চট্টগ্রামে পানি মাড়িয়ে কেন্দ্রে গেলেন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা ২৪। রাস্তায় পানি মাড়িয়ে এক মা তার মেয়েকে কেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন।

ছবি: বার্তা ২৪। রাস্তায় পানি মাড়িয়ে এক মা তার মেয়েকে কেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন।

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীতে টানা বৃষ্টির ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার্থীরা। বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতাকে উপেক্ষা করে নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে তাদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে। অনেকে হাঁটু পানি মাড়িয়ে আধাভেজা হয়ে পৌঁছেন কেন্দ্রে।

চট্টগ্রামে বেশ কদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। তবে রোববার (৩০ জুন) ভোর থেকে শুরু হয় হালকা থেকে মাঝারি টানা বৃষ্টি। সকাল ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস।

বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে যথাসময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানো নিয়েও শঙ্কায় পড়েন পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা। এমনকি বৃষ্টির ভোগান্তি মাথায় গাড়ি না পেয়ে কেউ কেউ হেটে আবার কাউকে তিনগুণ অতিরিক্ত গাড়ি ভাড়া দিয়ে কেন্দ্রে যেতে হয়। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার আধাঘণ্টা পরেও নগরের কয়েকটি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা পৌঁছেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে অবশ্যই পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর নির্দেশনা দেওয়া ছিল শিক্ষা বোর্ডের। কিন্তু মৌসুমি ভারী বৃষ্টির কারণে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে পরীক্ষার্থীদের দেরি হয়। বৃষ্টিতে কোথাও জলজট কোথাও যানজট আবার কোথাও বা গাড়ি না পেয়ে মহাদুর্ভোগে পড়েছেন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা।

পরীক্ষার দিন টানা বৃষ্টিতে দুর্ভোগে পেড়িয়ে কেন্দ্রে এসেছেন শিক্ষার্থীরা। 

নগরের বাকলিয়া এলাকার বাসিন্দা লুৎফুর রহমান তার মেয়ে আদিবাকে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে এসেছেন পরীক্ষা শুরু হওয়ার শেষ মুহূর্তে।

জানতে চাইলে লুৎফুর রহমান বলেন, 'ভোর থেকে যে বৃষ্টি শুরু হলো থামার নাম নাই। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বের হয়ে গাড়ি পাচ্ছি না। প্রায় আধাঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে ভেজার পর বহুকষ্টে একটা সিএনজিতে করে রওনা হই। এজন্য কেন্দ্রে আসতে দেরি হয়েছে। এখানে এসে দেখছি আমার মেয়ের মত আরও অনেকেরই লেট হচ্ছে। বৃষ্টি আর যানজটের কারণেই আসলে এমনটা হয়েছে।'

এছাড়া বৃষ্টিতে নগরের নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি পড়েন পরীক্ষার্থীরা।

আন্দরকিল্লা এলাকায় এলাকায় মেয়েকে নিয়ে কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য গাড়ির অপেক্ষা দাঁড়িয়ে আছেন মো. জহির উদ্দিন নামে এক অভিভাবক। তিনি বলেন, 'সকালে ঘুম থেকে উঠার পর বৃষ্টি দেখে ভয় পাচ্ছিলাম বাচ্চাকে কিভাবে পরীক্ষা কেন্দ্র দিয়ে আসব! বৃষ্টি না থাকলে বাচ্চা নিজে যেতে পারত। এখন যে বৃষ্টি আর রাস্তাঘাটের কথা আর নাই বলি। এই বৃষ্টিতে ঠিকঠাক মতো গাড়িও পাওয়া যায় না। তার উপর দ্বিগুণ তিন গুন ভাড়া চায়। এখন যেহেতু বিপদে পড়ছি বাধ্য হয়ে যেতে হবে।'

এদিক আগ্রাবাদ থেকে ছেলে চট্টগ্রাম কলেজ কেন্দ্রে নিয়ে আসা অভিভাবক হোসনে আরা বলেন, 'অনেক কষ্ট করে বাচ্চাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাই দিলাম। আসার সময় দেখছিলাম অনেকে পরীক্ষার্থী গাড়ির অপেক্ষায় আছে। কি যে হবে তাদের!'

সবকেন্দ্রে যথাসময়ে পরীক্ষা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী সকল কেন্দ্রে যথাসময়ে পরীক্ষা শুরু হয়েছে।'

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে রোববার (৩০ জুন) সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষা। বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্রের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে ১১ আগস্ট।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এবার ২৩৮টি কলেজের এক লাখ ৬ হাজার ৩৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। মহানগরসহ জেলার মোট পরীক্ষার্থী সংখ্যা ৭৬ হাজার ১৭৯ জন, যার মধ্যে ৩৪ হাজার ৯৭৯ জন ছাত্র আর ৪১ হাজার ২০০ জন ছাত্রী।

শুধু মহানগরে পরীক্ষার্থী ৩৭ হাজার ৪৯২ জন, যার মধ্যে ছাত্র ১৮ হাজার ১৩৬ জন এবং ছাত্রী ১৯ হাজার ৩৫৬ জন।
এছাড়া কক্সবাজার জেলায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩ হাজার ৪৬৩ জন, যার মধ্যে ছাত্র পাঁচ হাজার ৫৭৪ এবং ছাত্রী সাত হাজার ৮৮৯ জন।

রাঙামাটিতে পাঁচ হাজার ৬৬৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র দুই হাজার ৬৬২ জন এবং ছাত্রী তিন হাজার একজন। খাগড়াছড়িতে ছয় হাজার ৭২৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র তিন হাজার ১৬২ ও ছাত্রী তিন হাজার ৫৬৫ জন।
বান্দরবান জেলায় চার হাজার দুইজন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র এক হাজার ৯৫৫ জন এবং ছাত্রী দুই হাজার ৪৭ জন।

মোট পরীক্ষাকেন্দ্র ১১৫টি। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ৬৯টি, কক্সবাজারে ১৮টি, রাঙামাটিতে ১০টি, খাগড়াছড়িতে ১০টি ও বান্দরবানে ৮টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হচ্ছে।

পরীক্ষা শুরু আগে শিক্ষা বোর্ড সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথ জানিয়েছেন, 'এখনও পর্যন্ত কোনও কেন্দ্র থেকে অভিযোগ পাইনি। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কোনও পরীক্ষার্থী ৫ মিনিট দেরিতে পরীক্ষা কেন্দ্রে এলে, তাকে আরও ৫ মিনিট বেশি সময় দেওয়া হবে।'

এদিকে আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, শনিবার রাত ১২টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত নগরে ৫৮ দশমিক ৬ মিলিমিটার এবং রোববার (৩০ জুন) সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আলী আকবর খান বলেন, 'বাংলাদেশের উপর মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে গত তিনদিন ধরে টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। আস্তে আস্তে বৃষ্টিপাত কমতে থাকবে। তবে যেহেতু এখনো তিন নম্বর সিগন্যাল আছে তাই ভারী বৃষ্টি হলেই এ সময় কোথাও কোথাও পাহাড় ধসেরও ঝুঁকি রয়েছে।'

রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ১৮



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ১৮ জনকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ। মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

সোমবার (১ জুলাই) সকাল ছয়টা থেকে মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ছয়টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য উদ্ধারসহ তাদেরকে আটক করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ৭৫ পিস ইয়াবা, ১৯২ গ্রাম হেরোইন, ১০০ বোতল ফেন্সিডিল, ৪০০০ পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট, ১০০ গ্রাম আইস ও ৯৫৩ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জা‌নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ।

ডিএমপির নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে এ অ‌ভিযান প‌রিচালনা করা হয়েছে বলে জানানো হয়। সেই সঙ্গে আটককৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে, ১৪টি মামলা রুজু হয়েছে বলেও জানানো হয়।

;

মুহুরী'র বাঁধ ভাঙন, ফুলগাজী-পরশুরামে এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,ফেনী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পানিতে ফেনীর মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। এতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের চারটি স্থান ভেঙে জেলার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় জেলার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন তিনি। এদিন এইচএসসির বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিষয়ে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল।

জেলা প্রশাসক বলেন, মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিষয়টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ড, মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড ও ভোকেশনালকে চিঠির মাধ্যমে অবগত করি এবং স্থগিত করার বিষয়ে আবেদন করা হয়।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এবার ফুলগাজীতে চারটি ও পরশুরামে দুইটি কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ পরীক্ষা কখন অনুষ্ঠিত হবে তা দ্রুত জানিয়ে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে বন্যার পানি উপেক্ষা করেও কেন্দ্র এসেছিল পরীক্ষার্থীরা। তবে বিভিন্ন কেন্দ্রের সামনের সড়কে পানি জমে থাকায় ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের। কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, পানি উপেক্ষা করে কেন্দ্রে এসেছি। এখন জানতে পারলাম পরীক্ষা হবেনা। এখন বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।


উল্লেখ্য, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের চারটি স্থান ভেঙে জেলার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে ফেনীর ফুলগাজীর মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধে ৩টি জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।

;

মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে, বাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,ফেনী
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পানিতে ফেনীর মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের চারটি স্থান ভেঙে জেলার ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর আগে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ফুলগাজী বাজার, ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়ক প্লাবিত হয়।

সোমবার (১ জুলাই) রাত থেকে ফুলগাজী বাজারে পানি বাড়ায় ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিভিন্ন স্থানে ভাঙনের ফলে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে পানি। তবে রাত ৩টার পর থেকে পানি কিছুটা নেমেছে বলে জানান স্থানীয়রা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মধ্যরাতে ফুলগাজী উপজেলার দৌলতপুর এলাকায় মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের তিনটি অংশে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে উত্তর দৌলতপুর ও দক্ষিণ দৌলতপুর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া পরশুরাম উপজেলার দক্ষিণ শালধর এলাকার জহির চেয়ারম্যানের বাড়ি সংলগ্ন বাঁধের একটি অংশে ভাঙনের দেখা দিয়েছে। এতে মালিপাথর, নিলক্ষ্মী এবং পাগলিরকুল এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।


মোহাম্মদ রাজু নামে স্থানীয় একজন বলেন, ফুলগাজী সদরের উত্তর দৌলতপুরে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে আমার বাড়ি ও পুকুরসহ লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও ফুলগাজী সদরের দৌলতপুরে নুরুল করিমের বাড়ির উপর বেড়িবাঁধ ভেঙেছে। তবে রাত ৩টার পর থেকে বন্যার পানি কিছুটা নেমেছে।

ফুলগাজী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেলিম বলেন, উজানের পানিতে মুহুরী নদীর পানি বেড়ে ফুলগাজী বাজারে প্রায় দুই ফুটের বেশি ওঠে গেছে। দৌলতপুর এলাকায় বেড়িবাঁধের তিনটি অংশে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দৌলতপুর থেকে জগতপুর পর্যন্ত বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে।

পরশুরামের চিথলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বলেন, রাতের দিকে দক্ষিণ শালধর এলাকার জহির চেয়ারম্যানের বাড়ি সংলগ্ন মুহুরী নদীর বাঁধে ভাঙনের শুরু হয়। এখন পর্যন্ত মালিপাথর, নিলক্ষ্মী এবং পাগলিরকুল এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গতবছর এ ভাঙন স্থানের পাশে বাঁধের আরেকটি অংশে ভাঙনের দেখা দিয়েছিল।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, রাত ১টা পর্যন্ত মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এখন পর্যন্ত ফুলগাজীর তিনটি ও পরশুরামের একটি স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। বাঁধের বিভিন্ন অংশে ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়লে বাঁধের আরও কয়েকটি অংশে ভাঙনের শঙ্কা রয়েছে।

এ ব্যাপারে ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূঁইয়া বলেন, নদীর পানি বিপদসীমার ১৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিতে ইতিমধ্যে ফুলগাজী বাজার ও লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়নের গইয়াছড়া এলাকায় কহুয়া নদীর পানি প্রবেশ করছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় শুকনো খাবারসহ অন্যান্য সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান তিনি।

;

বিপৎসীমার ওপরে সুরমার পানি, তৃতীয় দফায় বন্যার মুখে সিলেট



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,সিলেট
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে সিলেটে আবারও বাড়ছে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি। ইতিমধ্যেই তিনটি নদীর ৬টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির কারণে নতুন করে তৃতীয় দফা বন্যার মুখে পড়েছে সিলেট অঞ্চল। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ।

দুই দিন ধরে সিলেটে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। সোমবার ও মঙ্গলবার বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুরমা নদীর কানাইঘাট ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে। সিলেট পয়েন্টেও পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।


সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড তথ্যমতে, মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ৯টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। একইভাবে কুশিয়ারা নদীর অমলসীদ পয়েন্টে ৭১ সেন্টিমিটার, একই নদীর শেওলা পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯৩ সেন্টিমিটার, শেরপুর পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার ও সারিগোয়াইন নদীর পানি গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আর সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার ছুঁই ছুঁই করছে। এই পয়েন্টে বিপৎসীমা হচ্ছে ১৮০ সেন্টিমিটার সেখানে বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে বৃষ্টিপাত হয়েছে ২৯৪ মিলিমিটার ও মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

সিলেট জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, সিলেটে দ্বিতীয় দফায় বন্যায় ১ হাজার ৮১টি গ্রামের ৭ লাখ ৩৩৬ জন মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। ১৯৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করছেন ৯ হাজার৫৬৮ জন লোক।

এর আগে গত ২৯মে সিলেটের নিম্নাঞ্চলে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। এরপর জুন মাসের মাঝামাঝিতে সিলেটে ফের বন্যা হয়। প্রথম দফায় জেলার সাড়ে ৭ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছিলেন ও দ্বিতীয় দফায় ১০ লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হন। দ্বিতীয় দফার বন্যার পানি কমতে না কমতে তৃতীয় দফায় ফের বন্যার আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় অনেকটা ভয়-আতঙ্কে আছেন সিলেট অঞ্চলের মানুষ। 

এদিকে, সিলেটের সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, গোয়াইনঘাট,কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুর উপজেলার নিচু এলাকাগুলো পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। অনেক এলাকায় দ্বিতীয় দফার পানি নামার আগেই নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।

;