চুয়াডাঙ্গায় সাপের কামড়ে শিশুর মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চুয়াডাঙ্গায় বিষধর সাপের কামড়ে আজমির হোসেন (৩) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। 

শুক্রবার (২১ জুন) বিকেল ৫টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের বড়বলদিয়া গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু আজমির হোসেন বড়বলদিয়া গ্রামের পশ্চিম পাড়ার জাহিদুল ইসলামের ছোট ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শিশু আজমির বিকেলে তার বড় ভাইয়ের সাথে বাড়ির পাশে খেলা করছিল। এসময় বড় ভাই মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লে শিশু আজমির তার পাশে থাকা ইঁদুরের গর্তে হাত দিলে একটি বিষধর সাপ তার হাতে কামড় দেয়। শিশুটি চিৎকার দিয়ে কান্নাকাটি শুরু করলে বড় ভাই দ্রুত তাকে বাড়ি নিয়ে বিষয়টি মাকে জানায়। পরে তার মা গ্রামের রবি নামের এক ওঝার (কবিরাজ) কাছে নিলে ওই ওঝা ছুঁচোই (বড় ইঁদুর) কামড় দিয়েছে বলে জানান।

এদিকে শিশু আজমিরের শারীরিক অবস্থা ক্রমেই খারাপ হতে থাকলে পরিবারের লোকজন অবস্থা বেগতিক দেখে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় শিশু আজমিরের নামাজের জানাজা শেষে গ্রাম্য কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

এদিকে, চারদিকে মারাত্মক বিষধর সাপ ‘রাসেল'স ভাইপার’ আতঙ্কের মধ্যে শিশু আজমিরের সাপের কামড়ে মৃত্যু হলো। এতে করে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বান্দরবানে কেএনএফ'র আরও এক সদস্য গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, বান্দরবান
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বান্দরবানে রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, মসজিদে হামলা, টাকা-অস্ত্র লুটের ঘটনায় যৌথবাহিনীর অভিযানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্দেহে আরও এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতার হওয়া কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সদস্য হলেন তোয়াং থান বম (৪৫)। সে সদর উপজেলার স্যারণ পাড়ার বাসিন্দা মৃত নুয়াং থাং বমের ছেলে।

বুধবার (২৬ জুন) তাকে বান্দরবানে যৌথবাহিনীর অভিযানে সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের স্যারণ পাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকেলে গ্রেফতার আসামিকে পুলিশের কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে প্রিজনভ্যানে করে বান্দরবান সদরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. নুরুল হক আসামিকে জেলে পাঠানোর আদেশ দেন।

বান্দরবান আদালতের জিআরও বিশ্বজিৎ সিংহ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আসামি তোয়াং থান বমকে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়েছে।

এপর্যন্ত মোট ১০৯ কেএনএফ সদস্য ও একজন চাঁদের গাড়ির চালকসহ মোট ১১০ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৫ জন নারী রয়েছেন। যৌথ বাহিনীর টহলের ওপর হামলা করতে গিয়ে কেএনএফের মোট ১৫ জন নিহত হয়েছে।

বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে প্রকাশ্যে ব্যাংক লুটের পর বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ ও সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ এর বিভিন্ন ধারায় এ পর্যন্ত রুমা থানায় ১৩টি ও থানচি থানায় চারটি, বান্দরবান সদর থানায় একটি এবং রোয়াংছড়ি থানায় তিনটি সহ সর্বমোট ২১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বান্দরবানে গত ২ ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, মসজিদে হামলা, টাকা-অস্ত্র লুটের ঘটনায় মামলায় অভিযুক্ত ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)’র সংশ্লিষ্টতা থাকার অভিযোগে সমগ্র বান্দরবান জুড়ে যৌথ বাহিনীর চিরুনি অভিযান চলমান রয়েছে।

;

চুয়াডাঙ্গায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ভ্যান চালক নিহত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চুয়াডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় আব্দুল জব্বার (৬০) নামের এক বৃদ্ধ পাখিভ্যান চালক নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে দামুড়হুদা-কার্পাসডাঙ্গা সড়কের দেউলী মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আব্দুল জব্বার দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের দেওলী গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দামুড়হুদার দেওলী মোড়ে একটি চায়ের দোকানের পাশে প্যাখিভ্যান রেখে অন্ধকারের মধ্যে রাস্তা পার হচ্ছিলেন বৃদ্ধ আব্দুল জব্বার। এসময় একটি দ্রুতগতির মোটরসাইকেল বৃদ্ধকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি মারাত্মক জখম হন। স্থানীয়ারা তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তারা আরও জানান, মোটরসাইকেলে দুজন আরোহী ছিলেন। তারাও সড়কের ওপর ছিটকে পড়েছিল। এর মধ্যে একজন আহত হয়েছেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোর্শেদ আলম বলেন, ‘আমরা বৃদ্ধ আব্দুল জব্বারকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। ধারণা করা হচ্ছে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তিনি মারা গেছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে অবগত করা হয়েছে।’

দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিয়াজুল ইসলাম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘এক বৃদ্ধ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে বিস্তারিত বলতে পারব। পরবর্তী আইনানুগ বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।’

;

এনবিআরের অতিরিক্ত শুল্কায়নে অর্ধশতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আটকা



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল (যশোর)
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআরের জারীকৃত নতুন আদেশে অতিরিক্ত শুল্কায়নের কারণে বেনাপোল বন্দরে মাছ, ফল ও সবজিসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ট্রাক পচনশীল পণ্য নিয়ে আটকা পড়েছে। এতে প্রতিবাদ জানিয়ে কাস্টমস হাউসের সামনে বিক্ষোভ করেছে আমদানিকারকেরা।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাত ৯টায় বেনাপোল কাস্টমস হাউসের সামনে এ বিক্ষোভ করে আমদানি-রফতানি বন্ধের হুমকি দেয় বেনাপোল ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্টাস এর্ন্ড এক্সপোর্টাস এ্যাসোসিয়েশন।

বেনাপোল ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্টাস এর্ন্ড এক্সপোর্টাস এ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি আবুল হোসেন জানান, গত ২৩ জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর পচনশীল পন্য শুল্কায়নের ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা জারি করে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিশনারেটের এক সভায় আমদানিকৃত শুল্কায়ন সমতা বজায় রাখা এবং আমদানিকারকগণের জন্য সুষম সুবিধা নিশ্চিত করণের কারণ দেখিয়ে আমদানি পর্যায়ে শুটকি মাছ, টমেটো, পান ও ফলের সঠিক পরিমাপ নির্ধারণে পণ্যবাহী ট্রাকের চাকার সংখ্যার ভিত্তিতে নুন্যতম ওজন প্রস্তাব ও সুপারিশ করা হয়। যা বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর করে কাস্টমস। এতে লোকসানের কবলে পড়ে পণ্য চালান খালাস না নেওয়ায় বন্দরে আটকা পড়ে অর্ধশতাধিক খাদ্যদ্রব জাতীয় পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক।

আমদানিকারক শামিম গাজী জানান, এনবিআরের নতুন এ মনগড়া আইনে তাদের ট্রাক প্রতি ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা অতিরিক্ত গুনতে হবে। এতে আমদানি কমবে এবং দেশে ভোগ্য পণ্যের বাজার অস্থির হবে। বিষয়টি এনবিআরকে পূর্ব বিবেচনা করার অনুরোধ জানান তিনি।

বেনাপোল ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্টাস এর্ন্ড এক্সপোর্টাস এ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক জয়িাউর রহমান জানান, এনবিআরের জারিকৃত নতুন আদেশের অনুচ্ছেদ ৪ কাস্টমস মূল্যায়ন না করায় তারা পণ্য চালান খালাস নিতে পারছেনা। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি সমস্যা নিরসনে কাস্টমস পদক্ষেপ না গ্রহণ করে তবে শনিবার থেকে এপথে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ রাখবেন।

আমদানিকারক উজ্জ্বল বিশ্বাস জানান, আটকে থাকা পণ্য চালানের বিষয়ে কাস্টমস রোববার সিদ্ধান্ত দিবে জানিয়েছে। এতে তিন দিন ট্রাক আটকে থাকলে তাদের পণ্য গরমে পঁচে যাওয়ার ভয় রয়েছে।

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা জাহিদ হাসান জানান, এনবিআরের নতুন আদেশ তারা কার্যকর করছেন। তবে কয়েকজন আমদানিকারক তারা অভিযোগ জানিয়ে পণ্য খালাস নিচ্ছেনা। আবার কেউ খালাস নিয়েছেন। তবে যারা পণ্য খালাস নেয়নি তাদের বিষয়ে রোববার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে জানান।

;

কারাগার থেকে পালানো চার কয়েদীই দুর্ধর্ষ অপরাধী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বগুড়া
বগুড়া জেলা কারাগার। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া জেলা কারাগার। ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বগুড়া জেলা কারাগারের ছাদ কেটে পালানো মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার কয়েদীই ভয়ঙ্কর খুনি। তাদের মধ্যে একজন স্কুলছাত্র অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় করেও সেই ছাত্রকে ভাটার আগুনে পুড়িয়ে হত্যায় দণ্ডপ্রাপ্ত, অপরজন এক তরুণকে সুলপি (সুচালো অস্ত্র) দিয়ে খুুঁচিয়ে হত্যায় সাজাপ্রাপ্ত এবং অন্য দু’জন ডাকাতি করতে গিয়ে একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে হত্যায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। বগুড়া জেলা কারাগার ও সংশ্লিষ্ট আদালত সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

পলাতক ওই চার কয়েদীর মধ্যে অন্যতম মো. জাকারিয়া (৩৪)। তিনি বগুড়ার কাহালু উপজেলার উলট্ট গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতা আব্দুল মান্নান বর্তমানে কাহালু পৌরসভার মেয়র এবং কাহালু উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। জাকারিয়া নামের এই কয়েদী ২০১২ সালের এক স্কুলছাত্রকে অপহরণ করে। নাইমুল ইসলাম নাইম (১৩) নামের ওই স্কুলছাত্র কাহালু উপজেলার রুস্তমচাপড় গ্রামের রফিকুল ইসলাম তালুকদারের ছেলে। নাঈম কাহালু পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিলো। ২০১২ সালের ৫ এপ্রিল সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে অপহৃত হয় নাইম।

এ ঘটনায় নাইমের বাবার দায়ের করা মামলা সূত্রে জানা যায়, অপহরণকারীরা তাকে আটকে রেখে মুক্তিপণ হিসেবে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। চার দিনের মাথায় ৯ এপ্রিল মুক্তিপণের পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হয় অপহরণকারিদের। কিন্তু তাকে মুক্তি না দিয়ে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে তার মরদেহ জাকারিয়ার বাবার ইটভাটার আগুনে ফেলে ভস্মীভূত করা হয়। নাইমের বাবা রফিকুল ইসলাম ১০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর থানা পুলিশ ৬ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি আদালত মামলাটির রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মো. জাকারিয়াসহ দু’জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড এবং অন্য আসামিদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও প্রত্যেকের এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

পুলিশ জানায়, ২০১৭ সালে রায় ঘোষণা হলেও সেসময় পলাতক ছিল জাকারিয়া। এরপর গত বছরের ৬ জুলাই কাহালু উপজেলার উলট্ট বাজার থেকে জাকারিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তখন তাকে বগুড়া কারাগারে রাখা হলেও পরবর্তীতে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর পুণরায় বগুড়া কারাগারে স্থানান্তর করা হয় তাকে। তার বিরুদ্ধে বগুড়ার আদালতে একটি প্রতারণা মামলা এখনো চলমান।

কারাগার থেকে পালাতে গিয়ে গ্রেফতার ৪ আসামি

জেলখানা থেকে পালানো কয়েদী ফরিদ শেখ (৩০) বগুড়া সদর উপজেলার কুটুরবাড়ি এলাকার ইসরাইল শেখ চাঁন মিয়ার ছেলে। ২০২৩ সালের ৮ নভেম্বর থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে বগুড়া কারাগারে ছিলেন ফরিদ। তার মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, কুটুরবাড়ি এলাকায় জমিজমা নিয়ে চাঁন মিয়ার সাথে বাদশা শেখের বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধের জের ধরে ২০১৯ সালের ৬ জুন দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষকালে সেখানে আল আমিন নামে এক তরুণকে সুলপি (সুচালো অস্ত্র) দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে ফরিদ শেখ। ওই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় গত বছরের ৮ নভেম্বর তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। তখন থেকেই বগুড়া কারাগারে ছিলেন ফরিদ। তার বিরুদ্ধে বগুড়ার আদালতে মারপিট ও হত্যার হুমকির দু’টি মামলা এখনো চলমান।

পালিয়ে যাওয়া অপর দুই কয়েদী কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার দিয়াডাঙ্গা এলাকার মৃত আজিজুল হকের ছেলে নজরুল ইসলাম মজনু ওরফে মঞ্জু (৬০) ও নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার ফজরকান্দি এলাকার মৃত ইসরাফিল খাঁর ছেলে আমির হোসেন ওরফে আমির হামজা (৪১) একই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত। ২০১৪ সালে ভূরুঙ্গামারীর সীমান্তবর্তী দিয়াডাঙ্গা গ্রামে ডাকাতি ও চার খুনের মামলায় তাদের দু’জনের মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন আদালত।

ওই মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৪ জানুয়ারি রাতে দিয়াডাঙ্গা গ্রামের সুলতান আহমেদ মণ্ডলের বাড়িতে হানা দেয় একদল ডাকাত। ওই বাড়ি থেকে মালামাল লুণ্ঠন করতে গিয়ে ডাকাত দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে গৃহকর্তা সুলতান মণ্ডল, তার স্ত্রী হাজেরা বেগম এবং তাদের দুই নাতনি রোমানা ও আনিকাকে কুপিয়ে হত্যা করে। ওই ঘটনায় নিহত সুলতান মণ্ডলের ছেলে হাফিজুর রহমানের দায়ের করা মামলায় মঞ্জু ও আমিরসহ ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক। ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার পর থেকে তারা কারাগারে বন্দি। তবে গত বছরের ১৮ এপ্রিল কুড়িগ্রাম জেলা কারাগার থেকে মঞ্জুকে এবং চলতি বছরের ২৪ মে গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আমির হামজাকে বগুড়া জেলা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। তাদের দু’জনের নামে হত্যা, ডাকাতি, সরকারি কাজে বাধা দিয়ে মারপিট ও হত্যার হুমকি এবং অপহরণ করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে ৪টি মামলা বিচারাধীন।

বগুড়ার জেল সুপার আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ওই চার কয়েদীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা চলমান থাকায় আদালতে হাজিরার সুবিধার্থে তারা বগুড়া কারাগারে অবস্থান করছিলেন।

এই চার কয়েদী মঙ্গলবার (২৫ জুন) দিবাগত রাত তিনটার দিকে কারাগারের কনডেম সেল থেকে পালিয়ে যায় এবং এক ঘন্টার মধ্যে পুলিশের হাতে ধরাও পড়েন।

বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।

যেভাবে এই চার কয়েদী ধরা পড়েন:

রাত সাড়ে ৩টার পর নদীতে নির্মাণাধীন ব্রিজের কাছে অনেকগুলো কুকুর ঘেউ ঘেউ শুরু করে। এলাকার কয়েকজন যুবক সেখানে এগিয়ে গেলে দেখতে পান চারজন মানুষ নদীর হাঁটু পানিতে হামাগুড়ি দিয়ে তীরে ওঠার চেষ্টা করছেন। তাদের প্রত্যেকে সঙ্গে একটি করে ব্যাগ রয়েছে। চোর সন্দেহে চারজনকেই নদী থেকে তুলে এনে পাশের চাষী বাজারে নিয়ে যান। চারজন নিজেদের রাজমিস্ত্রি পরিচয় দিয়ে বলেন, ঠিকাদার তাদের মারপিট করে নদীতে ফেলে দিয়েছেন। তারা প্রাণ ভয়ে পালিয়ে এসেছেন।

তাদের অসংলগ্ন কথাবার্তা এবং একজনের পরনে কয়েদীর পায়জামা থাকায় সন্দেহ হয়। তাদের ব্যাগ তল্লাশি করে নগদ ৯ হাজার টাকা, ৭০ প্যাকেট সিগারেট, একটি স্টিলের পাত, একটি স্ক্রু ড্রাইভার এবং কয়েদির কাগজ পাওয়া যায়। একপর্যায়ে তারা নিজেদের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এবং জেলখানা থেকে পালানোর কথা স্বীকার করেন।

বগুড়া জেলা কারাগারের কনডেম সেলের ছাদ ফুটো করে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত এই চার কয়েদী পালানোর ঘটনায় তিন কারা রক্ষিকে সাময়িক বরখাস্ত ( সাসপেন্ড) করা হয়েছে। এছাড়াও অপর দুইজন কারারক্ষিকে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বগুড়া জেলা কারাগারের জেল সুপার আনোয়ার হোসেন এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। সাময়িক বরখাস্ত হওয়া তিন কারারক্ষী হলেন বগুড়া জেলা কারাগারের প্রধান কারারক্ষী দুলাল হোসেন, কারারক্ষী আব্দুল মতিন ও কারারক্ষী আরিফুল ইসলাম। এছাড়াও কারারক্ষী ফরিদুল ইসলাম হোসেনুজ্জামানকে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে।

এদিকে কারা অধিদফতর থেকে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

;