৪০ বছর পর দেশে ফিরলেন নেপালী নাগরিক 



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, বগুড়া
৪০ বছর পর দেশে ফিরলেন নেপালী নাগরিক 

৪০ বছর পর দেশে ফিরলেন নেপালী নাগরিক 

  • Font increase
  • Font Decrease

৪০ বছর আগে কাজের সন্ধানে বাংলাদেশে এসে আটকে পড়েন নেপালী নাগরিক বীর কা বাহাদুর রায়। বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের একটি চাতালে আশ্রয় মেলে তার। ৪০ বছরের বেশি সময় তিনি সেখানে থেকে কখনো চাতাল শ্রমিক, কখনো হোটেল শ্রমিক হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু এখন বয়স এতটাই বেড়েছে যে সব কাজ আর ঠিক মতো করতে পারেন না। ৭০ বছরের বৃদ্ধ বীর কা বাহাদুর অন্যের করুণায় দিন কাটান। এমন খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তাকে দেশে ফেরাতে উদ্যোগী হয় স্থানীয় প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) নেপাল দূতাবাসের উদ্যোগে বাংলাবান্ধা সীমান্ত হয়ে নিজ দেশে ফিরে যান বীর কা বাহাদুর রায়।

দীর্ঘদিন দুপচাঁচিয়ায় অবস্থান করা বীর কা বাহাদুর যখন এলাকা ছাড়েন সেসময় এলাকায় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। একদিকে তাকে বিদায় দেওয়ার বেদনা, অন্যদিকে স্বজনদের কাছে তিনি ফিরতে পারছেন সেই আনন্দের মিশ্রন দেখা দেয় এলাকাবাসীর মধ্যে। এদিকে দীর্ঘদিন পর নিজ দেশে ফিরতে গিয়ে নিজেরও মন খারাপ বীর কা বাহাদুরের। তিনি আবার ফিরে আসবেন বলে জানান স্থানীয়দেরকে।

শুধু যে দেশেই ফিরলেন বীর কা বাহাদুর তা নয়, সাথে যেমন নিয়ে গেলেন এলাকাবাসীর ভালোবাসা; তেমনি যে চাতালে তিনি আশ্রয় নিয়ে ছিলেন সেই চাতাল মালিক অলোক কুমার বসাক ও পুলক কুমার বসাক এবং তাকে দেশে ফেরানোর জন্য উদ্যোগ গ্রহণকারী স্থানীয় ফার্মেসী ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান খান ফরেন এই তিনজন তার হাতে তুলে দেন নগদ ৭৫ হাজার টাকা। 

গত বুধবার সন্ধ্যায় বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় গিয়ে বীর কা বাহাদুরকে দেশে ফেরানোর আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন নেপাল দূতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারি উজানা বামজান। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন নেপাল দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন ললিতা শিলওয়াল ও একই দূতাবাসের অ্যাম্বাসিডরের সেক্রেটারি রিয়া ছৈত্রী। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ছিলেন দুপচাঁচিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জান্নাত আরা তিথি ও দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সনাতন চন্দ্র সরকার।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সকাল ৯ টার দিকে বগুড়া সার্কিট হাউস থেকে বীর কা বাহাদুরকে নিয়ে দূতাবাস কর্মকর্তাগণ বাংলাবান্ধা সীমান্তের উদ্দেশে রওনা করেন।

দুপচাঁচিয়ার আনুষ্ঠানিকতা শেষে নেপাল দূতাবাসের অ্যাম্বাসেডরের সেক্রেটারি রিয়া ছৈত্রী জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বীর কা বাহাদুরের আটকে পড়ার খবর নজরে এলে উপজেলা প্রশাসন থেকে দূতাবাসে যোগাযোগ করা হয়। ওই খবরে যে এলাকার কথা বলা হচ্ছিলো তা পূর্ণাঙ্গ ছিল না। তারপরও নেপাল সরকার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেয়। ওই জায়গার নামের সঙ্গে মিল খুঁজে বের করা হয় বীর কা বাহাদুরের নিজ জন্মস্থান। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত বাংলাবান্ধার কাছে নেপালের হিলাম নামক এক জেলা আছে; সেই জেলায় গোরখা বাঙ্গানা নামে একটি বাজারের সন্ধান মেলে। এরপর সেখানে অনুসন্ধান চালিয়ে খুঁজে পাওয়া যায় তার বড় ভাইয়ের স্ত্রীকে (ভাবী)। তিনি ছবি দেখে নিশ্চিত করেন এই বীর কা বাহাদুর-ই তার দেবর। বহুদিন আগে যিনি কাজের সন্ধানে বেরিয়ে আর ফেরেননি। এরই মাঝে তার বড়ভাইও মারা গেছেন। বাড়ির অন্য সদস্যদের বীর কা বাহাদুরের কথা তেমন মনে নেই। পরিবার তার পরিচয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাকে ফিরিয়ে নিতে সম্মত হলে প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে অনুমোদন পাওয়ার পর তাকে নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

তাকে ফিরিয়ে নিতে আসা নেপাল দূতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারি উজানা বামজান বলেন, ‘বীর কা বাহাদুর রায় বাংলাদেশে ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে আছেন। এখন তিনি নেপালে ফেরার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। নেপাল সরকারের উদ্যোগে তাকে বাংলাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সীমান্তে তার পরিবারের সদস্যরা এসে তাকে গ্রহণ করবেন। তাকে দেশে ফেরার জন্য সহায়তা করায় আমি দুপচাঁচিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। সেইসঙ্গে নেপাল দূতাবাসের সঙ্গে অব্যাহত যোগাযোগ করার কারণে দুপচাঁচিয়ার বাসিন্দা মেহেদী হাসান খান ফরেনের প্রতিও আমি কৃতজ্ঞ।’

দুপচাঁচিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জান্নাত আরা তিথি বলেন, ‘বীর কা বাহাদুরের সংবাদ জানার পর তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সেসময় তিনি নেপালে ফেরার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। এবিষয়ে তিনি আবেদন করলে তা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। তারই ধারাবাহিকতায় নেপাল দূতাবাস থেকে সেকেণ্ড সেক্রেটারিসহ একটি প্রতিনিধি দল বীর কা বাহাদুরকে নেওয়ার জন্য আসেন। তারা বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বাংলাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবেন।’

এদিকে দেশে ফেরার বিষয়ে জানতে চাইলে বীর কা বাহাদুর বলেন, ‘ওরা বললো আমি নেপালে গিয়ে বাড়ির লোকজনের সঙ্গে দেখা করে আবার ফিরে আসব। এখান থেকে যেতে ভালো লাগছে না। নেপালে তো আমার কিছুই নেই। আমি আবার কয়দিন পর এখানে চলে আসব।’

বীর কা বাহাদুরের দেশে ফেরার কথা শুনে এলাকার অনেকেই ছুটে যান তার সঙ্গে বিদায় সাক্ষাৎ করতে। এসময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তারা। দীর্ঘদিন এলাকায় থেকে স্থানীয়দের ভালোবাসা কুড়িয়েছেন বীর কা বাহাদুর। 

   

ঢাকার বাইরে থেকে লবণযুক্ত চামড়া ঢুকছে ট্যানারিতে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সাভার বিসিক চামড়া শিল্প নগরীতে চলছে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কার্যক্রম। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কেনা লবণযুক্ত চামড়া ঢুকছে ট্যানারির বিভিন্ন কারখানায়। এনিয়ে কর্মব্যস্ত সাভার চামড়া শিল্প নগরী।

সোমবার (২৪ জুন) দুপুরে সাভার চামড়া শিল্প নগরীতে ঘুরে দেখা যায়, ঢাকার বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে লবণযুক্ত পশুর চামড়া বোঝাই ট্রাক ঢুকছে ট্যানারিতে।

চামরা শিল্প নগরীতে ট্যানারিগুলো ঘুরে দেখা যায়, লবণযুক্ত চামড়াগুলো থেকে এখন বাড়তি অংশ বাদ দিয়ে সেগুলোকে পরবর্তী ধাপের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। চামড়াগুলোকে সোকিং করার পর সেগুলোকে ওয়েট ব্লু প্রসেস করা হবে, যেখানে রাসায়নিক ব্যবহার করে চামড়া থেকে পশম ছাড়িয়ে তাতে প্রয়োজনীয় রং করা হয়। পরবর্তীতে ক্রাস্ট ও ফিনিস লেদার হিসেবে তা বিক্রি করা হবে।

আগামী কয়েক মাস এভাবেই লবণযুক্ত চামড়া সংগ্রহ করবেন ট্যানারি মালিকরা। এছাড়া অনুকুল পরিবেশ থাকায় এবার ১ কোটি চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে আশাবাদী মালিকরা।


বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ বার্তা২৪.কমকে বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকার চামড়া আমরা প্রথম গ্রহণ করেছি। ঢাকার বাইরের চামড়া আজ থেকে সংগ্রহ শুরু হয়েছে। এটা দুই থেকে আড়াই মাস চলবে। দেশ জুড়ে সার্বিক অবস্থা ভালো রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে সবাই সচেতন।

তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে লবণের সরবরাহ ছিল ভালো। সবখানে লবণ দিয়ে চামড়া ভালোভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। চামড়ার মানও ভালো। যথাসময়ে সঠিকভাবে যারা চামড়া সংরক্ষণ করেছে তারা সরকারের বেঁধে দেওয়া ন্যায্য দাম পাবেন। আমরা ঢাকাতে যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিলাম, প্রাথমিকভাবে তা অর্জিত হয়েছে। ঢাকার বাইরেও খোঁজ নিয়েছি, আশা করছি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। আমরা আশা করি এভাবে চামড়া যারা সংগ্রহ করেছে, তাদের কাছ থেকে সরাসরি চামড়া সংগ্রহ শুরু করেছি। দ্রুত সব চামড়া সংরক্ষণে সক্ষম হবো।

;

বিদেশি নাগরিকেরা ১০ মাসে ১৩০ মিলিয়ন ডলার নিয়ে গেছেন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২০২৩ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকেরা তাদের আয় থেকে ১শ ৩০.৫৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নিজ নিজ দেশে নিয়ে গেছেন।

সোমবার (২৪ জুন) জাতীয় সংসদের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনে ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কাদের আজাদের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এ তথ্য জানান।

অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

অর্থমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকদের বছরে আয়সংশ্লিষ্ট তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সংরক্ষিত নেই।

কোনো সূত্রের উল্লেখ না করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকেরা তাদের আয় থেকে ১শ ৩০.৫৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নিজ নিজ দেশে নিয়ে গেছেন।

কোন দেশের নাগরিকেরা কত ডলার নিয়েছেন, সে তথ্য জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ভারতের নাগরিকেরা ৫০.৬০ মিলিয়ন ডলার, চীনের নাগরিকেরা ১৪.৫৬ মিলিয়ন ডলার, শ্রীলঙ্কার নাগরিকেরা ১২.৭১ মিলিয়ন ডলার, জাপানের নাগরিকেরা ৬.৮৯ মিলিয়ন ডলার, কোরিয়ার নাগরিকেরা ৬.২১ মিলিয়ন ডলার, থাইল্যান্ডের নাগরিকেরা ৫.৩০ মিলিয়ন ডলার, যুক্তরাজ্যের নাগরিকেরা ৩.৫৯ মিলিয়ন ডলার, পাকিস্তানের নাগরিকেরা ৩.২৪ মিলিয়ন ডলার, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা ৩.১৭ মিলিয়ন ডলার, মালয়েশিয়ার নাগরিকেরা ২.৪০ মিলিয়ন ডলার, অন্যান্য দেশের নাগরিকেরা ২১.৯২ মিলিয়ন ডলার নিজ দেশে নিয়ে গেছেন।

এমপি আব্দুল লতিফের অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী সংসদে জানান, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অর্থ মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে।

মূল্যস্ফীতির চলমান সংকটের মূলে যে কারণগুলো রয়েছে, তা হলো- বৈশ্বিক পণ্য বাজারে সরবরাহে অনিশ্চয়তা, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়া এবং দেশের বাজারে সরবরাহ শৃঙ্খলে ত্রুটি।

অর্থনৈতিক এ সংকট কাটিয়ে দ্রবমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সরকার বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে এ সময় উল্লেখ করেন তিনি।

;

বিয়ে করে সর্বস্বান্ত হওয়া জল্লাদ শাহজাহানের গল্প



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
শাহজাহান ভূঁইয়া/ছবি: সংগৃহীত

শাহজাহান ভূঁইয়া/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘ ৩২ বছর কারাভোগ শেষে মুক্তি পেয়ে আলোচিত জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া সাথী আক্তার ফাতেমা (২৩) নামের এক তরুণীকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু তার সেই সুখের সংসার বেশি দিন স্থায়ী হয়নি।

২০২৩ সালের ২১ ডিসেম্বর সাথী আক্তারকে বিয়ের ৫৩ দিনের মাথায় তার সংসার ভেঙে যায়। ওই সময় আদালতে শাহজাহানের বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলাও দেন সাথী। পরে পাল্টা ওই তরুণী এবং তার মায়ের বিরুদ্ধে প্রতারণার একটি মামলা করেন শাহজাহান। মামলায় তিনি বলেন, ওই তরুণী ও তার মা বিয়ের ফাঁদে ফেলে তার (শাহজাহান) কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন তরুণীর মামা।

বিয়ে করে সর্বস্বান্ত হওয়ার পর কারাগারের বাইরে জীবন এত জটিল কেন– এমন প্রশ্ন করেছিলেন আলোচিত জল্লাদ শাহজাহান।

শাহজাহান বলেছিলেন, আমার মা-বাবা নেই, দায়িত্ব নেওয়ার মতো ভাইবোন নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিত্তবানদের কাছে অনুরোধ, আমার থাকার ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিন। আমি চরম অর্থনৈতিক সংকটে আছি। আমার কাজ করার মতো ক্ষমতা নেই। আয়-রোজগার নেই, অর্থের জোগানদাতা নেই, নিজের থাকার জায়গা নেই। ৩২ বছর কারাভোগ শেষ করে এসে আমি এখন বাইরের মানুষদের বুঝতে পারছি না। যেখানেই যাচ্ছি প্রতারণার খপ্পরে পড়ছি। গত বছরের ২১ ডিসেম্বর বিয়ে করে সেখানেও সর্বস্বান্ত হয়েছি। বিয়ের কাবিন পাঁচ লাখ টাকা হলেও আমার কাছে থাকা ১০ লাখ টাকা স্ট্যাম্পে লিখিত নিয়ে ৫৩ দিনের মাথায় আমার স্ত্রী সাথী আক্তার ফাতেমা (২৩) পালিয়ে গেছে। আমার নামে যৌতুকের মামলা দিয়েছে। আমি থানায় মামলা দিতে গেলেও বউয়ের নামে মামলা করা যায় না বলে আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে। পরে আইনজীবীর সহযোগিতায় রোববার আদালতে আমার স্ত্রী, শাশুড়িসহ ছয়জনের নামে মামলা দিয়েছি।

তিনি আরও বলেছিলেন, ২০২৩ সালের ১৮ জুন কারামুক্তির পর আমি ঢাকার কেরানীগঞ্জের গোলামবাজারে বসবাস শুরু করি। এরপর সেখানে একটি চায়ের দোকান দিয়ে কোনো মতে দিন যাপন করার চেষ্টা করি। একদিন অটোরিকশায় কদমতলী থেকে কোনাখালায় যাওয়ার সময় গাড়ির ভেতর একটি ভ্যানিটি ব্যাগ পাই। ব্যাগের ভেতর থাকা কাগজে লেখা ছিল একটি মোবাইল ফোন নম্বর। সেই নম্বরে ফোন করে ব্যাগের মালিককে তা নিয়ে যেতে বলি। পরে ব্যাগের মালিক সাথী আক্তার ফাতেমা বান্ধবীকে নিয়ে গোলামবাজারে হাজির হয়। এরপরে মেয়েটির মা শাহিনূর বেগমের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। মোবাইল ফোনে মেয়েটির সঙ্গে আমি বেশ কয়েকবার কথা বলি। একপর্যায়ে মেয়েটি ও তার মা জুরাইন থেকে গোলামবাজারে চলে আসে। আমার বাসায় তিনি রান্নার কাজ নেন। পরিচয়ের দেড় মাস পর ২১ ডিসেম্বর মেয়েটির সঙ্গে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে আমার বিয়ে হয়। মেয়ে ও তার মা বিয়ের আগে নানা কৌশলে আমার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা নেয়। আর বিয়ের দিন একটি অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করে আমার গোছানো আরও ১০ লাখ টাকা নেয়। বিয়ের প্রায় দুই মাসের মাথায় আমার স্ত্রী বাসায় থাকা আরও সাত লাখ টাকা ও গহনা নিয়ে পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে অভিযোগ করতে গেলে থানা নেয়নি। পরে জানতে পারি ১৫ ফেব্র“য়ারি সাথী আমার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মামলা করেছে। আমি বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি মহিউদ্দীন, যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লা, মাওলানা নিজামী, কামরুজ্জামানসহ ৪০ জনের ফাঁসি কার্যকর করেছি। আমাকে ছোট ব্যবসায়ের পুঁজি ও একটি থাকার জায়গা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।

১৯৭৯ সালে গ্রেফতার হওয়ার পর ৩৬টি মামলায় শাহজাহান ভূঁইয়ার ১৪৩ বছরের সাজা হয়। পরে ৮৭ বছর জেল মাফ করে তাকে ৫৬ বছরের জন্য সাজা দেওয়া হয়। ফাঁসি কার্যকর ও সশ্রম কারাদণ্ডের সুবিধার কারণে সেই সাজা ৪৩ বছরে এসে নামে। দুইটি মামলায় ৫০০০ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাস করে অতিরিক্ত এক বছর জেল খেটে ৩১ বছর পর ২০২৩ সালের ১৮ জুন মুক্ত আকাশে শ্বাস ফেলার সুযোগ পান জল্লাদ শাহজাহান।

ছাত্রজীবনে স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া শাহজাহান অপরাধ জগতে ঢুকতেও বেশি সময় নেননি। ডাকাতি ও খুনের মতো ভয়ংকর সব অপরাধ করার পর ১৯৯১ সালের ১৭ ডিসেম্বর তিনি প্রথম গ্রেফতার হয়ে মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে আসেন। এরপর দুই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে ৪২ বছরের কারাদণ্ড হয় তার। কারাগারে তার কয়েদি নম্বর ছিল ২৫৮৯/এ। সাজা কমাতে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে জল্লাদ হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। এরপর সহযোগী হিসেবে গফরগাঁওয়ের নূরুল ইসলামকে ফাঁসি দিয়ে জল্লাদ জীবন শুরু করেন তিনি। এক সময় মানিকগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয় শাহজাহানকে। সেখানে তাকে প্রধান জল্লাদের আসন দেওয়া হয়।

কারাগারের নথি অনুযায়ী, ‘জল্লাদ’ শাহজাহান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় ঘাতক (বজলুল হুদা, মুহিউদ্দিন, সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মহিউদ্দিন আহমেদ, আবদুল মাজেদ), চার যুদ্ধাপরাধী (জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লা, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, মীর কাসেম আলী), কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার, জঙ্গি নেতা বাংলা ভাই ও আতাউর রহমান সানী, শারমীন রীমা হত্যার আসামি মনির ও ডেইজি হত্যা মামলার আসামি হাসানসহ আলোচিত ২৬ জনের ফাঁসি কার্যকর করেন।

;

নীলফামারীতে নদীতে গোসল করতে নেমে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীর সদরে নদীতে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে রানা বাবু (১২) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (২৪ জুন) শহরের সাইফোন চারালকাটা নদীতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কিশোর কিশোরগঞ্জ উপজেলার নিতাই এলাকার এমদাদুল হকের ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত কিশোর বন্ধুদের সাথে নদীতে গোসল করছিলেন। এ সময়ে সে পানিতে ডুবে যায়। পরে বন্ধুরা চিৎকার করলে স্থানীয়রা ছুটে এসে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়। পরে ডুবরি দল এসে তার মরদেহ উদ্ধার করে।

থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বলেন, ফায়ার সার্ভিস অভিযান চালিয়ে এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

;