‘তানজিম ছিল আমার কলিজার টুকরা’

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

তানজিমের মা নাজমা বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছে। ছবি- বার্তা২৪.কম

তানজিমের মা নাজমা বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছে। ছবি- বার্তা২৪.কম

কক্সবাজারের চকরিয়ায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে নিহত সেনাবাহিনীর তরুণ কর্মকর্তা লেফট্যানেন্ট মো. তানজিম ছারোয়ার নির্জনের (২৩) দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

এদিকে একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে তানজিমের মা নাজমা বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘সরকার প্রধান ও সেনা প্রধানের কাছে আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই। তানজিম ছিল আমার কলিজার টুকরা।’

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জানাজা শেষে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করের বেকতা এলাকার স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারযোগের নিহত তানজিমের মরদেহ টাঙ্গাইল শহরের হেলিপ্যাডে নামে। সেখান থেকে লাশবাহী একটি এ্যাম্বুলেন্স করে তার লাশ শহরের বোয়ালী এলাকার নিজ বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। আসরের পর স্থানীয় বোয়ালী মাদরাসা মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বোয়ালী কবরস্থানে সামরিক মর্যাদায় তাকে দাফন করা হয়। এ সময় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

এদিকে তানজিম নিহতের ঘটনায় তার পরিবারে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে নিহত তানজিমের বাবা সারোয়ার জাহান দেলোয়ার প্রায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘এ রকম মৃত্যু যেন আর কারো না হয়। আর যেন কোনো বাবার এভাবে আর্তনাদ করতে না হয়। আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার চাই। তানজিমই আমার একমাত্র ছেলে। সেই ছিল বাড়ির একমাত্র উপার্জন করার লোক। আমি এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার ও ফাঁসি চাই।’

তানজিম নিহতের খবর এলাকায় জানাজানি হলে মঙ্গলবার সকাল থেকেই তার বাড়িতে ভিড় করে আত্মীয়-স্বজনসহ এলাকাবাসী। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এরইমধ্যে ঘাটাইল শহীদ সালাহউদ্দিন সেনানিবাস থেকে ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা নিহত তানজিমের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জানিয়েছেন।

জানা যায়, লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জন টাঙ্গাইল জেলার একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মেধাবী এই তরুণ সেনা কর্মকর্তা পাবনা ক্যাডেট কলেজ হতে উচ্চ মাধ্যমিক সমাপনান্তে ৮২তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সাথে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি হতে বিগত ২০২২ সালের ৮ জুন আর্মি সার্ভিস কোরে (এএসসি) কমিশন লাভ করেন।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ভোররাত আনুমানিক চারটার দিকে ডাকাতবিরোধী অভিযান পরিচালনাকালে নির্জনের ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করা হয়। এরপর তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে মালুমঘাট মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।