ফেনীতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অভিযানে দেড় বছরে ৩৯০ মামলা

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,ফেনী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ, ছবি: সংগৃহীত

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ, ছবি: সংগৃহীত

ফেনীতে গত ১৮ মাসে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ফেনী।

বুধবার (২৬ জুন) আন্তর্জাতিক মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী দিবসে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

বিজ্ঞাপন

কার্যালয়টির দেয়া তথ্যানুযায়ী, ফেনীতে ২০২৩ সাল এবং ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত মাদকদ্রব্য আইনে ৩৯০ টি মামলায় ৩৯৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। এবং বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে ২০২৩ সালে ৩ হাজার ৯১১ টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে এবং ২০২৪ সালের অদ্যাবধি পর্যন্ত ১ হাজার ৪৯০ টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের দেয়া তথ্যানুসারে, ২০২৪ সালের মে মাস অব্দি মোট মামলার সংখ্যা ১২১ টি, আসামি ১২১ জন। এরমধ্যে ইয়াবা ৪০ হাজার ৫৬৮ পিস,গাজা ২৮ কেজি ৮৫০ গ্রাম, চোলাইমদ ৩৬ লিটার, বিদেশীমদ ২০৯ বোতল, বিয়ার ৩ ক্যান, মুলি ৩ কেজি ৫০০ গ্রাম, ট্যাফেন্টাডল ট্যাবলেট ৪৫০ পিস, ৮ রাউন্ড গুলিসহ পাইপগান ১ টি উদ্ধার করা হয়েছে।

২০২৩ সালে ২৬৯ মামলায় আসামি ২৭৮ জন। এরমধ্যে ইয়াবা ৩৩ হাজার ৯৭৯ পিস,গাজা ১১৮ কেজি ১০০ গ্রাম, চোলাইমদ ১০৭ লিটার, বিদেশীমদ ৬৯ বোতল, ফেন্সিডিল ৪৮ বোতল,বিয়ার ৩০ ক্যান, ওয়াস ১ হাজার ২০ কেজি, জি পেথিডিন ইনজেকশন ৫ এ্যাম্পুল, মুলি ২০ পিস, কোডিনযুক্ত মাদকদ্রব্য ৮বোতল, মোবাইল সেট ১ টি, পিক আপ ১ টি, সিএনজি ১ টি উদ্ধার করা হয়েছে।

একই সূত্র জানায়, ২০২১-২২, ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গণসচেতনতা কার্যক্রমের আওতায় ১০টি সেমিনার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদকবিরোধী সচেতনতা সৃষ্টিতে মেন্টর তৈরি করা হয়েছে ৯২ টি, আলোচনা সভা করা হয়েছে ২৩ টি, মাদকবিরোধী শ্রেণি বক্তৃতা ১৭ টি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ক্লাব এনজিও ও সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে শর্ট ফিল্ম প্রদর্শিত হয়েছে ১৫৪ টি, কারাগারে বন্ধীদের মাদকবিরোধী প্রচারণামূলক কার্যক্রম হয়েছে ৭ টি। এছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদকবিরোধী স্লোগান সম্বলিত কলম খাতা, স্কেল বিতরণ করা হয়েছে এবং মাদকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে ব্যানার পোস্টার লিফলেট বিতরণ করা হয়ছে।

ফেনীতে মাদকদ্রব্যের বিষয়ে উপ পরিচালক সোমেন মন্ডল জানান, বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ফেনী সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়াতে মাদকের হার এখানে বেশি হয় এবং সে অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করা হয়। এছাড়াও ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের ট্রানজিট হওয়াতে ফেনী দিয়ে মহাসড়কে মাদক পাচার বেশি হয় বলে জানান তিনি। যার ফলে ফেনীতে ফেনীর মানুষ ছাড়াও আশেপাশের বিভিন্ন জেলার মানুষ ধরা পড়ে।

তিনি বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে চিহ্নিত স্থান গুলোতে নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করা হয়। মাদক নিয়ন্ত্রণে থাকলেও যারা ধরা পড়ে অধিকাংশই যুবক বয়সী বলে জানান তিনি।

অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, মাদক নিরাময় কেন্দ্র গুলোতে ৯০ শতাংশ ১৫ থেকে ৩৫ বয়সী। এটি খুবই উদ্বেগজনক। এদেরকে মাদকের ভয়াবহতা থেকে বের করতে হলে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। খেলাধুলাসহ পারিবারিক ভালো অবস্থানের মাধ্যমে পরিত্রাণ করতে হবে। তবেই মাদকের ভয়াবহতা থেকে তরুণদের বের করে আনা সম্ভব হবে।