‘যোগান বেশি হওয়ায় চামড়ার ন্যায্য দাম পাওয়া যাচ্ছে না’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ভোক্তার ডিজি  এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ

ভোক্তার ডিজি এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ

  • Font increase
  • Font Decrease

চামড়ার ন্যায্য দাম নিশ্চিত করা একটি ঈমানি দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালন করতে না পারায় সমাজের দরিদ্র ও অসহায় মানুষ তাদের প্রাপ্য হক থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান।

শনিবার (২৯ জুন) এফডিসিতে কাচাঁ চামড়ার ন্যায্য দাম নিশ্চিতকরণ নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

ভোক্তার ডিজি বলেন, এ বছর কোরবানির চামড়া ঢাকার বাইরে থেকে ঢাকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানা হয়নি। কাঁচা চামড়ার দাম নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেট দেখা না গেলেও এর প্রভাব রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে।

তিনি বলেন, দেশে চামড়ার চাহিদার চেয়ে যোগান বেশি হওয়ায় এবং রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায় কাঁচা চামড়ার ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রতি বছর ২০ লাখ চামড়ার চাহিদা থাকলেও চামড়ার যোগান হচ্ছে ২ কোটি। কোরবানির ঈদের সময় ঢাকায় ৪ লাখ উদ্বৃত্ত চামড়া থাকে। যা প্রক্রিয়াকরণ সঠিক সময়ে সম্পন্ন করা যায় না।

পরিবেশ সুরক্ষার যে লক্ষ্য নিয়ে হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি স্থানান্তর করা হয়েছে, পোস্তগোলায় চামড়া প্রক্রিয়াকরণ অব্যাহত থাকায় সে লক্ষ্য বাস্তবায়িত হয়নি বলেও জানান তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ২০১৯ সাল থেকে চামড়ার দামে ক্রমাগত যে ধস নেমেছে তা এখনও পর্যন্ত ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। অভিযোগ রয়েছে ট্যানারি মালিক ও আড়তদাররা সিন্ডিকেট করে পানির দামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য করছে প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের।

তিনি বলেন, চামড়ার বাজার নিয়ন্ত্রণে কোন সিন্ডিকেট আছে কি না তা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে খতিয়ে দেখা দরকার। কোরবানির চামড়ার মূল্য গরিব দুঃখী মানুষের হক। সিন্ডিকেট করে যদি কেউ এই হক নষ্টের সাথে জড়িত থাকে তাদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা উচিৎ। বিষয়টি জাতীয় সংসদে আলোচনার দাবি রাখে। প্রয়োজনে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কমনা করছি।

তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের চামড়ার বাজারজাত করণের লক্ষ্যে এলডব্লিউজি সনদ অর্জনের প্রতি সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করতে হবে। এছাড়া পরিবেশগত সুরক্ষা ও সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করাও অত্যন্ত জরুরি। ঢাকায় চামড়া প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রীভূত না করে জেলা পর্যায়ে আধুনিক প্রক্রিয়াকরণ নিশ্চিত করা গেলে জনগণ তার সুফল পাবে। তাহলে চামড়ার ন্যায্য দাম নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে কাঁচা চামড়ার ন্যায্য দাম নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রাইম ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ইশরাত শবনম, স্থপতি ফৌজিয়া ভূইয়া ও সাংবাদিক সেলিম মালিক। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

বরগুনায় ভেসে এলো বিশাল আকৃতির তিমির মরদেহ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরগুনা
বিশাল আকৃতির তিমির মরদেহ/ছবি: বার্তা২৪.কম

বিশাল আকৃতির তিমির মরদেহ/ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বরগুনার পায়রা নদীর তীরে চরে ভেসে এলো একটি বিশাল তিমির মরদেহ। ধারণা করা হচ্ছে এটি গভীর সমুদ্রের তিমি।

স্থানীয়রা জানান, সোমবার (০১ জুলাই) দুপুরে সদর উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের ছোনবুনিয়ার চরে অর্ধগলিত মাথাবিহীন তিমির মৃতদেহটি দেখতে পান স্থানীয়রা। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ইউনুস মৃধা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয় তিনি জানান, রোববার রাতের জোয়ারের পানিতে মৃত তিমির মরদেহটি ভেসে এসে আটকে যায়। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, বন বিভাগ, প্রাণী সম্পদ ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন।

তিমির মরদেহ/ছবি: বার্তা২৪.কম

ইউনুস মৃধা বলেন, মাছটির যে অংশটুকু ভেসে এসেছে তার আয়তন কমপক্ষে ২০ ফুটের বেশি রয়েছে। এনিয়ে এলাকায় উৎসুক জনতা বৃষ্টি উপেক্ষা করে পায়রা নদীর চড়ে ভিড় জমাচ্ছেন।

স্থানীয় পরিবেশ কর্মী আরিফুর রহমান বলেন, বিশেষ কোনো কারণ ছাড়া সাধারণত তিমি কখনও উপকূলে আসে না। ধারণা করা হচ্ছে, এটি গভীর সমুদ্রের তিমি। মৃত তিমিটি দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে করে আশপাশের এলাকা দূষিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মাছটির হাড় সংরক্ষণ করে গবেষণার কাজে ব্যবহার করতে পারে এবং অবশিষ্ট মৃতদেহ মাটিতে পুঁতে ফেলবে।

বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, বিস্তারিত তথ্যের জন্য ঘটনাস্থলে বাবুগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জসহ পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

বরগুনা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম মিঞা বলেন, পায়রা নদীর ছোনবুনিয়ার চড়ে অর্ধগলিত একটি তিমি মাছের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। কোন কারণে তিমিটি মারা গেছে তা সঠিকভাবে এখনো জানা যায়নি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মৃত তিমিটি পচে দুর্গন্ধ ছড়াতে পারে, তাই গর্ত করে এটিকে দ্রুত মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে।

;

দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশে আরও সৌদি বিনিয়োগের প্রাধান্য



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহানের নেতৃত্বে দু'দেশের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশে আরও সৌদি বিনিয়োগের বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে।

সোমবার (১ জুলাই) সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ সময় বাংলাদেশে বিশেষত: বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে এবং দেশের অফশোর ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সৌদি বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মো. জাবেদ পাটোয়ারী, অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ড. মু. নজরুল ইসলাম, মহাপরিচালক (পশ্চিম এশিয়া) মো. শফিকুর রহমান ও মহাপরিচালক (পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দফতর) মো. আরিফ নাজমুল হাসান এবং সৌদি কর্মকর্তাগণ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে বাংলাদেশ-সৌদি আরব যৌথ ব্যবসায়িক পরিষদকে (জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল-জেবিসি) দু'দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নে তাদের কার্যক্রম আরও গতিশীল করার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। সৌদি আরব থেকে তেল আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্তির বিষয়েও আলোচনা করেন তারা।

সৌদি আরবে ৩০ লাখ বাংলাদেশির কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৌদি আরবের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। সৌদি আরবে বাংলাদেশি জনশক্তি রফতানিতে আরও স্বচ্ছতা আনা এবং স্বার্থান্বেষী মহলের শ্রমিক হয়রানি বন্ধে একটি যৌথ টাস্কফোর্স গঠনের বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সৌদি আরবে ব্যবসারত বাংলাদেশি প্রবাসীদের রেজিস্ট্রেশনের বিশেষ সুযোগ প্রদানের অনুরোধ জানান।

পাশাপাশি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহায়তা চাইলে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সহযোগিতার আশ্বাস দেন। বৈঠকে গাজাতে ইসরায়েলের বর্বরতা নিরসনকল্পে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা।

দেড় ঘণ্টাব্যাপী হৃদ্যতাপূর্ণ বৈঠকে সৌদি যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ বিন সালমানের আসন্ন বাংলাদেশ সফরের বিষয়েও আলোচনা হয়। পাশাপাশি আগামী বছর সৌদি-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তীর যথাযথ উদযাপনে যৌথ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাংলাদেশ-সৌদি আরব যৌথ কমিশনের বৈঠককে মন্ত্রী পর্যায়ে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেন তারা।

বৈঠক শেষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মানে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন তারা।

;

বরেন্দ্রর মেঠোপথে বর্ষার ছোঁয়া, কৃষকের মুখে হাসি



মোঃ আব্দুল হাকিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
বরেন্দ্রর মেঠোপথে বর্ষার ছোঁয়া, ছবি: বার্তা২৪.কম

বরেন্দ্রর মেঠোপথে বর্ষার ছোঁয়া, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আষাঢ় মাসের তৃতীয় সপ্তাহের প্রথম প্রান্তে ছিল ভ্যাপসা গরম ও রোদের দাপট। আষাঢ়ের মাস হলেও অনাবৃষ্টি ও খরার কারণে রাজশাহী অঞ্চলের আউশ ধান চাষ ব্যাহত হচ্ছিল। ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে যাওয়ায় অনেক বীজতলা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। চারা রোপণ করে কৃষকেরা পড়েছিলেন দুশ্চিন্তায়।

তবে আষাঢ়ের তৃতীয় সপ্তাহের শেষে বরেন্দ্র অঞ্চলের মেঠোপথে ঝরেছে মুসলধারে বৃষ্টি। আউশ আবাদে ফিরেছে প্রাণ। অনাবৃষ্টিতে তেঁতে ওঠা প্রকৃতিতেও এসেছে স্বস্তি।

অনেকদিনের খরার পর এই বৃষ্টি যেন কৃষকের দুঃখ ঘুচিয়ে দিয়েছে। জমিতে জমে থাকা ধুলোর আস্তর যেন ধুয়ে মুছে একেবারে পরিষ্কার। নতুন উদ্যমে আবারও শুরু হবে আউশের আবাদ। প্রকৃতির এই বৈপরীত্যই যেন জীবনের চলমানতার চিরন্তন দিক।

এমন বর্ষণই কৃষকেরা অপেক্ষায় ছিলেন দিনের পর দিন। শস্যের চারাগুলো যেন তৃষ্ণার্ত চোখে তাকিয়ে ছিল আকাশের দিকে। সেই অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো। মাঠে মাঠে সোনা ফলানোর স্বপ্ন আবারো জেগে উঠলো।

মেঘের ডাক, বৃষ্টির গান, এই বর্ষা যেন ধান ক্ষেতে নবজীবন এনে দিয়েছে। কৃষকের হৃদয়ে শান্তির পরশ। এক সময়ের শুষ্ক প্রান্তর এখন জলের আদরে সিক্ত। কৃষকের কষ্ট আর দুশ্চিন্তা সব ভেসে গেছে এই বৃষ্টির স্রোতে।

ধান রোপণ করছেন   

রাজশাহীর আকাশে মেঘের আনাগোনা, বর্ষার এই স্বস্তি যেন টেনে নিয়ে আসলো প্রকৃতির হারানো সজীবতা। কৃষকের মুখে এখন শুধুই হাসি, তাদের চোখে নতুন স্বপ্নের আলো। অনাবৃষ্টির সেই দিনগুলো যেন এখন শুধুই অতীতের গল্প।

এভাবেই আষাঢ়ের বর্ষণমুখর প্রান্তর জানান দিল, প্রকৃতির চিরন্তন নিয়মে সব কিছুই আবার ঠিক হয়ে যাবে। কৃষকের হৃদয়ে তাই এখন শুধুই আনন্দের সুর। এই বৃষ্টি তাদের নিয়ে এসেছে নতুন জীবনের বার্তা।

গ্রীষ্মের গনগনে তাপে যখন প্রান্তরের মাটি ফেটে চৌচির, তখন বর্ষার প্রথম কদম ফুলের মতোই প্রত্যাশিত এই বৃষ্টি। শস্যক্ষেতের ক্লান্ত মাটিতে স্বস্তির বারিধারা। কৃষকের মুখে ফুটে ওঠা হাসি যেন প্রকৃতিরই প্রতিফলন। মহামারির পর এক ধরনের মনোবলেই যখন দাঁড় করিয়েছে কৃষক, তখন প্রকৃতির এমন অনুকূলতায় তাদের প্রাণে ফিরে এসেছে নতুন আশা।

কৃষকেরা বলছেন, দুই মাস ধরে ধানচাষ শুরু হলেও পানির অভাবে মাঠ-ঘাট খাঁখাঁ করছিলো। ফলে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী এখন পর্যন্ত অর্ধেক জমিতে আউশের চারা রোপণ করা সম্ভব হয়নি। রোপণ করা আউশ আবাদও রোদে পুড়ে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তবে এই আশীর্বাদের বৃষ্টি ফসলের ক্ষতি থেকে বাঁচিয়েছে।

পবা উপজেলার কৃষক মুখলেশ আলি বলেন, বর্ষা মৌসুম হলেও বৃষ্টি যেন অভিমান করে রয়েছে। আউশ ও আমন ধান চাষের জন্য বৃষ্টিই ভরসা। সেচ ছাড়াই সাধারণত জমি সবুজে ভরে ওঠে। কিন্তু এবার জমিতে চারা রোপণ করতেই সেচ দিতে হচ্ছে, রোপণ করার পরও সেচ দিতে হচ্ছে। এতে ব্যয়ের বোঝা আরও বেড়ে যাচ্ছে। আশেপাশের কিছু জমিতে ধান রোপণ করে অনেকে বিপাকে পড়েছেন। তাই বৃষ্টির জন্য প্রতীক্ষায় ছিলাম। বৃষ্টি হওয়ায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। কাল থেকেই ধান রোপণের কাজ শুরু করবো।

তানোর উপজেলার কৃষক আব্দুল বারি বলেন, বৃষ্টির অপেক্ষায় ছিলাম দীর্ঘদিন। জমিতে পানি না থাকায় আউশ ও আমন ধান চাষে ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল। বৃষ্টির অভাবে চারা রোপণ করতেও বাধ্য হচ্ছিলাম সেচের পানি ব্যবহার করতে, যা বাড়তি খরচের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। চারপাশের জমিতে ধান রোপণ করেও অনেকে বিপাকে পড়েছিলেন। রোববারের বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরে এসেছে, আবার নতুন করে আশার আলো দেখা দিয়েছে।


গোদাগাড়ী উপজেলার কৃষক মোতাল্লেব হোসেন বলেন, এই মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ায় আমাদের দুশ্চিন্তার শেষ ছিল না। আউশ ও আমন ধান চাষে বৃষ্টির পানি ভরসা, কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় জমিতে সেচের পানি দিয়ে চারা রোপণ করতে হচ্ছিল। এতে খরচও বেড়ে যাচ্ছিল। আশেপাশের অনেক কৃষকও এই একই সমস্যায় ভুগছিলেন। 

গত শনিবার থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। শনিবার (২৯ জুন) ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল। রোববার ৩০ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। সোমবার রাজশাহীতে ৩৩মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে রাজশাহী আবহাওয়া অফিস।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম বলেন, এবছর বেশ কয়েকদিন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হলেও রাজশাহীতে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। আষাঢ় মাসে দেখা মিললেও ছিলো না কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির। তবে শেষ পর্যন্ত মৌসুমি বায়ু প্রবেশের কারণে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। দেশের অন্যান্য স্থানের মতো আজ রাজশাহীতেও বৃষ্টি হয়েছে। এখনও বৃষ্টির আভাস আছে, রাতেও বৃষ্টি হতে পারে। আরও কয়েকদিন থাকতে পারে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, চলতি বছর জেলায় ৫০ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু গত দুই মাসে মাত্র ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে আউশের চারা রোপণ করা সম্ভব হয়েছে। এদিকে, আগামী এক মাসের মধ্যে শুরু হবে আমন ধান চাষ। কিন্তু রাজশাহীতে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমন ধানের বীজতলাও প্রস্তুতেও শঙ্কা তৈরি হয়েছিল।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) উম্মে সালমা বলেন, রাজশাহীতে এবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেক কম। ফলে বৃষ্টির অভাবে মাঠ-ঘাট শুকিয়ে চৌচির হয়ে যাওয়ায় ধানচাষ ব্যাহত হচ্ছিলো। তবে রোববারের মুসলধারের বৃষ্টি অন্য ফসল তো বটেই, বিশেষ করে আউশ-আমনের জন্য আশীর্বাদের।

;

বিশ্বনাথে মেয়র মুহিবুরের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
ছবি: সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান

ছবি: সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান

  • Font increase
  • Font Decrease

সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানের সাময়িক বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করে স্ব-পদে বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।

সোমবার (১ জুলাই) হাইকোর্টে মেয়র মুহিবুর রহমান তাঁর বহিস্কারাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন। এসময় শুনানি শেষে তাঁর বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করে তাঁকে স্ব-পদে বহাল রাখেন আদালত।

মুহিবুর রহমানের আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড.শাহদীন মালিক বলেন, মেয়র মুহিবুর রহমানের যে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ ছিল সেটা সম্পূর্ণ অন্যায় ও বেআইনি ছিল। আমি আদালতে দাঁড়িয়ে শুনানি করলে আদালত বুঝেছেন সেই আদেশ বেআইনি ছিলো। তাই মেয়র মুহিবুর রহমানকে স্ব-পদে বহালের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এরআগে গত বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো.আব্দুর রহমান রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে মেয়র মুহিবুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ জারি করেন। আর এই আদেশের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আপিল করে তার বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার ও স্ব-পদে বহালের আদেশ পান।

;