কড়াইল বস্তিতে অদৃশ্য সীমানা, পা বাড়ালেই বিপদ!



আল-আমিন রাজু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা
কড়াইল বস্তিতে অদৃশ্য সীমানা, পা বাড়ালেই বিপদ!

কড়াইল বস্তিতে অদৃশ্য সীমানা, পা বাড়ালেই বিপদ!

  • Font increase
  • Font Decrease

মো. রিফাত হোসেন (১৮)। স্কুল শিক্ষার্থী। রাজধানীর কড়াইল বস্তি এলাকার বাসিন্দা। গত ১৪ মার্চ ভোররাতে সেহরির সময় মা দুধ-ভাত খেতে চাইলে রিফাত বের হন কাছে-ধারের দোকান থেকে দুধ কিনতে। সেখানে রিফাতের ওপর হামলা হয়। রিফাতকে ধরে নিয়ে যায় প্রতিপক্ষের লোকজন। রাতের আঁধারেই মারধর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুকে-পিঠে ও শরীরে বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। গুরুতর জখম অবস্থায় রিফাতকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ যাত্রায় বেঁচে যান রিফাত।

রিফাত প্রাণে বাঁচলেও বেঁচে ফেরা হয়নি একই এলাকার আল-আমিনের। মৃত মোসলেম উদ্দিনের ছেলে আল-আমিন ছিলেন পেশায় মুদি দোকানি। সেদিন ছিলো ২০২২ সালের ১৭ আগস্ট। বড় দুই ভাইয়ের সঙ্গে স্থানীয় নূরানী মসজিদে এশার নামাজ আদায়ে গিয়েছিলেন আল-আমিন। নামাজরত অবস্থায় হামলার শিকার হন তিনি।

নামাজে দাঁড়িয়ে প্রথম রাকাত শেষ করে দ্বিতীয় সিজদা আর দেওয়া হয়নি আল-আমিনের। অতর্কিত পেছন থেকে হামলা চালানো হয় তার ওপর। মসজিদের ভেতর জখম করার পর তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে হাতে পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়। শরীর থেকে সকল রক্ত বের করে দিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে প্রতিপক্ষ। ওই হামলায় জখম হন তার ভাই নাসির হোসেনও। আর মসজিদের সামনের কাতারে থাকায় সেই হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে যান তাদের আরেক বড় ভাই জুয়েল সরকার। তবে গুরুতর আহত হয়ে প্রাণে বাঁচলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি নাসির। মাথায় জখম নিয়ে এখন শুধুই স্মৃতি হাতড়ান। পুরোপুরি পরনির্ভরশীল এখন নাসিরের জীবন।


রাজধানীর ভেতরে সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে দীর্ঘ পরিচয় এই কড়াইল বস্তি এলাকার। একদিকে অভিজাত এলাকা বনানী, যেখানে উচ্চবিত্ত ও অভিজাত পরিবারের বসবাস। তারই মাঝে টিএনটি কলোনী ঘিরে গড়ে উঠেছে এই কড়াইল বস্তি। সেখানে লাখো সুবিধা বঞ্চিত ও নিম্ন আয়ের মানুষের বাস। এ যেন বাতির নিচে অন্ধকার। সেই অন্ধকারে খেটে খাওয়া মানুষের আড়ালে সন্ত্রাস ও সহিংসতার যে ভয়াল পরিস্থিতি তারই একটি খণ্ডচিত্র এই রিফাতের ওপর হামলা কিংবা আল-আমিন হত্যা।

এখানে সন্ত্রাসের সাথে মিশে আছে রাজনীতির কালো ছায়া। এলাকায় প্রভাব খাটানোই কেবল নয়- ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন যুবলীগের রাজনীতি ও পদপদবীর দ্বন্দ্বের জেরেও এখানে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। অস্ত্রের ঝনঝনানি আর কথায় কথায় হামলা, হত্যা, জখম এখানকার নিত্যাচিত্র। আরও ভয়ঙ্কর তথ্য হচ্ছে এসব সংঘর্ষ, হত্যা-হামালার অধিকাংশ তথ্য নেই থানা পুলিশের নথিতে। অথচ সহিংসতায় জড়িত অনেকেই জনসম্মুখে ঘুরে বেড়ায়।

এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় ১৪ মার্চে হামলার শিকার রিফাতের সঙ্গে। রিফাত বলেন, "আমি মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসলাম। মামলা করলাম। পুলিশ এপর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি। সব আসামি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বরং তারা এখন নানাভাবে আমাকে ও আমার ছোট ভাইকেও হত্যার হুমকি দিচ্ছে। জীবন সঙ্কায় দিনপার করছি।"


হামলার রাতে কি ঘটেছিলো জানতে চাইলে রিফাত বলেন, মারুফ নামের একটি ছেলে এসে আমাকে ডেকে মাঠের দিকে নিয়ে যায়। মাঠে যাওয়ার পরেই অতর্কিত হামলা চালায় তানভীর, তুহিন, মাহবুব, মাসুদ, সুমনসহ বেশ কয়েকজন। ধারালো চাকু ও খুর দিয়ে পোচ দেয়। এছাড়া হাতুরি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে থেতলে দেয় হামলাকারীরা।

নিহত আল আমিনের ভাই জুয়েল সরকারের সঙ্গেও কথা হয় এই প্রতিবেদকের। সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, জুয়েল সরকার নিজেই এখানকার একটি দলের প্রধান। প্রতিপক্ষের এই হামলার টার্গেট ছিলেন তিনি। যা জুয়েল নিজেও স্বীকার করেন। তিনি বলেন, "মূলত আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই হামলা চালিয়েছিলো। আমি নামাজের কাতারের সামনের দিকে থাকায় পেছনে থাকা আমার দুই ভাই হামলাকারীদের রোষের মুখে পড়ে। সে রাতে আমার ভাইদের রক্তে পবিত্র মসজিদের মেঝে লাল হয়ে যায়।"

জুয়েল বলেন, "আহত অবস্থায় আমার ছোট ভাই আল আমিনকে ধরে নিয়ে হাতের রগ কেটে দেয়। পর আমরা তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করি।"

জুয়েল জানান, এই ঘটনায় তিনি নিজে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামিকে পরে গ্রেফতার করা হলেও মাত্র আাড়াই মাসে জামিনে বের হয়ে আসে। সেই আসামি এখন আবার নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে, বলেন জুয়েল। 

প্রায় ১৯০ একর সরকারি ও ব্যক্তি-মালিকানাধীন জমির ওপর গড়ে উঠেছে এই কড়াইল বস্তি। বস্তিতে অন্তত চার লাখ মানুষের বসবাস। যার অধিকাংশই দিনমজুর ও শ্রমজীবী। কড়াইল বস্তিতে রাজনৈতিক নামধারী নেতাদের আধিপত্য বিস্তারে ব্যবহার করছেন বস্তিবাসীদেরই। এখানকার তরুণ ও কিশোরদিয়েই গড়ে তোলা হচ্ছে সন্ত্রাসে ব্যবহারের জন্য। নিজেদের ক্ষমতার জানান দিতে শুধু দেশীয় অস্ত্র নয়, হরহামেশাই তারা ব্যবহার করছে আগ্নেয়াস্ত্র। সাম্প্রতিক সময়ে এই সন্ত্রাসী কাজে তারা সামাজিক মাধ্যমও ব্যবহার করছেন।  অস্ত্রসহ ফেসবুকে ছবি প্রকাশ করে প্রতিপক্ষকেও হুমকিও দেওয়া হচ্ছে- এমন নজিরও রয়েছে।

সূত্র বলছে, কড়াইল বস্তিতে অন্তত পাঁচটি কিশোর গ্যাং গ্রুপ সক্রিয়। প্রতিটি গ্রুপের সদস্য সংখ্যা শতাধিক। তাদের নিয়ন্ত্রণ করেন স্থানীয় দুই রাজনৈতিক নেতা। একজন কড়াইল বস্তির বাসিন্দা ও বনানী থানার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুর আলম নুরু। আরেকজন বনানীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের (প্রস্তাবিত) যুবলীগের কড়াইল ১ নং ইউনিটের সাবেক সভাপতি জুয়েল সরকার। নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে অস্ত্রের মহড়া ও প্রতিপক্ষের লোকজনের ওপর হামলার ঘটনা নিত্য দিনের। তবে যে কোনো হামলার পর দুই পক্ষই একে অপরের ওপর দায় চাপায়।

কড়াইল বস্তি এলাকায় এক ত্রাসের নাম নুর আলম নুরু

অনুসন্ধানে জানা যায়, কড়াইল বস্তি এলাকায় এক ত্রাসের নাম নুর আলম নুরু। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নুরু ও তার লোকজন নিয়মিত অস্ত্রের ছবি প্রকাশ করেন। তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে একাধিক কিশোর গ্যাং গ্রুপ। মসজিদে নামজরত অবস্থায় প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালান তিনি। যে হামলায় নিহত হয় আল আমিন।

ওই ঘটনায় মামলা হলে গ্রেফতার হন নুরু। মাত্র আড়াই মাস জেল খেটে মুক্তি পান। জেল থেকে এলাকায় ফেরার পথে বিশাল মহড়া দিতে দেখা যায় তাকে। অভিযোগ আছে কড়াইল বস্তি এলাকায় অধিকাংশ মাদকের স্পট নিয়ন্ত্রণ করেন নুরু। তার পরিবারের অন্তত ২৫ জন সদস্য মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আর এই মাদকের ব্যবসা নিরাপদ করতেই সার্বক্ষণিক কড়াইল বস্তি এলাকার প্রবেশ পথে নজরদারি থাকে তার বাহিনীর লোকজনের।

কড়াইল বস্তির আরেকটি অংশের নেতৃত্বদেন যুবলীগ নেতা জুয়েল সরকার। স্থানীয় নূর মসজিদের সভাপতি দায়িত্ব পালন করা জুয়েলের দাবি রাজনীতির দ্বন্দ্বে তার পরিবারের ওপর বারবার হামলা চালিয়ে আসছে প্রতিপক্ষের লোকজন। তাই আত্মরক্ষার্থে এলাকায় মহড়া দেন। সূত্র নিশ্চিত করেছে তার নিয়ন্ত্রণেও একাধিক কিশোর গ্যাং রয়েছে।


নুরুর সঙ্গে দ্বন্দ্বের বিষয়ে জানতে চাইলে জুয়েল সরকার বার্তা২৪.কমকে বলেন, রাজনীতি করতে গিয়ে শত্রুতা তৈরি হয়। একটা সময়ে আমরা এক সঙ্গে রাজনীতি করতাম। নিজেকে বড় নেতা ভেবে আমাদের সঙ্গে শত্রুতা তৈরি করে নুরু। এরপর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নানা সময়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। ২০২২ সালের ১৭ আগস্ট নুরু বাহিনীর হামলার মসজিদের ভেতরে আমার দুই ভাইকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। একজন বেঁচে ফিরলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেনি।

গত ১১ মে রাজধানীর বনানীর কড়াইল বস্তি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বস্তির দক্ষিণ অংশ ও বনানী লেকপাড় অংশের মধ্যে এক অদৃশ্য সীমানা। দুই পক্ষের কেউই ভুলেও সীমানার ওপারটা মারান না। এমন কি নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় চলাচলের ক্ষেত্রেও থাকেন সতর্ক। কারণ রাতের অন্ধকারে যে কোনো সময় প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালাতে পারে।

সম্প্রতি রাতের অন্ধকারে ধরে নিয়ে জুয়েল গ্রুপের সদস্য আসিফের ওপর নির্যাতন চালায় নুরু বাহিনীর সদস্যরা। ধারালো খুর দিয়ে আসিফের গাল কেটে দেওয়া হয়। এই আসিফ নিজেও একটি কিশোর গ্যাং গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করেন।

গাল কেটে যাওয়ায় স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছেন না  জানিয়ে আসিফ বার্তা২৪.কমকে বলেন, মসজিদে হামলা চালিয়ে ও পরে তুলে নিয়ে আল আমিনকে হত্যা করে নুরু বাহিনীর সদস্যরা। পরবর্তীতে নুরু বাহিনীর বিচারের দাবিতে  মানববন্ধনে অংশ নেওয়াই আমার কাল হয়েছে। বাসা থেকে বের হতে পারি না। এখন পর্যন্ত ১৫/১৬ বার হামলা হয়েছে। গাল কেটে ফেলেছে। মাথায় যে কত কাটা দাগ তার কোনো হিসাব নেই। নিয়মিত হত্যার হুমকি পাচ্ছি।

আসিফের দাবি, মহাখালী বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে ক্লিনারের কাজ করতেন। কিন্তু গালের কাটা দাগের কারণে অফিসে যেতে পারেন না। কারণ অফিসের মানুষ তাকে দেখলে ভয় পায়।

এদিকে, বিভিন্ন সূত্রে দুই গ্রুপের অর্ধশতাধিক ছবি ও ভিডিও এসেছে বার্তা২৪.কমের হাতে। ছবিগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ভিডিও-নির্ভর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটক ও ফেসবুকে নিয়মিত অস্ত্রের ছবি পোস্ট দেন দুই গ্রুপের সদস্যরা। দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি নুরুর বিদেশি অস্ত্রসহ ছবিও রয়েছে। এছাড়া এলাকায় নিয়মিত দলবল নিয়ে মহড়া গ্রুপের নেতারা। যার ছবি ও ভিডিও রয়েছে। এমন কি নুরু বাহিনীর সদস্যদের বনানী থানা পুলিশ আটক করে থানার সেলে রাখলে সেখানেও তারা ছবি ও টিকটক ভিডিও তৈরি করে নিজেদের আধিপত্য জানান দেন। দুই গ্রুপই বিভিন্ন ঘটনায় পাল্টাপাল্টি একাধিক মামলা করেছে।

কড়াইল বস্তিতে দুই গ্রুপের অস্ত্রের মহড়া ও কিশোর গ্যাংয়ের আধিপত্য বিস্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাহান হক বলেন, আমরা ইতোমধ্যে মামলা নিয়েছি। আসামি গ্রেফতার করেছি। যারা এ ধরনের কাজে জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা পরিচয়ে আধিপত্য বিস্তার করা নুরু নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আগ্নেয়াস্ত্র পোস্ট করছেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি সাহান বলেন, "অস্ত্রের ছবি পোস্ট দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনার কাছে তথ্য থাকলে আমাকে পাঠান আমি দেখবো।"

   

চুয়াডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালকের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চুয়াডাঙ্গায় দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে মুকুল হোসেন (৫০) নামের এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার কিরণগাছিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত মুকুল হোসেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের ঘাটপাড়ার নুর ইসলামের ছেলে। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাত আলী মন্ডল বলেন, মুকুল হোসেন মোটরসাইকেলে চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় পেছন থেকে দ্রুতগতির আরেকটি মোটরসাইকেল তাকে ধাক্কা দেয়। মুকুল হোসেন সড়কের ওপর ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে মুকুল নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে বলে শুনেছি। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে রাজ হোসেন নামের এক কলেজছাত্র নিহত হন। এ নিয়ে জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় একদিনে দুজনের মৃত্যু হলো।

;

নাম ধরে ডাকায় বন্ধুর ছুরিকাঘাতে বন্ধু খুন



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনায় এক তরুণকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় মনির হোসেন (১৮) নামে আরও একজন আহত হয়েছেন।

নিহত জাহিদুল ইসলাম ওরফে রিয়াজ (২০) উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম কুতুবপুর গ্রামের ওয়ারিশ হাজী বাড়ির হারুনুর রশীদ ওরফে কালামিয়ার ছেলে। তিনি ঢাকার একটি ব্যাগ তৈরির কারখানায় চাকরি করতেন।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাত পৌনে ৮টার দিকে উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের কামলারটেক বাজারের হাশেমের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে একই গ্রামের আলাবক্স বেপারী বাড়ির মহিউদ্দিনের ছেলে হামলাকারী মো.রিয়াজকে (২০) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম জাহিদুল ও আটককৃত আসামি রিয়াজ উভয়ে প্রতিবেশী এবং একসাথে চলাফেরা করত। ভিকটিমের সাথে ৪-৫ দিন আগে আসামি রিয়াজের খেলাধুলা নিয়ে কথাকাটাকাটি হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাহিদুল তার কয়েকজন বন্ধুসহ স্থানীয় কামলারটেক বাজারের হাশেমের চা দোকানের সামনে আড্ডা দিচ্ছিলেন। ওই সময় কিশোর গ্যাং সদস্য বখাটে রিয়াজ তার কয়েকজন সাঙ্গপাঙ্গসহ জাহিদুলের উপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে তার বুকে ছুরিকাঘাত করলে সে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। তাকে বাঁচাতে তার বন্ধু মনির এগিয়ে আসলে তাকেও গুরুত্বর জখম করা হয়। আহত মনির ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, তারা পরস্পর বন্ধু ছিল। তাদের পাশাপাশি বাড়ি। ছোটকাল থেকে তারা এক সাথে চলাফেরা করত। নিহত জাহিদুল আসামি রিয়াজকে নাম ধরে ডাকে। তখন আসামি রিয়াজ ভিকটিমকে বলে আমি কি তোর ছোট নাকি। এরপর কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে ছুরিকাঘাতে করলে ভিকটিম ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

তিনি আরও বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পরপরই একজনকে আটক করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

;

হুক ছিঁড়ে প্রায় দুই ঘণ্টা পর ছাড়লো বিজয় এক্সপ্রেস



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহ রেলওয়ে জংশনে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের হুক ছিঁড়ে দুই বগি আলাদা হয়ে যায়। এতে পৌনে দুই ঘণ্টা বিলম্বে ট্রেনটি ছেড়ে যায়।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাত ৯.৪০ মিনিটে রেলওয়ে জংশন এলাকায় ঘটনাটি টে। পরে রাত ১১;২৩ মিনিটে ট্রেনটি ছেড়ে যায়।

ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, জামালপুর থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি ওয়াটারিং এর জন্য পেছনের দিকে নিয়ে যাওয়ার সময় চালক হার্ড ব্রেক করায় বগীর হুক খুলে দুই বগি আলাদা হয়ে যায় এতে লাইনের কানেকশনে সমস্যা হয়।

তিনি আরও বলেন, লাইনের কানেকশন সমস্যা ঠিক হলে পৌনে দুই ঘণ্টা পর ঠিক হলে ট্রেনটি চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

;

চামড়া পাচার রোধে কুষ্টিয়া সীমান্তে বাড়তি সতর্কতা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তের বিভিন্ন পথ দিয়ে ভারতে চামড়া পাচার রোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে বিজিবি।

সতর্কতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মোর্শেদ রহমান।

জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে দেশের বাজারে চামড়ার ন্যায্য দাম না পাওয়ায় পাচারের শঙ্কা বেড়েই চলেছে। তবে দেশের সম্পদের পাচার ঠেকাতে প্রতি বছর বিজিবির পক্ষ থেকে সীমান্তজুড়ে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়। এ বছরও পাচার রোধে বিজিবির সদর দপ্তর থেকে নির্দেশ এসেছে।

দেশের বাজারে ছোট মাপের একটি গরুর চামড়া ৫০০-৬০০ টাকা, বড় মাপের ৭০০-৮০০ টাকা, ছাগলের ৫০-১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বাজারে ছোট মাপের গরুর চামড়া ১০০০-১২০০ রুপি, বড় মাপের গরুর ১৫০০-১৬০০ রুপি ও ছাগলের ২০০-৩০০ রুপি বিক্রি হচ্ছে। যার কারণে অধিক মুনাফা আশায় কিছু লোকেরা ভারতে চামড়া পাচার করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মোর্শেদ রহমান বলেন, সীমান্ত দিয়ে ভারতে চামড়া পাচার রোধে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্টে বিজিবি পোস্টে কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে। বিশেষ করে রাতে টহল ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে।

;