‘সরকারি চাল পাচ্ছি তাই খেয়ে রোজা দিতে পারছি’

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

রাজধানীর ওয়ারলেস টিএনটি এলাকার বাসিন্দা হাসি বেগম। জীবিকার তাগিদে অন্যের বাসায় কাজ করেন তিনি। দুইটি বাড়িতে কাজ করে মাসে আয় হয় সাড়ে ৬ হাজার টাকা।

তবে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন দামে মাত্র সাড়ে ৬ হাজার টাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খান তিনি। তাই প্রতি সপ্তাহে লাইন ধরে হাসি বেগম ওএমএস এর চাল, আটা ও টিসিবির পণ্য সংগ্রহ করেন। এতে অল্প মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পাওয়ায় স্বাচ্ছ্যন্দে সংসার চালাচ্ছেন পঞ্চাশোর্ধ এই বৃদ্ধা। 

বিজ্ঞাপন

শুধু হাসি বেগম নয়, একই এলাকার রচনা আক্তারসহ টিসিবি এবং ওএমএস পণ্য দিয়ে জীবিকা চালানোর গল্পটা একই রকম রাজধানী ঢাকার লাখো পরিবারের। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের সাথে তাল মেলাতে না পেরে প্রতিনিয়ত টিসিবি এবং ওএমএস পণ্য সংগ্রহে রাজধানীর প্রায় ১৮৮টি পয়েন্টে ভিড় করেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু ঢাকাতেই নয়টি এআরওডিআর এরিয়ার আওতায় ১০০টি ট্রাকে প্রতিদিন প্রায় ১ লাখ মেট্রিক টন চাল ও ১৮০ মেট্রিক টন আটা ন্যায্যমূল্যে বিতরণ করা হয়। এছাড়া রমজান মাসকে ঘিরে সারাদেশে প্রায় ১ কোটি পরিবারকে টিসিবির আওতায় চাল, ডাল, চিনি, খেজুর ও তৈল বিতরণ করা হচ্ছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষরা কিছুটা হলেও রক্ষা পাচ্ছে ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের রোষানল থেকে।

বিজ্ঞাপন

হাসি বেগম বলেন, 'বাজারে চাল কিনতে গেলে ৫০ টাকার নিচে চাল পাওয়া যায়না। রমজান মাসে ইফতার কিনতে গেলে তো মাথায় হাত দিতে হয়। সরকারি চাল পাচ্ছি তাই খেয়ে রোজা দিতে পারছি । আটা দিয়ে ইফতার বানাতে পারছি। তা না হলে আমাদের অনেক কষ্ট হতো।' 

রচনা আক্তার নামের এক ওএমএস সুবিধাভোগী বলেন, 'আমরা নিয়মিত পাই তবে মাসের মাঝে মাঝে সমস্যা হয়। কিন্তু এই চাল ডাল দিয়ে আমাদের ভালোই চলে।' 

পান্থপথ এলাকার পান ব্যবসায়ী আজম বলেন, 'আমাদের এখানে কয়েকদিন পরপর টিসিবি পণ্য দেয়। এতে আমার পরিবারের যা খরচ তা ঠিক ভাবেই চালাতে পারছি। বাজার থেকে কিনলে তো টাকা ডাবল লাগে। পেঁয়াজ রসুন যদি দিত ভালো হতো।' 


ওএমএস পণ্য বিতরণ কার্যক্রমের মগবাজার, মালিবাগ, রামপুরা এলাকার তদারককারী ফারজানা আক্তার বলেন, 'নিয়মিতভাবে যাতে ওএমএসের পণ্য বিতরণ হয় সে বিষয়টি আমরা খেয়াল রাখি। গ্রাহকের কোন অভিযোগ পেলে সাথে সাথে তার ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করি।' 

তবে রাজধানীর সাতরাস্তা, ডেমরা রোড,দক্ষিণগাঁও ব্রিজেসহ বেশ কিছু এলাকায় নিয়মিত ওএমএস পণ্য বিতরণ হয় না বলে অভিযোগ আছে। কিন্তু এসব অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা রেশনিং এর সহকারী নিনয়ন্ত্রক নাসরিস সুলতানা লিপি।

তিনি বলেন, 'আমাদের প্রতিটি ব্যানারে ফোন নম্বর দেওয়া আছে। যে কেউ অভিযোগ করলে আমরা দ্রুততার সাথে ব্যবস্থা নিব।'