একরামুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষকের বিচারের দাবি

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন রামপুরা একরামুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারা।

ক্ষমতা হারিয়ে গত সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) হোসনেয়ারার নেতৃত্বে ভাড়া করা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে বিদ্যালয়ের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ক্ষমতা দখলের পায়তারাসহ ছাত্রী-অভিভাবক ও শিক্ষকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোসা. জরিনা বেগম।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (০৩ অক্টোবর) বিদ্যালয়ের নিজ দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও এই ধরনের কার্যক্রমের প্রতিবাদ জানান তিনি।

প্রধান শিক্ষক মোসা. জরিনা বেগম বলেন, গত সোমবার বেলা ১১টায় রামপুরা একরামুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পদত্যাগকারী প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারার নেতৃত্বে বিদ্যালয় দখল করার জন্য ভাড়া করা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে বিদ্যালয়ের গেট ভেঙে প্রবেশ করেন। সন্ত্রাসীরা বিদ্যালয়ের দুটি মাইক, অফিস কক্ষের জানালা, ফুলের টব ভাঙচুর করে।

প্রধান শিক্ষকের কক্ষ তালাবদ্ধ থাকায় তারা তালা ভাঙার চেষ্টা করে। তাদের এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা প্রতিবাদ করে স্লোগান দিতে থাকলে সন্ত্রাসীরা ছাত্রী-অভিভাবক ও শিক্ষকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এ সময় বেশকিছু ছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষক আহত হন।

সিসি টিভির ভিডিও ফুটেজের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ভিডিওতে দেখা যায় সাবেক প্রধান শিক্ষকের পক্ষে অংশ নিয়ে এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আকরাম খান, মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান, স্বরজিত কুমার বিশ্বাস, খন্দকার মোতাছিম বিল্লাহ, হবি চরণ দাস, মোহাম্মদ আতাউর রহমান।

তিনি বলেন, ওইদিন এমন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চাইলে সেনাবাহিনীর সদস্য ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রাক্তণ প্রধান শিক্ষককে থানায় নিয়ে যান। হাতিরঝিল খানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণ জানতে চাইলে প্রাক্তণ প্রধান শিক্ষক জানান তিনি গত ১৪ আগস্ট তারিখ থেকে ছুটি ছিলেন। কিন্তু ছুটি অনুমোদনের কোনো দালিলিক প্রমাণ তিনি দেখাতে পারেননি।

অথচ গত ১৪ আগস্ট তিনি অফিস করেছেন এবং একই তারিখে তিনি স্বেচ্ছায় ও স্বজ্ঞানে পদত্যাগ করেছেন। ম্যানেজিং কমিটিও সেই পদত্যাগ পত্র অনুমোদন করে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমাকে (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেন।

প্রধান শিক্ষক মোসা. জরিনা বেগম বলেন, প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের পর শ্রেণি কার্যক্রম গতিশীল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলে তার অনুগত শিক্ষক মো. আকরাম খান, মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান ও স্বরজিত কুমার বিশ্বাস বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। তাদের কাছে ব্যক্তিগত কোচিং করা কিছু সংখ্যক ছাত্রীদের পরীক্ষার মার্কস বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন অবৈধ সহায়তা করার প্রলোভন দেখিয়ে বিদ্যালয়ের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বহিরাগতদের সহায়তায় সাবেক প্রধান শিক্ষককে পুনরায় বহাল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। পদত্যাগের পর সকল শিক্ষক-কর্মচারী তার বিভিন্ন অসদচারণ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি, সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সহকারী কমিশনার (জেএম) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বরারব আবেদন করেন।

আবেদন করার পর হতে বিভিন্নভাবে তিনি আমাদের কয়েকজন শিক্ষককে হুমকি দিয়ে আসছেন। গত ২৯ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয় ছুটির সময় মো. আকরাম খান, মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান ও স্বরজিত কুমার বিশ্বাস আগামীকাল 'ফাইনাল খেলা' হবে বলে হুমকি দিয়ে যান।

পরে ওই দিন হাতিরঝিল থানায় আমি নিজে বাদী হয়ে সাবেক প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারা ও হুমকিদাতা শিক্ষকদের নামে জিডি করি। সংঘটিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং সকল অনিয়ম, দুর্নীতির তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আগেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ড ঢাকা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসার ও থানা শিক্ষা অফিসার বরাবর আবেদন করা হয়েছে।