সরবরাহ কমায় ইলিশের দাম চড়া

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

ভরা মৌসুমেও সরবরাহ কম থাকায় লক্ষ্মীপুরের স্থানীয় বাজারে বেড়েছে ইলিশের দাম। এতে সাধারণ ক্রেতারা এই মাছের স্বাদ নিতে পারছেন না।

জেলে ও বিক্রেতারা বলছেন, ভরা মৌসুমেও মেঘনা নদীতে মাছের আকাল থাকায় দাম বেশি।

বিজ্ঞাপন

জেলার রামগতির উপকূলীয় মেঘনা নদীতে ডুবোচর ও নাব্যতা সংকটের কারণে নদীর গভীরতা কমে গেছে। এজন্য ইলিশের অভয়ারণ্য খ্যাত লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় দিন দিন কমে যাচ্ছে ইলিশের সংখ্যা।

লক্ষ্মীপুরের জেলা শহরে দক্ষিণ তেমুহনীতে রাতের বেলা ইলিশের বড় হাট বসে। এই হাটটিতে ভরা মৌসুমেও ইলিশের সরবরাহ একেবারেই কম। এতে চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই চড়া দামে ইলিশ বিক্রি হতে দেখা গেছে।

সরেজমিনে রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে বাজার ঘুরে দেখা যায়, বিক্রেতারা এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম হাঁকাচ্ছে ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা। ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ১৫০০ টাকা। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ১২০০ টাকা, আধাকেজি ওজনের ইলিশ হাজার টাকায়, ৩০০ থেকে ৩৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৭০০ টাকা এবং ২০০ থেকে আড়াইশ গ্রাম ওজনের জাটকার দাম সাড়ে পাঁচশ থেকে ছয়শ টাকার মধ্যে।

বাজারে ইলিশ কিনতে আসা সেলিম মিয়া বলেন, এখন তো ইলিশের ভরপুর মৌসুম, কিন্তু বাজারে মাছের পরিমাণ কম। তাই বাধ্য হয়ে বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে।

সুমন দাস নামে আরেক ক্রেতা বলেন, চড়া দামের কারণে সাধ্যের বাহিরে চলে গেছে রূপালী ইলিশ। মৌসুমের শুরু থেকেই দাম অনেক চড়া। এখন তো ভরপুর মৌসুম, এরপরেও দাম বেশি।

শরীফ নামে একজন বিক্রেতা বলেন, ঘাটে ইলিশের দাম বেশি। ঘাট থেকেই আমাদেরকে চড়া দাম কিনে আনতে হয়। তাই খুচরা বাজারেও দাম বেশি।

জানা যায়, রামগতি ঘাট সংলগ্ন ২টি এবং চর আলেকজান্ডার ঘাটের দক্ষিণে ৩টিসহ লক্ষ্মীপুর জেলার ৭৬ কিলোমিটার মেঘনা এলাকায় গত ৫-৭ বছরের মধ্যে ১০টি চর দৃশ্যমান হয়েছে। এ চরগুলোর বেশিরভাগই এখন চাষাবাদের জন্য উপযুক্ত। অন্যদিকে রামগতি থেকে নোয়াখালীর হাতিয়া পর্যন্ত রয়েছে অনেকগুলো চর।

জেলে জব্বার মাঝি জানায়, গত ৫-৭ বছরের মধ্যে চাঁদপুর সীমানা থেকে একেবারে নোয়াখালীর হাতিয়া পর্যন্ত মেঘনা নদীর বিশাল এলাকায় অসংখ্য চর দৃশ্যমান হয়েছে এবং আরও অসংখ্য ডুবোচর তৈরি হয়েছে। দৃশ্যমান এ চরগুলো ছাড়াও রামগতির টাংকি বাজার পর্যন্ত অন্তত আরও ৬টি বড় বড় ডুবোচর রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সুজিত দেবনাথ জানান, নদীতে চরের কারণে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে। যেগুলো বর্ষায় দেখা না গেলেও শীত মৌসুমে ভাটার সময় দেখা যায়। পুরো মেঘনা নদীর লক্ষ্মীপুর সীমানায় এখন অসংখ্য চর।

উপজেলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়তদার মীর হাসান মাহমুদ জানান, মৌসুমে ইলিশ ধরা না পড়ায় জেলে, আড়তদার, পাইকার, দাদন ব্যবসায়ী, মৎস্য শ্রমিক ও জেলে পরিবারগুলোতে নেমে এসেছে বিষাদ।