ময়মনসিংহ ১১ (ভালুকা) আসনের সাবেক দুই সংসদ সদস্যসহ ৩৯৮ জনের নামে বিএনপি অফিস ভাঙচুর ও নাশকতার মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ভালুকা মডেল থানার ইনচার্জ (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে ভালুকা মডেল থানায় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মজিবুর রহমান মজু বাদী হয়ে মামলটি করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায় আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২০১৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর উপজেলা বিএনপির অফিস ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ময়মনসিংহ ১১ (ভালুকা) আসনের সাবেক দুই সংসদ সদস্য এম এ ওয়াহেদ, কাজিম উদ্দিন আহমেদ ধনু, সাবেক দুই উপজেলা চেয়ারম্যান হাজ্বী রফিকুল ইসলাম, আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, পৌর সভার সাবেক মেয়র এ,কে,এম মেজবাহ উদ্দিন কাইয়ুম ও দশ ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৯৮ জনের নাম উল্লেখ করে ও ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।
বিজ্ঞাপন
ভালুকা মডেল থানার ইনচার্জ ওসি শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ভালুকা উপজেলার সাবেক দুই এমপিসহ ৩৯৮ জনের নামে মামলা হয়েছে। আসামিরা বিভিন্ন জায়গায় পলাতক অবস্থায় রয়েছে তাদের গ্রেফতারের অভিযান চলছে।
বিদেশের বন্দরে অবস্থানের সময় ১৩টি জাহাজ থেকে পালিয়ে যাওয়া ১৯ বাংলাদেশি নাবিকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন নৌ আদালত।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর মোহাম্মদ মাকসুদ আলমের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে ১৯ জন নাবিকের নাম ও ঠিকানা প্রকাশ করে জানানো হয়, জাহাজগুলো বিদেশের বিভিন্ন বন্দরে অবস্থানকালে তারা বন্দর ত্যাগ করে আর জাহাজে ফেরেননি।
যাদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে তারা হলেন— মো. সোহানুর রহমান, মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, আবু সুফিয়ান, মোস্তফা কামাল, ইসকান্দার মিজি, মো. সানাউল্লাহ, মোহাম্মদ আনোয়ারুজ্জামান, মো. আব্দুল কুদ্দুস, আমিনুল ইসলাম, ওপি হোসেন, মো. রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ শেখ আলম, মো. মেহেদী হাসান, মো. আল আমিন, মো. ইমাম হোসেন, এনামুল হক, মো. ইমরুল হোসেন এবং মোহাম্মদ ইব্রাহীম।
এদের মধ্যে নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের পাঁচজন করে এবং ফেনীর দুজন রয়েছেন। এ ছাড়া সাতটি জেলার সাতজন নাবিক রয়েছেন। এ নাবিকেরা গত তিন বছরে বিদেশে পালিয়েছেন।
বিগত সময়ে পুলিশ দলীয় স্বার্থ উদ্ধারে বড় ধরনের অপরাধ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। এতে পুলিশ বাহিনী লজ্জিত বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, পুলিশে যেন আর রাজনৈতিক কুপ্রভাবে না পড়ে। এজন্য পুলিশ রিফর্মের বিষয়ে কাজ চলছে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন হেডকোয়ার্টার্স’র কনফারেন্স হল রুমে সিলেট বিভাগের সব ইউনিটের কর্মরত অফিসারদের সাথে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশব্যাপী বিভিন্ন মামলার ক্ষেত্রে অসাধু ব্যক্তিরা সুবিধা নিয়েছে। নিরীহ যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের গ্রেফতার করা হবে না। হয়রানি এড়াতে খোঁজ নিয়ে তাদের পুলিশের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর লুট হওয়া ছয় হাজার অস্ত্রের মধ্য এখনো দেড় হাজার অস্ত্র উদ্ধার হয়নি, বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, রাজনীতিবিদরা হলেন আমাদের কান্ডারী। আল্টিমেটলি তারাই দেশটা চালাবেন। রাজনৈতিক কুপ্রভাব যেন আর না আসে। সুপ্রভাবটা যেন আসে। কুপ্রভাব থেকে যেন আমরা মুক্ত হতে পারি। গত ১৫ বছরে দলীয় স্বার্থে পুলিশ এমন কোনো অন্যায় নাই যা করে নাই। এসব ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক।
মতবিনিময় সভায় র্যাব’র অতিরিক্ত আইজিপি একেএম শহিদুর রহমান, সিলেট রেঞ্জ’র ডিআইজি মো.মুশফেকুর রহমান, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিমসহ পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসপি) শামীমা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে রমনা থানায় গেছেন ভুক্তভোগী ফ্ল্যাট মালিকরা।
শনিবার (২১ডিসেম্বর) দুপুরে সিদ্ধেশ্বরী রোডের কনকর্ড ম্যাগনোলিয়া ৬১/এ'র ফ্ল্যাট মালিকরা থানায় যান। এসময় থানায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা না থাকায় অভিযোগ নিতে অস্বীকৃতি জানায় থানার কর্মকর্তারা। পরে রমনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম ফারুকের উপস্থিতিতে তারা অভিযোগ জমা দেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কনকর্ড ম্যাগনোলিয়ার ১০তলা ভবনের চারটি ফ্ল্যাট রয়েছে এসপি শামীমা ও তার স্বজনদের নামে। নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে পাঁচবছর ধরে সার্ভিস চার্জ দেন না তিনি। যা প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ টাকা। ওই ভবনের পাঁচতলা ও দোতলায় পৃথক দুটি করে ফ্ল্যাট রয়েছে এসপি শামীমার। এসব ফ্ল্যাটে আলো-বাতাস যাবার সুবিধার্থে কিছু ফাঁকা জায়গা রাখা হয়েছে। এসব জায়গা দখল করে এসপি নিজের মতো রুম বানাচ্ছেন। বিশেষ করে ভবনের মূলপিলার ভেঙে তিনি এসব করছেন। এতে ভবন ধ্বসের নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়েছে। রাজউক এরইমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভবনটি রেডমার্ক করে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে।
তবে অভিযোগ বিষয়ে সরাসরি ওই ভবনে গেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন না বলে জানান এসপি শামীমা। তিনি বলেন, 'আমি এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। এগুলো যারা দেখার তারা দেখবেন।'
ফ্ল্যাট মালিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, 'আমরা কষ্ট করে এখানে ফ্ল্যাট কিনে বসবাস করছি৷ কিন্তু সেই ভবন এখন ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা এসপির কাছে নিরুপায়। দুইবার থানায় অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পায়নি। শামীমা ইয়াসমিনের কারণে ভবনটি রাজউক রেডমার্ক করেছে কিন্তু এবিষয়ে শামীমার কাছে গেলে তিনি পুলিশ দিয়ে গ্রেফতারের হুমকি দেন। এরইমধ্যে তার এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে সিআইডি প্রধান, পুলিশ মহাপরিদর্শক, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব বরাবরও অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।'
থানায় জমা দেওয়া অভিযোগে বলা হয়:
রাজউকের অনুমোদিত নকশা বর্হিভূতভাবে ফ্ল্যাটের আয়তন বাড়ানোর জন্য শামীমা ইয়াসমিন ২০১৭ সাল থেকে দুই-তিন জন নির্মাণ শ্রমিক দিয়ে প্রতিনিয়ত নির্মাণ কাজ করছেন। রাজউক কর্তৃপক্ষ নকশা বর্হিভূত অবৈধ কাজ বন্ধে ২০২২ তাকে দুটি চিঠি দেয়। যা রমনা থানাকে অনুলিপি দেওয়া হয়। কিন্তু চিঠির বিপরীতে আজ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। চলতি মাসে রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, অথরাইজড অফিসার, ইঞ্জিনিয়ার এবং ইন্সপেক্টর এই ভবনটি পরিদর্শন শেষে ঝুঁকিপূর্ণ রেড মার্ক দিয়েছে। এরপরেও নিয়মের তোয়াক্কা না করে কক্ষ নির্মাণ করে যাচ্ছেন এসপি। বর্তমানে ভবনটি কাঠামোগতভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং যেকোনো সময় ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে।
২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে ভবন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান সব কাজ শেষে ফ্ল্যাট মালিকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে। যেখানে শামীমা চরটি ফ্ল্যাট নামে-বেনামে মালিক হন। এসব ফ্ল্যাটের কোনো সার্ভিস চার্জ দেন না তিনি। মালিক সমিতি বিভিন্ন সময়ে এবিষয়ে তাগাদা দিলে উল্টো হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়৷ এছাড়া ভবনের Disable Park, Common Space, ভয়েডসহ বিভিন্ন জায়গা দীর্ঘদিন জোরপূর্বক দখল করে রেখেছেন। ভবনের সিসিটিভির হার্ডডিস্ক নিজ হেফাজতে নিয়ে তা নষ্ট করে দিয়েছেন।
অভিযোগ বিষয়ে রমনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম ফারুক বলেন, আমরা একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।'
রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, সেখানে নিয়মের ব্যত্যয় করে কাজ চলছে বলে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। এরপর ভুক্তভোগী ফ্ল্যাট মালিকদের লিখিত অভিযোগ থানায় দিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো।'
নরসিংদীর বেলাবোতে ছেলের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সাফিয়া বেগম (৭০) নামে এক বৃদ্ধা মায়ের মৃত্যু হয়েছে। দুই ভাইয়ের পারিবারিক কলহকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ বাড়িতে ছেলে সজিব ধাঁরালো অস্ত্র (দা) দিয়ে আঘাত করেন মায়ের মাথায়।
পরে শনিবার (২১) ডিসেম্বর ভোর সাড়ে ৩টায় বেলাবো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় ছোট ছেলে তৌহিদ হোসেন তার ভাই তোফাজ্জল হোসেন সুজন, ভাইয়ের স্ত্রী রেখা আক্তার এবং ভাতিজা আসিফ মিয়াকে আসামি করে বেলাবো থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, মামলা নাম্বার ২৮।
মামলার এজাহারে জানা যায়, জমি নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিল। গত ১৯ ডিসেম্বর দুপুরে সাফিয়া খাতুন বাড়ির আঙ্গিনা পরিষ্কার করার সময় সুজন মাকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে, তার মা গালির প্রতিবাদ করলে সুজন তার হাতে থাকা ধারালো দা দিয়ে মায়ের মাথায় আঘাত করেন। এসময় মা সাফিয়া খাতুনের মাথা ফেটে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে বেলাবো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। চিকিৎসাদিন অবস্থায় আজ শনিবার ভোরে সাফিয়া খাতুনের মৃত্যু হয়।
সহকারি পুলিশ সুপার (বেলাব-রায়পুরা) সার্কেল আফসান আল আলম বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, ছোট ছেলের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে মারামারির মামলা হলেও মারা যাওয়ার পর হত্যা মামলার ধারা সংযুক্ত করা হয়েছে। ১ নম্বর আসামি তোফাজ্জল হোসেন সুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
ময়না তদন্তের জন্য লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।