আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জান্তা বাহিনী এবং সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের সময় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ৩২৯ জন সদস্য বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন। এসব বিজিপি এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সমুদ্রপথে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সীমান্ত নিরাপত্তা বিষয়ে এক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকের পর পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিরা এ বৈঠকে যোগ দেন।
বাংলাদেশ সরকার শুরুতে আকাশপথে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে চেয়েছিল। এ বিষয়ে মিয়ানমার আপত্তি জানানোর কারণে শেষ পর্যন্ত জাহাজে করে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘মিয়ানমার বাহিনীর সদস্যদের কীভাবে ফিরিয়ে দেওয়া যায়, সেটি হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে তাদের আকাশপথে ফেরত পাঠানো গেলে সবচেয়ে ভালো হতো। কিন্তু মিয়ানমার সমুদ্রপথে তাদের নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ভাবছে।’
পররাষ্ট্রসচিব জানান, মিয়ানমার বাহিনীর সদস্যরা বর্তমানে বিজিবির তত্ত্বাবধানে আছেন। তাদের বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদি কোনো চিন্তা সরকারের নেই। তাদের সবাইকে নিরাপদে ও দ্রুততম সময়ে পাঠানোটাই সরকারের অগ্রাধিকার।
মাসুদ বিন মোমেন জানান, মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ আছে। দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মনোয়ার হোসেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ফেরত পাঠাতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সুয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘর্ষের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংকট। এর ভুক্তভোগী যেন বাংলাদেশকে হতে না হয়। সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের দুই নাগরিক নিহত হয়েছেন। মানুষ আতঙ্কে আছে। সরকার এর অবসান চায়।’
এর আগে বুধবার দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সদস্যদের ফেরত দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে পত্রালাপ চলছে। মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। যত দ্রুত সম্ভব তাদের ফেরত দেওয়া হবে।