দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব দুর্গাপূজায় নিরাপত্তার কোনো কমতি নেই মণ্ডপগুলোতে। প্রতিটি মণ্ডপে পুলিশ সদস্যদের ২৪ ঘণ্টা অবস্থান, সেনাবাহিনী ও র্যাবের টহল চোখে পড়ার মত। পূজা কমিটির দাবি, বাংলাদেশ হিন্দ-মুসলিম সম্প্রদায়ের সম্প্রতির দেশ। এখানে কোন নিরাপত্তার হুমকি নেই।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর আফতাবনগর শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও হাতিরঝিল শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর মন্দিরে ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
আফতাব নগর শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, মন্দিরের বাইরে প্রবেশ গেটে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। ভিতরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ল পুলিশ ও আনসার সদস্যদের অস্থায়ী ক্যাম্প। মন্দিরের ভিতর ও বাইরে সড়কজুড়ে রয়েছে পূজা কমিটির ৪৮ জন স্বেচ্ছাসেবী।
শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ অফিসার বাড্ডা থানার এএসআই মো বাচ্চু মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, গতকাল থেকে হিন্দু ধর্মের শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে। আমাদের ২৪ ঘণ্টায় তিনধাপে আটজন করে সদস্য দায়িত্ব পালন করছে। সেইসঙ্গে আনসার সদস্যরা রয়েছে। তাছাড়া বাইরে পুরো এলাকায় পুলিশের পেট্রোল টিম টহল দিচ্ছে।
দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে অভিযোগ নেই পূজা দেখতে আসা দর্শনার্থীদের। সবাই নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও মন্দিরগুলোতে সব ধর্মের সরব উপস্থিতিতে খুশি।
পরিবারের ছয় সদস্য নিয়ে সপ্তমী পূজা দেখতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী অমিত মন্ডল। বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, দেশের পরিবর্তিত অবস্থার পর পূজা নিয়ে কিছুটা আতঙ্কিত ছিলাম। কিন্তু এখন মণ্ডপে এসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখে কোন আতঙ্ক কাজ করছে না। অনেক মুসলিম ভাইয়েরাও পূজা দেখতে এসেছেন।
একই রকম অভিজ্ঞাতা জানালেন হাতিরঝিল শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর মন্দিরে পূজা দেখতে আসা ব্যবসায়ী গৌতম দেবনাথ। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, পূজা মণ্ডপের ভিতর বাইরে অনেক নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য কাজ করছেন। এবারের পূজার পরিবেশ অন্য যেকোনো বারের চেয়ে অনেক বেশি ভালো। সবাই শৃঙ্খলার সঙ্গে পূজা দিচ্ছে।
পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তা ও সামগ্রিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন আফতাবনগর শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের পূজা কমিটির সভাপতি বীরেন্দ্র চন্দ্র সরকার। নিরাপত্তা নিয়ে কোনো শঙ্কা আছে কিনা জানতে চাইলে বার্তা২৪.কমকে বলেন, বাংলাদেশ হচ্ছে হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই। এখানে নিরাপত্তার হুমকি আসবে কেন?
পূজার শৃঙ্খলা নিয়ে বীরেন্দ্র চন্দ্র সরকার বলেন, পূজা মণ্ডপের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমাদের ৪৮ জন স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছে। সেইসঙ্গে মণ্ডপের ভিতর বাইরে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে। একই সঙ্গে গতকাল থেকে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন।
তিনি আরও বলেন, এবারের পূজা অন্যবারের চেয়ে অনেক বেশি শৃঙ্খলার সঙ্গে পালন করা হচ্ছে।