রাষ্ট্রপতি পরিচয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে বদলির তদবির, ডিবির হাতে আটক

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রাষ্ট্রপতি পরিচয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে বদলির তদবির, ডিবির হাতে আটক

রাষ্ট্রপতি পরিচয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে বদলির তদবির, ডিবির হাতে আটক

 

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের মোবাইলে সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির পরিচয় দিয়ে একটি নম্বর থেকে একজন নার্সকে বদলির সুপারিশের জন্য দুটি এসএমএস করা হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মেসেজ দুটি ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের কাছে পাঠান। ডিবি বিষয়টি তদন্ত করে দেখে- রাষ্ট্রপতির মোবাইল থেকে অথবা রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মোবাইলে কোনো মেসেজ দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ নার্সকে বদলির সুপারিশের মেসেজটি ভুয়া

বিজ্ঞাপন

তদন্তের এক পর্যায়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে ভুয়া রাষ্ট্রপতি পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তিকে পাবনার সুজানগর এলাকা থেকে আটক করা হয়। তার নাম মো. সিরাজ। ভুয়া রাষ্ট্রপতি পরিচয় দেওয়া সিরাজকে যখন গ্রেফতার করতে ডিবি পুলিশ তার বাসায় যায় তখন তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে এসব কথা জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, সম্প্রতি সিলেট এম.এ.জি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স মোসা. নবীনা খাতুন ও মোসা. পারভীন আক্তারের নাম দিয়ে আটক সিরাজ রাষ্ট্রপতি পরিচয় দিয়ে তাদের অন্যত্র বদলির জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের মোবাইলে মেসেজ পাঠান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মেসেজ দুটি আমার কাছে পাঠান। ডিবি বিষয়টি তদন্ত করে দেখে- রাষ্ট্রপতির মোবাইল থেকে অথবা রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মোবাইলে কোনো মেসেজ দেওয়া হয়নি।

এর আগেও তিনি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এপিএস-২, মন্ত্রী, এমপি এবং বড় বড় ব্যবসায়ী পরিচয়ে প্রতারণাকারী চক্রের অনেক সদস্যকে ডিবি সাইবার আইনের আওতায় নিয়ে এসেছিল।

হারুন অর রশীদ বলেন, ভুয়া রাষ্ট্রপতির পরিচয় দিয়ে আটক সিরাজ একাধিক এমপির ভুয়া ডিও লেটার দিয়েছেন। ডিও লেটার দিয়ে তিনি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বদলির জন্য তদবির করেছেন। সিরাজ অষ্টম শ্রেণি পাস। তিনি বিয়ে করেছেন তিনটি। এর মধ্যে একজন নার্স, একজন শিক্ষক এবং ৮ মাস আগে তিনি আরেকটি নতুন বিয়ে করেছেন।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপতি ছাড়াও সিরাজ বিভিন্ন এমপি ও মন্ত্রীদের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা করেছেন। প্রতারণাই তার পেশা। অষ্টম শ্রেণি পাশ হলেও তিনি প্রতারণার বিষয়টি ভালোভাবে লব্ধ করেছেন।

ডিবিপ্রধান বলেন, সিম কেনার পর ট্রুকলারে নম্বর সেভ করতো রাষ্ট্রপতির নামে। তদবিরের জন্য যে সিম দিয়ে সিরাজ তদবিরের জন্য মেসেজ দিতো সেই সিমটি পানিতে ফেলে দিতো। এরপর তিনি থানায় জিডি করেন তার সিম হারিয়ে গেছে। নতুন সিম কিনে আবার সে একইভাবে প্রতারণা করে ফেলে দিয়ে আবার সিম কিনে প্রতারণা করতেন। সিম পানিতে ফেলে জিডি করার অর্থ হলো- পুলিশ তাকে ধরলে তিনি বলতেন তার সিম হারিয়ে গেছে, সে জিডিও করেছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

সিরাজ রাষ্ট্রপতির নাম কেন ব্যবহার করলেন এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, রিমান্ডে এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তিনি কেন রাষ্ট্রপতির নাম ব্যবহার করেছেন।

হারুন অর রশীদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী ছাড়া এমপি, মন্ত্রী এমনকি সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির নাম ব্যবহার করে যারা প্রতারণা করেছেন এমন সবাইকে ডিবি আইনের আওতায় এনেছে।

ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের ইনচার্জ এডিসি মো. সাইফুর রহমান আজদের নেতৃতে অভিযানটি পরিচালনা হয় বলেও জানান তিনি।