খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, চলমান আমন সংগ্রহ মৌসুমে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান-চাল সরবরাহ করলে কৃষক ও মিলারদের লোকসানের সুযোগ নেই। কারণ উৎপাদন খরচের সাথে কিছু লাভ যুক্ত করেই সরকারি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি এই মূল্য নির্ধারন করেছে। আগামী মৌসুমে এই দাম আবারও সমন্বয় করা হবে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে সিরাজগঞ্জে রাজশাহী বিভাগের সকল জেলা প্রশাসক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের সাথে এক মতবিনিময় সভা শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি একথা বলেন।
চলতি মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা পূরণের প্রত্যাশা করে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ধান-চাল সংগ্রহের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা গড়ে তোলা হচ্ছে। যাতে দাম বাড়লে ওএমএস ও ভিজিডিসহ বিভিন্নভাবে এই ধান-চাল বাজারে সরবরাহ করে দাম স্থিতিশীল রাখা যায়।
তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় চালের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে- ৯২ হাজার ৭২৯ মেট্রিক টন, ধান ৫৩ হাজার ৩৫৯ মেট্রিক টন ও আতব চাল ১৩ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন। এখন পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে চাল ২৮ হাজার ৫৫ মেট্রিক টন ও ধান ২০৬ মেট্রিক টন। এখন পর্যন্ত ৮ জেলা থেকে লক্ষ্যমাত্রার ৩০ শতাংশ অর্জিত হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সার্কিট হাউজে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খন্দকার আজিম আহম্মদের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আব্দুল খালেক, রাজশাহী বিভাগীয় আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাইন উদ্দিন ও সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় গত কয়েক দিনে তীব্র শীত, ঘন কুয়াশা ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এতে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগ। প্রচন্ড ঠান্ডায় শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তীব্র ঠান্ডায় চরম বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষরা।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে শীতের সাথে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। এতে জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে। একদিকে শীত তার ওপর বৃষ্টিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না।
কাঁঠালিয়ার জমাদ্দার হাটের হোটেল ব্যবসায়ী মো. সেলিম ঘরামি জানান, কয়েকদিন ধরে প্রচুর শীত থাকায় এবং গতকাল রাত থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় বাজারে তেমন মানুষ আসে না। তাই বেচা-বিক্রি খুবই কম।
শ্রমিক মো. স্বপন খান বলেন, আমি একজন দিনমজুর, বাজার টেনে সংসার চালাই, সকাল থেকে বৃষ্টি ও শীত থাকায় বাজারে কোন মানুষ আসে নাই। তাই বাজার টানতে পারি নাই, টাকাও পাই নাই, বাজারও করতে পারিনি।
রিকশাচালক মো. তোকাব হাওলাদার বলেন, সকাল থেকে বৃষ্টি থাকায় কোন আয়-রোজগার করতে পারি নাই। ঘরে অসুস্থ স্ত্রী তার জন্য প্রতিদিন ওষুধ নিতে হয়। আল্লাহ জানে আজকে ওষুধ নিতে পারব কিনা।
কাঁঠালিয়া সদর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের চিকিৎসক সোহাগ মজুমদার জানান, তীব্র শীত ও বৃষ্টি থাকায় শিশু-বৃদ্ধরা ঠান্ডাজনিত রোগ বিশেষ করে কাশি ও সর্দি জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে।
বিদেশের বন্দরে অবস্থানের সময় ১৩টি জাহাজ থেকে পালিয়ে যাওয়া ১৯ বাংলাদেশি নাবিকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন নৌ আদালত।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর মোহাম্মদ মাকসুদ আলমের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে ১৯ জন নাবিকের নাম ও ঠিকানা প্রকাশ করে জানানো হয়, জাহাজগুলো বিদেশের বিভিন্ন বন্দরে অবস্থানকালে তারা বন্দর ত্যাগ করে আর জাহাজে ফেরেননি।
যাদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে তারা হলেন— মো. সোহানুর রহমান, মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, আবু সুফিয়ান, মোস্তফা কামাল, ইসকান্দার মিজি, মো. সানাউল্লাহ, মোহাম্মদ আনোয়ারুজ্জামান, মো. আব্দুল কুদ্দুস, আমিনুল ইসলাম, ওপি হোসেন, মো. রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ শেখ আলম, মো. মেহেদী হাসান, মো. আল আমিন, মো. ইমাম হোসেন, এনামুল হক, মো. ইমরুল হোসেন এবং মোহাম্মদ ইব্রাহীম।
এদের মধ্যে নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের পাঁচজন করে এবং ফেনীর দুজন রয়েছেন। এ ছাড়া সাতটি জেলার সাতজন নাবিক রয়েছেন। এ নাবিকেরা গত তিন বছরে বিদেশে পালিয়েছেন।
বিগত সময়ে পুলিশ দলীয় স্বার্থ উদ্ধারে বড় ধরনের অপরাধ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। এতে পুলিশ বাহিনী লজ্জিত বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, পুলিশে যেন আর রাজনৈতিক কুপ্রভাবে না পড়ে। এজন্য পুলিশ রিফর্মের বিষয়ে কাজ চলছে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন হেডকোয়ার্টার্স’র কনফারেন্স হল রুমে সিলেট বিভাগের সব ইউনিটের কর্মরত অফিসারদের সাথে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশব্যাপী বিভিন্ন মামলার ক্ষেত্রে অসাধু ব্যক্তিরা সুবিধা নিয়েছে। নিরীহ যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের গ্রেফতার করা হবে না। হয়রানি এড়াতে খোঁজ নিয়ে তাদের পুলিশের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর লুট হওয়া ছয় হাজার অস্ত্রের মধ্য এখনো দেড় হাজার অস্ত্র উদ্ধার হয়নি, বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, রাজনীতিবিদরা হলেন আমাদের কান্ডারী। আল্টিমেটলি তারাই দেশটা চালাবেন। রাজনৈতিক কুপ্রভাব যেন আর না আসে। সুপ্রভাবটা যেন আসে। কুপ্রভাব থেকে যেন আমরা মুক্ত হতে পারি। গত ১৫ বছরে দলীয় স্বার্থে পুলিশ এমন কোনো অন্যায় নাই যা করে নাই। এসব ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক।
মতবিনিময় সভায় র্যাব’র অতিরিক্ত আইজিপি একেএম শহিদুর রহমান, সিলেট রেঞ্জ’র ডিআইজি মো.মুশফেকুর রহমান, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিমসহ পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।