রংপুরের পীরগাছায় সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম মিলনের ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এসময় তাকে বাচাতে তার বোন এগিয়ে আসলে তাকেও মারপিটসহ শ্লীলতাহানী করা হয়।
এ ঘটনায় সাংবাদিক মিলনের বোন ফিরোজা খাতুন বাদী হয়ে ছয় জনের নাম উল্লেখসহ চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন পীরগাছা থানার ওসি সুশান্ত কুমার সরকার। এর আগে সোমবার (০১ এপ্রিল) মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন- উপজেলার পারুল ইউনিয়নের সুন্দর গ্রামের সাইফুল ইসলাম (৩৮), আজিজুল ইসলাম(৫৫), তুষার মিয়া (৩০), শহিদুল ইসলাম (৩০), শরীফ সুন্দরের আজাদুল ইসলাম (৪৫) ও ত্রিপুর গ্রামের সুলতান হোসেন (৩০)।
মামলার এজাহার ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাংবাদিক মিলন দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিন পত্রিকার পীরগাছা প্রতিনিধি। তার পৈত্রিক সম্পত্তির উপর রংপুর অঞ্চলে ভূউপরিস্থ পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে ক্ষুদ্রসেচ উন্নয়ন ও সেচ দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় গভীর নলকূপ স্থাপন করে বিএডিসি। এ জন্য এক হাজার মিটার ভূগর্ভস্থ সেচনালা নির্মাণ করা হয়। পরে আজিজুল ইসলাম নামে একজনকে এটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে ওই স্কিমে তার নিজস্ব কোনো জমি নেই। এছাড়া তিনি অন্যত্র বিএডিসির একাধিক গভীর নলকূপ পরিচালনা করে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় পৈত্রিক সম্পত্তিতে স্থাপিত গভীর নলকূপটি পরিচালনার দায়িত্ব চেয়ে বিএডিসি, রংপুর (ক্ষুদ্রসেচ) সার্কেল বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মিলন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে মিলন ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকি দেয় আজিজুল ইসলামসহ তার লোকজন। পরে গত ১৭ মার্চ জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পীরগাছা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন মিলন। এতে তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়।
গত বৃহস্পতিবার আকস্মিকভাবে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তে আসে বিএডিসি'র দুই কর্মকর্তা। এ সময় মিলন সেখানে গেলে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায় আজিজুল ও তার লোকজন। ভাইকে বাঁচাতে তার বোন ফিরোজা খাতুন এগিয়ে আসলে তাকেও লোহার রড ও লাঠিসোঁটা দিয়ে বেদম পিটুনি দেওয়া হয়। এতে তাদের হাতে, পায়ে, বুকে, পিঠে, কানে, গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। একপর্যায়ে তার শ্লীলতাহানী করা হয় বলে অভিযোগ করেন ফিরোজা খাতুন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মিলন ও তার বোন ফিরোজা খাতুনকে উদ্ধার করে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায় স্থানীয়রা।
এ ঘটনায় ছয় জনের নাম উল্লেখসহ চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন ফিরোজা খাতুন। তবে পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতা র করতে পারেনি।
সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম মিলন বলেন, বিএডিসির কর্মকর্তারা আমার অভিযোগের তদন্তে এসেছিল কিন্তু আমাকে জানায়নি। তাদের উপস্থিতিতে আমাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করা হয়। আমি হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
মিলনের বোন ও মামলার বাদী ফিরোজা খাতুন বলেন, মামলা রেকর্ড হলেও আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানোসহ মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে। অনেক লোকের সামনে আমার শ্লীলতাহানী করা হয়েছে। আমি দোষীদের বিচার চাই।
পীরগাছা থানার ওসি সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, মামলায় যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।