বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের সব পোষাক কারখানা বন্ধ রাখতে বললো বিজিএমইএ।
রোববার (৪ আগস্ট) তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ পক্ষ থেকে স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় শ্রমিক কর্মচারী ভাইবোনদের সার্বিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সারা দেশের সব পোশাক শিল্প কারখানা বন্ধ রাখার জন্য মালিকদের প্রতি অনুরোধ করা হলো।
এরআগে, বিকেলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দেয়া নির্দেশনায় সোম থকে বুধবার (৫-৭ আগস্ট) পর্যন্ত সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের জন্য তিন দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া সহিংসতা এড়াতে রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ বলবতের তথ্য জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে দেয়া নির্দেশনায় বলা হয়, রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ঢাকা মহানগরসহ সব বিভাগীয় সদর, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, শিল্পাঞ্চল, জেলা সদর ও উপজেলা সদরে সান্ধ্য আইন বলবৎ করা হয়েছে।
সিলেটের বিশ্বনাথের দৌলতপুর ইউনিয়নের গোয়াহরী গ্রামের বড় বিলে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী পলো বাওয়া উৎসব। প্রতিবছরের মাঘ মাসের প্রথম তারিখে ‘পলো বাওয়া উৎসব’ পালন করা হয়।
তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল থেকে গ্রামের কয়েক শতাধিক মানুষ দক্ষিণে বড় বিলে পলো আর ঠেলা জালসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ ধরার যন্ত্র নিয়ে বিলের পাড়ে সমবেত হন মাছ শিকারিরা। পলো বাওয়া উৎসবে অংশ নিতে দূর দেশ থেকে ছুটে এসেছেন গোয়াহরী গ্রামের প্রায় অর্ধশত প্রবাসী।
ঘড়ির কাঁটায় সকাল ১১ টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে মাছ শিকারিরা ঝাঁপিয়ে পড়েন বিলের পানিতে। ঝপ-ঝপা-ঝপ শব্দের তালে তালে প্রায় ২ ঘণ্টা চলে বার্ষিক পলো বাওয়া উৎসব। এসময় রুই, কাতলা, বোয়াল, কার্প, গজার, শোল ও গ্রাস কার্পসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরে হাসি মুখে বাড়ি ফেরেন শিকারিরা। পলো বাওয়া উপভোগ করতে এলাকার শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ নারী-পুরুষ সমবেত হয়েছিলেন। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বিল থেকে বেশি মাছ শিকার করা হয়েছে।
বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও স্থানীয় গোয়াহরী গ্রামের বাসিন্দা গোলাম হোসেন বলেন, গ্রামবাসীর মধ্যে একতা থাকার কারণে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে যুগ যুগ ধরে পূর্ব-পুরুষদের রেখে যাওয়া চিরায়ত বাংলার ঐহিত্য বার্ষিক পলো বাওয়া উৎসব পালন করে যাচ্ছি। পলো বাওয়া উৎসব আমাদের গ্রামবাসীর এক পুনর্মিলনী উৎসবে রূপ নেয়। পলো বাওয়া উৎসবে যেমন দেশে আসেন অনেক প্রবাসী, তেমনি স্বামী-সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন বিয়ে হয়ে যাওয়া গ্রামের অনেক মেয়েরাও।
স্পেন প্রবাসী মনোয়ার হোসেন বলেন, ছোট বেলা থেকেই বাবা-চাচাদের সঙ্গে পলো বাওয়া উৎসব দেখতে আসতাম। এরপর থেকে নিজেও অংশ নিতাম। এখনও সেই টানে বিদেশ থেকে পলো বাওয়া উৎসবে যোগ দিতে সুযোগ পেলেই দেশে আসি।
যুক্তরাজ্য প্রবাসী তাজ উল্লাহ বলেন, পলো বাওয়া উৎসবটি গ্রামবাসীর এক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের মতো। এতে অংশগ্রহণ করার জন্য প্রতি বছর অনেক প্রবাসীই দেশে আসেন। অন্যত্র বিয়ে হয়ে যাওয়া গ্রামের মেয়েরাও স্বামী-সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে আসেন। দিনে শিকার করা মাছ, রাতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে এক সঙ্গে খাওয়ার আনন্দই অন্য রকম এক আমেজ সৃষ্টি করে।
আয়োজক কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন বলেন, পলো বাওয়া উৎসব আমাদের গ্রামের একটি ঐতিহ্য। আমার কাছে পলো বাওয়া উৎসব খুব মজার। শত ব্যস্ততার মধ্যেও এই উৎসবে আসি। গ্রামবাসী যুগ যুগ ধরে এ উৎসব পালন করছেন।
বান্দরবানের লামায় অস্ত্রের মুখে সাত শ্রমিককে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপহৃত শ্রমিকদের মুক্তিপণ বাবদ তাদের পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেছে অপহরণকারীরা। এই ঘটনায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর একটি টিম উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ভোররাতে উপজেলার সরই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের দুর্গম বমুখাল নামক এলাকা থেকে তাদের অপহরণ করা হয়।
অপহৃত শ্রমিকরা হলেন মো. আমিন (৩৫), মো. আলেক্স জোহার (৩৫), মো. শফি আলম (৩২), মো. সাকিব (১৪), খামার মালিকের ছেলে মো. জাভেদ (২৬), আসাদ (১৮) এবং মো. আবু হানিফ (২১)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সরই ইউনিয়নের গজালিয়া আর্মি ক্যাম্প থেকে ২৩ কিলোমিটার দূরে বমুখালের তিনটি তামাকের খামার বাড়ি থেকে সাত তামাক শ্রমিককে অপহরণ করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরবর্তীতে সন্ত্রাসীরা ফোন করে অপহৃতদের পরিবারের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে।
সরই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিস কোম্পানি বলেন, ক্ষেত-খামারে কাজ করতে যাওয়া সাত শ্রমিককে অপহরণ করে নিয়ে গেছে অস্ত্রধারীরা। এলাকাটি দুর্গম ও নেটওয়ার্ক বিহীন হওয়ায় বিস্তারিত তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।
অপহরণের সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহদাৎ হোসেন বলেন, লামার সরই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড থেকে বুধবার গভীর রাতে সন্ত্রাসীরা সাত জনকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সমন্বয়ে তাদের উদ্ধারে যৌথবাহিনীর অভিযান চলছে।
ফেনী রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত এক নারীর (৫০) মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালের দিকে ফেনী রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
রেলওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কক্সবাজারগামী পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ১০টার দিকে ফেনী স্টেশনের দুই নম্বর প্ল্যাটফর্ম অতিক্রম করার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে রেলওয়ে স্টেশন পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে ফেনী রেলওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক ইকবাল হোসেন বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। অজ্ঞাত নারীর পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আগামী ২০ জানুয়ারি মার্কিন মসনদে বসছে দেশটির পরিবর্তিত নতুন সরকার। এই পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
আগামী ২০ জানুয়ারি চীন সফরে যাচ্ছেন তিনি। এ নিয়ে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
মার্কিন নতুন প্রশাসনের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হচ্ছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বা এ রকম বড় দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সম্পর্ক সেটা কিন্তু সরকার স্পেসিফিক হবে না। নতুন সরকার এলে তাদের কিছু বক্তব্য থাকতে পারে, সেটা আমরা দেখব। স্পেকুলেশন করার কিছু নাই। আমি কবে গেলাম চীনে সেটা কোনো বিষয় না। আমি মনে করি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকার পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কে হোঁচট খাবে না। আমরা মনে করি, এটা স্মুথলি চলবে।
সম্পর্ক একটা বহমান ধারা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ভারত, চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তিনটি দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ। আমরা অবশ্যই একটা ভারসাম্য সম্পর্ক রক্ষা করব। আমরা কাউকে অসন্তুষ্ট করতে চাই না। কিন্তু আমাদের নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় তাদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখব।
প্রসঙ্গত, আগামী ২০ জানুয়ারি প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে চীন যাবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। সফরে শেষে আগামী ২৪ জানুয়ারি দেশে ফিরবেন তিনি।