নরসিংদীতে গ্রামবাসীর দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৯, আহত ১৫

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

 

নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালীতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৯ জনসহ আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৫ জন।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৩ মার্চ) সকালে সদর উপজেলার চরাঞ্চলের আলোকবালী ইউনিয়নের বাখরনগর, মুরাদনগর ও বকশালীপুর গ্রামে একযোগে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. আসাদ উল্লাহ সমর্থকদের সাথে বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দিপুর সমর্থকদের মাঝে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিজ্ঞাপন

আহতদের নরসিংদী সদর ও জেলা হাসপাতালসহ ও ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আহতরা হলেন, আব্দুর রহমান (২২), মনির উদ্দিন (৫৩), মাহফুজ (২০), বজলুর রহমান (৪৫), শীতল মিয়া (৫০), খোকা মিয়া (৬৫), সজিব (২৫), ওবায়দুল (২৬), আল মাসুদ (১৮) ও মুরাদ মিয়া (২২)।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি এড. আসাদ উল্লাহ সমর্থদের সাথে আলোকবালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দীপুর সমর্থকদের বিরোধ চলে আসছিল।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দিপু আওয়ামী লীগের নৌকার পক্ষে হয়ে এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি এড, আশাদ উল্লাহ স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় বিরোধ আরও বেড়ে যায়। এ নিয়ে দফায় দফায় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হলে নৌকার সমর্থক দীপুর লোকজন আসাদ উল্লাহ গ্রুপের ১৫-২০ জন সমর্থককে এলাকা ছাড়া করে।

বুধবার সকালে এলাকা ছাড়া হওয়া আসাদ উল্লাহর সমর্থকরা বাখরনগর গ্রামে ফিরে এলে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় একযোগে তিন গ্রামের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়। রাবার বুলেটবিদ্ধসহ মারধরে আহতদের নরসিংদী সদর হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এসময় একাধিক বাড়ি ঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. আসাদ উল্লাহ বলেন, আলোকবালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সরকার হত্যার আত্মস্বীকৃত আসামি ও ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল কাইয়ুম, সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু জোট বেধে আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালিয়ে ৬ জনকে গুলি করে আহত করেছে। আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুজ্জামানের নির্বাচন করেছিলাম। নির্বাচনের দিন থেকে ২০ কর্মীকে গ্রাম ছাড়া করেছে। এখনও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে হামলা করে আমাদের কর্মী সমর্থকদের এলাকা ছাড়া করছে।

দেলোয়ার হোসেন দিপুর সমর্থক ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোমেন মিয়া জানান, এড. আসাদ উল্লাহ তার আইন পেশাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে আইনের কায়দায় ফেলে দীর্ঘদিন ধরে হয়রানি করে আসছে। গত সপ্তাহে আমার নামেও মিথ্যা অপহরণ মামলা দিয়েছেন। তার মামলা ও অত্যাচার থেকে বাচঁতে সাধারণ লোকজন তাদের প্রতিহত করে এলাকা থেকে বের করে দেয়।

নরসিংদী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভীর আহমেদ জানান, ঘটনার পর থেকে এলাকায় পুলিশ অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। এ ঘটনায় কোনোপক্ষ লিখিত অভিযোগ দেয়নি, কাউকে আটক করা যায়নি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।