‘গণমানুষের সম্পৃক্ততা ছাড়া বাজেটের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বৈশ্বিক টালমাটাল অবস্থায় বর্তমানে দেশের সার্বিক অর্থনীতি চাপে আছে বলে মন্তব্য করে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গবেষক অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত বলেছেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং গণমানুষের সম্পৃক্ততা ছাড়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের লক্ষ্য অর্জন করা যাবে না। বরাদ্দ যতই বাড়ুক না কেন, দরিদ্র-প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ নারীর অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং শোভন রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করা ছাড়া এর বাস্তবায়ন অসম্ভব।

মঙ্গলবার (১১ জুন) রাজধানীর সিরড্যাপে ‘বাজেট প্রক্রিয়া ও উন্নয়নে প্রান্তিক মানুষের অংশগ্রহণ এবং বাজেটে তাদের ন্যায্য বরাদ্দ’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।

ড. আবুল বারকাত বলেন, আমাদের হিসেবে-নিকেশ চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) ওপর নির্ভর করে করা। এটি আমাদের সচেতন সিদ্ধান্ত। কেননা সদ্য ঘোষিত বাজেট প্রস্তাব যেহেতু চূড়ান্ত হয়নি, চূড়ান্তকরণে আলোচনা চলছে। তাই ঘোষিত বাজেট প্রস্তাব আমরা নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছি, কিন্তু হিসাবে কাজে লাগাইনি। একই সাথে, আমরা চলতি অর্থবছরের বাজেটের প্রকল্প অনুযায়ী ঘোষিত বরাদ্দ ধরে হিসাব করেছি, সংশোধিত বরাদ্দ খুঁজতে যাইনি-কারণ, ঘোষিত বরাদ্দ সরকারের চিন্তা ভাবনার এক ধরণের প্রতিফলনও বটে, যা রাজনৈতিক-অর্থনীতির বিশ্লেষণে সরকারের মন গড়া'র জন্য দরকারি।

গবেষণার হিসেবে-পদ্ধতি নিয়ে কারো ভিন্নমত থাকতেই পারে জানিয়ে তিনি বলেন, একটি বিষয় নিয়ে সংশয়ের কোনো অবকাশ নেই যে চার বর্গ নিয়ে বিশ্লেষণ করা হলো (পারিবারিক কৃষি, গ্রামীণ নারী, আদিবাসী জনগোষ্ঠী ও কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কার উদ্দিষ্ট মানুষ-তাদের জন্য রাষ্ট্রীয় বাজেট বরাদ্দ অতি মাত্রায় অপ্রতুল এবং তার আশু বৃদ্ধি অতি জরুরি বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, বরাদ্দতেই শেষ নয়, হতে হবে সুষ্ঠু বাস্তবায়ন। এজন্য, বাজেটের লাইন আইটেম নির্ধারণ, বরাদ্দ প্রদান, বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণে সক্রিয় জন-সম্পৃক্ততা নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক সংস্কার এবং তা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে 'বাজেট প্রক্রিয়া ও উন্নয়নে প্রান্তিক মানুষের অংশগ্রহণ এবং বাজেটে তাদের ন্যায্য বরাদ্দ' বিষয়ে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গবেষক অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত।

গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরে ড. আবুল বারকাত জানান, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে জাতীয় বাজেট কার্যকর একটি হাতিয়ার। তবে, দারিদ্র্য বিমোচনে (জনগোষ্ঠী-এলাকা-নৃপরিচয়-লৈঙ্গিক পরিচয়-শ্রেণী কাঠামোর ভিত্তিতে) বাজেটের পূর্ণ সম্ভাবনা ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা-সে বিষয়ে রয়েছে যথেষ্ট মাত্রার সংশয়।

বর্তমান নয়া উদারবাদী রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক কাঠামোতে এটাই স্বাভাবিক যে জাতীয় বাজেটে দরিদ্র, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য 'পর্যাপ্ত' ও 'ন্যায়সঙ্গত' বরাদ্দ থাকে না।

পারিবারিক কৃষি-সংশ্লিষ্ট মানুষ: কারা? কেমন আছেন? তুলে ধরে বলা হয়, জাতিসংঘ ২০১৯ থেকে ২০২৮-এই সময়কালকে পারিবারিক কৃষি দশক হিসেবে ঘোষণা করেছে। অথচ, পারিবারিক কৃষি প্রপঞ্চটিই আমাদের দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত নয়। বাংলাদেশে ঐতিহাসিকভাবেই পারিবারিক কৃষি খানাতে কৃষি খাতের সমস্যাগুলো অনেক বেশি প্রকট-এ যেন আধপেটা খেয়ে, কোনোভাবে টিকে থাকার লক্ষ্যে পরিচালিত এক কৃষিব্যবস্থা।

আমাদের হিসেবে, বর্তমানে মোট কৃষিখানার ৯২% পারিবারিক কৃষি খানা-যার সংখ্যা ১ কোটি ৭৯ লাখ ২০ হাজার ৫৯১ জন। রক্ষণশীল হিসেবে যদি ৯২% এর বদলে ৮০% ও ধরে নেই, তাহলে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ১ কোটি ৫৫ লাখ ৮৩ হাজার ১১২-পারিবারিক কৃষি খানার মোট সদস্য সংখ্যা ৬ কোটি ২৭ লাখ ৯ হাজার ৯৯৪।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে পারিবারিক কৃষির জন্য বাজেটে বরাদ্দের হিসেব তুলে ধরে বলেন, জাতীয় বাজেটে পারিবারিক কৃষির জন্য মোট বরাদ্দ কত তার কোনো 'দাফতরিক' হিসেবে নেই। আর থাকবার কথাও নয়- কারণ 'পারিবারিক কৃষি' প্রপঞ্চটিই আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত নয়। আমাদের বিশ্লেষণে, পারিবারিক কৃষির বাজেট বরাদ্দের উল্লেখযোগ্য অংশ রয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের বাজেটে। এছাড়াও, আরও ১৫টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অধিদফতরের অধীনে কিছু প্রকল্প বা কর্মসূচি রয়েছে যেগুলো নানান মাত্রায় পারিবারিক কৃষির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। তেমনি 'সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ' খাতের ভূমিকা রয়েছে পারিবারিক কৃষি খানার ও কৃষকের জীবন-মান উন্নয়নে।

আমাদের হিসেবে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটে পারিবারিক কৃষির জন্য মোট বরাদ্দ ৪০ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা-যা মোট বাজেটের ৫.৩%।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে পারিবারিক কৃষি-সংশ্লিষ্ট কৃষিখানার সদস্যপ্রতি বরাদ্দ ছিল গড়ে ৬ হাজার ৪৬৯ টাকা, যা জাতীয় মাথাপিছু গড় বরাদ্দের (যার পরিমাণ ৪৬ হাজার ১২৪ টাকা) তুলনায় ৮৬% কম।

পারিবারিক কৃষিসংশ্লিষ্ট মানুষের জন্য বাজেটে ন্যায্য বরাদ্দ কেমন হওয়া উচিত তুলে ধরে তিনি বলেন, বিগত অর্থবছরের বাজেট বৃদ্ধির ধারা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পারিবারিক কৃষি-সংশ্লিষ্ট মানুষদের জন্য মোট বরাদ্দ হবে ৪৫ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ মাথাপিছু বরাদ্দ হতে পারে ৭ হাজার ২৬৫ টাকা। চলমান বাজেট বরাদ্দে পারিবারিক কৃষিসংশ্লিষ্ট মানুষ তার ন্যায্য বরাদ্দ পাননি। 'আদর্শ অবস্থা' বাস্তবায়ন কঠিনসাধ্য। তাই, পারিবারিক কৃষিসংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য বিদ্যমান মাথাপিছু বরাদ্দের প্রকৃত পক্ষে দ্বিগুণ বৃদ্ধি আমরা হিসেব করেছি। যদি মাথাপিছু ২ গুণ বৃদ্ধি ধরে বরাদ্দ হিসেব করি, তাহলে মোট বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়াবে ৯১ হাজার ১১৪ কোটি টাকা, যা মোট অনুমিত জাতীয় বরাদ্দের ১০.৬%।

গ্রামীণ নারী কারা কেমন আছেন তুলে ধরে তিনি জানান, দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি নারী (৫০.৪৯%)। মোট জনসংখ্যার মধ্যে গ্রামীণ নারী ৩৫.১%। গৃহস্থালী বিভিন্ন কাজের পাশাপাশি গ্রামীণ নারীদের অন্তত ৭০% প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত। যদিও তাদের কাজের আনুষ্ঠানিক কোনো স্বীকৃতি দেয়া হয় না। কৃষিতে নারীরা যে শ্রম দেন তার ৪৫.৬% ক্ষেত্রে কোনো পারিশ্রমিক পান না। আর বাকি ৫৪.৪% ক্ষেত্রে পারিশ্রমিক পান বাজারমূল্যের চেয়ে কম। একই বৈষম্য অকৃষি খাতেও।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্রামীণ নারীর জন্য বাজেট বরাদ্দের হিসেবপত্তর তুলে ধরে জানান, আমাদের হিসেবে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটে গ্রামীণ নারীর জন্য মোট বরাদ্দ ৩১ হাজার ৩১৩ কোটি টাকা-যা মোট বাজেটের ৪.১%। অর্থাৎ, গ্রামীণ নারীর জন্য মাথাপিছু বরাদ্দ গড়ে ১০ হাজার ৮১৪ টাকা, যা জাতীয় মাথাপিছু বরাদ্দের চেয়ে প্রায় ৭৬% কম।

গ্রামীণ নারীর মধ্যে ভূমিহীন, কৃষি-মৎসজীবীতার সাথে যুক্ত নারী, বিধবা, এবং প্রতিবন্ধী নারীর সংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৯০ লাখ। তাদের বাজেট-বরাদ্দ বঞ্চনা আরও বেদনাদায়ক। অনুমিত যে এই ধরণের গ্রামীণ নারীরা বাজেট থেকে মাথাপিছু পান সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৫৭০ টাকা।

গ্রামীণ নারীর জন্য বাজেটে ন্যায্য বরাদ্দ কেমন হওয়া উচিত সে বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, বিগত অর্থবছরের বাজেট বৃদ্ধির ধারা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গ্রামীণ নারীর জন্য মোট বরাদ্দ হবে ৩৫ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ, মাথাপিছু বরাদ্দ হতে পারে ১২ হাজার ১৪৪ টাকা। যদি আমরা মাথাপিছু ২ গুণ বৃদ্ধি ধরে বরাদ্দ হিসাব করি, তাহলে মোট বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়াবে ৭০ হাজার ৩২৯ কোটি টাকা, যা মোট অনুমিত জাতীয় বরাদ্দের ৮.২২%।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্রামীন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য বাজেট বরাদ্দের হিসাব তুলে ধরে জানানো হয়, জাতীয় বাজেটে আদিবাসীদের জন্য কাঙ্খিত প্রতিফলন নেই, যার ফলে তাদের উন্নয়নের ধারা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এটি একটি বড় বৈষম্য যা বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

আমাদের হিসাবে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আদিবাসী মানুষের জন্য মোট বরাদ্দ ছিল ৬ হাজার ২৩ কোটি টাকা, অর্থাৎ, আদিবাসী মানুষের জন্য মাথাপিছু বরাদ্দ ছিল গড়ে ১২ হাজার ৪৭ টাকা। অর্থাৎ, আদিবাসী মানুষের জন্য মাথাপিছু বরাদ্দ জাতীয় মাথাপিছু বরাদ্দের চেয়ে প্রায় ৭৪% কম।

আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০২২ সালের জনশুমারি ও গৃহগণনার প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, দেশে আদিবাসীর সংখ্যা (যদিও, সরকারি কাগজে এই পরিচয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী) ১৬ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৮ জন, তন্মধ্যে সমতলের আদিবাসী ৬ লাখ ৫৯ হাজার ৪৬৫ জন আর পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী ৯ লাখ ৯১ হাজার ১৩ জন। বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের মতে এদেশে আদিবাসীর সংখ্যা ৩০ লাখ। ২০১৬ সালের আরেক হিসেবে এই সংখ্যা ৫০ লাখ (আবুল বারকাত, ২০১৬)।

বাংলাদেশে আদিবাসীদের সংখ্যা নিয়ে যেমন বিতর্ক আছে, তেমনই বিতর্ক আছে বিভিন্ন ধরনের আদিবাসী গোষ্ঠীর সংখ্যা কতো তা নিয়েও।

আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য বাজেটে ন্যায্য বরাদ্দ কেমন হওয়া উচিত এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিগত অর্থবছরের বাজেট বৃদ্ধির ধারা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য মোট বরাদ্দ হবে ৬ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ, মাথাপিছু বরাদ্দ হতে পারে ১৩ হাজার ৫২৮ টাকা (এই হিসেব আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষের সংখ্যা ৫০ লাখ ধরে করা; যদি তর্কের খাতিরে এই সংখ্যা ৩০ লাখও ধরা হয় তাহলেও মাথাপিছু এই অঙ্ক দাঁড়ায় ২০ হাজার ৭৮ টাকা, যেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মাথাপিছু জাতীয় বাজেট বরাদ্দ ছিল ৪৬ হাজার ১২৫ টাকা)।

চলমান বাজেট বরাদ্দে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষ তার ন্যায্য বরাদ্দ পাননি। আদর্শ অবস্থা বাস্তবায়ন কঠিনসাধ্য। তাই, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য বিদ্যমান মাথাপিছু বরাদ্দের প্রকৃত পক্ষে দ্বিগুণ বৃদ্ধি আমরা হিসেব করেছি। যদি আমরা মাথাপিছু ২ গুণ বৃদ্ধি ধরে বরাদ্দ হিসেব করি তাহলে মোট বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়াবে ১২ হাজার ৪৭ কোটি টাকা, যা মোট অনুমিত জাতীয় বরাদ্দের ১.৪০%।

কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের কথা তুলে ধরে বলা হয়, ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছিল সরকার গঠন করতে পারলে 'ভূমি সংস্কার কমিশন' গঠন করা হবে, আর ২০১৪ সালে সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে ওয়াদা করা হয়েছিলো বিজ্ঞানভিত্তিক ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতি গ্রহণ করা হবে। কিন্তু এই দুই প্রতিশ্রুতি পূরণে বাজেটীয় উদ্যোগ কখনোই নেয়া হয়নি। বাজেটে কোনো চিহ্ন নেই খাস জমি জলার বন্টন ব্যবস্থাপনা।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের জন্য বাজেট বরাদ্দের হিসেব তুলে ধরে বলা হয়, ভূমি মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দকৃত বাজেটের পরিমাণ দেখেই প্রতীয়মান হয় যে এটি সরকারের সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের একটি, অথচ উন্নয়নের জন্য ভূমি অপরিহার্য এবং ভূমি ব্যবস্থাপনা এবং প্রশাসন স্বচ্ছ ও সহজ হওয়া বাঞ্ছনীয়। 'কৃষি সংস্কার', 'ভূমি সংস্কার', 'জলা সংস্কার- এগুলোর কোনোটির নামে কোনো উপখাত/লাইন আইটেম প্রচলিত বাজেটে থাকেনা।
আমাদের হিসাবে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের জন্য জন্য মোট বরাদ্দ ছিল ১০ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা (যা মোট বাজেটের ১.৩৬%)-যেখানে কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কার- উদ্বিষ্ট জনসংখ্যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৮২.৮%। অর্থাৎ, কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের জন্য মাথাপিছু বরাদ্দ ছিল গড়ে মাত্র ৭৬১ টাকা।

কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের জন্য বাজেটে ন্যায্য বরাদ্দ কেমন হওয়া উচিত সে বিষয়ে বলা হয়, বিগত অর্থবছরের বাজেট বৃদ্ধির ধারা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারউদ্দিষ্ট মানুষের জন্য মোট বরাদ্দ হবে ১১ হাজার ৬৭১ কোটি টাকা; অর্থাৎ, মাথাপিছু বরাদ্দ হতে পারে ৮ শত ৫৪ টাকা। চলমান বাজেট বরাদ্দে কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারউদ্দিষ্ট মানুষ তার ন্যায্য বরাদ্দ পাননি। "আদর্শ অবস্থা" বাস্তবায়ন কঠিনসাধ্য। তাই, কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারউদ্দিষ্ট মানুষের জন্য বিদ্যমান মাথাপিছু বরাদ্দের কমপক্ষে ১০ গুণ বৃদ্ধি আমরা হিসেব করেছি।

যদি আমরা মাথাপিছু ১০ গুণ বৃদ্ধি ধরে বরাদ্দ হিসেব করি, তাহলে মোট বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়াবে ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা, যা মোট অনুমদিত জাতীয় বরাদ্দের ১৩.৬৫%।

বাজেটে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যুব-জনগোষ্ঠী এবং নগরে বাস করা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতি বাজেটে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলেও সেমিনারে জানানো হয়।

জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে তিন সমন্বয়ক ডিবিতে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।

নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।

  • Font increase
  • Font Decrease

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামসহ তিনজনকে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে হেফাজতে নিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অপর দুই সমন্বয়ক হলেন- আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে ডিবির একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ডিবি বলছে, নিরাপত্তা এবং জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে তিন সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে।

তারা তিনজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

;

কারফিউ তুলে নেয়ার ব্যাপারে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, জনজীবন স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত কারফিউ নিয়ে সবাইকে একটু অপেক্ষা করতে হবে। কারফিউ শিথিল করা যায় কিনা, তা আমরা দেখছি।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।  

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কারফিউ শিথিল করা যায় কিনা আমরা দেখছি। পুলিশ বিজিবি, সেনাবাহিনী কাজ করছে। জনজীবন স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করতে হবে। জনগণকে ধৈর্য্য ধরতে হবে। এ বিষয়ে শনিবার (২৭ জুলাই) আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলেও জানান তিনি।

এ সময় আন্দোলনের নামে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, দেশের এই ক্ষতির দায় কে নেবে? বিএনপি বলছে সহিংসতার মধ্যে তারা নেই। তাহলে কে করেছে? এটা জনগণের প্রশ্ন।

কোটা আন্দোলনকারীদের আটকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোটা আন্দোলনকারী নেতারা নিজেরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাদের নিরাপত্তার জন্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ডাকা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সারাদেশে গত ১৯ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা থেকে কারফিউ জারি করে সরকার। এসময় সেনাবাহিনীও মোতায়েন করা হয়।

পরবর্তীতে নির্ধারিত সময়ের জন্য কারফিউ শিথিল করা হলেও এখনো পুরোপুরি এখন তুলে নেয়া হয়নি।

;

যেসব অঞ্চলে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
যেসব অঞ্চলে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

যেসব অঞ্চলে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের আট বিভাগেই মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

এতে বলা হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্ট লঘুচাপ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

এ অবস্থায় খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

একইসঙ্গে খুলনা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে।

এ সময় টাঙ্গাইল, সিলেট ও চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু তাপপ্রবাহ কিছু কিছু জায়গায় প্রশমিত হতে পারে। 

বর্ধিত ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

;

বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর নতুন বার্তা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার কারণে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার আগে ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার কর্মপন্থা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এক বার্তায় জানান, উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নিরাপত্তা ও সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করে পাঠদান শুরু করার জন্যে ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের প্রতি অনুরোধ জানাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা শুরু হওয়ায় গত ১৬ জুলাই রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে দেশের সব মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মাদ্রাসা ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

একই দিন রাতে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

;