শস্যভান্ডার খ্যাত উত্তরের জেলা নওগাঁয় সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা। তবে সরু বা চিকন চালের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। পাইকারিতে মোটা চালের দাম বাড়ায় প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। চালের দাম বাড়ায় চালকল মালিকদের সিন্ডিকেটকে দুষছেন ভোক্তারা।
নওগাঁ পৌর খুচরা চাল বাজার সূত্রে জানা যায়- স্বর্ণা-৫ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮-৬০ টাকা। মোটা চালের দাম বাড়লেও স্থিতিশীল সরু চালের বাজার। সরু চাল কাটারিভোগ ৬৫-৬৮ টাকা, জিরাশাইল ৬৪-৬৫ টাকা, ব্রি ২৮ ও ২৯ চাল ৫৬-৬০ টাকা এবং সুবর্ণলতা ৫৫-৫৮ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে আউশ মৌসুমের নতুন চাল পারিজা বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৫৭ টাকা কেজি।
দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অন্তত ১২টি জেলায় ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় খাদ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ওইসব জেলাগুলোতে এখন মানুষকে ত্রাণ হিসেবে চাল দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। এতে চাহিদা বেড়েছে মোটা চালের। স্বর্ণা-৫ মোটা চাল হিসেবে পরিচিত। এ জাতের ধান আমন মৌসুমে আবাদ করেন কৃষকরা। গত আমন মৌসুমে এ ধান উৎপাদন হয়। তবে বছরে শেষ সময় হওয়ায় বাজারের সবররাহ কমেছে। অপরদিকে বন্যার কারণে মোটা চালের চাহিদা বাড়ায় দাম বেড়েছে।
ক্রেতারা জানান, ধান-চালের জেলা হওয়ার পর সারা বছরই বাজার ঊর্ধ্বগতি থাকে। এতে করে নিম্ন আয়ের মানুষ বিশেষ করে দিনমজুর তাদের সমস্যা পড়তে হয়। তাদের আয় রোজগার কম। অভিযোগ করে বলেন, চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে মজুত গড়ে তুলে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। পরে দাম বাড়লে তারাই লাভবান হন। এসব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো দরকার।
নওগাঁ পৌর খুচরা চাল বাজারের সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার সরকার বলেন, পাইকারিতে চালের দাম বাড়লেও খুচরা বাজারে এখনো বাড়েনি। আমাদের কাছে যেসব চাল রয়েছে তা অবিক্রিত। এসব চাল বিক্রির পর পাইকারি মোকাম থেকে কিনতে হবে। এরপর খুচরা বাজারে দাম কিছুটা বাড়তে পারে।
নওগাঁ জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, দেশের প্রায় ১২টি জেলায় ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ওইসব জেলাগুলোতে খাদ্যঘাটতি হয়েছে। ওইসব জেলার মানুষকে সহযোগিতা করতে ত্রাণ দিচ্ছে। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে মোটা চালের দাম কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা বেড়েছে। তবে সরু চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
তিনি বলেন, আউশ মৌসুমের নতুন ধান ১১শ থেকে ১১৫০ টাকা মন কিনতে হচ্ছে। এছাড়া পুরোনো ধানের বাজারও ঊর্ধ্বগতি। ১৪৫০ টাকা থেকে ১৫৫০ টাকা মণ। ধানের দাম বেশি হওয়ায় চাল উৎপাদন করতে খরচও বেশি পড়ছে। তবে সহসাই চালের দাম কমবে না বলে না মনে করা হচ্ছে।