ফটোগ্রাফারের ছদ্মবেশে শিশুদের টার্গেট করতেন টিপু কিবরিয়া



আল-আমিন রাজু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করে ১৯৯১ সালে একটি মাসিক কিশোর পত্রিকায় সহকারী সম্পাদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন টি আই এম ফকরুজ্জামান ওরফে টিপু কিবরিয়া। দক্ষ ফটোগ্রাফার হিসেবে পরিচিতি পাওয়া টিপু কিবরিয়া ৯০ দশকের আলোচিত ওয়েস্টার্ন সিরিজ ও তিন গোয়েন্দা বইয়ের জনকও। তার হাতের তোলা ছবি হয়ে উঠতো জীবন্ত। তবে সব পরিচয় ছাপিয়ে টিপু কিবরিয়া একজন ছদ্মবেশী শিশুদের ‘নগ্ন ছবি’র কারিগর।

শিশু-কিশোরদের জন্য দুর্দান্ত কল্পকাহিনী লেখা টিপু কিবরিয়া শহরজুড়ে ক্যামেরা হাতে ফটোগ্রাফার পরিচয়ে ঘুরে বেড়াতেন। রাজধানীর বিভিন্ন বস্তিতে ঘুরে ঘুরে অসহায় ও ক্ষুধার্ত মানুষের ছবি তুলতেন। ছবি তোলার আড়ালে আসলে নগ্ন ছবির মডেল খুঁজতেন তিনি।

সুবিধামতো কোনো ছেলে শিশুকে পেয়ে গেলেই ক্যামেরা হাতে তার আসল কাজ সেরে ফেলতেন। আরও ভালোভাবে কাউকে পেলে নিয়ে আসতেন খিলগাঁওয়ের স্টুডিওতে। সেখানেও নানান ভঙ্গিতে বিশেষ দৃশ্যের ছবি তুলতেন তিনি। বিনিময়ে শিশুদের এক বেলা খাবার বা অল্প কিছু টাকা দিয়ে দিতেন।

ছবি: টিপু কিবরিয়া। (সংগৃহীত)

চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল রাজধানীর খিলগাঁওয়ে নিজের স্টুডিওতে এক শিশুর নগ্ন ছবি তোলার সময়ে হাতেনাতে সহযোগীসহ আটক হন টিপু কিবরিয়া।

এর আগে ২০১৪ সালের ৯ জুন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) একই অপরাধে তাকে গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু আইনের ফাঁক গলে মুক্তি পেয়ে যান টিপু। এই ঘটনায় দায়ের করা মামলাটিও তদন্ত করছে সিটিটিসি’র স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপ অ্যান্টি-ইলিগ্যাল আর্মস অ্যান্ড ক্যানাইন টিম।

সিটিটিসির অ্যান্টি-ইলিগ্যাল আর্মস সূত্রে জানা গেছে, সিআইডির দায়ের করা মামলায় দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০২২ সালে খালাস পান টিপু কিবরিয়া। কারাগার থেকে বের হয়ে আরও একটি কিশোর উপন্যাস লেখেন। এরপর আবারও ফিরে যান তার পুরনো পেশায়। তার সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন কামরুল ইসলাম।

২০২২ সালে মুক্তি পাওয়ার পার এ বছর গ্রেফতার হওয়ার আগ পর্যন্ত শতাধিক শিশুদের ১০ হাজারের বেশি নগ্ন ছবি তুলেছেন টিপু কিবরিয়া। আর এই সব ছবি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের কাছে বিক্রি করতেন তিনি।

সিআইডির মামলার নথি বলছে, ২০০৫ সাল থেকে সিআইডি ইন্টারপোলের মাধ্যমে তথ্য পাচ্ছিল একটি চক্র পর্নগ্রাফি তৈরি করে দেশের বাইরে বিক্রি করছে। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে জার্মান পুলিশ টিপু কিবরিয়ার কাছ থেকে পর্নগ্রাফি ছবির ক্রেতা হিসেবে মার্ক নামের এক নাগরিককে শনাক্ত করে। মার্ক জার্মানির একজন উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে চাকরিচ্যুতের পাশাপাশি জেল যেতে হয়।

এরই সূত্র ধরে ইন্টারপোলের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যে শনাক্ত করা হয় টিপু কিবরিয়াকে। গ্রেফতার হওয়ার পর দীর্ঘ ৯ বছর কারাগারেই কাটে কিবরিয়ার। তবে বিচারিক প্রক্রিয়ায় তদন্ত ও যথাযথ সাক্ষ্য আদালতে উপস্থাপন করতে না পারায় কারাগার থেকে বেরিয়ে আবারও জড়িয়ে পড়েন একই কাজে।

টিপু কিবরিয়ার মামলার তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির সিটিটিসি’র স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপ অ্যান্টি-ইলিগ্যাল আর্মস অ্যান্ড ক্যানাইন টিমের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মিশুক চাকমা বার্তা২৪.কমকে বলেন, শিশুদের নগ্ন ছবি ও ভিডিওর বিষয়টি অস্ট্রেলিয়া ফেডারেল পুলিশের নজরে এলে তারা বাংলাদেশ পুলিশকে চিঠি দিয়ে জানায়। সেই চিঠির সূত্র ধরে আমরা রাজধানীর খিলগাঁও থেকে টিপু কিবরিয়া ও তার সহযোগী কামরুল ইসলামকে গ্রেফতার করি। তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, তার বাসা ও স্টুডিও থেকে জব্দ হওয়া কম্পিউটারসহ বিভিন্ন ডিভাইস ফরেনসিকের জন্য সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট এখনো আসেনি। এছাড়া তার কম্পিউটার থেকে পাওয়া ভুক্তভোগী শিশুদের ছবির সঙ্গে মিলিয়ে খোঁজার চেষ্টা করছি। সবাই পথশিশু হওয়ায় তাদের শনাক্ত করা কঠিন। তবে আমরা লেগে আছি।

মিশুক চাকমা আরও বলেন, আমাদের অভিযানের সময় এক ভুক্তভোগী শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছিল। তাকে টিপু কিবরিয়া ছবি তোলার জন্য এনেছিল। সেও একজন পথশিশু। তার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী। বাবা-মায়ের সঙ্গে অভিমান করে বাড়ি ছাড়ে সে। শিশুটি উদ্ধার হওয়ার পর তার বাবা-মায়ের হাতে তুলে দিয়েছি আমরা।

অতীতে একই ধরনের অপরাধের মামলায় কারাগারে গেলেও আদালত খাসাস দিয়েছে, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ডিসি মিশুক চাকমা বলেন, সেই সময়ে তদন্তকারীরা অনেক তথ্য-প্রমাণ হাজির করলেও আদালত সন্তুষ্ট হতে পারেননি। মামলায় আসামিকে খালাস দেওয়ার পাশাপাশি বেশকিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছিল। আমরা সেই সব পর্যবেক্ষণ মাথায় রেখে কাজ করছি।

এদিকে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, টিপু কিবরিয়া একজন লেখক পরিচয়ের মানুষ হলেও তার ভেতরে সমকামিতা ও বিকৃত মানসিকতা ছিল। শুরুর দিকে তার তোলা কিছু নগ্ন ছবি ইন্টারনেটে প্রকাশ করেন টিপু কিবরিয়া। সেখান থেকেই জার্মান নাগরিক মার্কসহ অনেকেই তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এভাবে ধীরে ধীরে শিশুদের নগ্ন ছবির ক্রেতা হয়ে ওঠেন বিদেশি বহু নাগরিক। টিপু শুধুমাত্র ছেলে শিশুদের আপত্তিকর ছবি তুলতেন।

দক্ষ ফটোগ্রাফার হওয়ায় তার এই সব ছবি চড়া দামে বিক্রি হতো অনলাইনের অন্ধকারের হাটে। এভাবে প্রতি মাসে বিপুল পরিমাণ টাকা আয় করেছেন টিপু কিবরিয়া।

দুই সন্তানের জনক টিপু কিবরিয়াকে জামিনে মুক্ত করতে তার পরিবার নানাভাবে চেষ্টা করছে। তবে শিশুদের নগ্ন ছবি তোলার বিষয়ে তারা কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ১৮



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ১৮ জনকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ। মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

সোমবার (১ জুলাই) সকাল ছয়টা থেকে মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ছয়টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য উদ্ধারসহ তাদেরকে আটক করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ৭৫ পিস ইয়াবা, ১৯২ গ্রাম হেরোইন, ১০০ বোতল ফেন্সিডিল, ৪০০০ পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট, ১০০ গ্রাম আইস ও ৯৫৩ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জা‌নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ।

ডিএমপির নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে এ অ‌ভিযান প‌রিচালনা করা হয়েছে বলে জানানো হয়। সেই সঙ্গে আটককৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে, ১৪টি মামলা রুজু হয়েছে বলেও জানানো হয়।

;

মুহুরী'র বাঁধ ভাঙন, ফুলগাজী-পরশুরামে এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,ফেনী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পানিতে ফেনীর মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। এতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের চারটি স্থান ভেঙে জেলার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় জেলার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন তিনি। এদিন এইচএসসির বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিষয়ে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল।

জেলা প্রশাসক বলেন, মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিষয়টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ড, মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড ও ভোকেশনালকে চিঠির মাধ্যমে অবগত করি এবং স্থগিত করার বিষয়ে আবেদন করা হয়।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এবার ফুলগাজীতে চারটি ও পরশুরামে দুইটি কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ পরীক্ষা কখন অনুষ্ঠিত হবে তা দ্রুত জানিয়ে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে বন্যার পানি উপেক্ষা করেও কেন্দ্র এসেছিল পরীক্ষার্থীরা। তবে বিভিন্ন কেন্দ্রের সামনের সড়কে পানি জমে থাকায় ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের। কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, পানি উপেক্ষা করে কেন্দ্রে এসেছি। এখন জানতে পারলাম পরীক্ষা হবেনা। এখন বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।


উল্লেখ্য, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের চারটি স্থান ভেঙে জেলার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে ফেনীর ফুলগাজীর মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধে ৩টি জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।

;

মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে, বাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,ফেনী
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পানিতে ফেনীর মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের চারটি স্থান ভেঙে জেলার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর আগে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ফুলগাজী বাজার, ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়ক প্লাবিত হয়।

সোমবার (১ জুলাই) রাত থেকে ফুলগাজী বাজারে পানি বাড়ায় ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিভিন্ন স্থানে ভাঙনের ফলে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে পানি। তবে রাত ৩টার পর থেকে পানি কিছুটা নেমেছে বলে জানান স্থানীয়রা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মধ্যরাতে ফুলগাজী উপজেলার দৌলতপুর এলাকায় মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের তিনটি অংশে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে উত্তর দৌলতপুর ও দক্ষিণ দৌলতপুর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া পরশুরাম উপজেলার দক্ষিণ শালধর এলাকার জহির চেয়ারম্যানের বাড়ি সংলগ্ন বাঁধের একটি অংশে ভাঙনের দেখা দিয়েছে। এতে মালিপাথর, নিলক্ষ্মী এবং পাগলিরকুল এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।


মোহাম্মদ রাজু নামে স্থানীয় একজন বলেন, ফুলগাজী সদরের উত্তর দৌলতপুরে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে আমার বাড়ি ও পুকুরসহ লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও ফুলগাজী সদরের দৌলতপুরে নুরুল করিমের বাড়ির উপর বেড়িবাঁধ ভেঙেছে। তবে রাত ৩টার পর থেকে বন্যার পানি কিছুটা নেমেছে।

ফুলগাজী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেলিম বলেন, উজানের পানিতে মুহুরী নদীর পানি বেড়ে ফুলগাজী বাজারে প্রায় দুই ফুটের বেশি ওঠে গেছে। দৌলতপুর এলাকায় বেড়িবাঁধের তিনটি অংশে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দৌলতপুর থেকে জগতপুর পর্যন্ত বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে।

পরশুরামের চিথলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বলেন, রাতের দিকে দক্ষিণ শালধর এলাকার জহির চেয়ারম্যানের বাড়ি সংলগ্ন মুহুরী নদীর বাঁধে ভাঙনের শুরু হয়। এখন পর্যন্ত মালিপাথর, নিলক্ষ্মী এবং পাগলিরকুল এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গতবছর এ ভাঙন স্থানের পাশে বাঁধের আরেকটি অংশে ভাঙনের দেখা দিয়েছিল।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, রাত ১টা পর্যন্ত মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এখন পর্যন্ত ফুলগাজীর তিনটি ও পরশুরামের একটি স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। বাঁধের বিভিন্ন অংশে ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়লে বাঁধের আরও কয়েকটি অংশে ভাঙনের শঙ্কা রয়েছে।

এ ব্যাপারে ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূঁইয়া বলেন, নদীর পানি বিপদসীমার ১৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিতে ইতিমধ্যে ফুলগাজী বাজার ও লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়নের গইয়াছড়া এলাকায় কহুয়া নদীর পানি প্রবেশ করছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় শুকনো খাবারসহ অন্যান্য সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান তিনি।

;

বিপৎসীমার ওপরে সুরমার পানি, তৃতীয় দফায় বন্যার মুখে সিলেট



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,সিলেট
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে সিলেটে আবারও বাড়ছে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি। ইতিমধ্যেই তিনটি নদীর ৬টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির কারণে নতুন করে তৃতীয় দফা বন্যার মুখে পড়েছে সিলেট অঞ্চল। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ।

দুই দিন ধরে সিলেটে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। সোমবার ও মঙ্গলবার বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুরমা নদীর কানাইঘাট ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে। সিলেট পয়েন্টেও পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।


সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড তথ্যমতে, মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ৯টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। একইভাবে কুশিয়ারা নদীর অমলসীদ পয়েন্টে ৭১ সেন্টিমিটার, একই নদীর শেওলা পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯৩ সেন্টিমিটার, শেরপুর পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার ও সারিগোয়াইন নদীর পানি গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আর সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার ছুঁই ছুঁই করছে। এই পয়েন্টে বিপৎসীমা হচ্ছে ১৮০ সেন্টিমিটার সেখানে বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে বৃষ্টিপাত হয়েছে ২৯৪ মিলিমিটার ও মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

সিলেট জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, সিলেটে দ্বিতীয় দফায় বন্যায় ১ হাজার ৮১টি গ্রামের ৭ লাখ ৩৩৬ জন মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। ১৯৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করছেন ৯ হাজার৫৬৮ জন লোক।

এর আগে গত ২৯মে সিলেটের নিম্নাঞ্চলে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। এরপর জুন মাসের মাঝামাঝিতে সিলেটে ফের বন্যা হয়। প্রথম দফায় জেলার সাড়ে ৭ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছিলেন ও দ্বিতীয় দফায় ১০ লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হন। দ্বিতীয় দফার বন্যার পানি কমতে না কমতে তৃতীয় দফায় ফের বন্যার আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় অনেকটা ভয়-আতঙ্কে আছেন সিলেট অঞ্চলের মানুষ। 

এদিকে, সিলেটের সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, গোয়াইনঘাট,কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুর উপজেলার নিচু এলাকাগুলো পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। অনেক এলাকায় দ্বিতীয় দফার পানি নামার আগেই নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।

;