ডিসিকে কাছে পেয়ে কাঁদলেন আন্দোলনে নিহত তিন ছাত্রের মা-বাবা

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ডিসিকে কাছে পেয়ে কাঁদলেন নিহত তিন ছাত্রের মা-বাবা/ছবি: বার্তা২৪.কম

ডিসিকে কাছে পেয়ে কাঁদলেন নিহত তিন ছাত্রের মা-বাবা/ছবি: বার্তা২৪.কম

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে ফরিদা খানম যোগদান করার দুইদিনের মাথায় ছাত্র আন্দোলনে নিহত তিন শিক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়ে তাঁদের মা-বাবাকে স্বান্ত্বনা দিয়েছেন। এই সময় ডিসিকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় জেলা প্রশাসক প্রথমে বোয়ালখালীর পোপাদিয়া ইউনিয়নের আকুবদণ্ডী এলাকায় অবস্থিত রাজধানী ঢাকায় নিহত বিএটিসির প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র মো. ওমর বিন আবছারের বাড়িতে যান। এসময় তিনি অন্যান্যদের নিয়ে ওমরের কবর জিয়ারত করেন। পরে ঘরে গিয়ে ওমরের পিতা হাজী নুরুল আবছার ও মা রুবি আক্তারসহ স্বজনদের স্বান্ত্বনা ও সমবেদনা জানান জেলা প্রশাসক। এসময় জেলা প্রশাসকের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন শহীদ ওমরের পিতা-মাতা ও ভাই-বোনেরা। শহীদ ওমরের কবরে যাওয়ার রাস্তা সংস্কার ও পাশে একটি সড়ক শহীদ ওমরের নামে নামকরণের ঘোষণা দেন ডিসি। নিহত ওমর ছিলেন ৫ ভাই ১ বোনের মধ্যে তৃতীয়। তাঁর বড় বোন চিকিৎসক আর ছোট তিন ভাই কোরআন হাফেজ।

এরপর বেলা ২টায় গত ১৬ জুলাই নগরীর মুরাদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিহত ফার্নিচার মিস্ত্রী মো. ফারুকের স্ত্রী-সন্তানকে সমবেদনা জানাতে নগরীর লালখান বাজারের টাংকির পাহাড় এলাকার বাসায় যান জেলা প্রশাসক। এসময় আন্দোলনে শহীদ মো. ফারুকের স্ত্রী, শিশু পুত্র-কন্যা জেলা প্রশাসককে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ফারুকের স্ত্রী সীমা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার ছেলে-মেয়ের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা বললে তাৎক্ষণিক আর্থিক ও মানবিক সহায়তা হিসেবে জেলা প্রশাসক সীমা আক্তারের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দেন এবং তার ছেলে-মেয়েকে সরকারি স্কুলে ভর্তিসহ বিনাবেতনে পড়ালেখার সুযোগ করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।

বিজ্ঞাপন

এরপর ১৬ জুলাই নগরীর মুরাদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত হন ওমর গণি এমইএস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ফয়সাল আহমদ শান্তর নগরীর লালখান বাজারের বাঘঘোনা এলাকার বাসায় ছুঁটে যান ফরিদা খানম। এসময় শহীদ শান্তর পিতা জাকির হোসেন ও মা কোহিনুর আক্তারসহ স্বজনদের স্বান্ত্বনা ও সমবেদনা জানান তিনি। জেলা প্রশাসককে কাছে পেয়ে আন্দোলনে শহীদ মো. ফয়সাল আহমদ শান্তর মা তাঁকে জড়িয়ে কান্নায় বার বার মুর্ছা যান। একইসময় নিহতের পিতা ও ছোট্ট বোন কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় মানবিক সহায়তা হিসেবে শহীদ শান্তর মায়ের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দিয়েশহীদ শান্তর পিতার জন্য চাকরির ব্যবস্থা করার ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। পরিবারে এক ভাই এক বোনের মধ্যে শান্ত ছিলেন সবার বড়। তার ছোট বোন সিএমপি স্কুল অ্যান্ড কলেজে সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।

এ সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) এ.কে.এম গোলাম মোর্শেদ খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাদি-উর রহিম জাদিদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান, বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা হিমাদ্রী খীসা, স্টাফ অফিসার টু ডিসি মো. ফাহমুন নবী, বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. খায়রুল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রিজাউর রহমান ও সাদিক আরমান জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ছিলেন।

গত ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম জেলায় যোগদান করেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদা খানম। তিনিই এ জেলার প্রথম নারী ডিসি।