দেশীয় মাছে সয়লাব কুয়াকাটার বাজার

  • উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

বছরের আগস্ট এবং সেপ্টেম্বর ইলিশের ভরা মৌসুম থাকে। তবে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ মিলছে না জেলেদের জালে। আর কিছুদিন পর শুরু হবে মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান। এমন সময় পটুয়াখালীর সাগরকন্যা কুয়াকাটায় পাইকারি মাছের বাজারে বড় বড় ইলিশ থাকার কথা। কিন্তু পাইকারি ও খুচরা বাজার ছোট ছোট দেশীয় প্রজাতির মাছে ভরপুর।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সরেজমিন বাজার ঘুরে দেখা যায়, পোমা, চিংড়ি, চন্দনা, ডেলা, তেলাপিয়া, বাটা, চাউম্মা ও হিলালসহ প্রায় ১৮-২০ প্রজাতির মাছ রয়েছে। এসব ছোট দেশীয় প্রজাতির মাছগুলো ১০০-৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব সুস্বাদু ও পুষ্টিকর মাছগুলো ক্রয় করার জন্য স্থানীয়সহ পর্যটকরাও ভীড় জমিয়েছেন।

মাছ বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মো: নাসির উদ্দিন বলেন, বর্তমানে ইলিশ মাছ খুবই কম। ছোট দেশীয় প্রজাতির মাছ নিয়ে আমার ব্যবসা চলমান রয়েছে। বর্তমানে আমার দৈনিক ১৫-২০ হাজার টাকা বিক্রি হয়। খরচ বাদ দিয়ে যা লাভ হচ্ছে তা দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ সংসার ভালভাবে চলছে।

খুচরা ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ব্যস্ত সময় পার করছেন আড়তদার মালিকরা।


স্থানীয় মাছ বাজারের রব্বানী ফিসের আড়তদার ও মৎস্য ব্যবসায়ী মো: রুবেল হাওলাদার বলেন, আজ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট-বড় প্রায় ২৫ মণ দেশীয় মাছ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানোর জন্য প্যাকেট চলছে। এসব দেশীয় মাছ খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলায় এসব মাছের চাহিদা অনেক।

মেসার্স খান ফিসের আড়তদার ও মৎস্য সমিতির সাবেক সভাপতি মো: রহিম খান বলেন, আমাদের মাছ বাজারে এসব ছোট দেশীয় প্রজাতির মাছ সব সময় ভরপুর থাকে। যেটা স্থানীয় চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। তবে আমাদের মূল ব্যবসা ইলিশ মাছ নিয়ে। চলমান মৌসুম শেষ পর্যায় তবুও দেখা নেই কাঙ্ক্ষিত ইলিশের। এর মধ্যে আগামী ১৩ অক্টোবর থেকে ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের অভিযান শুরু হবে। তখন বঙ্গোপসাগরে কোনো ধরনের মাছ ধরা যাবে না। এতে আমরা সামনের এই অভিযান নিয়ে চিন্তিত। 

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা: সাজেদুল হক বলেন, প্রতিনিয়ত সমুদ্র দূষণ হচ্ছে, নদীর গতিবেগ পরিবর্তন হচ্ছে, পাশাপাশি ইলিশের খাদ্যাভ্যাস এর কারণে তারা মাইগ্রেশন (চলাচল) করে যার কারনে বড় ইলিশের দেখা মিলছে না। আমরা প্রতিবছর মা ইলিশ নিয়ে গবেষণা করে থাকি, কখন-কোথায় তারা ডিম দেয়, কোথায়-কখন বড় হয়। এর ওপর নির্ভর করে এ বছরও আগামী ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন মা ইলিশ রক্ষায় নদীতে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা থাকছে। 

ছোট প্রজাতির মাছগুলো স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এসব ছোট প্রজাতির মাছগুলো মাইগ্রেশন করে না। পাশাপাশি এরা গভীর সমুদ্রের থেকে উপকূলের কাছাকাছি থাকে যার কারনে এসব মাছ বেশি ধরা পড়ছে।