ভারত থেকে বাংলাদেশে অবৈধভাবে প্রবেশের সময় ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী সীমান্তের রত্নাই বিওপির সীমানায় নীতীশ পাল (২৫) নামে এক যুবককে আটক করেছে বিজিবি।
আটক ওই যুবক বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বেলতলা গ্রামের ধীরেন পালের ছেলে।
রত্নাই বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েব সুবেদার মো. নুরুল ইসলাম জানান, ২২ মে (বুধবার) রাতে আমজানখোর ইউনিয়নের রত্নাই বিওপির ঠকবস্তি বটতলা সীমানায় ডিউটি করার সময় রাত ৮ টায় সিমানা পিলার ৩৮২-এস এর ২০০ গজ ভিতরে ভারত থেকে অবৈধভাবে প্রবেশ করার সময় নীতীশ পালকে আটক করা হয়। তিনি দীর্ঘ আট বছর ধরে দিল্লিতে রাস্তার কাজ করতেন।
পরে তাকে বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ কারও সঙ্গে কখনও নতজানু আচরণ করেনি। মিয়ানমার সীমান্তে কঠোর নজরদারি রাখছে সরকার বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রোববার (১৬ জুন) রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সেন্টমার্টিন পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিয়েছেন মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, পরিস্থিতি সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সেন্টমার্টিনে যে গুলির ঘটনা ঘটেছে, সেটা করেছে আরাকান আর্মি। মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় বাহিনী সেটা করেনি।
সেন্টমার্টিনে খাদ্যবাহী জাহাজ নিয়মিত যাতায়াত করছে জানিয়ে কাদের বলেন, আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চাই। গায়ে পড়ে মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধ করার কোনো প্রয়োজন নেই বাংলাদেশের। সেন্টমার্টিন দখল হচ্ছে এসব তথ্য সঠিক নয়, এসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা কারও সঙ্গে কখনও নতজানু আচরণ করিনি, করব না। কয়েক দিন আগে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। মিয়ানমার সীমান্তে কঠোর নজরদারি করছে বাংলাদেশ, আমরা সতর্ক অবস্থায় রয়েছি।
রাত পোহালেই ঈদুল আজহা। এময় সময় কুমিল্লা নগরীজুড়ে চলছে কোরবানির গরু চুরির হিড়িক। ফলে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নগরবাসী।
রোববার (১৬ জুন) ভোর ৪ টার দিকে নগরীর ঠাকুরপাড়া থেকে ৩ টি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ একরাম হোসেন।
সিসিটিভি ফুটেজের বরাতে তিনি বলেন, একটি পিকআপে করে মুখোশ পড়া ৩ জন লোক আসে। বাড়ির তালা কেটে স্থানীয় বাসিন্দা হাসান ও তার ভাড়াটিয়াদের ৩টি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। আমরা চোরদের শনাক্ত করতে পারিনি। তবে আশপাশের এলাকায় খবর নিচ্ছি।
এদিকে গত শুক্রবার রাতে নগরীর বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের আবাসিক এলাকা থেকে টেকনিশিয়ান জাহেদ আলীর একটি গরু চুরির ঘটনা ঘটে। যদিও ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠায় মুখ খুলেনি কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিয়ে কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেন বলেন, গরু চুরির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ করেননি। তবে মৌখিকভাবে শুনেছি। চুরি ঠেকাতে আমরা বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করছি।
রাত পোহালেই ঈদ। কিশোরগঞ্জের সবগুলো উপজেলায় কোরবানির শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। টুং টাং শব্দে মুখরিত হচ্ছে কামারপাড়া।
কামার ছমেদ আলী (৩৫) দুই দিনে ১০ ঘণ্টাও ঠিকমতো ঘুমাতে পারেনি৷ গভীর রাত পর্যন্ত চলে তার কাজ। কয়েক ঘণ্টা ঘুমিয়ে আবার ফজরের আগেই দোকান খুলতে হচ্ছে৷ কারণ জমে থাকা কাজ শেষ করতেই হবে।
শনিবার (১৫ জুন) রাতে কয়েকটি কামারশালা ঘুরে দেখা যায়, প্রতি দোকানে অতিরিক্ত ৫-৬ জন শ্রমিক মিলে কাজ করছে৷ দোকানের চারদিকে ঘিরে আছে মানুষ৷ দা, বটি, ছুরি কেউ নতুন কিনছেন আবার কেউ পুরাতন গুলো মেরামত ও ধার দিতে আনছেন।
এমনকি রোববার সকাল থেকেই ধরণা দিচ্ছেন তাদের জিনিস গুলো তৈরি হলো কিনা এ নিয়ে৷
একদিকে কোরবানির পশু কেনায় ব্যস্ত সচ্ছল পরিবারগুলো, অন্যদিকে প্রায় কয়েকগুণ বেশি সমানুপাতিক হারেই দা, বটি, ছুরি কিংবা কুরবানির পশু কাবু করার অস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কামাররা। দম ফেলার যেন ফুসরত নেই এখন৷ অনেকটা নাওয়া খাওয়া ভুলেই কাজ করতে হচ্ছে।
ঈদ মৌসুমে ভোর রাত থেকেই তাদের কর্মযজ্ঞ শুরু হয় আর চলে মধ্য রাত অব্দিও। প্রতিটি ছোট ও বড় ছুরি ধারালো করার কাজে কামাররা মজুরি নিচ্ছেন ১০০-১৭০ টাকা। চাকু ৫০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের অনেকে আবার নিজস্ব ধাতব পদার্থ নিয়ে আসছেন দা-বটি তৈরি করতে। কেউবা নিচ্ছেন কিনে। তবে দা বটির চাহিদা থাকে সারা বছরই। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে হলেও প্রয়োজনীয় জিনিসটি নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা।
কামার সুজিত চন্দ্র বলেন, ঈদের আগেই এমন কদর, পরে শেষ। সবকিছু এখন রেডিমেড কিনতে পাওয়া যায়৷ নতুন তৈরির আগ্রহ অনেকের কম। এই কয়ডা দিনই আমাদের টেহা রোজগারের দিন।'
আরেক কামার ছমেদ আলী বলেন, ঘুম, খাবার ঠিকমতো হচ্ছে না৷ মানুষের তাগদা আছে অনেক৷ আজ শেষ দিন৷ কাজ শেষ করার খুব চাপ।
ঈদের ছুটিতে স্বজনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে সায়েদাবাদ থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলসহ বিভিন্ন জেলায় ছুটছেন মানুষ। ছুটির শুরুতে যানজট আর টিকিটের সংকট থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই চিত্র বদলে গেছে। কাউন্টারে বাস থাকলেও যাত্রীদের তেমন চাপ নেই।
রোববার (১৬ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যাত্রাবাড়ীর সায়েদাবাদ বাস স্ট্যান্ডের কাউন্টারগুলোতে পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টার ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি কাউন্টারের বাসের টিকিট রয়েছে। যাত্রীদের ডাকাডাকিতে ব্যস্ত কাউন্টারের কর্মীরা। ব্যাগ হাতে দেখলে গন্তব্য জানতে যাচ্ছে। চাহিদা মতো টিকিট পাচ্ছেন যাত্রীরা।
কথা হয় বনানী এলাকার একটি প্রতিষ্ঠানের সুপার ভাইজার সুলতান মাহমুদের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি পটুয়াখালী যাবো। ছুটি পাবো কি না সেটা নিশ্চিত ছিলাম না, তাই অগ্রিম টিকিট কাটিনি। টিকিট পাবো কি না সেই শঙ্কা নিয়ে কাউন্টারে আসলাম। কিন্তু এসে দেখি প্রতিটি কাউন্টারে টিকিট আছে। তাই শ্যামলী পরিবহনের একটি টিকিট কাটলাম।
ঈদের আগের দিন সকাল থেকেই যাত্রীর চাপ কম বলে জানিয়েছেন, শ্যামলী বাস কাউন্টারের ম্যানেজার মো. কাওসার। তিনি বলেন, সকাল থেকেই যাত্রীদের চাপ কম। আমাদের পর্যাপ্ত টিকিট আছে।
শনিবার (১৫ জুন) লেট হলেও আজ দ্রুতই বাস পাওয়া যাচ্ছে। যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। শনিবার বিকেল থেকে সারারাত যানজট ছিল। কিন্তু আজ সকাল থেকে গাড়ির চাপ কম থাকায় যানজট নেই।
ইউনিক পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার সোহরাব হোসেন বলেন, দেশের সব রুটে আমাদের বাস চলে। আমাদের কোনো টিকিট নেই। সব আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। শিডিউল অনুযায়ী বাস যাচ্ছে। আমরা যানজট এড়াতে যাত্রাবাড়ীর হুজুরবাড়ি এলাকা থেকে যাত্রীদের বাসে তুলে দিচ্ছি। এতে কোনো লেট শিডিউল নেই।
ঈদের ছুটিতে সময় মতো বাস না পাওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন মহাসড়কের পাশে গরুর হাট বসানোর কারণে কয়েকদিন ধরে লেট শিডিউল টানতে হয়েছে। সময় মতো বাস না আসায় যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। তবে শনিবার সকাল ১০টার পর থেকে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। এখন কোনো যাত্রীকে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে না।
ঈদ যাত্রায় যানজটের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপি ট্রাফিক ওয়ারি বিভাগের যাত্রাবাড়ী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) তানজিল আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, যাত্রাবাড়ী সায়েদাবাদ থেকে ঢাকা বরিশাল, চট্টগ্রাম, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন রুটের গাড়ি যাতায়াত করছে। তবে শরীয়তপুরসহ বেশ কয়েকটি স্বল্প দূরত্বের বাস রয়েছে যেগুলো বারবার আসা যাওয়ার কারণে যাত্রাবাড়ীতে যানজট লেগেছে। স্বল্প দূরত্বের বাসের বারবার রোটেশনের কারণে গাড়ির চাপ আছে। তবে আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করছি।
তিনি আরও বলেন, যাত্রাবাড়ী মোড়ে কিছু বাসের কাউন্টার রয়েছে। এ কারণে যানজট নিয়ন্ত্রণ কঠিন। বরিশাল, চট্টগ্রামসহ সব রুটের বাস বের হয়ে যাচ্ছে। তবে ঢাকায় প্রবেশপথে ধোলাইপাড়ে দেড় কিলোমিটারের একটা যানজটে পড়তে হচ্ছে। তবে আমরা সর্বাধিক চেষ্টা করছি।