড়াই পেরিয়ে দেশে ফেরা স্বামী নূরউদ্দীনসহ ২৩ নাবিককে নিয়ে আসা এমভি জাহান মণি চোখের দৃষ্টিসীমায় হাজির হতেই বসা থেকে উঠে দাঁড়ালেন জান্নাতুল ফেরদৌস। একটু পর ভিড় ঠেলে এই নারী এগিয়ে গেলেন জাহাজ ছোঁয়া দূরত্বে। মই বেয়ে স্বামী নামতেই বলে উঠলেন, ‘বাড়িয়ে দাও, তোমার হাত, আমি আবার তোমার আঙুল ধরতে চাই।’

৮ মে ছিল নূরউদ্দিন-জান্নাতুল দম্পাতির বিয়ের চার বছর পূর্তি। গত বছরের ২৫ নভেম্বর নূরউদ্দিন বিদায় নেওয়ার সময় কথা দিয়েছিলেন একসঙ্গে দিনটি দুজনে কাটাবেন একান্তে। কিন্তু স্বামী দস্যুদের কবলে পড়ে এক মাস জিম্মি থাকায় দীর্ঘ হয়েছে জান্নাতুলের অপেক্ষা। স্বামী পাশে ছিলেন না বলে ঈদেও ছিল না হাসি, বিবাহ বার্ষিকীর দিনেও এই নারীর সঙ্গী ছিল মনখারাপী। অবশেষে স্বামী নিঃশ্বাসের দূরত্বে। জান্নাতুলও তাই বহুদিনের দুঃখের পর পেলেন হাসার একটা দিন!

নাবিকেরা জাহাজ থেকে নামতেই পড়তে হয় গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে। এই ‘মধুর যন্ত্রণা’ এড়াতে স্বামীকে ভিড় থেকে একটু দূরে নিয়ে যান জান্নাতুল। স্বামীকে পাশে বসিয়ে মনে মনে যেন বলছিলেন-‘কতদিন পরে এলে, একটু বসো। তোমায় অনেক কথা বলার ছিল যদি শোন।’ নূরউদ্দিনও উজাড় করে বলছিলেন জমানো সব কথা। কীভাবে জিম্মি হলেন, কেমন কেটেছিল দস্যুদের সঙ্গে কাটানো সেই সব ভয়াল দিনরাত্রী, তারপর মুক্তির আনন্দ, দেশে ফেরা-সবকিছুই।

‘ব্যক্তিগত আলাপ’ শেষ হলো, এবার আর গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে বাঁধা নেই জান্নাতুলের। হাসতে হাসতেই বললেন, ‘কতদিন মানুষটাকে দেখিনি। দস্যুদের ভারী অস্ত্রের মুখে ছিল, ভয়ে গলা শুকিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। স্বামী বারবার আশ্বস্ত করছিল দস্যুরা কিছুই করেনি। তবুও একটু কাছাকাছি বসে ভালোভাবে পরখ করলাম দস্যুরা কোনো আঘাত করেনি তো। স্ত্রীর মন-বোঝেন তো?’ কথা শেষ করে আরও একবার অট্টহাসি জান্নাতুলের।

স্বামী আসবেন, তাকে নিজের চোখে সরাসরি দেখবেন-সেই অপেক্ষায় রোববার রাতভর ঘুম হয়নি জান্নাতুলের। ‘রাত ২টা পর্যন্ত কেক বানালাম, স্বামীর পছন্দের খাবার রান্না করলাম। এরপর ঘুমাতে গেলাম। কিন্তু রাত চারটা হতেই ভেঙে যায় ঘুম। তারপর থেকে শুধুই অপেক্ষা-কখন বাজবে বিকেল চারটা। এক টানা বলে গেলেন জান্নাতুল।

জাহাজ থেকে নামছেন নাবিকেরা

নাবিক মানেই জলে ভাসা জীবন। এই বন্দর থেকে ওই বন্দরে ছুঁটে চলা। তুমুল একাকীত্ব তো আছেই, সঙ্গে আছে সামুদ্রিক ঝঞ্ঝা আর দস্যুদের শিকার হওয়ার ভয়। ২০২০ সালে নূরউদ্দিনকে বিয়ের আগে কেউ কেউ সেই সব কথা মনেও করিয়ে দিয়েছিলেন জান্নাতুলকে। কিন্তু এসব কিছুই গ্রাস করতে পারেনি এই তরুণীকে, নূরউদ্দিনকে যে তার খুব মনে ধরে গিয়েছিল। সেই কথা আরেকবার তুলে ধরে বললেন, ‘প্রথম যখন শুনলাম তাদের জাহাজ দস্যুদের কবলে পড়েছে। তখন যেন আমার পুরো পৃথিবীটাই শেষ হয়ে গিয়েছিল। আজ সে আমার কাছে ফিরে এসেছে। এই যে হাসছি, এই উপলক্ষ পেতে বহুদিন কাঁদতে হয়েছে আমাকে।’

স্বামীকে নিয়ে একসঙ্গে বিয়ে-বার্ষিকীর কেক কাটা হয়নি বলে কি ফুরিয়ে যাবে উৎসব। সেটি যে হওয়ার নয়। হাতে তাই তো জান্নাতুল মেহেদী লাগিয়েছেন। নিয়ে এসেছেন নিজের বানানো দুটি চকলেট কেক। মেহেদিরাঙা হাত দেখিয়ে নিজেই বললেন, ‘ওকে তো হারিয়েই ফেলেছিলাম। এখন নতুন করে আবার পেলাম। ও যেমন নতুন জীবন পেল, আমিও তো স্বামীকে নতুন করে পেলাম। দিনটি স্মরণীয় রাখতেই হাতে মেহেদী লাগানো, কেক বানানোর এত এত আয়োজন।’

মায়ের কোলে চড়ে বাবাকে অভিবাদন জানাতে আসা আড়াই বছরের সাদ বিন নূরের অবশ্য বাবা কি সেটি এখনো ঠিকঠাক বোঝার বয়স হয়নি। আনমনে নিজের ছন্দে খেলছিল সে। মাঝে মাঝে আবার শিশুমনের দুষ্টুমিও করছিল। কিন্তু বাবা হাত বাড়াতেই যেভাবে বুকে লুকিয়ে চুপসে গেল-বোঝা গেল বাবার ওমের অপেক্ষায় ছিল সেও।

ছেলেকে কোলে নিয়ে নূরউদ্দিনও আবেগ ধরে রাখতে পারলেন না। এই যে ছেলে আবার পুনর্দখল করল বাবার বুক, কেমন লাগছে- প্রশ্নের উত্তরটা ঠিক গুছিয়ে বলতে পারলেন না নূরউদ্দিন। অস্ফুট স্বরে শুধু বলছিলেন, ‘দস্যুদের কবলে পড়ার পর থেকে ছেলের মুখটা চোখে ভাসত। আমি না থাকলে ছেলের কি হবে ভাবতাম। আর মনে পড়ত মা-বাবা-স্ত্রীর কথা। আল্লাহকে ধন্যবাদ তিনি আমাদের পুনরায় বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমরা যেন দ্বিতীয় জীবন পেলাম।’

সময়ের বয়স বেড়েই চলেছিল। ঘড়ির কাটায় তখন বিকেল সাড়ে পাঁচটা পেরিয়ে ছয়টার ঘরে ছুঁটছে। চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি-১ জেটিতে নাবিকদের বরণে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের আয়োজনও শেষের দিকে। এবার প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে ঘরে ফেরার পালা।

তার আগে স্বামীকে এরপর কি সমুদ্রে পাঠাবেন-আশপাশ থেকে এই প্রশ্নটা উড়াউড়ি করতেই মনটা যেন ফের বিষণ্ন হয়ে ওঠল জান্নাতুলের। আদ্র হয়ে ওঠে চোখের পাতা। ছায়াছবির মতো যেন এই নারীর চোখের পর্দায় ভেসে ভেসে আসছিল স্বামীর জিম্মির সেই শেষ হতে না চাওয়া ৩০ দিন। আবেগ কিছুটা প্রশমিত করে শুধু বললেন, ‘সমুদ্রই তো ওর জীবন-জীবিকা আর আমাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন। তাই সমুদ্রে তো যেতেই হবে।’

দূরে কোথাও তখন যেন ভেজানো কণ্ঠে কেউ গেয়ে চলছিলেন রবীন্দ্রনাথের সেই অমর সংগীত-‘দুঃখের তিমিরে যদি জ্বলে তব মঙ্গল-আলোক তবে তাই হোক।'

;

ছাগল বাঁচাতে সেপটিক ট্যাংকে নেমে কলেজ ছাত্রের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লালমনিরহাট
ছাগল বাঁচাতে সেপটিক ট্যাংকে নেমে কলেজ ছাত্রের মৃত্যু

ছাগল বাঁচাতে সেপটিক ট্যাংকে নেমে কলেজ ছাত্রের মৃত্যু

  • Font increase
  • Font Decrease

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ছাগল বাঁচাতে গিয়ে সেপটিক ট্যাংকে নেমে নুর আমিন নামে এক কলেজছাত্র আটকা পড়ে মৃত্যু হয়েছে। এসময় তার ভগ্নিপতি জাহেদুল ইসলাম গুরুতর আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৪ মে) রাতে ওই উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পুব সারডুবী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নুর আমিন ওই এলাকার মতিয়ার রহমান মতির পুত্র ও বড়খাতা বি এম কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী।

স্থানীয়রা জানান, নির্মাণাধীন সেপটিক ট্যাংকে একটি ছাগল পড়ে যায়। সেই ছাগলটি উদ্ধারে প্রথমে জাহেদুল ইসলাম নামে ও আটকা পড়ে। পরে তাকে উদ্ধারে নুর আমিনও নামে। এ সময় সেও আটকা পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস টিম গিয়ে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুর আমিন মারা যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় জাহেদুল ইসলামকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাতীবান্ধা ফায়ার ও সিভিল স্টেশন মনির হোসেন বলেন, বাড়ির টয়লেটে ছাগল উদ্ধার করতে গিয়ে তিনি নিচে পড়ে যান৷ পরে তাকে উদ্ধার চেষ্টা করলে অন্যজনও নিচে পড়ে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়৷

বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা জামাল সোহেল বার্তা২৪.কম-কে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

নলেজ, ভ্যালুজ ও স্কিলসের সমন্বয়ে হবে আমাদের শিক্ষা: শিক্ষামন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান কারিকুলামের মূলনীতি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, নলেজ, ভ্যালুজ ও স্কিলস এই তিনটির সমন্বয়ে হবে আমাদের শিক্ষা।

তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, সমতা, জাতীয়তাবোধ, কর্মমুখী শিক্ষা ও দক্ষতা প্রভৃতি ভ্যালুগুলো আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।

মঙ্গলবার (১৪ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন প্রজেক্টে’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

তিনি বলেন, নলেজ দেওয়ার জায়গায় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে, মূল্যবোধের জায়গায়তেও প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এক্সেস ও ইকুইটি (সমতা) নিশ্চিত করতে হবে। প্রক্রিয়াগত কারণে অথবা অর্থের অভাবে যেন কোনও শিক্ষার্থী ঝরে না পরে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট প্রজন্ম গড়তে শিক্ষায় যে রূপান্তরের কাজ চলছে তার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ১৬ বছর পর্যন্ত কম খরচে দেশের সকল শিশুর শিক্ষা নিশ্চিত করা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। বর্তমান কারিকুলামের শিখন পদ্বতি ভিন্ন। গতানুগতিক শিক্ষার ধারনা থেকে এই পদ্ধতি ভিন্ন। এটা অভিজ্ঞতানির্ভর।

মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, গতানুগতিক শিক্ষাকে যেভাবে দেখা হয়, শুধুমাত্র কিছু তথ্য আমরা মুখস্ত করবো, মেমোরি ড্রাইভেন প্রসেস সেখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। মুখস্ত নির্ভর শিক্ষা এবং স্মরণশক্তিকে মেধা বলে চালিয়ে দেওয়ার যে মানসিকতা সেখান থেকে বের হয়ে না আসতে পারলে আমরা স্মার্ট প্রজন্ম গড়ে তুলতে পারবো না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য উদ্ধৃত করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের বিশাল একটি অংশ যদি খুব কম বয়সে ঝরে পড়ে তাহলে তো আমরা স্মার্ট প্রজন্ম তৈরি করতে পারবো না। সেলক্ষ্যে আমরা অনেক উদ্যোগ নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের মাধ্যমে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে, যাতে করে শিক্ষার্থীরা অর্থের অভাবে ঝরে না পড়ে।

মূল্যায়ন নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যে প্রক্রিয়ায় আমরা মূল্যায়ন করছিলাম সেটিও একটি চ্যালেঞ্জ। মূল্যায়নের কারণে ও আর্থিক কারণে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর অ্যাবদুলেই সিক।

এছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগ, ইআরডি, আইএমইডি ও প্লানিং কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন সংস্থার প্রধান, বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও অংশীজন।

;