সরকারের চেয়ে বাস মালিক-শ্রমিকরা বেশি ক্ষমতাবান: টিআইবি

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

আপদমস্তক দুর্নীতিতে জর্জরিত পরিবহন খাত। মালিক শ্রমিকদের আঁতাতে তারা বেশি ক্ষমতাবান দেখা যায়। সরকার এখানে তাদের থেকে ক্ষমতাহীন বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুরে মাইডাস সেন্টারে আয়োজিত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিজ্ঞাপন

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মালিক শ্রমিক সংগঠনগুলো ৮০ শতাংশ সরকারি দলের নিয়ন্ত্রণে, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রভাবের কারণে পুরো খাতটি জিম্মি হয়ে রয়েছে। এতে করে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন যাত্রীরা। তারা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বিআরটিএ সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে এ কথা পরিষ্কার ভাবেই বলা যায়। তারা তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।

রিপোর্টে বলা হয়, বাসের নিবন্ধন, সনদ প্রদান ও হালনাগাদে বাস প্রতি গড়ে ১৭ হাজার ৬১৯ টাকা ঘুষ দিতে হয়। এ খাত থেকে বছরে ৯০০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা চাঁদাবাজির প্রাক্কলনের কথা তুলে ধরা হয়।

বিজ্ঞাপন

দলীয় পরিচয়ে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী কর্তৃক সড়কে বছরে চাঁদাবাজি হয় ২৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা, সড়কে পার্কিংয়ের জন্য পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক কর্মীর নামে ৩৩ কোটি ৪৮ লাখ, মামলা এড়াতে ট্রাফিক পুলিশ ৮৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, টার্মিনালে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য মালিক ও শ্রমিক সংগঠন কর্তৃক অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের পরিমাণ ১২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা অবৈধভাবে আদায় করা হয়।

টিআইবির রিসার্চ ফেলো মোহাম্মদ নূরে আলম বলেন, সড়কে চলাচলকারী বাসের ৬০ দশমিক ২ শতাংশ ব্যক্তিমালিকানাধীন । বিআরটিএ এর ২০২৩ সালের রিপোর্ট অনুসারে ৯৮ দশমিক ৪ শতাংশ যাত্রী বেসরকারি পরিবহনে যাতায়াত করেন। মোট ব্যক্তিমালিকানাধীন বাসের সংখ্যা ৮০ হাজার ৫২১টি।

তিনি বলেন, গবেষণার উদ্দেশ্য হচ্ছে পরিবহন ব্যবসার শুদ্ধাচার পর্যালোচনা করা। গবেষণা শুরু হয় ২০২৩ সালের মে মাসে চলমান থাকে ফেব্রুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত। ২০২৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত জরিপ পরিচালনা করা হয়। ৫১টি বাস টার্মিনাল পর্যবেক্ষণ করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ বাসের নিবন্ধন নেই, ২৪ শতাংশ ফিটনেস নেই, ১৮.৫ ট্যাক্স টোকেন নেই, ২২ শতাংশ রুট পারমিট নেই বলে জানিয়েছে শ্রমিকরা। ৮২ শতাংশ শ্রমিককে কোন নিয়োগ দেওয়া হয়নি। দৈনিক গড়ে ১১ ঘণ্টা কাজ করতে হয়, সর্বোচ্চ ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করেন, তাদের কোন ওভারটাইম ভাতা দেওয়া হয় না।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ডিরেক্টর মোহাম্মদ বদিউজ্জামান, উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপনা) সুমাইয়া খায়ের।