মিশ্র বহরে বিমানের ক্ষতি ১৮০০ কোটি টাকা



ইশতিয়াক হুসাইন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ দরকার। আর তাই বিমানও নতুন উড়োজাহাজ সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। কিন্তু সমস্যা হয়েছে বিমান তার বহরের জন্য এয়ারবাস নাকি বোয়িংয়ের উড়োজাহাজ কিনবে।

আর এই আলোচনার মধ্যে নতুন একটি তথ্য উঠে এসেছে। তথ্যমতে বিমান যদি মিশ্র বহরে যায় (বোয়িং ও এয়ারবাস) তাহলে প্রতিষ্ঠানটির এক হাজার ৮০০ কোটি টাকা লোকসান হবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং বলছে, এ নিয়ে বোয়িংয়ের বিস্তারিত সমীক্ষা রয়েছে। তাদের সমীক্ষা বলছে, বিমান যদি মিশ্র বহর তৈরি করে আগামী ২০ বছরে ১৫০ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত ক্ষতি হবে। মূলত প্রশিক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ, স্পেয়ার পার্টস ও বৈমানিকদের প্রশিক্ষণের জন্যই এই অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হবে। একটি বহরে যদি ১০টি বোয়িং ৭৮৭ এবং ১০টি এয়ারবাস এ৩৫০ উড়োজাহাজ থাকে সেক্ষেত্রে বৈমানিক বেশি লাগবে।

বোয়িংয়ের কথা, যেসব এয়ারলাইন্সের মিশ্র বহর রয়েছে তাদের হিসেব ভিন্ন। যেমন মিশ্র ফ্লিটের খরচ বাঁচাতে ইন্ডিগো এয়ারবাস কিনছে। যেহেতু তাদের বহরে আগে থেকেই এয়ারবাস রয়েছে। তবে বিমানের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে না। বোয়িং বলছে, বিমান কেন মিশ্র বহর তৈরি করে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বেশি অর্থ খরচ করবে।

এয়ারবাস বলছে, বেবিচকের নিরীক্ষা অনুযায়ী ২০২২ সালে বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলো প্রায় এক কোটি আন্তর্জাতিক যাত্রী পরিচালনা করেছে। ২০১৯ সালে এই সংখ্যা ছিল ৮৫ লাখের কিছু বেশি। ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ আকাশপথের যাত্রী সংখ্যা দ্বিগুণ হবে। নতুন এই যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা অর্জন করতে হলে বিমানের বহু সংখ্যক উড়োজাহাজ প্রয়োজন।

মূলত গত বছরের সেপ্টেম্বরে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর বাংলাদেশ সফরের সময় থেকে বিমানের এয়ারবাস থেকে উড়োজাহাজ কেনার বিষয়টি আলোচনায় আসে। এরপর থেকে উড়োজাহাজ বেচতে বোয়িংয়ের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে যায়। বোয়িং অনেক আগে থেকে নতুন উড়োজাহাজ বিক্রি করতে বিমানের সাথে দেনদরবার করে আসছিল। তবে যখন দেখলো যে, বিমান এয়ারবাসের উড়োজাহাজ পেতে অনেকখানি এগিয়েছে, তখন তাদের তরফেও বিমানে আসা-যাওয়া বেড়ে যায়। বোয়িংয়ের কর্মকর্তারা ছাড়াও ঢাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও বিমানের সাথে বৈঠক করেন।

এদিকে, এয়ারবাস কেনার বিষয়ে বিমান এরই মধ্যে প্রস্তাব যাচাই-বাছাই ও দরকষাকষিসহ পুরো প্রক্রিয়াটি এগিয়ে নিতে একটি কমিটি করে দিয়েছে। ওই কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই বিমান অগ্রসর হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এয়ারবাস কেনার বিষয়ে বিমান অনেকদূর এগিয়েছে।

বোয়িংয়ের ভারত ও দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট রায়ান উয়্যার, ইউরেশিয়া ও ভারতীয় উপমহাদেশের বিপণন বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অশ্বিন নাইডু ও বোয়িং বিক্রয় পরিচালক কান্তি ভুবনাগিরি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।

ঢাকায় ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত কয়েকদিন আগে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগামী ফ্রান্স সফরের আগে এ বিষয়ে চুক্তি হবে বলে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন।

বোয়িং বলছে, বিমান যদি ৭৮৭ ড্রিমলাইনার দিয়ে যাত্রী পরিবহন করে তাহলে এতে বছরে তাদের ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি লাভ হবে। এছাড়া ড্রিমলাইনের তাদের ৬ শতাংশ কম জ্বালানি লাগবে, রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কমবে ৩০ শতাংশ এবং বোয়িংয়ের অন্য প্রতিযোগির চেয়ে কম দাম পাওয়া যাবে তাদের উড়োজাহাজ।

বিমান চারটি ৭৮৭ ড্রিমলাইনার ও দুটি ৭৭৭ ফ্রেইটার (ওয়াইড বডি মালবাহী) উড়োজাহাজ বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে।

বোয়িংয়ের নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশের উদ্বেগের বিষয়ে সব ধরনের প্রমাণ তারা দিয়েছেন বিমানকে। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে যদি আরও নিশ্চিত হতে হয় সেজন্য প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে একজন বিশেষজ্ঞকে ঢাকায় আনারও প্রস্তাব করেন তারা।

সম্প্রতি বিমানের ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের উইন্ডশিল্ড ভেঙে যাওয়ার বিষয়ে বোয়িং বলছে, এটা হতেই পারে। তবে তারা বিশ্বাস করেন না যে, এটি পণ্যের মান সংক্রান্ত কোনো ইস্যু। কারণ একটি উড়োজাহাজ বিভিন্ন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চলাচল করে। এ কারণে উইন্ডশিল্ড দুর্ভাগ্যজনকভাবে ফাটল সৃষ্টি হতেই পারে।

রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সটিতে বর্তমানে শুধুমাত্র বোয়িংয়ের উড়োজাহাজই রয়েছে ১২টি। প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই উড়োজাহাজগুলো কেনা হয়।

লাভ-লোকসান কি প্লেনের কারণেই হয়

বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক পরিকল্পনার অভাবে বোয়িংয়ের এই উড়োজাহাজগুলোর শতভাগ ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এই ফ্লিট অনুযায়ী আমরা নতুন রুট চালু করতে পারিনি, এছাড়া বিমানের বৈমানিকসহ অন্যান্য জনবলের ঘাটতি রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছে, এসব-ই হয়েছে বিমানের দুর্বল পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার কারণে।

কি বলছে বিমান

বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম বলছেন, বিশ্বের বড় বড় এয়ারলাইন্সে বোয়িং ও এয়ারবাস উভয় কোম্পানির উড়োজাহাজ থাকে। তাছাড়া এয়ারবাস কেনা হলে এককভাবে বোয়িংয়ের ওপর নির্ভরশীলতা কমাবে।

‘নতুন উড়োজাহাজ এলে বিমানের নেটওয়ার্ক সম্পসারণ করা হবে। কানাডায় আরও ফ্লাইট বাড়ানো, নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুসহ আরও নতুন রুট চালু করা হবে,’ যোগ করেন তিনি।

যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

তবে বিমান কর্তৃপক্ষের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছেন বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বিমানকে নতুন কোম্পানির উড়োজাহাজের জন্য বৈমানিক, কেবিন ক্রু ও প্রকৌশলীদের প্রশিক্ষণ দিতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হবে। আর বিমান এখনো তাদের বর্তমান সক্ষমতা পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারছে না।

   

আলু, পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক আছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু/ছবি: সংগৃহীত

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আলু, পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক আছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।

বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত বিএসআরএফ সংলাপে তিনি এ মতামত জানান।

দেশে উৎপাদিত আলু বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পেঁয়াজ ৯০ থেকে ৯৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এটাকে স্বাভাবিক মনে করেন কি না? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাজারে আলু-পেঁয়াজ পর্যাপ্ত আছে। এটাকে স্বাভাবিক বলে মনে করি। দামের যৌক্তিকতার বিষয়টি আমার ইয়ে না। আমি দেখব, সেটি বার বার বলার চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, যেকোনও প্রাইস নির্ভর করে বাজারের চাহিদা ও সরবরাহের ওপর। আমরা যদি সরবরাহ করতে পারি, তাহলে দাম কমে যাবে। যতক্ষণ পর্যন্ত বাজারে আলু ও পেঁয়াজ কম দামে সরবরাহ না থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বাজারে যে মূল্য আছে, সে মূল্যটাকে আমাকে মূল্য হিসেবে দেখতে হবে। আমি চাইলেই কাউকে এমন কোনো আইন করে বলতে পারব না যে, পেঁয়াজের দাম এতো। অন্তত আমি পারব না। সেটি কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বলতে পারবে।
আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, আমার কাছে কৃষি উৎপাদিত পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার মেকানিজম জানা নেই। আমার জানা আছে যদি দাম বেড়ে যায়... তাহলে আমদানি করে কম দামে বাজারে সরবরাহ করলে দাম কমে যাবে।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিএসআরএফের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ফসিহ উদ্দিন মাহতাব।

;

এমপি আনার হত্যা: আসামি ধরতে পাহাড়ে হেলিকপ্টারে অভিযান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
হেলিকপ্টারে আনার হত্যার আসামি খুঁজছেন ডিবির হারুন

হেলিকপ্টারে আনার হত্যার আসামি খুঁজছেন ডিবির হারুন

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যায় ঘাতক দলের অন্যতম দুই পলাতক আসামি ফয়সাল ও মোস্তাফিজকে ধরতে খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ে হেলিকপ্টার দিয়ে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল।

বুধবার (২৬ জুন) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে ওই অভিযান চলছে।

ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ নিজেই সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

;

পাহাড়ে নেই আওয়ামী লীগের তৎপরতা, আছে অপহরণ আতঙ্ক



আলমগীর মানিক, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাঙামাটি
রাজস্থলী থানা, ছবি: বার্তা২৪.কম

রাজস্থলী থানা, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পাহাড়ের একের পর এক অপহরণ ও গুম হয়ে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। গত কয়েক বছরে শুধুমাত্র রাজস্থলী উপজেলাতেই একের পর এক অপহরণ, গুম ও হত্যার শিকার হয়েছেন আওয়ামী লীগের অন্তত অর্ধডজন নেতাকর্মী।

অপহরণের স্বর্গরাজ্য এই উপজেলায় গুলি করে হত্যাসহ অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর কয়েক মাস/বছরেও ফিরে আসেনি রাজস্থলী উপজেলার প্রথম সারির আওয়ামী লীগ নেতা, ছাত্রলীগ নেতা, যুবলীগ কর্মীসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতাকর্মী। শুধুমাত্র আওয়ামী-রাজনীতি করার কারণে আঞ্চলিক দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে অপহরণ-গুম খুনের শিকার হয়েছেন।

আঞ্চলিক দলীয় সন্ত্রাসীদের হাতে সর্বশেষ রোববার ২৩ জুন অপহরণের শিকার হয়েছেন রাজস্থলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হ্লা থোয়াই অং মারমা ওরফে গঞ্জ মারমা। তিনি বাঙ্গালহালিয়াস্থ কাকড়াছড়ি এলাকার বাসিন্দা।

রাজস্থলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান উবাচ মারমা অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।



স্থানীয় কারবারি সুই ক্যাচিং মারমা জানিয়েছেন, রোববার বিকেলে নিজবাড়ি থেকে বের হয়ে জরুরি কাজে কাকড়াছড়ি বাজারে আসার সময় হ্লা থোয়াই অং ওরফে গঞ্জ মারমাকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে ভেতরের পার্টির লোকজন। এখনো পর্যন্ত তাকে কোথায় রাখা হয়েছে এবং কী অবস্থায় আছেন তিনি এ ব্যাপারে খোঁজ মেলেনি।

কারবারি জানান, অপহৃতের এক ছেলে মালয়েশিয়ায় আর এক মেয়ে থাকে চট্টগ্রামে। অপহৃতের স্ত্রী অসহায় অবস্থায় আছে, তাই থানায় কোনো অভিযোগ দাখিল করেনি। এই ঘটনার পরপর উক্ত এলাকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, চন্দ্রঘোনা থানার অফিসার ইনচার্জ আনসারুল করিম জানিয়েছেন, আমরা ঘটনা শোনার পরপরই অপহৃতের স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করে অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলেছি; কিন্তু তারা কেউই অভিযোগ দেয়নি। তারপরও পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখে কে বা কারা এই ঘটনায় জড়িত সেটি বের করার চেষ্টা করছে।

স্থানীয়রা জানায়, রাজস্থলী উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। আঞ্চলিক দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে চলতি ২০২৪ সালের ৭ এপ্রিল সকালে বাঙ্গালহালিয়া ইউপির ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার ক্যাচিংহ্লা মারমা (৩৪) ও ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইখ্যাইমং মারমাকে (৩৬) বাজারে আসার পথে অপহরণ, ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর সকালে ঘিলাছড়ির আমতলীপাড়া থেকে রাজস্থলী উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাউদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার পর এখনো পর্যন্ত তাদের খোঁজ পায়নি পরিবার ও প্রশাসন।

২০২৩ সালের ১২ জুন সোমবার গাইন্দ্যা ইউপির লংগদুপাড়া থেকে অস্ত্রের মুখে দুই ভাইসহ তিন শ্রমিককে অপহরণ, ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর সকালের দিকে মংচিংসা মারমাকে অপহরণ, ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারিতে গবছড়ায় গুলি করে হত্যা করা হয় বাসিমং মারমাকে। ২০১৯ সালের ৯ অক্টোবর বুধবার ভোর রাতে কাকড়াছড়িতে অংসু অং মারমাকে গুলি করে হত্যা, ২০১৯ সালের ১৯ মে বাঙ্গালহালিয়ার ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ক্য হ্লা চিং মারমাকে (৪০) গুলি করে হত্যা করে আঞ্চলিক দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।


এদিকে, দীর্ঘ তিন মেয়াদে ক্ষমতার থাকার পরেও রাজস্থলীতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কচুকাটার মতো করে অপহরণ করে নিয়ে গুম করে ফেলা, প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করার মতো ঘটনা ধারাবাহিকভাবে ঘটলেও দলটির উপজেলা বা জেলার পক্ষ থেকে কোনো ধরনের শক্ত পদক্ষেপ না নেওয়ায় নেতাকর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে চরম ক্ষোভ ও হতাশা।

তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, দলের উপজেলা সভাপতির সাথে আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠনের ব্যক্তিগত আঁতাত থাকায় তিনি অপহৃত নেতাকর্মীদের বিষয়ে আন্দোলনে নামতে আগ্রহী নন। বিষয়টি নিয়ে সোমবার বিকেলে তার সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি পরে ফোন করবেন জানিয়ে ফোন রেখে দেন।

রাজস্থলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাইন্দ্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পুচিংমং মারমা বলেন, রাজস্থলী উপজেলায় আমাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের করুন অবস্থা। আঞ্চলিক দলীয় সন্ত্রাসীদের হাতে পুরো রাজস্থলীবাসী জিম্মি মন্তব্য করে পুচিংমং বলেন, একাধিকবার আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরেও উপজেলা সদরের এক কিলোমিটার সীমানার মধ্যেই চলাফেরা করতে হয়। প্রাণনাশের ভয়ে এর বাইরে যেতে পারি না।

তিনি বলেন, সাধারণ নেতাকর্মীরা প্রতিনিয়তই সন্ত্রাসীদের হাতে মারধরে পাশাপাশি অপহরণ গুমের শিকার হলেও দলের পক্ষ থেকে একদিন বিক্ষোভ মিছিল বা শোক সমাবেশ করেই দায়িত্ব শেষ করা হয়। এরপর আর কোনো খবর কেউই রাখে না। এই অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে নতুন প্রজন্মের পাহাড়ি সন্তানরা রাজস্থলী আওয়ামী লীগের পতাকাতলে আসবে না এবং দল অদূর ভবিষ্যতে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এদিকে, রাজস্থলীতে একের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী অপহরণ-গুম খুনের শিকার হওয়ার পরেও সংগঠনটির উপজেলা নেতৃবৃন্দ ধারাবাহিক কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না তৃণমূল নেতাকর্মীদের এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মূছা মাতব্বর বলেন, আমাদের পুরো বিষয়টি উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জোরালোভাবে জানানো হয়নি। এই বিষয়ে আমি আমাদের দলীয় সভাপতির সাথে আলাপ করে করণীয় নির্ধারণ করব।

;

পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুড়িগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়নে গাছের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বুধবার (২৬ জুন) সকালে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের পশ্চিম ছাট গোপালপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত হাবিবুর রহমান (৩৫) একই গ্রামের জয়নাল আবেদিনের ছেলে। পেশায় তিনি দিনমজুর। ব্যক্তিগত জীবনে হাবিবুর রহমান বিবাহিত এবং দুই সন্তানের পিতা। পাশাপাশি বাবা-মা, এক ছোট ভাই ও স্ত্রী সন্তান সহ ৭ সদস্যের ঐ পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি।

ভূরুঙ্গামারী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যেখানে তার মরদেহ ঝুলে থাকতে দেখা যায় সেখানে মাছ ধরার জাল ছিলো। সেই জালের দড়ি দিয়েই তাকে ঝুলতে দেখা গেছে।

পরিবারের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, নিহত হাবিবুর রহমান পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে তার বৃদ্ধ বাবা-মা অসুস্থ থাকায় ব্যয়ের বোঝা বেড়ে যায়। এছাড়াও তার ছোট ভাইও তার উপর নির্ভরশীল। দিনমজুরের কাজ করে তেমন আয়ও হচ্ছিলো না। দীর্ঘদিন থেকে তিনি মানসিক চাপে ভুগছিলেন। আজ ভোরে মাছ ধরার উদ্দ্যেশ্যে বাড়ি থেকে জাল নিয়ে বের হলে কিছুক্ষণ পরেই তাকে একটি নালার উপরে গাছের সাথে জালের দড়ি দিয়ে ঝুলতে দেখে এলাকাবাসী। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।

তিনি আরো বলেন, এ ব্যাপারে পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় একটি অপমৃত্যুর মামলা গ্রহণ করা হয়েছে এবং মরদেহটি পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

;