আবাসিকে বাড়ছে গ্যাসের দাম! কমিশনে প্রস্তাব তুলছে বিইআরসি



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: গ্যাসের চুলা

ছবি: গ্যাসের চুলা

  • Font increase
  • Font Decrease

মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকের জন্য গ্যাসের বরাদ্দ বাড়ানোর আবেদন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সভায় তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১ বছর আগে করা ওই আবেদনের বিষয়ে কমিশন দ্বিধাবিভক্ত রয়েছে এমন তথ্য দিচ্ছেন জ্বালানি সংশ্লিষ্টরা। এদিকে যাচাই-বাছাই কমিটি তাদের রিপোর্টে বলেছে, এ দফা গ্যাসের বরাদ্দ কিংবা পরিমাণ বাড়লে বেড়ে যাবে গ্যাসের দামও। তারা বলছে, গ্যাসের পরিমাণ বাড়িয়ে দিলে দাম পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। তবে বিকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গ্যাসের দর কমিয়ে দিয়ে ভলিয়ম বাড়াতে হবে।

বর্তমানে মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকদের কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ব্যবহার ধরে গ্যাসের বিল আদায় করা হয়। গ্রাহক ব্যবহার করুক, কিংবা না করুক অথবা বেশি ব্যবহার করুক কিংবা কম, একটি নির্ধারিত অংকের বিলই তাদের দিতে হয়। কিন্তু তিতাস গ্যাস বিদ্যমান এক চুলাবিশিষ্ট ইউনিটে ৫৫ ঘনমিটার (৯৯০ টাকা) বরাদ্দ থেকে বাড়িয়ে ৭৬.৬৫ ঘনমিটার এবং দুই চুলাবিশিষ্ট ইউনিটে ৬০ ঘনমিটার (১০৮০ টাকা) থেকে বাড়িয়ে ৮৮.৪৪ ঘনমিটার বরাদ্দ করার আবেদন দিয়েছে। বলা হচ্ছে, বরাদ্দের পরিমাণ বেড়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই দামও বেড়ে যাবে।

বিইআরসি সর্বশেষ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আদেশ দেয় ২০২২ সালের ৫ জুন। ওই আদেশ দেওয়ার আগে মার্চে গণশুনানি গ্রহণ করে। তখন বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারি গ্রাহকদের পরিসংখ্যানে দেখা যায় গড়ে এক চুলা ৪০ এবং দুই চুলা সর্বোচ্চ ৫০ ঘনমিটার ব্যবহার করছে। প্রিপেইড গ্রাহকের ব্যবহারের পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে এক চুলা ৭৩.৪১ ঘনমিটার ও দুই চুলা ৭৭.৪১ ঘনমিটার থেকে কমিয়ে যথাক্রমে ৫৫ ও ৬০ ঘনমিটার করা হয়।

বিইআরসির সেই আদেশের ১০ মাস পর আপত্তি জানায় তিতাস। আর তিতাসের আবেদনের প্রায় ১ বছর পর কমিশনের সভায় তোলা হচ্ছে বিষয়টি।

তিতাস তার আবেদনে বলেছে, মিটারবিহীন কমবেশি ২৫ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে কোনো সমীক্ষা বা তথ্য বিশ্লেষণ না করেই ঘনমিটারের পরিমাণ নির্ধারণ করেছে বিইআরসি। এতে কারিগরি ঝামেলা বেড়েছে এবং সরকারি লাভজনক প্রতিষ্ঠান তিতাস আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে।

তবে তিতাসের এমন অভিযোগ অস্বিকার করে আসছে বিইআরসি।

কমিশনের তৎকালীন সদস্য (২০২২) মকবুল ই-এলাহী চৌধুরী বার্তা২৪কমকে বলেন, তিতাস গ্যাসের অভিযোগ সত্য নয়। তাদের যে সাড়ে ৩ লাখ প্রিপেইড মিটার ছিল সেখানে দেখা গেছে গড়ে ৪৫ ঘনমিটারের কম ব্যবহৃত হয়েছে। প্রিপেইড মিটারের বিলের তথ্য দেখলেই বুঝতে পারা যায়। বিষয়টির জন্য রকেট সায়েন্স জানা দরকার হয় না।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, কার্যক্রম চলছে, বিভিন্ন মিটারের তথ্য নেওয়া হয়েছে. সেসব তথ্য যাচাই-বাছাই করতে সময় লেগেছে।

বিষয়টি কমিশনের মিটিংয়ের এজেন্ডায় আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মুহুর্তে মনে পড়ছে না।

গণশুনানির বিষয়ে ভাবা হচ্ছে কি-না, এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিষয়টি কমিশনে উঠলে তারপর বলা যাবে। আগেই কিছু বলা যাচ্ছে না। আর আগেই কোন মন্তব্য করা ঠিক হবে না।

তিতাস দাবি করে আসছে মিটারবিহীন গ্রাহকরা বেশি গ্যাস পুড়ছে। তবে মিটার ব্যবহারকারী গ্রাহকদের তথ্যচিত্র তা বলে না।

এখানে তিতাসের বক্তব্য হচ্ছে, মিটার ব্যবহারকারী গ্রাহক সাশ্রয়ী হচ্ছেন। গ্যাসের প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা গেলে এই সংকট থাকে না। প্রথম দিকে গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার স্থাপনে বেশ তোড়জোড় ছিল। এখন যতটা পারা যায় বিলম্বিত করার কৌশলী অবস্থান নিয়েছে বিতরণ কোম্পানিগুলো।

প্রথম দিকে তারা বলেছিলেন আবাসিকে অনেক বেশি গ্যাস পুড়ছে, মিটার স্থাপন করলে তাদের রাজস্ব বেড়ে যাবে। কিন্তু লালমাটিয়া (২০১৬ সালে) এলাকায় প্রথম যখন মিটার বসানো হলো তার রেজাল্ট এলো উল্টো। দেখা গেলো প্রি-পেইড মিটার ব্যবহারকারিদের বিল আসছে দেড়’শ থেকে আড়াই’শ টাকা। যাদের মিটার নেই তাদের কাছ থেকে তখন বিল আদায় করা হচ্ছিল দুই চুলা সাড়ে ৪’শ টাকা।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ২০১৬ সালে জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে বলেছিলেন, প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের পাইলট প্রকল্পের রেজাল্ট ভালো। দুই চুলায় মাসে ৩৩ ঘনমিটার গ্যাস সাশ্রয় হচ্ছে।

বিইআরসি ২০১৮ সালে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আদেশে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের দ্রুত করার আদেশ দেয়। গ্রাহক যাতে নিজেরা মার্কেট থেকে মিটার কিনে স্থাপন করতে পারে সেই সুবিধা উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর প্রণীত নীতিমালায় বলা হয়েছে গ্রাহক নিজের পছন্দমতো দোকান থেকে মিটার কিনে বিতরণ কোম্পানিতে জমা দেবেন। বিতরণ কোম্পানিগুলো পরীক্ষা করে গ্রাহকের আঙ্গিনায় স্থাপন করবে। তবে নানা মারপ্যাচ দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। কোম্পানিগুলো বাজারের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দামে মিটার কিনেই নিজেরাই স্থাপন করছে, তাও চলছে ঢিমেতালে। তারা দুই দিকে ব্যবসা করতে চায়। এক গ্রাহকের পকেট কাটা, অন্যদিকে প্রকল্পের নামে বেশিদামে মিটার কিনে ব্যক্তি বিশেষে অনৈতিক সুবিধা নেওয়া।

বিইআরসির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, তিতাস এখন শুধু ভলিয়ম বাড়িয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছে। যদিও টেকনিক্যালি এটা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, দেশে বর্তমানে ৪৪ লাখের মতো আবাসিক গ্রাহক রয়েছে। তারমধ্যে ৫ লাখের মতো প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করেন। ৩৯ লাখ গ্রাহকের কমবেশি ২৮ ঘনমিটার হিসাবে পরিমাণ বেড়ে গেলে মাসে হয় ১০ কোটি ৯২ লাখ ঘনমিটার। এই পরিমাণ গ্যাস তারা বিক্রি দেখাতে চায়। গ্যাস কোম্পানিগুলো চুরি ঠেকাতে পারছে না। সেই চুরির গ্যাস আবাসিকের উপর দিয়ে চালিয়ে দিতে চায়। যে কারণে শুধু পরিমাণ বাড়াতে আব্দার করেছে।

অন্যদিকে ২০২২ সালের গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপনে বিইআরসি আরেকটি ঐতিহাসিক আদেশ দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে বিশ্বের কোথাও গ্যাসের সিস্টেম লস ২ শতাংশের উপরে নেই। সিস্টেম লস ২ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে হবে। এখানেই হিমশিম খাচ্ছে কোম্পানিগুলো। কোন কোন এলাকায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর‌্যন্ত সিস্টেম লস রয়েছে। তারা চুরি না ঠেকিয়ে বিকল্প পথে হাটতে চাইছে। গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাবের কোনই যৌক্তিকতা নেই। ওই প্রস্তাব বাছাইয়ে আটকে যাওয়ার কথা।

৬০ কিমি বেগে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে যেসব অঞ্চলে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
আবহাওয়া অধিদফতর। ছবি: বার্তা২৪.কম

আবহাওয়া অধিদফতর। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

শনিবার (২৯ জুন) সকাল ৯টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

এতে বলা হয়, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার জেলার ওপর ওপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেইঙ্গে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে আবহাওয়া অফিসের অপর এক বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এ সময় দেশের সব বিভাগে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে।

;

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সংকটে শেবাচিম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ছবি: বার্তা২৪.কম

বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

অর্থোপেডিক্স, মেডিসিন আর জরুরি বিভাগে রোগীর চাপে হিমশিম ডাক্তার ও নার্স। ১০০০ বেডের বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) এই মুহূর্তে প্রায় ২৫০০ রোগী ভর্তি আছে। অথচ এই রোগীদের চিকিৎসা সেবায় রয়েছেন মাত্র ৮৭ জন চিকিৎসক।

তার ওপর ১০টি লিফটের ছয়টি অকেজো, নেই উন্নত পরীক্ষা নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি। যা আছে তাও নষ্ট, নয়তো অকেজো। এখানে কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই এবং পর্যাপ্ত অত্যাধুনিক সরঞ্জামের অভাব স্বীকার করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

সরেজমিনে শুক্রবার (২৮ জুন) বরিশালের ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (শেবাচিম) ঘুরে দেখা গেছে অস্থির ও অমানবিক কিছু চিত্র। 

প্রবেশ পথের জরুরি বিভাগে রোগীর ছটফটানি ও শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের ছুটোছুটি বলে দেয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়া তারা কতটা অসহায় এখানে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন খয়রাবাদ এলাকায় সড়ক দূর্ঘটনার শিকার আহত দুজনকে নিয়ে আসা সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক আসলাম জানান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাদের সিএনজিতে তুলে দিয়েছেন। বলেছেন হাসপাতালে পৌঁছে দিতে। এখানে এসে জরুরি বিভাগে যোগাযোগ করে তাদের সম্পর্কে জানানোর পরও আধাঘন্টা হয়ে গেছে কেউ আসেনি। নিজেই স্ট্রেচারে করে ভিতরে রেখে আসলাম এখন। স্ট্রেচারও দিতে রাজী নয় তারা। পরে হাসপাতালের একজন কর্মী অবস্থা দেখে দ্রুত স্ট্রেচার নিয়ে সাহায্য করেন। তবে ইন্টার্ন চিকিৎসক ছাড়া কাউকে দেখা যায়নি জরুরি বিভাগে। 

সড়ক দূর্ঘটনায় আহত দুজনের একজনকে অর্থোপেডিক্স ও একজনকে ৫ নং ওয়ার্ডে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানালেন দায়িত্বরত ইন্টার্ন চিকিৎসক। তাদের দেখানো পথে পুরাতন ভবনের সিঁড়ি বেয়ে তৃতীয় তলার অর্থোপেডিক্স বিভাগে এসে দেখা গেল, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অপেক্ষা চলছে। বড় ডাক্তার না আসলে রোগীর অবস্থা নিয়ে কিছু বলতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তারা জানালেন, তাদের স্যার আসার অপেক্ষা করছেন তারা।

একই অবস্থা দেখা গেল নতুন ভবনের মেডিসিন বিভাগেও। বিছানা না পেয়ে ফ্লোরে রোগীদের জায়গা দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এই মূহুর্তে ১৩৭৬ জন রোগী ভর্তি আছে বলে জানালেন হাসপাতালের তথ্য কর্মকর্তা মাসুম ও এমি। 

এমি বলেন, এই হিসাব ২৫ জুন সকাল আটটা থেকে ২৬ জুন সকাল আটটা পর্যন্ত। এখন বেলা ১টায় যে রোগী এসেছেন, সে হিসাব আগামীকাল পাবেন। তবে আনুমানিক ৭০০ জন হবে। 

এমি ও মাসুমের দেয়া তথ্য অনুযায়ী এই মূহুর্তে শেবাচিমে রোগী ভর্তি প্রায় ২৫০০ জন। স্বাভাবিক কারণেই বেড সংকট তৈরি হয়েছে। ফ্লোরে রেখে হলেও চিকিৎসা সুবিধা দেয়ার চেষ্টা করছেন এখানের ডাক্তাররা।

এদিকে গত বছর জানুয়ারিতে শেবাচিম থেকে একযোগে আট চিকিৎসককে বদলি করার পর আজ পর্যন্ত কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আসেনি শেবাচিমে। মাত্র ছয়জন প্রফেসর, ৮৭ জন এসিসট্যান্ট দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। বিষয়টি জানিয়ে সয়ং হাসপাতাল পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম বলেছেন, ৫০০ শয্যার চিকিৎসা ব্যবস্থা দিয়ে চলছে এই হাসপাতাল। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ৪০টি পদই শূন্য এখানে। ১২৯ জন সহকারী প্রফেসর এর দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র ২৯ জন। এই হাসপাতালে তীব্র চিকিৎসক সংকট চলছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারীতে এখান থেকে আটজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বদলি হয়েছে। এরপর আর নতুন কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পায়নি এই হাসপাতাল। 

তিনি বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের সব উপজেলার রোগীই এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। এমনকি ফরিদপুর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জের রোগীও পাবেন এখানে। একটি এমআরআই মেশিন ও ক্যান্সার চিকিৎসার উপকরণ খুবই জরুরি প্রয়োজন আমাদের। 

পরিচালক সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, হাসপাতালের ম্যানেজিং কমিটির পরিবর্তন ঘটেছে। বরিশাল ৫ আসনের সংসদ সদস্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এখন সভাপতি মনোনীত হয়েছেন। ২৮ জুন তিনি হাসপাতালের সমস্যা ও প্রয়োজন নিয়ে নগরবাসীর সাথে সরাসরি মতবিনিময় ও পরামর্শ করবেন। আশাকরি দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী এই হাসপাতালের পরিবেশ পুনরায় এশিয়ার অন্যতম চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে।

;

চুয়াডাঙ্গায় আরেক ইউপি চেয়ারম্যানকে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
আহত অবস্থায় ইউপি চেয়ারম্যানকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ছবি: বার্তা২৪.কম

আহত অবস্থায় ইউপি চেয়ারম্যানকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন খানকে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যশোরে রেফার্ড করেছেন চিকিৎসক। 

শুক্রবার (২৮ জুন) রাত ৮টার দিকে জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের আলার মোড়ের অদূরে এ ঘটনা ঘটে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান। 

এর আগে গত ২৮ মে উথলী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নানকে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা।

রেজাউল হক নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন প্রতিদিন সন্ধ্যার পর মনোহরপুর আলার মোড়ে চা খেতে আসেন। আজও একসাথে বসে চা খেলাম। পরে উনি মোটরসাইকেলে করে বাড়িতে ফিরছিলেন। এক মিনিট পরেই এক নারীর চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পেয়ে আমরা দৌঁড়ে যায়। গিয়ে দেখি চেয়ারম্যান সাহেবকে কে বা কারা পিছন থেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে গেছে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে রক্তাক্ত অবস্থায় চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করে জীবননগর হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে চিকিৎসক তাকে যশোরে রেফার্ড করেছেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘ওই নারীর চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে হয়ত দুর্বৃত্তরা পালিয়ে গেছে। না হলে তারা চেয়ারম্যানকে মেরে ফেলত।’

মনোহরপুর গ্রামের জুলি খাতুন নামের ওই নারী জানান, ‘সন্ধ্যার পর আমার ছোট ছেলের সাথে আলার মোড়ে সুপারি কিনতে যাচ্ছিলাম। পথের মাঝে দেখি চেয়ারম্যান মামা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। আর পাশ দিয়ে একটি মোটরসাইকেলে মুখোশ পরিহিত দুজন ব্যক্তি চলে যাচ্ছে। এসময় আমি চিৎকার-চেঁচামেচি করলে স্থানীয়রা ছুটে আসে।’

জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মোস্তাফিজুর রহমার সুজন জানান, ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনের পিঠের ডান পাশে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের জখম পাওয়া গেছে। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। তিনি অ্যাজমা ও পেশারের রোগী, তাই ঝুঁকি এড়াতে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোরে রেফার্ড করা হয়েছে।

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান বলেন, মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনের পিঠে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছে দুর্বত্তরা। আমরা ঘটনাস্থলে রয়েছি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পায়নি। তবে অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ জানান, ‘আমরা জেলা থেকে ডিবি টিম, সাইবার টিম নিয়ে এসেছি। স্থানীয়দের সাথে কথা বলেছি। আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো নজরদারি করা হচ্ছে। আমরা প্রত্যাশা করছি, কারা এ গুপ্ত হামলার সাথে জড়িত, তা দ্রুতই উন্মোচন করতে পারব।’

এর আগে গত ২৮ মে জীবননগর উপজেলার উথলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নানকে একই স্টাইলে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা। ওই সময় তাকে প্রথমে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্ব্যুলেন্সে করে ঢাকায় নেয়া হয়। তিনি বর্তমানে ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই ঘটনায় জীবননগর থানায় একটি মামলা হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। ওই ঘটনার এক মাসের মাথায় আবারও আরেক ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটল।

;

যশোরে তৃতীয় লিঙ্গের একজনকে গলা কেটে হত্যা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, যশোর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

যশোরের মনিরামপুরে খানপুর ইউনিয়নের মাছনা মহল পাড়ায় তৃতীয় লিঙ্গের একজনকে গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। 

শুক্রবার (২৮ জুন) রাত ৮টার দিকে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে নিহতের ঘরের তালা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহত মোছা. মংগলী ওরফে পলি (৩৩) মাছনা গাজীপাড়া গ্রামের মৃত খালেক গাজীর সন্তান। 

স্থানীয়রা জানায়, গত বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাত ৮টার দিকে পলি বাইরের কাজ শেষে বাসায় প্রবেশ করেন। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে পাশের বাড়ির জনৈকা মাছুরা খাতুন বাড়ির বাইরে থেকে ডাকাডাকি করে সাড়াশব্দ না পেয়ে পার্শ্ববতী প্রতিবেশীদের জানান। প্রতিবেশীরা বিষয়টি মনিরামপুর থানা পুলিশকে খবর দিলে মনিরামপুর থানা পুলিশ এসে পলির ঘরের তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে তার হাত বাঁধা ও গলাকাটা অবস্থায় দেখতে পান।

নিহত পলির পৈত্রিক বাড়ি একই ইউনিয়নের ঘুঘুদাহ গ্রামে। তিনি হিজড়া হওয়ার পর থেকে বিগত ১০-১২ বছর পূর্বে মাছনা মহল পাড়ায় জমি কিনে বাড়ি নির্মাণ করে একাকী বসবাস করে আসছিলেন। পূর্বশত্রুতার জেরে একাকী থাকার সুযোগে রাতের কোনো এক সময় দূর্বৃত্তরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে বলে স্থানীয়দের ধারণা।  

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম মেহেদী মাসুদ বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের পলি নামে একজন খুন হয়েছে। তার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে হিজড়া সম্প্রদায়ের সাথে কথা বলে পরে বিস্তারিত জানানো যাবে।

;