চট্টগ্রাম বন্দরে ২ দিনে পেঁয়াজ এলো ২২৬ টন
ভারত থেকে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ফলে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে সমুদ্রপথে পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ বাড়তে শুরু করেছে। গত দুইদিনে চীন ও পাকিস্তান থেকে ২২৬ টন পেঁয়াজ আনা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬৮ টন পেঁয়াজ এসেছে চীন থেকে। ব্যবসায়ীরা সমুদ্রপথে মিয়ানমার ও ভিয়েতনাম থেকে পেঁয়াজ আমদানির চেষ্টা চালাচ্ছে।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে বার্তা২৪.কম-কে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ড. মো. শাহ আলম।
তিনি বলেন, 'আমাদের চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে অল্প কিছু দেশ থেকে পেঁয়াজ আসে। যেমন- চীন, পাকিস্তান, তুরস্ক, মিসর, ভিয়েতনাম। বেশিরভাগ পেঁয়াজ কিন্তু ভারত থেকে স্থল বন্দর দিয়ে আসে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের খবরে সমুদ্রপথে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ ভিড়তে শুরু করেছে।'
'গত দুইদিনে চীন ও পাকিস্তান থেকে ২২৬ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। এর মধ্যে রোববার চীন থেকে ১৬৮ টন, আজকে (সোমবার) পাকিস্তান থেকে ৫৮ টন পেঁয়াজ বন্দরের এসেছে। এসব পেঁয়াজ বিকেলে খালাস করা হয়েছে।'
সমুদ্রপথে পেঁয়াজ আমদানি আরও বাড়বে জানিয়েছে তিনি বলেন, 'এখন আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা চেষ্টা করছে মারমা, ভিয়েতনাম এসব দেশ থেকে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ নিয়ে আসতে। আশা করা যাচ্ছে ভিড়টা সামনে আরও বাড়বে। এর আগে পাকিস্তান থেকে বেশি কিছুদিন আগে খুবই কম পরিমাণের পেঁয়াজ এসেছে। জুলাই থেকে গত ৬ মাসের মধ্যে বন্দর দিয়ে এখন পর্যন্ত বন্দর দিয়ে ২ হাজার ৪১৯ টন পেঁয়াজ দেশে এসেছে৷ এর মধ্যে ৯৯ ভাগ পেঁয়াজ চীন থেকেই আমদানি করা হয়েছে।'
এদিকে সোমবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলার আমদানিকারকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় করেছেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
এসময় তিনি ১২৫ টাকার বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি না করতে আমদানিকারক ব্যবসায়ীদের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।
জেলা প্রশাসক ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য,করে বলেন, ‘যে পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৯০ টাকা খরচে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, সেই পেঁয়াজ কোনো অবস্থাতেই ১২০ থেকে ১২৫ টাকার বেশি দামে বিক্রি হওয়ার কথা না। আমি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সঙ্গে কথা বলেছি। ১২৫ টাকার বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করা সমুচিত হবে না। যদিও দাম নির্ধারণের দায়িত্ব ও এখতিয়ার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের।’
গোডাউনের বাইরে অন্য কোথাও পেঁয়াজ পাওয়া গেলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি ব্যবসায়ীদের বলেন, ‘আপনাদের যে গোডাউন রয়েছে, সেটি কেবল আড়তদার, পাইকার এবং খুচরা বিক্রেতাদের জন্য প্রযোজ্য। আপনাদের যেসব গোডাউন আছে সেগুলোর তথ্য আমরা সংগ্রহ করব। সেই গোডাউনের বাইরে অন্য কোথাও পণ্য পাওয়া গেলে, তাহলে আমরা জব্দ করব। পাশাপাশি এই বিষয়ে কঠোর আইন প্রয়োগ করব। গোডাউনের বাইরে অন্য কোথাও পণ্য পাওয়া গেলে ধরে নেওয়া হবে অবৈধভাবে সেগুলো মজুত করা হয়েছে।’
কোনোভাবেই হাতে লেখা, অনানুষ্ঠানিক পত্রে (ডিও লেটার), টেলিফোনে কিংবা মুখে মুখে পণ্য বিক্রি করা যাবে না। ব্যবসায়ীদের পণ্যের ইনভয়েস (বিল) সংগ্রহ করার পরামর্শ দেন জেলা প্রশাসক।
দেশের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের অধিকাংশ আড়তে পেঁয়াজ নেই। যেসব আড়তে আছে সেগুলো ২১০ থেকে ২৯০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে। খুচরায় বাজারে ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে।