সিজারিয়ান প্রসবের ওপর বিধি-নিষেধ চায় মানবাধিকার কমিশন

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

সিজারিয়ান প্রসবের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপে অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইউশা রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৩ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাংবাদিক মোহসিন কবিরের ‘গর্ভবতী মাকে মিডফোর্ড হাসপাতাল থেকে বের করে দিলেন গাইনি চিকিৎসক’ শিরোনামে লেখাটি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের মাধ্যমে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়।

সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়, রাজধানীর শ্যামপুর থেকে এক গর্ভবতী নারী মিডফোর্ড হাসপাতালে যান। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সবকিছু ঠিক আছে মর্মে স্বাস্থ্যকর্মী জানান। দায়িত্বরত চিকিৎসক তার আর্থিক অবস্থার কথা জিজ্ঞাসা করেন এবং সিজার করতেই হবে বলে জানান। কিন্তু গর্ভবর্তী নারীর পূর্বে দুটি সন্তান স্বাভাবিক ডেলিভারি হয়েছে উল্লেখ করেন এবং সিজার করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। এতে ওই চিকিৎসক ক্ষিপ্ত হয়ে রোগীর ওপর মানসিক চাপ তৈরি করেন। চিকিৎসক আপত্তিকর মন্তব্যসহ হয়রানিমূলক কথা বলেন মর্মে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। পরবর্তী সময়ে ওই নারী মুগদা নবস্বাস্থ্য নামক একটি সরকারি হাসপাতালে স্বাভাবিক ডেলিভারি হয়।

বিজ্ঞাপন

আরও বলা হয়, গত বছরের ১০ জুন একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার অনলাইনে ‘শিশু জন্মে অস্ত্রোপচার যেন সুনামির মতো ভয়াবহ হয়ে উঠেছে’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদে উল্লেখ করা হয়, পেশাজীবী চিকিৎসকদের সংগঠন অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) ৩১তম আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের একটি অধিবেশনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলেছেন, দেশে শিশু জন্মে অস্ত্রোপচার যেন সুনামির মতো ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। নিয়ন্ত্রণহীনভাবে অস্ত্রোপচার বাড়ছে। দুটি শিশু জন্মের একটি হচ্ছে অস্ত্রোপচারে। এতে মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। বাড়ছে স্বাস্থ্য ব্যয়।

স্বল্প সময়ের ব্যবধানে দেশে সিজারিয়ান প্রসবের হার উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে মর্মে পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে। প্রয়োজন ছাড়া শিশু জন্মে অস্ত্রোপচার করা মা ও নবজাতকের জন্য মারাত্বক হুমকি স্বরূপ। যেখানে স্বাস্থ্য খাতে প্রতি বছর সরকারকে বিপুল পরিমাণে অর্থ ভর্তুকি প্রদান করতে হয়, সেখানে মিডফোর্ডের মতো একটি স্বনামধন্য হাসপাতালে চিকিৎসক কর্তৃক সিজার করতে চাপ প্রয়োগ করার বিষয়টি কমিশনের নিকট বোধগম্য নয়। এরূপ সিজারিয়ান প্রসবের হার অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার প্রকৃত কারণ কী তা খতিয়ে দেখা এবং সিজারিয়ান প্রসবের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপের লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন মর্মে কমিশন মনে করে।

এ অবস্থায়, মিডফোর্ড হাসপাতালের বিরুদ্ধে উল্লিখিত অভিযোগের বিষয়ে তদন্তপূর্বক সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক কমিশনকে অবহিত করতে পরিচালক, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিডফোর্ড) হাসপাতালকে বলা হয়েছে। একইসাথে প্রসবে অপ্রয়োজনীয় সিজার/সি-সেকশন বন্ধ, এ লক্ষ্যে নারীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সিজারিয়ান প্রসবের হার অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির পেছনে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।