পর্যটকশূন্য কক্সবাজার, ২০ হাজার শ্রমিকের কাজ হারানোর শঙ্কা

  • আবদু রশিদ মানিক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি- বার্তা২৪.কম

ছবি- বার্তা২৪.কম

সুনসান নিরবতা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতজুড়ে। গেলো এক সপ্তাহের বেশি সময় সহিংসতা ও চলমান কারফিউয়ের কারণে পর্যটকশূন্য বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘতম এ সমুদ্র সৈকত। পর্যটক না থাকায় আবাসিক হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোতে তালা ঝুলছে। এমন পরিস্থিতিতে হতাশ হয়ে পড়েছেন কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার ও শনিবারে অন্যান্য সময় যেখানে সৈকতেজুড়ে হাজারো পর্যটকে মুখরিত থাকে সেখানে এখন পর্যটকশূন্য। সরেজমিনে শহরের কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবণী পয়েন্টে ঘুরে দেখা গেছে, সৈকতে পর্যটক নেই। যারা আছেন তাদের বেশিরভাগই স্থানীয় দর্শনার্থী। একই অবস্থা মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন পর্যটন স্পটসহ সব জায়গায়।

বিজ্ঞাপন

ব্যবসায়ীরা বলছেন, কক্সবাজারে সাড়ে ৪০০ হোটেলে ও গেস্ট হাউসে ৭দিনে ১০০ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। পাশাপাশি রেস্তোরাঁসহ অন্যান্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্ষতি হয়েছে আরও অন্তত ৫০ কোটি টাকা।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বার্তা২৪.কমকে জানান, কোটা আন্দোলন নিয়ে গেলো এক সপ্তাহে কক্সবাজারের পর্যটনখাত স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রায় ১০ হাজার মতো পর্যটক কক্সবাজারে আটকে ছিলো তাদেরও জেলা প্রশাসন এবং আমরাদের সহযোগিতায় বিমানে এবং সেনাবাহিনীর টহলে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এই এক সপ্তাহে প্রায় শত কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে পর্যটন শিল্প মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে যাবে। আমরা চাই এখান থেকে উত্তরণের মাধ্যমে জনজীবন স্বাভাবিক করতে ও পর্যটন শিল্পকে রক্ষা করার জন্য সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করুক।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে কারেন্ট বিল, জেনারেটর, মেইনটেইন্যান্স খরচ, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতে হচ্ছে। অনেকেই লোন নিয়ে প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছে। তারাও অনেক ভয়ে আছে।

পর্যটন ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বলেন, সবসময় হরতাল, অবরোধ, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ সব মিলিয়ে আমরা পর্যটন ব্যবসায়ীরাই বিপদে থাকি। আমাদের চলমান পরিস্থিতিতে কোটি কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। এ পরিস্থিতি কখন স্বাভাবিক হবে! কিভাবে পোষাবো এই ক্ষতি তাও অনিশ্চিত। নানাবিধ ক্ষতির পাশাপাশি পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক বেকার হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এভাবেই চলতে থাকলে অনেক হোটেল শ্রমিক তাদের চাকরি থেকে ছাঁটাই হতে পারে।

রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম ডালিম জানান, সমিতিভুক্ত ১২০টি রেস্তোরাঁর মধ্যে ১০০টির মতো বন্ধ হয়ে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে লোকসান কমাতে শ্রমিক ছাঁটাই করতে বাধ্য হবে মালিকপক্ষ।

এদিকে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, কক্সবাজার এই মুহূর্তে তেমন পর্যটক নেই। যারা কক্সবাজার ভ্রমণে এসে আটকা পড়েছিল তাদের মঙ্গলবার সেনাবাহিনীর পাহারায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।