ইলিশের বাজারে আসার সাথে সাথে বরিশালের বাজারগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। তবে বড় আকারের ইলিশ খুবই কম, অধিকাংশই ছোট সাইজের বা জাটকা ইলিশ। বাজারে যেসব বড় ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে, তা এলসি প্রক্রিয়ায় বাদ পড়া মাছ। ফলে দামও বেশ চড়া।
বরিশালের পোর্ট রোডের মাছ বাজারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতারা ইলিশ কিনতে ভিড় করেছেন। ছোট সাইজের ইলিশই প্রধানত বাজারে দেখা যাচ্ছে, যার দাম ৩৫০ থেকে ৬৫০ টাকার মধ্যে। তবে ১ কেজির বেশি ওজনের বড় ইলিশও পাওয়া যাচ্ছে, যার দাম ১৮০০ থেকে ১৯০০ টাকা পর্যন্ত। বড় হোটেলের মালিকরা এই মাছ কিনে নিচ্ছেন, কারণ ইলিশের অনুপস্থিতিতে তাদের খদ্দের কমে যাবে বলে তাদের দাবি।
তবে বরিশালের মাছ ব্যবসায়ীরা ইলিশের রপ্তানি নিয়ে নতুন দাবি তুলেছেন। তারা জানিয়েছেন, ভারত ছাড়াও অন্যান্য দেশে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া উচিত।
আল আমিন ফিসারির ম্যানেজার সুলতান বলেন, বর্তমানে বাজারে বড় ইলিশের সরবরাহ কম এবং দামও অনেক বেশি। একসময় বরিশালে ৫ হাজার টনের বেশি মাছ আসতো, কিন্তু এবার এসেছে মাত্র ৫০০ টন।
বাজার সমিতির সাবেক কোষাধ্যক্ষ এবং সিকদার ফিসারিজের পরিচালক ইমরান সিকদার জানান, এলসি করা মাছের সাইজ ছোট এবং এগুলো আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য অনুপযুক্ত। তবে স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণের পরও যদি মাছ থেকে যায়, তাহলে তা বিদেশে রপ্তানি করার সুযোগ সৃষ্টি করা উচিত।
ব্যবসায়ীরা আরও জানান, মিয়ানমার থেকে ইলিশ আমদানি হলেও, আমাদের ইলিশ সেখানে রপ্তানি হয় না। শুধু ভারতকেই ইলিশ পাঠানো হয়, যা আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট নয়। ব্যবসায়ী নেতা জহির সিকদার বলেন, "সরকারের উচিত বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া। এর মাধ্যমে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবো।"
তবে এই বক্তব্যের বিপরীতে আরও একজন ব্যবসায়ী, মোজ্জম্মেল হোসেন, দেশের মানুষের চাহিদা পূরণের পরেই রপ্তানির কথা ভাবা উচিত বলে মত দেন। কিন্তু মোজ্জম্মেল হোসেন বলেন, দেশের মানুষের চাহিদা কখনোই পুরোপুরি পূরণ করা সম্ভব নয়। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য ইলিশ রপ্তানি করা জরুরি।
সবমিলিয়ে, বরিশালের মাছ ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ইলিশ রপ্তানি করলে দেশের অর্থনীতি উপকৃত হবে। সরকারের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে আন্তর্জাতিক রপ্তানির পথ সুগম করা।