বাকলিয়া চরে বর্জ্য শোধনাগার: কর্ণফুলীকে এগিয়ে দেবে মৃত্যুর দিকে!



রেদ্ওয়ান আহমদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
বাকলিয়া চর

বাকলিয়া চর

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৩০ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ আমলে চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু নির্মাণের কারণে শাহ আমানত সেতু থেকে আনুমানিক দেড় কিলোমিটার উজানে কর্ণফুলী নদীর মাঝখানে ধীরে ধীরে একটি চর জেগে ওঠে। যার নাম বাকলিয়া চর। কর্ণফুলী নদীতে জেগে ওঠা এই চরে গত বছরের অক্টোবরে বর্জ্য শোধনাগার স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এর বাস্তবায়ন করবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। এজন্য চসিকের অনুকূলে খাসজমি দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্ত প্রদানের প্রক্রিয়া চলছে। যা উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে চট্টগ্রামের সচেতন মানুষের মনে।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ চরটির পশ্চিম দক্ষিণ পাশে কিছুটা খনন করেছে। চরটির মোট আয়তন প্রায় ১০৫ একর বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তবে, বর্তমানে চরটি সরকারি এক নম্বর খাস খতিয়ানে নদী শ্রেণির জমি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

চট্টগ্রামের সচেতন নাগরিকদের দাবি, জেলার বোয়ালখালী উপজেলাধীন চর বাকলিয়া মৌজার ৩৫ একর জমিতে বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণের পরিকল্পনা দেশের বৃহত্তম বন্দরকে ঘিরে থাকা দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড খ্যাত কর্ণফুলী নদীকে ধ্বংস করে দেবে। তাদের মতে, চট্টগ্রাম নগরের বর্জ্য শোধনাগারের প্রয়োজনীয়তার কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই, কিন্তু যে জায়গায় এটি স্থাপনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে সেটি মোটেও পরিবেশবান্ধব, জনবান্ধব এবং চট্টগ্রামবান্ধব হবে না।

তাদের দাবি, এই নদীর মোহনার কাছেই চট্টগ্রাম বন্দর। এজন্য কর্ণফুলী নদীকে দেশের প্রাণপ্রবাহও বলা হয়ে থাকে। বর্জ্য শোধনাগার স্থাপিত হলে এই প্রাণপ্রবাহ থেমে যাবে। দেশে অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। পরিবেশ ধ্বংস হবে। জীব বৈচিত্র্য ধ্বংস হবে। কর্ণফুলীর দুই তীরে বিস্তীর্ণ জনপদের জনজীবনে ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।

এ কারণে পরিকল্পনাটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং পরিবেশ আন্দোলন কর্মীরা। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক এমন স্থাপনা নির্মাণ পরিকল্পনা বাতিলের জন্য যে কোনো কঠিন আন্দোলনে যেতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে ‘কর্ণফুলী রক্ষায় জনগণের প্রতিবাদ মঞ্চ’।

চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম, চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র, আরএসকে ফাউন্ডেশন, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন মিলে ছয়টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত এই মোর্চা যেখানে এই স্থাপনা গড়ার পরিকল্পনা চলছে, সেই কর্ণফুলীর চরে গিয়ে সমাবেশ এবং সংবাদ সম্মেলনও করেছে।

এছাড়াও আজ বুধবার (২২ মে) এক সংবাদ সম্মেলন করে তারা বলেছেন, নদীর মাঝখানে বর্জ্য শোধনাগার হলে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ঘটবে। সেখানে ভূমি নিরীক্ষার কাজ করছে চীন দেশের একটি প্রকৌশলী কোম্পানি।

কর্ণফুলী রক্ষায় জনগণের প্রতিবাদ মঞ্চের নেতারা বলেন, ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে হাইকোর্টের রায়ে আমাদের দেশের নদীগুলোকেও জীবন্ত সত্তা, জুরিসটিক পারসন বা লিগ্যাল পারসন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং এর মাধ্যমে মানুষের মতো নদীর মৌলিক অধিকার স্বীকৃত হয়েছে। হাইকোর্টের এই আদেশ অনুযায়ী নদীর মাঝখানে বর্জ্য শোধনাগার প্রকল্প করা অবৈধ এবং আদালতের আদেশের লঙ্ঘন, সুতরাং এই প্রকল্প হতে পারে না।

ম্যাপে বাকলিয়া চর

তারা আরও বলেন, আমাদের সংবিধানেও উল্লেখ আছে, ‘রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করিবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীব-বৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণির সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করিবেন। তার মানে জলাভূমি অর্থাৎ নদীর নিরাপত্তা বিধান সংবিধানস্বীকৃত এবং সেটি করতে হবে স্বয়ং রাষ্ট্রকে।’ আদালত নদীকে জীবন্ত সত্তা ঘোষণা করার সময় নদী রক্ষা কমিশনকে নদীর অভিভাবক হিসেবে ঘোষণা করেন। তারা রাষ্ট্রের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে নদীর অধিকার রক্ষা করবে। কিন্তু বর্জ্য শোধনাগার প্রকল্প নদীর অধিকারকে হত্যা করবে।

প্রতিবাদ মঞ্চের নেতারা জানান, দেশের সংবিধান অনুযায়ী নদীর মাঝখানে বর্জ্য শোধনাগার প্রকল্প থেকে সরে আসতে হবে। তা না হলে এটি আইনবিরুদ্ধ কাজ হবে।

কর্ণফুলী নদীর প্রাণপ্রকৃতি, উদ্ভিদ বৈচিত্র্য ও দূষণ নিয়ে বন্দরনগর ভিত্তিক পরিবেশ সংস্থা ইফেক্টিভ ক্রিয়েশন অন হিউম্যান ওপিনিয়ন (ইসিএইচও) ২০২২ সালে এক গবেষণা চালায়। তাতে দেখা গেছে, কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী ৮১ প্রজাতির উদ্ভিদ বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। দূষণ রোধে কোনো ব্যবস্থা না নিলে আরও ৬১ প্রজাতির উদ্ভিদ বিপন্ন হয়ে পড়বে। ৫৩টি শিল্পসহ ৮৯টি উৎস থেকে কর্ণফুলী নদী দূষিত হচ্ছে। গবেষণায় কর্ণফুলী নদীর তীরে ৫২৮ প্রজাতির উদ্ভিদ পাওয়া গেছে। যার কারণে জনগণের প্রতিবাদ মঞ্চের নেতারা ঝুঁকিতে থাকা ৮১ প্রজাতির দেশীয় উদ্ভিদ সংগ্রহ করে সেগুলোর চারা চরে লাগানোর দাবি জানান। তাতে কর্ণফুলী নদী প্রাণ ফিরে পাবে বলে তারা মনে করেন।

চট্টগ্রাম মহানগরীতে বিনোদনের তেমন কোনো স্থান নেই। পৃথিবীতে অনেক দেশে নদী বা সাগরের মাঝখানের চরে নান্দনিক পর্যটন কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। সেগুলো দেশি-বিদেশি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। চর বাকলিয়ায় পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে এটি ইকোট্যুরিস্ট স্পট গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

তারা দাবি জানান, আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এই প্রকল্প বাকলিয়া চর থেকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে হবে। অন্যথায় তারা সিটি করপোরেশন ঘেরাওসহ উচ্চ আদালতে নির্দেশ অমান্য করাসহ সংশ্লিষ্ট আইনে প্রতিকার প্রার্থনা করে রিট দায়ের করা হবে বলেও জানিয়েছেন।

কর্ণফুলী নদী গবেষক প্রফেসর ড. ইদ্রিস আলী বলেন, ‘নদী ভরাট হয়ে জেগে ওঠা দ্বীপ এমনিতেই কর্ণফুলীকে দুই ভাগ করেছে। উন্নয়নের নাম দিয়ে এই চর বা দ্বীপে বিষাক্ত বর্জ্য শোধনাগার স্থাপনের পরিকল্পনা আত্মঘাতী। এটি কর্ণফুলীকে হত্যা করবে। চসিক মেয়রকে এই কাজ করার কুপরামর্শ যারা দিয়েছে তারা দেশের শত্রু। বীর মুক্তিযোদ্ধারা আধুনিক প্রজন্মকে নিয়ে এই অন্যায় প্রতিহত করবে।’

প্রতিবাদ মঞ্চের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘জনগণের দাবি মেনে বর্জ্য শোধনাগার প্রকল্প স্থাপন বন্ধ করুন। প্রয়োজনে মুক্তিযোদ্ধা, যুবসমাজ, সাম্পান মাঝিরা লাঠি বইঠা নিয়ে মেয়রের কার্যালয় ঘেরাও করবে। দেশকে ধ্বংস করে কার স্বার্থে কীসের এই প্রকল্প?’

এদিকে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের দাবি, বাকলিয়া চরে চসিকের বর্জ্য শোধনাগার স্থাপন প্রকল্পটি আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বন করেই করা হবে। এর বর্জ্য নদীতে পড়বে না।

এ বিষয়ে বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, ‘আমরা যতোটুকু জানি, এই প্রকল্পটা হবে গ্রিন ফ্যাসিলিটিসের মধ্যে। এখানে পরিবেশ দূষণের খুব বেশি কিছু থাকবে না। এরপরও বিষয়টা ভূমি মন্ত্রণালয় দেখছে, এখানে প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে পরিবেশের জন্য এটি কোন প্রকার ক্ষতি হবে কিনা। পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকেও এটার ওপরে একটা এনওসি পাওয়া গেছে। তবুও, বিষয়টা নিয়ে আরও অনেক স্টাডি হবে, গবেষণা হবে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে। কেননা, এটা তো অনেক বড় একটি প্রকল্প। প্রায় ৬-৭ হাজার কোটি টাকার। সুতরাং কিছু করার আগে অবশ্যই ভালো করে যাচাই বাছাই হবে।’

কোন বিকল্প জায়গা আছে কিনা প্রশ্নের জবাবে চসিকের এই প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘না, প্রকল্পটা বাস্তবায়নের জন্য চট্টগ্রামে তেমন কোন বিকল্প জায়গা নেই। কেননা, আমাদের বর্জ্য শোধনাগার করতে প্রায় ৩৫ একর জায়গা লাগবে। আর ওখানে একসাথে প্রায় ৩৫ একর জমিই পাওয়া যাবে। যেটা চট্টগ্রামে আর কোথায় পাওয়া যাচ্ছে না। যার কারণে, ওখানে প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রাথমিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’

   

বিয়ের ১৯ দিন পর নববধূর আত্মহত্যা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বান্দরবান
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বান্দরবানের লামা উপজেলায় বিয়ের ১৯ দিন পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে খাতিজা আক্তার (১৯) নামের এক নববধূ আত্মহত্যা করেছে।

শুক্রবার (২১ জুন) বিকাল ৫টার দিকে উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড খেদারবান পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। খাতিজা আক্তার একই এলাকার বাসিন্দা মো. ইব্রাহিমের মেয়ে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফাইতং ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ড সদস্য জুবাইরুল ইসলাম জানান, গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঘরের ভিমের ঝুলে থাকতে দেখে পরিবারের লোকজন উদ্ধারের পর হাসপাতালে নিয়ে যায়।

জানা যায়, খাতিজা আক্তার গত বুধবার শ্বশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। এক পর্যায়ে শুক্রবার বিকাল ৫ টার দিকে আত্মহত্যা করেন। তবে কোন কারণে গলায় ফাঁস লাগিয়ে খতিজা আক্তার আত্মহত্যা করেছেন তা জানা যায়নি।

এ বিষয়ে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামীম শেখ বলেন, প্রাথমিক সুরতহাল শেষে খতিজা আক্তারের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য বান্দরবান সদর মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে আত্মহত্যার কারণ জানা যায়নি।

;

পল্লী উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে বার্ডের প্রকল্প



কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে রুপিয়া বেগমের সংসার। মেয়ে দুইজনকেই বিয়ে দিয়েছেন। তবে অর্থের অভাবে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর পর ছেলেকে পাঠিয়েছেন দেশের বাইরে। এদিকে তিনি ডিজিটাল থার্মোমিটার ও ওজন মাপার যন্ত্রের মাধ্যমে মানুষকে সেবা দেওয়ার পাশাপাশি আয়ও করছেন।

ম্যানেজার সংগঠন থেকে ঋণ নিয়ে দই বিক্রি ও অনলাইনে কাপড় বিক্রি করে মাসে প্রায় দশ হাজার টাকা উপার্জন করছে রৌশন আরা বেগম। আর আমেনা বেগম কৃষি কাজ করে মাসে ১০০ মণ ধান বিক্রি করে এবং গরু মোটাতাজা করে বিক্রি করে বেশ ভালো অর্থ উপার্জন করছেন।


এরা প্রত্যেকেই কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার চৌয়ারা ইউনিয়নের দক্ষিণরামপুর গ্রামের বাসিন্দা। শুরুতে আর্থিকভাবে লাভজনক কোনো কাজের সঙ্গে তারা যুক্ত না থাকলেও বার্ডের নারী উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে অন্তর্ভুক্ত হয়ে নিজেরা স্বাবলম্বী হয়েছেন।

বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর অর্ধেকই নারী। অর্ধেক সংখ্যক মানবগোষ্ঠীকে উন্নয়ন কার্যক্রমের বাইরে রেখে কোনো দেশের উন্নয়ন কখনোই সম্ভব নয়। বেগম রোকেয়া বলেছিলেন, একটি গাড়ির দুটি চাকার একটি চাকা যদি অচল হয় তাহলে সে গাড়ি চালানো যেমন সম্ভব নয় তেমনি নারীদেরকে স্বাবলম্বী না করে দেশের উন্নয়ন সম্ভব হয়।


এমনটা ভেবেই বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) এর প্রতিষ্ঠাতা ড. আখতার হামিদ খান ষাটের দশকের শুরুতেই নারীদের উন্নয়নের লক্ষ্যে নারীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য তাদেরকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন। এই প্রেক্ষিতেই বার্ড ১৯৬২ সাল থেকে নারীদের উন্নয়নের জন্য কুমিল্লা এলাকায় পরীক্ষামূলক প্রকল্প চালু করে। 

গৃহ উন্নয়ন প্রকল্প:

১৯৬২ সালের বার্ডের নেয়া প্রথম প্রকল্পটি ছিল 'গৃহ উন্নয়ন প্রকল্প'। এই প্রকল্পের অধীনে বাড়ির আশেপাশে শাক-সবজির চাষ, হাঁস-মুরগি পালন, পরিবার পরিকল্পনা ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। তবে তা কেবল নারীদেরকেই নয়, পুরুষদেরকেও সেখানে যুক্ত করা হতো। 


মুশিআপুউ প্রকল্প:  

পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালে 'মহিলা শিক্ষা, আয় ও পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প (মুশিআপুউ)' নামে আরেকটি প্রকল্প নেয় বার্ড। বার্ডের নিজস্ব রাজস্ব বাজেটভুক্ত এই প্রকল্পটি ১৯৯৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে শুরু হয়ে পরিমার্জিত আকারে কুমিল্লা সদর, বুড়িচং, সদর দক্ষিণ এবং বরুড়া উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ২৪টি গ্রামে প্রতিষ্ঠিত ২৪টি গ্রাম সংগঠনের মাধ্যমে বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে পরিচালিত হচ্ছে। পল্লী এলাকার মহিলা জনগোষ্ঠীদের মধ্যে বিশেষত সুবিধাবঞ্চিত ও দারিদ্রপীড়িত পরিবারের নারীদের উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করতে মুশিআপুউ কাজ করছে।

এছাড়া তাদের দক্ষতা উন্নয়নপূর্বক দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে আয়, উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি মানবাধিকার ও আইনত সুরক্ষা, মা ও শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি উন্নয়নসহ মৌলিক অধিকারসমূহের সমন্বিত বাস্তবায়নের মাধ্যমে তাদের সার্বিক মানোন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে কাজ করে যাচ্ছে। 

জিইওভিই প্রকল্প: 

নারীদের আইনি বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে ২০০৮ সালের জুলাই থেকে ২০১১ সালের জুন পর্যন্ত কাজ করেছে ‘জেন্ডার রাইটস অপারেশনস এন্ড ভায়োলেন্স এলিমিনেশন ( GEOVE)' প্রকল্পটি। 

এছাড়া নারী ও শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করার জন্য প্রতিটি গ্রামে জেন্ডার এবং শিশু অধিকার কর্মী তৈরিতে কাজ করেছে বার্ড।

টেকসই শিক্ষা ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রকল্প:

গ্রামীণ নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য টেকসই শিক্ষা ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রকল্পটিও (RWSEEDE) মুশিআপুউ প্রকল্পের অন্য আরেকটি রূপ। এই প্রকল্পের অধীনে এখন পর্যন্ত সংগঠনের সদস্যদের বার্ড কর্তৃক ৫৩টি বিষয়ভিত্তিক ও ৪৬৬টি নিয়মিত ও বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। 

২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে চলমান এই প্রকল্পের মূল কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে গ্রামের দরিদ্র নারী। গ্রামীণ নারীদের নির্বাচিত ইউপি সদস্য হিসেবে কাজ ও চাকরি লাভ এবং ৫০ শতাংশ নারীর উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী মেলা, বার্ড ও কুমিল্লাস্থ সিটি মার্কেটের বিক্রয় কেন্দ্রের সাথে সংযোগ স্থাপন করে পণ্যের বাজারজাতকরণে সাহায্য করেছে। গৃহ, পরিবার এবং কমিউনিটি পর্যায়ে জেন্ডার বৈষম্য ও নির্যাতন প্রতিরোধ, অধিকার সুপ্রতিষ্ঠা, সকল সরকারি ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসমূহের পরিষেবা প্রাপ্তিতে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার, তথ্যায়ন ও কার্যকর নেটওয়ার্ক স্থাপনের উদ্দেশ্যেও কাজ করছে এই প্রকল্পটি।

এ প্রকল্পের অধীনে যেসব নারীদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে এবং নিজেদের স্বাবলম্বী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে তাদের বেশিরভাগই নিজেদের তৈরি করেছে খাদ্য উদ্যোক্তা হিসেবে।

;

থানচিতে খাদে পড়ে ট্রাক চালক নিহত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বান্দরবান
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বান্দরবানের থানচি উপজেলায় মালবাহী ট্রাক খাদে পড়ে চালক নিহত হয়েছে। এসময় গাড়িতে থাকা আরও ৪ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার (২১ জুন) রাতে সাড়ে ৮ টায় থানচি উপজেলার জীবন নগর সড়ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিক নিহত ও আহতের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বান্দরবান থেকে বিজিবির টাইলসবাহী একটি বিআরটিসি ট্রাক থানচি যাওয়ার পথে জীবন নগর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ২ হাজার ফুট গভীর খাদে পড়ে। এসময় ঘটনাস্থলে ট্রাকের চালক নিহত ও অপর ৪ জন গুরুতর আহত হন।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বিজেবি, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে নিহত ও আহতরা ওই এলাকার বাসিন্দা না হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

বান্দরবান ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক পূর্ণচন্দ্র মুৎসুদ্দী বলেন, টাইলস নিয়ে বান্দরবান থেকে থানচি যাওয়ার পথে বিআরটিসির একটি ট্রাক গভীর খাদে পড়ে ১ জন নিহত ও ৪ জন আহত হয়েছে। হতাহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

;

ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ, রেল সেতুতে মাথায় আঘাত লেগে প্রাণ গেল তরুণের



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহে ট্রেনের ছাদে উঠে ভ্রমণ করার সময় কেওয়াটখালি রেল সেতুতে মাথায় আঘাত লেগে অজ্ঞাত (১৮) এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২১ জুন) সন্ধ্যার পর দেওয়ানগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেন কেওয়াটখালি রেল সেতুতে আসতেই ট্রেনের ছাদে বসে থাকা তরুণের মাথায় আঘাত লেগে গুরুতর আহত হয়।

গফরগাঁও রেলওয়ে ফাঁড়ি ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) কার্তিক চন্দ্র রায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, ঈদের ছুটি শেষে মানুষ কর্মস্থলে ফিরছেন। নিহত অজ্ঞাত যুবক দেওয়ানগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেনে ভিতরে ও ছাদে প্রচণ্ড ভিড় থাকা ইঞ্জিনের ছাদে ভ্রমণ করছিলেন। ট্রেন কেওয়াটখালি রেল সেতু পাড় হওয়ার সময় সে মাথা আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হয়। পরে গফরগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রা বিরতির সময় ছাদে ভ্রমণ করা অন্য যাত্রীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ তরুণকে উদ্ধার করে গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

গফরগাঁও রেলওয়ে ফাঁড়ি ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) কার্তিক চন্দ্র রায় বলেন, রেল ব্রিজে মাথায় আঘাত পায় এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে এবং যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের পরিচয় উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনা আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

;