লেবাননে চলমান হামলার প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ বৈরুতের বিপজ্জনক এলাকা থেকে বাংলাদেশিদের সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বৈরুতের বাংলাদেশ দূতাবাস।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে বৈরুতের বাংলাদেশ দূতাবাসের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ পরামর্শ দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
এতে বলা হয়, গত এক সপ্তাহ ধরে দক্ষিণ বৈরুতের কিছু কিছু এলাকায় ক্রমাগত বিমান আক্রমণ চলছে। আক্রমণ দেখে বোঝা যাচ্ছে, দাহি এবং এর নিকটবর্তী এলাকায় বসবাস করা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এ অবস্থায় যেসব বাংলাদেশি প্রবাসী এখনও ওইসব এলাকায় বসবাস করছেন, তাদের দ্রুত ওই এলাকা ত্যাগ করতে হবে। বৈরুতের উত্তরে অথবা অন্য কোনো নিরাপদ এলাকায় তাদের অবস্থান করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হলো।
জরুরি প্রয়োজনে দূতাবাসের ফ্রন্ট ডেস্ক ৭১২১৭১৩৯, হটলাইন ৭০৬৩৫২৭৮, হেল্পলাইন ৮১৭৪৪২০৭ ফোন নম্বরে এবং [email protected] এই ই-মেইলে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করেছে দূতাবাস।
ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢল এবং নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট হওয়া ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পদ্মায় পানি বাড়ছে। এতে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের পদ্মার চরের অন্তত ৩৪টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়ায় পদ্মার চরের ভাঙন ও বন্যার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন তারা। নিম্নাঞ্চলের জমিতে চাষ করা মাসকলাইয়ের ক্ষতি হয়েছে। সঙ্গে মরিচ, কলাসহ অন্যান্য সবজিতেও পড়েছে এর প্রভাব। অন্তত ২৫ কোটি টাকার বেশি ক্ষতির শঙ্কা করছেন কৃষকরা।
চরের পানিবন্দি হয়ে পড়া প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রমের বিষয়ে খোঁজ নিতে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চরের কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। পরিস্থিতির অবনতি হলে পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো এখনো স্বাভাবিক।
দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান বলেন, আমার ইউনিয়নের ১৮টি গ্রামের আশপাশে পানি চলে এসেছে। চলাচলের রাস্তার ওপরে পানি উঠে গেছে। তবে এখনও বসতঘরে পানি প্রবেশ করেনি। চরের আবাদি জমি সব ডুবে গেছে।
রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ মণ্ডল জানান, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন ১৬টি গ্রামের চারপাশে পানি চলে এসেছে। তাদের ইউনিয়নের পদ্মার চরের প্রায় সব আবাদি জমি তলিয়ে গেছে। এতে মাসকলাই চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, উপজেলার মরিচা, ফিলিপনগর, চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের এক হাজার ৬২০ হেক্টর জমির মাসকলাই ডুবে গেছে। এতে অন্তত ২৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া মরিচ ৭০ হেক্টর, কলা ৭৩ হেক্টর ও সবজির ১৩ হেক্টর জমি পানিতে ডুবেছে। যার ক্ষতির পরিমাণ এখনই করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস।
এছাড়া এবার চরের ২ হাজার ৩২৩ হেক্টর জমিতে মাসকলাই চাষ করেছিলেন কৃষকরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম জানান, আপাতত আর পানি বাড়ার আশঙ্কা নেই। দু-এক দিন স্থিতিশীল থেকে পানি কমতে শুরু করবে। তিনি বলেন, পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ১২ দশমিক ৩৮ সেন্টিমিটার উচ্চতা দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এই পয়েন্টে বিপৎসীমা ধরা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার।
দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। আমরা পানিবন্দি হয়ে পড়া এলাকাগুলোর খোঁজ রাখছি।
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, আমার কথা বলে কেউ অবৈধ সুবিধা এবং চাঁদা আদায়ের চেষ্টা করলে পুলিশে ধরিয়ে দিন।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তায় তিনি একথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, আমি সরকারে আসার আগে এবং পরে বহু মানুষ আমার সঙ্গে ছবি তোলার অনুরোধ করে, ছবি তুলে। সরকারে আসার আগে বহু প্রোগ্রামে গিয়েছি অনেকে ছবি তুলেছে। আমাকে অনেকে জানিয়েছে এই সমস্ত ছবি দেখিয়ে কেউ কেউ অবৈধ সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করছেন। এবং কেউ কেউ নাকি বিভিন্ন কথা বলে চাঁদা আদায়েরও চেষ্টা করছেন। এগুলো আমি শুনেছি সত্য-মিথ্যা জানি না। এসব ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান তিনি।
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, যারা এসব কর্মকাণ্ড করছে বা করার চেষ্টা করছে আপনারা তাদেরকে পুলিশে ধরিয়ে দিন। কোনো অবস্থাতেই, কোনো কারণেই আমার কথা বলে কেউ যদি অবৈধ সুবিধা এবং চাঁদা আদায়ের চেষ্টা করে আপনারা তাকে পুলিশে ধরিয়ে দিবেন। মামলা করবেন, মামলার কপি আমার ফেসবুকে পাঠিয়ে দিবেন। এবং অবশ্যই আমি চেষ্টা করবো এটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, আমি বা আমার সরকারের কেউ কোন রকম অবৈধ কাজের প্রশ্রয় দিবে না। এই সমস্ত কাজ যারা করার চেষ্ট করছেন বা করছেন তাদেরকে আমি কঠোর হুঁশিয়ারি জানাচ্ছি। বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে কোনো রকম অন্যায় করবেন না। আমাদের কারও নাম ব্যবহার করবে না। আমাদের নামে কোনো রকম চাঁদাবাজি, অবৈধ সুবিধা আদায়, কাউকে কোন রকম হুমকি দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন। আমরা জানতে পারলে উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উজানের ঢল ও টানা দুদিনের বৃষ্টিতে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই। ইতোমধ্যে পানির চাপ কমাতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২.০০ মিটার (স্বাভাবিক ৫২.১৫ মিটার)। যা বিপৎসীমার ১৫ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে।
নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে ইতোমধ্যে তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে। চরাঞ্চলগুলোর ঘরবাড়ি ও ফসলি জমিতে পানি উঠতে শুরু করেছে। নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষজন বন্যা ও নদীভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন।
এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৮-১০টি চর ও পার্শ্ববর্তী কালীগঞ্জ, আদিতমারী উপজেলার ১০-১৫টি চর এলাকায় পানি উঠতে পারে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) জিয়াউল হক জিয়া বলেন, দুদিন ধরে টানা বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ইউনিয়নের কিছু কিছু এলাকার রাস্তাঘাটে পানি উঠায় চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষজন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখার উপ-প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন বলেন, তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে বলে জানান তিনি।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় সেনা কর্মকর্তা তানজিম সারোয়ার হত্যা মামলায় মূল হত্যাকারী ডাকাত নাছির উদ্দিনসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত তার সহযোগী ডাকাত এনামকে দুটি দেশীয় তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র ও তিন রাউন্ড গুলিসহ গ্রেফতার করেছে যৌথ বাহিনী।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ভোরে চকরিয়া কাহারিয়া ঘোনা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার আসামিরা হলেন, চকরিয়া ডুলাহাজারা ইউনিয়নের রিজার্ভপাড়া এলাকার আবদুল মালেকের ছেলে নাছির উদ্দিন (৩৮) ও ডুলাহাজারা মাইজপাড়া এলাকার মৃত নুরুল আলমের ছেলে এনামুল হক (৫০)।
র্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ অ্যান্ড মিডিয়া) মো. আবুল কালাম চৌধুরী জানান, যৌথ বাহিনীর অভিযানে চকরিয়ায় সেনা কর্মকর্তা তানজিম সারোয়ার হত্যা মামলার আরো দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনার মূল হত্যাকারী ডাকাত নাছির উদ্দিনসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত তার সহযোগী ডাকাত এনামকে দুটি দেশীয় তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র ও তিন রাউন্ড গুলিসহ গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামিরা হত্যাকাণ্ডে নিজেদের প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের চকরিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এর আগে ঘটনার সময় ৬ জনকে আটক করা হয়। এঘটনায় সেনাবাহিনী এবং পুলিশের পক্ষ থেকে দুইটি মামলা দায়ের করা হয়।