পদ্মার পানিতে বাড়ছে ভাঙন, নেই স্থায়ী পদক্ষেপ

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পদ্মার পানিতে বাড়ছে ভাঙন

পদ্মার পানিতে বাড়ছে ভাঙন

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের ওপর দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা নদীর পানি প্রতিদিনই বাড়ছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন জায়গাতে দেখা দিয়েছে ভাঙন। প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনের কবলে পড়েন পদ্মা পাড়ের হাজারো মানুষ। তবে ভাঙনরোধে নেই তেমন কোনো স্থায়ী পদক্ষেপ।

নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় স্রোত ও ঢেউয়ের তীব্রতা বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে দৌলতদিয়া ফেরি ও লঞ্চঘাট এলাকায় ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে ৬ ও ৭ নং ফেরিঘাটের অনেকটা এলাকা পদ্মা নদীতে বিলীন হয়েছে। নদীতে চলে গেছে কয়েকটি বসতবাড়ী ও দোকানপাট।

বিজ্ঞাপন

বিআইডব্লিউটিএ প্রাথমিকভাবে কিছু বালুর বস্তা ফেললেও তা একেবারেই অপ্রতুল। এমতাবস্থায় শতশত বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও দোকানপাট, স্কুল ও ফেরিঘাটমুখী ঘর ভেঙে অনত্র সরিয়ে নিচ্ছে। ভাঙন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

৬ নম্বর ঘাট দিয়ে স্থানীয় একটি স্কুলে প্রতিদিন যাতায়াত করে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া। সে জানায়, এখান দিয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় অনেক ভয় লাগে তার। কারণ সে যে রাস্তাটি ব্যবহার করে সেটি নদীর পাড় দিয়ে। আর নদীর পারে দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল। ফাটলে বড় চাপ নিয়ে নদীতে পড়ে যায় মাটি।

স্থানীয় বাসিন্দা হাবিব শেখ বলেন, আর কত বলবো নদী শাসনের কথা, আমাগেরে মতো গরিব মানুষের কথা কিডা শুনে, সব যার যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত। সরকার আমাগেরে দিকে তাকাইলো না। আমরা কিছু চাইনা, শুধু নদী শাসন চাই। আমাগেরে চাল, ডাল কিছুই লাগবো না।


দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আঃ রহমান মন্ডল বলেন, আমরা ছোট সময় থেকে দেখে আসছি দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের তিন ভাগের একভাগ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গোয়ালন্দের মানচিত্র থেকে দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের ৮টি মৌজা এখন নেই। আমরা বার বার সংশিষ্ট কতৃপক্ষকে বললেও কোন কাজ হয়নি। প্রতিদিন অসহায় মানুষের কান্না কাটি, আহাজারি, ঘর সরানো এগুলো দেখতে আর ভালো লাগেনা।

তিনি আরো বলেন, এতো বলার পরও নদী শাসন হলোনা। এ অসহায় মানুষের দায়ভার কে নেবে? আমি জনগণের পক্ষ থেকে আবারও বলছি নদী শাসনের যে ব্যবস্থা সেটা যেন অতিসত্বর করা হয়, তাহলে দৌলতদিয়া ঘাট বেঁচে যাবে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, দৌলতদিয়ায় সাতটির মধ্যে ৩, ৪, ৬ ও ৭ নম্বর ঘাট সচল রয়েছে। বাকি ১, ২ ও ৫ নম্বর ঘাট কয়েক বছর ধরে ভাঙনের কারণে বন্ধ রয়েছে। এবার যে ভাঙন শুরু হয়েছে, এতে সব কটি ফেরিঘাট ভাঙনঝুঁকিতে আছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র জানান, পদ্মায় পানি বাড়ার কারনেই ভাঙন দেখা দিয়েছি। তিনি বিষয়পি উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকে জানিয়েছেন। আপাতত ভাঙন ঠেকাতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলতে হবে। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে অনেক এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন এই কর্মকর্তা।