বৈশাখী মেলার নামে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের দায়সারা আয়োজন, বলছেন নারী উদ্যোক্তারা

  • আবদু রশিদ মানিক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবিঃ বার্তা২৪.কম

ছবিঃ বার্তা২৪.কম

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন আয়োজন করেছে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা। মাত্র ১০টি স্টল দিয়ে অব্যবস্থাপনায় ভরা দায়সারা বৈশাখী মেলা আয়োজনের অভিযোগ উঠেছে জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে। তাই তিনদিনের মেলা শেষ না হতেই বেশিরভাগ স্টল গুটিয়ে নিয়ে গেছে উদ্যোক্তারা। বৈশাখী মেলা নাম দিলেও বৈশাখী মেলার বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য ছিলো না মেলায়।

রোববার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে কক্সবাজারের পাবলিক লাইব্রেরির শহিদ দৌলত ময়দানে আয়োজিত মেলা প্রাঙ্গনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ১০টি স্টলের মধ্যে ৪টি স্টল দুপুরের মধ্যেই গুটিয়ে নিয়েছে। বাকি স্টলগুলোও গুটিয়ে নিচ্ছে উদ্যোক্তারা।

বিজ্ঞাপন

উদ্যোক্তারা জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছেন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন বৈশাখী মেলার নামে তাদের সাথে প্রতারণা করেছে।

ফাতেমা বুটিকস নামের প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী নারী উদ্যোক্তা ফাতেমা জান্নাত বার্তা২৪.কম-কে বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাঁকজমকপূর্ণ হবে বলেছে বলে স্টল নিয়ে আমি বিপাকে পড়েছি। সকাল থেকে আমি এবং আমার স্বামীসহ ৫ জন মানুষ পরিশ্রম করেছি। ১ হাজার টাকার মাত্র বিক্রি হয়েছে। কিন্তু খাবার, গাড়িভাড়া খরচ হয়েছে ১ হাজার টাকারও বেশি। কক্সবাজার জেলা প্রশাসন আয়োজন করেছে বলে বিশ্বাস নিয়ে মেলায় এসেছি। আমাদের সাথে একপ্রকার প্রতারণা করা হল।

বিজ্ঞাপন

ফাতেমা জান্নাতের মতো অন্যান্য নারী উদ্যোক্তাদেরও একই অবস্থা। সবাই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলা প্রশাসনের উপর।

সালসাস কালেকশন এন্ড ফুডস এর নারী উদ্যোক্তা শামিমা আক্তার মিনা বলেন, কোনরকম দায়সারা আয়োজন করে আমাদের হয়রানি করা হলো। এত কষ্ট করে সকল জিনিসপত্র নিয়ে মেলায় আসলাম কিন্তু প্রথমদিনের যে অবস্থা কাল থেকে আর মেলায় আসতে পারব না। রাত ৮টা পর্যন্ত স্টল খোলা রাখার কথা থাকলেও কোন লাইটের ব্যবস্থা করা হয়নি। এছাড়া সাংস্কৃতিক আয়োজন আজকেই শেষ করে দিয়েছে। মঞ্চও গুটিয়ে নিয়েছে। তাহলে মেলা কিভাবে চলবে বলেন!

হোমাইরাস রেসিপির আরেক নারী উদ্যোক্তা সুরা খাতুন বলেন, ৩ দিনের জন্য খাবার তৈরি করে মেলায় এসেছি। এখন প্রথম দিনেই মেলা শেষ। সব খাবার নষ্ট হয়ে যাবে। পিঠাপুলি থেকে শুরু করে নানান খাবার এনেছিলাম। সাংস্কৃতিক আয়োজন থাকলে হয়তো মেলা ভালোমতো চলতো।

নববর্ষ উদযাপন এবং মেলা কমিটির সদস্য কক্সবাজার জেলা খেলঘর আসরের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আয়োজনটা কিছুটা দায়সারা মনে হয়েছে। মেলাটা যদিও একদিনের তবে নারী উদ্যোক্তারা ৩ দিন না হলে মেলায় অংশগ্রহণ করে না বলেই ৩ দিনের করা হয়েছে কিন্তু আমরা চেয়েছিলাম ৩ দিনই সাংস্কৃতিক আয়োজন করতে ভাগ করে করে আলাদা সংগঠনের মাধ্যমে। কিন্তু জেলা প্রশাসনের হয়তো নানা সংকটের কারণে এটা করা হয়নি।

বিষয়টি কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন শুধু স্টল করে দিয়েছে কিন্তু বিসিক তাদের নিয়ে এসেছে। আর মেলা তো রাতের আগেই শেষ হয়ে যাবে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী।