জনবল সংকটে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,ঠাকুরগাঁও
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে পাঁচটি উপজেলার মধ্যে চারটি উপজেলা ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা। সদর উপজেলার সাথে দেশের সবশেষ জেলা পঞ্চগড়। আলাদা কোন জেলার সাথে সহজ কোন সংযোগ না থাকার ফলে চিকিৎসার জন্য একমাত্র আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল।

পার্শ্ববর্তী জেলা পঞ্চগড়, নীলফামারী ও দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ ও খানসামা উপজেলা থেকেও মানুষ চিকিৎসা নিতে ছুটে আসেন এখানে। কিন্তু ১০০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক সদর হাসপাতালকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল করলেও আজও জনবল সংকটে ভুগছে হাসপাতালটি। এতে চিকিৎসা পেতে নানা ভোগান্তি ও বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের।  

বিজ্ঞাপন

হাসপাতাল সূত্র বলছে, হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১৩ হাজার থেকে ১৫ হাজার মানুষের যাতায়াত ঘটে। সেই সাথে গড়ে ভর্তি থাকেন ৫০০ থেকে ৬০০ রোগী ও জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা নেন ৮০০ থেকে ১০০০ জন মানুষ। একদিকে হাসপাতালের ধারণ ক্ষমতার বাইরে রোগীর সংখ্যা আসায় চিকিৎসা সেবা দিতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। শয্যার বিপরীতে রোগী বেশি হওয়ায় অধিকাংশ রোগীকে সেবা নিতে হচ্ছে বারান্দায়। 

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জনবল সংকট, দালালদের দৌরাত্ম্য, বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট, ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য সহ নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের।

বিজ্ঞাপন

জেলার বালীয়াডাঙ্গী উপজেলার রত্নাই গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা গরু ব্যবসায়ী আলী আকবর বলেন, তিনদিন ধরে হাসপাতালে ছেলে কে নিয়ে ভর্তি আছি। বেডে জায়গা না পেয়ে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছি। একটা বেডে তিন চারজন করে রোগী ভর্তি আছে। মেঝেতে থাকায় হাসপাতাল থেকে সুযোগ সুবিধা পাচ্ছিনা। সব ঔষধ বাইরে থেকে কিনে নিতে হচ্ছে। কেউ কেউ দালালদের কাছে টাকা দিলে সব ধরনের ঔষধ পাচ্ছে। বেড সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি যারা বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

নিজের অসুস্থতাজনিত কারণে চিকিৎসা নিতে আসা স্কুল শিক্ষক শাহজাহান আলী বলেন, রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় হাসপাতালে চাপ হয়েছে এটা সত্য। তবে হাসপাতালের ভেতরে ব্যবস্থাপনা একেবারে নাজেহাল। আমরা সেবার জন্য এখানে আসি। কিন্তু সঠিক সময়ে আমরা প্রাপ্য সেবা টুকু পাইনা৷ এখানে ভর্তি হয়ে থাকলেও বিশুদ্ধ খাবার পানি আশপাশে পাওয়া যায়না। আমরা চাই এগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করা হোক।

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা সর্বোচ্চ ভালো সেবা দিয়ে থাকি। সে কারণে রোগীর চাপ অনেক বেশি। হাসপাতালে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হলেও জনবল সংকট রয়েছে। ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের আলাদা সময় বেধে দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে তারা থাকলে আমরা ব্যবস্থা নেব। এ ছাড়াও দালালের মাধ্যমে ঔষধ বিক্রয়ের বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব। 

ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন ডা. নুর নেওয়াজ আহমেদ বলেন, কিছু জনবল সংকট রয়েছে। এটি সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি যাতে ভালো সেবা সাধারণ মানুষকে পৌঁছে দেওয়া যায়।