‘আয়-বৈষম্য কমাতে দারিদ্র্যের উৎসমুখে মনোযোগ দিতেই হবে’

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান বলেছেন, দেশে মাথাপিছু আয় বাড়লেও আয় বৈষম্যও বেড়েছে। এই বৈষম্য কমাতে চরাঞ্চলের মতো দারিদ্র্যের উৎসমুখগুলোর দিকে বিশেষ নীতির মনোযোগ দিতেই হবে।

বুুধবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘চরাঞ্চলের টেকসই অবকাঠামো: বর্তমান প্রেক্ষিত, প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণের পথ’ শীর্ষক সেমিনারের মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনে এসব কথা বলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ড সরকারের যৌথ অর্থায়নে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বগুড়া), সুইস কন্ট্যাক্ট এবং উন্নয়ন সমন্বয় (ন্যাশনাল চর অ্যালায়েন্স এর পক্ষে) আয়োজিত সেমিনারে ড. আতিউর বলেন, ‘দেশে চরাঞ্চলে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ বাস করেন। তাদের জীবনমান উন্নয়নে বিগত দেড় দশক ধরে বিশেষ নীতি মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। চরের উন্নয়নের সঙ্গে দেশের সামগ্রিক ভবিষ্যত উন্নয়ন জড়িত।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক এই গভর্নর বলেন, ‘মনে রাখা চাই, আমাদের মাথাপিছু আয় বাড়লেও আয় বৈষম্যও কিন্তু বেড়েছে। এই বৈষম্য কমাতে হলে চরের মতো প্রোভার্টি পকেটসগুলোর দিকে 'বিশেষ নীতি' মনোযোগ দিতেই হবে। চরের মতো দারিদ্রের এই পকেটসগুলো বন্ধ করতে দান-অনুদানের ওপর নির্ভর করার সুযোগ নেই। তাদের অর্থনৈতিকভাবে ক্ষমতায়িত করতে হবে, যাতে তারা নিজেদের শক্তিতে দারিদ্র্য  থেকে বের হতে পারেন।’

বিজ্ঞাপন

‘চরের জন্য বরাদ্দ মাত্র ৫শ ৭৮ কোটি টাকা’ উল্লেখ করে ড. রহমান বলেন, ‘এই বরাদ্দের বেশির ভাগ খরচ হয় ভৌত অবকাঠামো খাতে। কিন্তু টেকসই উন্নয়নে উৎপাদিত কৃষিপণ্য সংরক্ষণাগার, সবুজ জ্বালানি প্রসারের মতো বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করা জরুরি।’ চরের টেকসই উন্নয়নে প্রাইভেট সেক্টরকেও সেখানে নিয়ে যাওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে বলেও মন্তব্য করেন এই উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার, পল্লীউন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দার মধ্যেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ঠিক আছে। যদিও ফিক্সড আয়ের মানুষেরা কষ্টে আছেন। সরকার সব সংকটের কথা মাথায় রেখেই কাজ করছে।’ মন্ত্রী চরাঞ্চলের মানুষের টেকসই উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের প্রকল্প নেওয়ারও তাগিদ দেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লীউন্নয়ন ও সমবায়প্রতিমন্ত্রী আবদুল ওয়াদুদ দারা এবং এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মো. আলী আখতার হোসেন। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন- সুইস কন্ট্যাক্ট বাংলাদেশ-এর এমফোরসি প্রকল্পের টিম লিডার আব্দুল আউয়াল। প্রকল্পের বিবরণ তুলে ধরেন এমফোরসি প্রকল্প পরিচালক ড. আবদুল মজিদ প্রামাণিক। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন রুরাল ডেভেলপমেন্ট একাডেমি বগুড়ার মহাপরিচালক মো. খুরশীদ ইকবাল রেজভী, সুইস কন্ট্যাক্ট-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর মুজিবুল হাসান সেজান।

এতে সভাপতিত্ব করেন পল্লীউন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সিনিয়র সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগম। উপস্থিত ছিলেন পল্লীউন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. হুমায়রা সুলতানা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান, ক্লাইমেট রেজিলেন্ট লোকাল ইনফ্র্যাস্টাকচার সেন্টারের পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন, এলজিইডির প্রকল্প পরিচালক মো. আনিসুল ওয়াহাব খান প্রমুখ।