উপকূলের সংগ্রামী নারী সোনামণি ও শেফালী বিবির গল্প



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: সোনামনি দাসি ও শেফালী বিবি

ছবি: সোনামনি দাসি ও শেফালী বিবি

  • Font increase
  • Font Decrease

উপকূলের ‘সিঙ্গেল মাদার’ হিসেবে স্বীকৃত সংগ্রামী নারীদের অনেকেই পরিবারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তারা একাই সন্তান লালন পালন করেন। এদের কারোর স্বামী মারা গেছেন, আবার কারোর স্বামী তাকে ছেড়ে গিয়ে অন্যত্র বিয়ে করেছেন। এদের কেউ কেউ দালালের খপ্পরে পড়ে বিদেশেও পাচার হয়েছেন। আবার কেউ স্বামী হারিয়ে পেয়েছেন ‘স্বামীখেকো’ বা ‘অপয়া' উপাধি। কারোর স্বামী দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত। উপকূলের এমনই দুই সংগ্রামী নারী সোনামনি দাসি (৬৫) ও শেফালী বিবি (৫৫)।

সোনামণি দাসি। বয়স প্রায় ষাটোর্ধ্ব ছুঁই ছুঁই। তিনি স্বামী হারিয়েছেন বলে সমাজ থেকে পেয়েছেন ‘স্বামীখেকো’ ও ‘অপয়া' উপাধি।

দুই স্বামী বাঘের পেটে যাওয়ার পর ‘স্বামীখেকো’ উপাধি পান সোনামণি দাসি

 

তিনি বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘ছোটবেলায় আমার বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছরের মাথায় ১৯৯৯ সালে সুন্দরবনে মাছ শিকারে গেলে স্বামীকে প্রাণ দিতে হয় বাঘের আক্রমণে। একমাস বয়সী শিশুসহ স্বামীর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় শাশুড়ি। সমাজ আমাকে ‘অপয়া' বলে আখ্যা দেয়। মনে হলো দোষ সবই আমার। যেন আমার অপরাধের কারণে স্বামীকে বাঘে নিয়েছে। এভাবে দিন যেতে থাকে। কিছুদিন পরে দেবরের সঙ্গে বিয়ে হয় আমার। মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে ২০০২ সালে দ্বিতীয় স্বামীও সুন্দরবনে মাছ  শিকরে গেলে তাকেও বাঘের আক্রমণে প্রাণ দিতে হয়। দুই স্বামী বাঘের পেটে যাওয়ার পর আমাকে ‘স্বামীখেকো’ উপাধি দেওয়া হয়। তখন সমাজে চলাফেরাই আমার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। সমাজ আমাকে অপয়া, অলক্ষ্মী বলে আখ্যা দেয়। শাশুড়ি আমাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন, যাতে সকালে ঘুম থেকে উঠে আমার মুখ দেখতে না হয়। শুরু হয় আমার একাকী জীবন।এভাবে চলতে থাকে দিন।’

সোনামনির প্রথম স্বামীর একটি সন্তান ও দ্বিতীয় স্বামীর তিনটি সন্তান। দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। ছেলে মেয়েরা সবাই বিবাহিত এবং আলাদা আলাদা। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেই মাকে তারাও দেখে না।

বর্তমানে সংসার কিভাবে চলে জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘ আমার আর সংসার! আমি একলা! বাজারের দোকান ঝাড়– দেই, নদীতে জাল টেনে মাছ-কাঁকড়া ধরি, ঘেরে মাটি কাটার কাজ করি। যখন যে কাজ পাই তা করি। এভাবে চলতিছে। এভাবে ছেলে মেয়েদের একাই লালন পালন করে বড় করেছি। এভাবেই চলছে জীবন।’

শুধু সোনামণি দাসি নয় এমন সংগ্রামী জীবনের আরেক নারী শেফালী বিবি (৫৫)। তিনি সুন্দরবনঘেঁষা দাতিনাখালী গ্রামের ছবেদ আলী গাজীর স্ত্রী। স্বামী থেকেও সিঙ্গেল মাদার এ নারীই পরিবারের প্রধান। স্বামী দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হওয়ায় একাই সংগ্রাম করে সংসারকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। 

কেওড়ার টক, ঝাল ও মিষ্টি আচার, জেলি এবং চকোলেট তৈরি করে চলে সংসার

 

তিনি বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘আমাদের এক টুকরো খাসজমিতে ছয় জনের বাস। স্বামী দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। কি করবো কোথায় যাবো কিভাবে সংসার চালাবো এ নিয়ে মাথায় চিন্তা। তাই নিজেই কিছু করার কথা ভাবতে থাকলাম। একপর্যায়ে উন্নয়ন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান বারসিকের পরামর্শে সুন্দরবনের ফল কেওড়ার টক, ঝাল ও মিষ্টি আচার, জেলি এবং চকোলেট তৈরি শুরু করি। একই সঙ্গে মোম দিয়ে শোপিস, মোমবাতিসহ বিভিন্ন পণ্য বানিয়ে বিক্রি করা শুরু করি। এতেই আমার ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়। অর্থনৈতিকভাবে সাফল্যের মুখ দেখি আমি।’

তিনি এখন অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারীদের দৃষ্টান্ত। শেফালী শুধু নিজের ভাগ্যের চাকাই ঘুরাননি, সুন্দরবনের সুরক্ষা ও বনজীবীদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য উপকূলীয় এলাকার বননির্ভর নারীদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন ‘দাতিনাখালী বনজীবী নারী উন্নয়ন সংগঠন’। শতাধিক নারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে করেছেন আত্মনির্ভরশীল। প্রশিক্ষিত এসব নারীও কেওড়ার চকলেট, আচার ও জেলি এবং সুন্দরবনের মধু বয়ামজাত করে বিক্রির মাধ্যমে উপার্জন করছেন অর্থ। এসব পণ্য বিক্রির লভ্যাংশ ব্যয় হচ্ছে ‘বাঘ বিধবা’ ও বনজীবী নারীদের ভাগ্য উন্নয়নে।

এ বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলা জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান মিসেস শাহানা হামিদ বার্তা২৪.কম’কে বলেন, উপকূলের নারীরা যেভাবে সংসারের হাল ধরছেন সেটি অবশ্যই প্রশংসনীয়। তবে নারীদের সরকারি সহায়তার মাধ্যমে এসব কাজে আরও উদ্যোগী করা প্রয়োজন। কারণ এরাই অর্থনীতি চাঙ্গা করার মূল হাতিয়ার। উপকূলে নারী জেলে শ্রমিক রয়েছেন এমন তথ্য সরকারের কাছে নেই। তাদের নিয়ে নতুন করে ভাবা দরকার।

তিনি আরও বলেন, উপকূলের নারীরা যেসব কাজে এগিয়ে, তা দেখতে হলে এখানে আসতে হবে। দেশের সামগ্রিক নারী উন্নয়নের ক্ষেত্রে এসব নারী অংশীদার। তাই সরকারের পক্ষ থেকে এসব নারীকে বিনা সুদে ঋণ সহায়তা দেওয়া উচিত।

জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে তিন সমন্বয়ক ডিবিতে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।

নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।

  • Font increase
  • Font Decrease

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামসহ তিনজনকে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে হেফাজতে নিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অপর দুই সমন্বয়ক হলেন- আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে ডিবির একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ডিবি বলছে, নিরাপত্তা এবং জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে তিন সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে।

তারা তিনজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

;

কারফিউ তুলে নেয়ার ব্যাপারে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, জনজীবন স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত কারফিউ নিয়ে সবাইকে একটু অপেক্ষা করতে হবে। কারফিউ শিথিল করা যায় কিনা, তা আমরা দেখছি।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।  

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কারফিউ শিথিল করা যায় কিনা আমরা দেখছি। পুলিশ বিজিবি, সেনাবাহিনী কাজ করছে। জনজীবন স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করতে হবে। জনগণকে ধৈর্য্য ধরতে হবে। এ বিষয়ে শনিবার (২৭ জুলাই) আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলেও জানান তিনি।

এ সময় আন্দোলনের নামে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, দেশের এই ক্ষতির দায় কে নেবে? বিএনপি বলছে সহিংসতার মধ্যে তারা নেই। তাহলে কে করেছে? এটা জনগণের প্রশ্ন।

কোটা আন্দোলনকারীদের আটকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোটা আন্দোলনকারী নেতারা নিজেরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাদের নিরাপত্তার জন্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ডাকা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সারাদেশে গত ১৯ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা থেকে কারফিউ জারি করে সরকার। এসময় সেনাবাহিনীও মোতায়েন করা হয়।

পরবর্তীতে নির্ধারিত সময়ের জন্য কারফিউ শিথিল করা হলেও এখনো পুরোপুরি এখন তুলে নেয়া হয়নি।

;

যেসব অঞ্চলে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
যেসব অঞ্চলে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

যেসব অঞ্চলে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের আট বিভাগেই মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

এতে বলা হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্ট লঘুচাপ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

এ অবস্থায় খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

একইসঙ্গে খুলনা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে।

এ সময় টাঙ্গাইল, সিলেট ও চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু তাপপ্রবাহ কিছু কিছু জায়গায় প্রশমিত হতে পারে। 

বর্ধিত ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

;

বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর নতুন বার্তা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার কারণে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার আগে ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার কর্মপন্থা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এক বার্তায় জানান, উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নিরাপত্তা ও সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করে পাঠদান শুরু করার জন্যে ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের প্রতি অনুরোধ জানাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা শুরু হওয়ায় গত ১৬ জুলাই রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে দেশের সব মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মাদ্রাসা ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

একই দিন রাতে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

;