মদ খেয়ে তরুণের দুই হাত ভেঙে দিলেন আওয়ামী লীগ নেতা



আল-আমিন রাজু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম ঢাকা
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর হাতিরঝিল থানার ওমরআলী লেন এলাকায় মদ্যপ অবস্থায় এক তরুণকে পিটিয়ে দুই হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। গত ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় ব্যবসার কাজে গেলে এই হামলার ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই তরুণের নাম মানসিব আল জিসান(২৩)। তিনি রামপুরা বউবাজার এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদের ছেলে। এই ঘটনায় মামলা করেছে ভুক্তভোগী তরুণের পরিবার।

অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতার নাম সালাউদ্দিন ভূঁইয়া মাসুম ওরফে মাসুম ভূঁইয়া। তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি।

ভুক্তভোগী তরুণের ভাই মোস্তাক আল মামুন বলেন, গত ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় আমার ছোট ভাই ব্যবসায়িক কাজে হাতিরঝিল থানার ওমরআলী লেনে যায়। এই সময় ইউনিট আওয়ামী লীগ নেতা মাসুম আমার ভাইকে ডেকে নানা ধরনের হুমকিধমকি দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে একটি লাঠি দিয়ে আমার ছোট ভাইকে বেধড়ক মারধর করেন। মারধর করে পকেটে থাকা ব্যবসায়ের দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। আমার ভাইকে মারধরের সময়ে আরও কয়েকজন ছিল। তারাও মারধর করেছে। হামলার সময়ে মাসুম মদ্যপ অবস্থায় ছিল।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে মোস্তাক আরও বলেন, ইউনিট আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ার পর থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন মাসুম। ব্যবসায়ী, বাড়ির মালিক এমনকি ফুটপাতের দোকানদারদের কাছে থেকেও চাঁদা আদায় করে থাকেন। এলাকায় আমাদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা। আমরা ব্যবসা করি এটাই তার মাথাব্যথার কারণ। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে যাকে ইচ্ছা তাকেই মারধর করেন। আমার ভাইকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনের কারণে তার দুই হাত ভেঙে গেছে। এমনকি তাদের হাত থেকে বাঁচার জন্য দৌড় দিলে পড়ে গিয়ে পায়ে মারাত্মক আঘাত পেয়েছে। পরবর্তীতে তাকে সবাই উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে। বর্তমানে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে মাতাল অবস্থায় আমার ছোট ভাইকে মারধর করার তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে। স্থানীয়রাও মারধরের সাক্ষ্য দিয়েছেন। আমার ভাই মাদ্রাসা থেকে আলেম পাস করেছে। এখন সে পড়ালেখার পাশাপাশি বাবার ব্যবসায় সময় দেয়। এই ঘটনায় মামলা করায় আমাকেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমি বাধ্য হয়ে ঈদের দিন থানায় জিডি করেছি।

এ দিকে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ঘটনার দিন ছিল রোজা। রোজার দিনে কেউ মদ খায়? যাকে মারধর করা হয়েছে সে গলিতে মাদক বিক্রি করছিল। হাতেনাতে ধরা পড়ায় তাকে মারধর করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমি স্থানীয় হিসেবে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার। কারো কাছ থেকে দুই টাকা চাঁদা নিই না। ব্যবসা করে চলি। কেউ বলতে পারবে না কারো কাছ থেকে দুই টাকা চেয়েছি।

এদিকে তরুণকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাটি তদন্ত করছেন হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক মো. সুমন। তিনি বলেন, ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। আমরা মামলাটি তদন্ত করছি। তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে এখন কিছু বলতে চাচ্ছি না। আমরা কাজ করছি।

   

নওগাঁয় ২৫০ টি গাঁজার গাছ ধ্বংস করল বিজিবি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ 
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁর পত্নীতলায় ব্যাটালিয়ন (১৪ বিজিবি)'র বিশেষ অভিযানে  সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ২৫০ টি  গাঁজার গাছ ধ্বংস করা হয়েছে। 

বুধবার (১ মে) সকালে পত্নীতলা ব্যাটালিয়ন (১৪ বিজিবি) এর অধীনস্থ চকচন্ডি বিজিবি কোম্পানী কমান্ডার কর্তৃক স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং জনসাধারণের উপস্থিতিতে গাঁজার গাছগুলো ধ্বংস করা হয়।

জানা যায়, গত ৩০ এপ্রিল পত্নীতলা ব্যাটালিয়ন (১৪ বিজিবি) এর একটি স্পেশাল অপারেশনস্ টিম সুবেদার মো. সুলতান খাঁন এর নেতৃত্বে বস্তাবর বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকা নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলাধীন সীমান্তবর্তী মাহিসন্তোস গ্রামের বাদামপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ২০০-২৫০টি গাঁজার গাছ চিহ্নিত করে।

পত্নীতলা ব্যাটালিয়ন (১৪ বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. হামিদ উদ্দিন, বিজিবিএম, পিএসপি এর দিকনির্দেশনায় গাঁজা গাছগুলো ধ্বংস শেষে চকচন্ডি বিজিবি কোম্পানী কমান্ডার, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং জনসাধারণের উপস্থিতিতে মাদকদ্রব্য চোরাচালানে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

বিজিবি অধিনায়ক বলেন সীমান্তে চোরাচালান মাদক পাচার এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমসহ অন্যান্য সীমান্ত অপরাধ দমনে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। সকলের নিকট নিরাপদ সীমান্ত বিনির্মাণে সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

;

তবুও পাল্টায় না তাদের ভাগ্য! শ্রমে-ঘামেই জীবন পার

  ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’



সীরাত মঞ্জুর, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
তবুও পাল্টায় না তাদের ভাগ্য! শ্রমে-ঘামেই জীবন পার। ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

তবুও পাল্টায় না তাদের ভাগ্য! শ্রমে-ঘামেই জীবন পার। ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

  • Font increase
  • Font Decrease

মাথায় মাছের ভারি বোঝা। রোদে পুড়ে চেহেরায় কালছে রঙ ধরেছে। ঘামও ঝরছে ঝর ঝরিয়ে। কিন্তু সেদিকে তাকানোর সময় কোথায় মোহাম্মদ ফরহাদের। যতটা মাছের বস্তা বহন করবে ততই যে বাড়বে মজুরির অংক। আর মজুরি পেলেই তো খাবার জোটবে মা আর দুই ভাইয়ের মুখে!

বয়স কত তোমার- বলতেই একটু থামল ফরহাদ। মুখে একরাশ দুঃখ। মানুষ পেয়ে সেই দুঃখের জানালা যেন খুলে দিল ১৬ বছরের কিশোর। বলতে শুরু করে, ‘ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত পড়লেও অভাবের কারণে আর পড়ালেখাটা চালিয়ে যেতে পারলাম না। কারণ আমার বাবা নেই। ঘরে দুই ভাই আর মা। আমি কাজ না করলে তাদের খাওয়াবে কে? ভোলা থেকে চট্টগ্রাম এসে মুদির দোকানের কাজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু সেখানে বেতন কম। বাধ্য হয়ে তাই কষ্ট হলেও দুই মাস ধরে তীব্র গরমে ভারি মাছের বস্তা বোঝাই করার কাজ করতে হচ্ছে।’

নিজের চেহেরার দিকে তাকাতে বলে একটু হাসল ফরহাদ। বলল, ‘এখানে কাজ করতে আসার আগে আরও ফর্সা ছিলাম। এখন রোদে পুড়ে কালো হয়ে গেছি।’

শুধু এই কিশোর নয়, চট্টগ্রাম নগরীর কর্ণফুলী নদীর বাংলাবাজার ঘাটে গেলে এমন অনেক ফরহাদদের দেখা মিলবে। কারও বয়স ১৫, কারও বা ২০-২৫। বড়দের সঙ্গে প্রতিদিন প্রতিযোগিতা করে মাছ বোঝাই করার কাজ করে এই কিশোর-তরুণেরা। তাদের সঙ্গে আছেন নারীরাও। বুধবার বিকেলে দেখা এই চিত্র প্রতিদিনের।

এই দৌঁড় আহার জোগানোর প্রতিযোগিতার। ছবি: আসিনুজ্জামান দুলাল

নদীর তীরে মাছ ভর্তি সাম্পান ভিড়তেই দৌঁড় শুরু হয়ে যায় এই শ্রমিকদের। এই দৌঁড় আহার জোগানোর প্রতিযোগিতার। প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের সঙ্গে এই প্রতিযোগিতায় রয়েছেন নারী-কিশোরেরা। যাদের মাথায় চড়ে সাগর থেকে আসা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ যাচ্ছে হিমাগারে। শীতল বরফে জড়ানো ভারি মাছ বোঝাই করেই তাদের জীবন চলে বারোমাস।

কর্ণফুলীর এই ঘাট দিয়ে সাগর থেকে আসা ইলিশ, কোরাল, সুরমা ও পোয়াসহ হরেক প্রকারের মাছ যায় পাশের হিমাগারে। সেই হিমাগার থেকে এসব মাছ ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে, এমনকি দেশের বাইরেও। আর এসব মাছ নামাতে কাজ করেন শত শত শ্রমিক। এ শ্রমিকদের দেখভাল করেন মাঝি। আর প্রত্যেক মাঝির নেতৃত্বে ১০, ২০ বা ৫০ জন করে শ্রমিক কাজ করেন। এক সাম্পানের মাছ হিমাগারে পৌঁছে দিতে কাজ করেন দশজন শ্রমিক। এর বিনিময়ে প্রতিজন ১০০ টাকা করে মজুরি পান। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু হয়ে এই কাজ, শেষ হয় সন্ধ্যায়। সপ্তাহ বা মাসে কোনো ছুটি নেই তাদের, যে শ্রম দেবে তারই মিলে মজুরি। মাঝি থেকে সেই মজুরি নিতেও রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয় তাদের!

সরেজমিনে দেখা যায়, একজন শ্রমিককে মাথার ওপর মাছের বস্তা তুলে দিয়ে সহযোগিতা করছেন আরও দুজন। মাত্র কয়েক মিনিটেই সেই বস্তা মাথায় বয়ে দৌঁড়ে রেখে আসছেন হিমাগারে। এরমধ্যে দাঁড়িয়ে থাকলে বা কাজে ধীরগতি হলে মাঝির বকা ও চিল্লানি তো রয়েছেই।

অভাবের পিড়াপিড়িতে এ কাজে যোগ দিয়েছেন নারীরাও। ছবি: আসিনুজ্জামান দুলাল

ঘাটের এই শ্রমিকদের মধ্যে ৪০ থেকে ৬০ বছর বয়সী পুরুষ থাকাটা স্বাভাবিক। অভাবের পিড়াপিড়িতে একাজে যোগ দিয়েছেন অনেক নারীও। তবে অবাক করার বিষয় হচ্ছে ভারি ওজনের এই মাছের বস্তা মাথায় বইছে ১০ থেকে ১৪ বছরের কিশোররাও।

চট্টগ্রামের হাটহাজারীর এগারো মাইল এলাকার বাসিন্দা মো. আবছার। বাবা ছিলেন বড় ব্যবসায়ী। তবে নিয়তি আবছারকে বানিয়ে দিয়েছে শ্রমিক। বয়সের ভারে কাজ করতে কষ্ট হয়, কিন্তু পেটতো আর সেটি বুঝবে না। সেজন্য এখনো তাকে কাজ করে যেতে হয় প্রতিদিন।

সেই দুঃখের কথা তুলে ধরে আবছার বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘গ্যাস-বিদ্যুৎসহ জিনিসের যে দাম, বর্তমানে আমাদের বেঁচে থাকা অনেক কষ্টের। আমার হাঁটুতে ব্যথা, তবুও কাজ করতে হচ্ছে। কোনো উপায় নেই, বেঁচে থাকার তাগিদে কাজ করতে হচ্ছে। এটি করে পোষায় না- কেন না যতক্ষণ কাজ করি ততক্ষণ টাকা পাই। কাজ না করলে তো পেটে ভাত জোটবে না। সরকার যেন আমাদের প্রতি দৃষ্টি দেয়।’

পুরুষের পাশাপাশি এই ঘাটে প্রায় তিন বছর ধরে কাজ করছেন রংপুরের মুন্নি বেগম (৩০)। জানতে চাইলে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমাদের কোনো ছুটি নেই। প্রতিদিনই সকাল ৮টা হলেই ঘাটে চলে আসতে হয়। কবে নৌকা বা সাম্পান নিয়ে আসবে সেটার অপেক্ষায় থাকি। মাথায় বোঝা বহন করা অনেক কষ্ট। সারাদিন কাজ করে বাসায় গেলে শরীর ব্যথা করে। আমাদের আয়ের ঠিক নেই। কখনো ৩০০, আবার কখনো ৫০০ টাকার মতো আয় করি দিনে।’ 

১৮ বছর ধরে এই ঘাটে কাজ করছেন বরিশালের ইদ্রিস মাঝি। তিনি বলেন, ‘শ্রমিকরা যে কষ্টটা করে তার ন্যায্য মজুরিটা পায় না। আমরা চাই শ্রমিকরা যথাসময়ে তাদের টাকা পাক।’

বড়দের সঙ্গে জীবন যুদ্ধে এভাবেই এগিয়ে চলছেন শিশু-কিশোরেরা। ছবি: আসিনুজ্জামান দুলাল

ঘাটের নিরাপত্তাকর্মী সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘আমি গত ৫ মাস ধরে কাজ করছি। এখানে বড়দের সঙ্গে দেখি ছোট ছোট শিশুরাও ভারি বোঝা মাথায় নিয়ে কাজ করে। এটা আসলে এক ধরনের অমানবিক কাজ। তাদের জীবনটা এমন। কোন দিন তারা ২০০-৩০০ টাকা পায়। আবার কোনো দিন একদমই পায় না, ঘাটে আসা যাওয়াটায় লস। জাহাজ থাকলে কাজ হলে তারা ৫০০ টাকার মতো পায়।’

এক সময়ের শ্রমিক জাহেদ এখন হয়েছেন মাঝি। তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের সাম্পান প্রতি ১০০ টাকা করে দেওয়া হয়। আমি ওদের পরিচালনা করে একজন শ্রমিকের সমান টাকা পাই। এসব কাজের কোনো সময় নেই। সাম্পান মাছ নিয়ে আসলেই কাজ। না আসলে বসে থাকতে হয়। দেখা যাচ্ছে কোনো সময় সকালে অনেক সাম্পান মাছ নিয়ে আসে। আবার কখনো বিকেলে আসে।’ 

মাছের বস্তা মাথায় নিয়ে প্রতিদিনের শুরু তাদের। এভাবে করে একসময় বিকেল হয়ে সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়। সারাদিনের ক্লান্ত ঘামে ভেজা শরীর নিয়ে ঘরে ফিরতেই পাল্টে যায় ক্যালেন্ডারে তারিখ। তবুও পাল্টায় না তাদের ভাগ্য! শ্রমে ঘামেই জীবন পার…. 

;

সব অভিযোগের বিষয়ে মিল্টনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে: ডিবি প্রধান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অজস্র অভিযোগ রয়েছে। সব অভিযোগ আমলে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।

বুধবার (১ মে) রাত পৌনে ৯টার দিকে ডিবির প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।

ডিবি প্রধান বলেন, মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে মানবপাচার, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি, মারধরের অভিযোগ রয়েছে। 

এছাড়াও মৃত্যুর সনদ জালিয়াতি, বেআইনিভাবে মরদেহ দাফনসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এসব বিষয়ে তাকে জিঙ্গাসাবাদ করা হবে।

এর আগে বুধবার (১ মে) সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাকে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়।

 

;

মিল্টনের সংস্থার অপারেশন থিয়েটারের লাইসেন্স ছিলো না: ডিবি প্রধান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্প্রতি আলোচিত সমাজকর্মী ও 'চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ার' নামের সামাজিক সংগঠনের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অপারেশন থিয়েটারে রোগীর অপারেশন করে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় দেশব্যাপী সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এরই প্রেক্ষিতে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবি বলছে, মিল্টন সমাদ্দারের সংস্থার অপারেশন থিয়েটারের লাইসেন্স ছিলো না। সেখানে অবৈধভাবে অপারেশন করা হতো।

বুধবার (১ মে) রাতে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি অফিসে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।

ডিবি প্রধান বলেন, বরিশালের উজিরপুরের মিল্টন সমাদ্দারের উত্থান নিজ পিতাকে পিটিয়ে। এই অপরাধে এলাকাবাসী তাকে বাড়ি ছাড়া করেন। এরপর ঢাকার শাহবাগে এসে একটি ফার্সেমিতে কাজ শুরু করেন তিনি। ঔষুধ বিক্রির টাকা চুরি করায় সেখানেও বেশিদিন টিকতে পারেননি মিল্টন। এরপর মিতু হালদার নামের এক নার্সকে বিয়ে করেন তিনি।

বিয়ের পর ওল্ড এন্ড চাইল্ড নামের একটি কেয়ার সেন্টার স্থাপনের স্বপ্ন দেখেন তারা। পরবর্তীতে মিরপুর এলাকায় চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ার নামের একটি কেয়ার সেন্টার স্থাপন করেন। তিনি খুঁজে গরীব বৃদ্ধ এবং বাচ্চা শিশুদের সেখানে নিয়ে আসতেন। বিভিন্ন মিডিয়ায় সে জানিয়েছে, তার কেয়ার সেন্টারে অপারেশন থিয়েটার আছে এবং সেখানে সে মানুষের সেবা প্রদান করেন। অপারেশন থিয়েটার থাকলে তো লাইসেন্স থাকতে হবে। কিন্তু সেই অপারেশন থিয়েটারের লাইসেন্স ছিল না।

তিনি বলেন, মিল্টনের বিরুদ্ধে আমরা অজস্র অভিযোগ পেয়েছি। সে বলেছে তার দুইটা আশ্রম রয়েছে। সাভারের আশ্রমে ৫ থেকে ৭ শত লোক রয়েছে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সেখানে ২০ থেকে ৩০ জনের বেশি লোক নেই। আমরা তাকে নিয়ে এসেছি। কিছু অভিযোগকারী রয়েছে তারাও মামলার রুজু করবে। আমরা মিল্টনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবো। কত সংখ্যক মানুষ তার কাছে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিল। কত সংখ্যক মানুষ মারা গেল। তার আশ্রমে যে অপারেশন থিয়েটার রয়েছে এর মাধ্যমে কিডনি বিক্রি করেছেন কিনা সেটাও তদন্ত করা হবে।

মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, মিল্টন সমাদ্দার নিজেই কেন ডেথ সার্টিফিকেট নিজের স্বাক্ষরে তৈরি করেছেন এবং সেখানে ডাক্তারের কোন সিগনেচার কেনো নেন নাই সেগুলো খুঁজে বের করা হবে। আমরা সবকিছু তদন্ত করে পরবর্তীতে আপনাদেরকে জানাবো। আমরা তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ পেয়েছি সেগুলো তদন্ত করে তাকে রিমান্ডে নিয়ে পরবর্তী বিষয়গুলো জানাবো।

এর আগে বুধবার (১ মে) সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাকে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়।

;