ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে লাখো পুণ্যার্থীর ঢল



কল্লোল রায়, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুড়িগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ঐতিহ্যবাহী অষ্টমীর স্নান ও মেলা উপলক্ষে লাখো পুণ্যার্থীর ঢল নেমেছে। চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ব্রহ্মপুত্র নদে এ পূণ্যস্নান সম্পন্ন করেন। উপজেলার রমনা নদী বন্দর এলাকার থেকে জোড়গাছ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে এবারের অষ্টমীর স্নান ও মেলার স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার(১৬ এপ্রিল) ভোর সাড়ে চারটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত স্নানের উত্তম লগ্ন থাকলেও দিনব্যাপী স্নান ও মেলা চলবে।

ঐতিহ্যবাহী চিলমারী ব্রহ্মপুত্র নদে মহাষ্টমীর স্নান মেলা উদযাপন কমিটি সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৪০০ বছর থেকে চৈত্র মাসের শুক্ল পক্ষের অষ্টমী তিথিতে পূণ্যতোয়া খ্যাত ব্রহ্মপুত্র নদের স্নান পর্ব চলে আসছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পুণ্যার্থীদের থাকার জন্য উপজেলার প্রায় ২২টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছে।


এছাড়াও পুণ্যার্থীদের স্নান পরবর্তী পোশাক পরিবর্তনের জন্য এবং রাত্রী যাপনের জন্য ৪৪টি অস্থায়ী বুথ করা হয়েছে। পুণ্যার্থীদের পূজাপর্বের জন্য প্রায় দুই শতাধিক ব্রাহ্মণ পূজারি দায়িত্ব পালন করবেন।

হিন্দুধর্ম মতে চৈত্র মাসের শুক্ল পক্ষের অষ্টমী তিথিতে পূণ্যতোয়া খ্যাত ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করলে ভক্তের সমস্ত পাপ ধুয়ে মুছে যায়। পাপমোচনের অভিপ্রায়ে তাই প্রতি বছর জেলা ও জেলার বাইরে থেকে লক্ষ লক্ষ হিন্দু ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থী ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করতে আসেন। এবারের স্নানের তিথি ভোর সাড়ে ৪টায় শুরু হওয়ায় দূরের পুণ্যার্থীগণ একদিন পূর্বে চিলমারী আসেন। তারা চিলমারী উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আত্নীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। কেউ কেউ আবার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিচ্ছিন্নভাবে বিছানা করে রাত্রী যাপন করেন।

দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলা থেকে ক্ষেত্রমোহন রায় (৬২) এসেছেন ব্রহ্মপুত্র স্নানে। কথা হয় তার সাথে, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় চিরিরবন্দর উপজেলার ভূষিরবন্দর এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে স্ত্রী সন্তানাসহ রওনা দিয়েছিলেন। দিনাজপুর শহর থেকে অষ্টমীর স্নানের জন্য ৯টি বাসে করে তারা প্রায় সাড়ে ছয়’শো জন পুণ্যার্থী চিলমারী আসেন। হাজারো পুণ্যার্থীর ভিড় ঠেলে চিলমারী রাজারভিটা স্নানঘাটে পৌঁছাতে তাদের প্রায় ৮ ঘণ্টা সময় লেগেছে।

তিনি বলেন, ছোটবেলায় বাবা-মায়ের সাথে ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করতে আসতাম। বয়স হয়েছে, এবছর নিজের স্ত্রী, সন্তান, নাতি-নাতনিসহ পূণ্যতোয়া ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করতে এসেছি। এটি উত্তরাঞ্চলের সবথেকে বড় স্নানোৎসব। ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করলে সব ধরণের পাপমোচন হয়। পাপমোচনের আশায় এতদূর থেকে কষ্ট করে এসেছি।


মাধবী লতা (৩৫) পিকআপ ভ্যানে করে স্বামী ও শাশুড়িসহ লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ উপজেলা থেকে এসেছেন। বিকেলে কালিগঞ্জ থেকে রিজার্ভ পিকাপ ভ্যানে রওনা দিলেও চিলমারী পৌঁছান রাত ১২টার পর।

তিনি জানান, স্বামীর বাতাসার দোকান। ব্রহ্মপুত্র নদে অষ্টমীর স্নান উপলক্ষে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর ঢল নামে। স্বামী একাই দোকানের ভিড় সামলাতে পারে না। তাই শাশুড়িসহ এসেছি। ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করব আর স্বামীর ব্যবসায় একটু সহযোগিতা করব। রথ দেখা কলা বেচা একসাথেই হবে।

ঐতিহ্যবাহী চিলমারী ব্রহ্মপুত্র নদে মহাষ্টমীর স্নান মেলা উদযাপন কমিটি ও পূজা কমিটির সদস্য শ্রী শ্যামল কুমার বর্মণ বলেন, অষ্টমীর স্নান সনাতন ধর্মালম্বীদের হলেও এখন এটি চিলমারী উপজেলাবাসীর ঐতিহ্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে। পার্শ্ববর্তী ভারত থেকেও কিছু পুণ্যার্থী এসেছে। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ,আনসার বাহিনী ও জনপ্রতিনিধি সহ স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন পুণ্যার্থীদের নানা ভাবে সহযোগিতা করছে। এবারে শ্রী বিষু চন্দ্র বর্মণকে আহ্বায়ক করে ৫৬ সদস্যের স্নানাৎসব কমিটি গঠন করা হয়েছে। এবারে প্রায় দুই লাখ পুণ্যার্থী ব্রহ্মপুত্র স্নানে এসেছেন এবং ২০০ জনের অধিক ব্রাহ্মণ ঠাকুর স্নানাৎসবে পূজা অর্চনা করেন বলেও তিনি জানান।

চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিনহাজুল ইসলাম বলেন, চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদে অষ্টমীর স্নান উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন আসে। তাই আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিলমারীর বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোড়দার করেছি। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট, ডুবুরি দল এবং পুলিশ, আনসার বাহিনীর সদস্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেছে। কোথাও কোনো অসুবিধা হয়নি।

 

আজ কোন এলাকায় কত সময় কারফিউ শিথিল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কারফিউর মধ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

কারফিউর মধ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীসহ সারাদেশে কারফিউ জারি করে সরকার।

গত ১৯ জুলাই (শুক্রবার) থেকে শুরু হয়ে এখনও দেশের বিভিন্ন জেলায় চলমান রয়েছে। এর মধ্যে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, শনিবার (২৭ জুলাই) কারফিউ তুলে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্দান্ত আসতে পারে। 

তবে আজও (২৬ জুলাই) রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও এলাকা কারফিউয়ের আওতায় থাকবে।

ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। এরপর বিকেল ৫টা থেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও গাজীপুরসহ চার জেলায় ফের শুরু হবে কারফিউ।

সবচেয়ে বেশি সময় ধরে কারফিউ শিথিল থাকবে রংপুর ও বরিশালে। রংপুরে সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মোট ১৫ ঘণ্টা সেখানে কারফিউ শিথিল থাকবে। বরিশালেও একই সময় ধরে কারফিউ শিথিল থাকবে। 

এছাড়া চট্টগ্রামে সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা, রাজশাহীতে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা এবং সিলেটে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে।

এর আগে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টা থেকে রোববার (২১ জুলাই) সকাল ১০টা পর্যন্ত সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার।

;

জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে তিন সমন্বয়ক ডিবিতে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।

নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।

  • Font increase
  • Font Decrease

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামসহ তিনজনকে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে হেফাজতে নিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অপর দুই সমন্বয়ক হলেন- আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে ডিবির একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ডিবি বলছে, নিরাপত্তা এবং জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে তিন সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে।

তারা তিনজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

;

কারফিউ তুলে নেয়ার ব্যাপারে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, জনজীবন স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত কারফিউ নিয়ে সবাইকে একটু অপেক্ষা করতে হবে। কারফিউ শিথিল করা যায় কিনা, তা আমরা দেখছি।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।  

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কারফিউ শিথিল করা যায় কিনা আমরা দেখছি। পুলিশ বিজিবি, সেনাবাহিনী কাজ করছে। জনজীবন স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করতে হবে। জনগণকে ধৈর্য্য ধরতে হবে। এ বিষয়ে শনিবার (২৭ জুলাই) আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলেও জানান তিনি।

এ সময় আন্দোলনের নামে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, দেশের এই ক্ষতির দায় কে নেবে? বিএনপি বলছে সহিংসতার মধ্যে তারা নেই। তাহলে কে করেছে? এটা জনগণের প্রশ্ন।

কোটা আন্দোলনকারীদের আটকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোটা আন্দোলনকারী নেতারা নিজেরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাদের নিরাপত্তার জন্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ডাকা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সারাদেশে গত ১৯ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা থেকে কারফিউ জারি করে সরকার। এসময় সেনাবাহিনীও মোতায়েন করা হয়।

পরবর্তীতে নির্ধারিত সময়ের জন্য কারফিউ শিথিল করা হলেও এখনো পুরোপুরি এখন তুলে নেয়া হয়নি।

;

যেসব অঞ্চলে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
যেসব অঞ্চলে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

যেসব অঞ্চলে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের আট বিভাগেই মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

এতে বলা হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্ট লঘুচাপ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

এ অবস্থায় খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

একইসঙ্গে খুলনা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে।

এ সময় টাঙ্গাইল, সিলেট ও চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু তাপপ্রবাহ কিছু কিছু জায়গায় প্রশমিত হতে পারে। 

বর্ধিত ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

;