পৈতৃক সম্পত্তি জন্য জাল স্বাক্ষর দিয়ে নামজারি, দুদকে অভিযোগ
নওগাঁয় পৈত্রিক সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে স্বাক্ষর জাল করে নামজারি করার অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনায় ভুক্তভোগী জুমাতুল এম ইসলাম সৌরভ জালিয়াতি কাজের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবী জানিয়ে গত ২ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জুমাতুল এম ইসলাম সৌরভ এর বাবা আমিনুল ইসলাম কবিরাজ গত ২০২১ সালের ১৪ জুলাই মারা যান। মারা যাওয়ার আগে ছেলে সৌরভকে নালিশী তপশীল বর্নিত সম্পত্তি ও মার্কেট দখল দিয়ে রক্ষনাবেক্ষণ করার দায়িত্ব প্রদান করেন। কিন্তু কৌশলে ভগ্নিপতি ডাঃ আবু জার গাফফার(৪৬) তার শ্যালক সৌরভের স্বাক্ষর জাল ও তার ছবি ব্যবহার করে মোট ৩০০ শতাংশ জমির জন্য চারটি নামজারি আবেদন করেন।
এছাড়া নামজারি আবেদনে যে মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করা হয়েছে সেটাও সৌরভের না। সৌরভ বিষয়টি জানার পর নামজারি স্থগিত এবং নতুন করে নামজারি না দেয়ার এজন্য সহকারি কমিশনার(ভূমি) কে আবেদন করেন। ফলে নামজারি আবেদনটি বাতিল হয়। কিন্তু ১৫ দিন পর পুনরাই ওই সম্পত্তির মধ্যে তাকে ছাড়াই ৩৭ শতাংশ জমির জন্য দুইটি নামজারি আবেদন করা হয়।
তিনি আরও বলেন, মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে আইন বর্হিভূতভাবে একতরফা শুনানি শেষে নামজারি মঞ্জুর করেন তৎকালীন সহকারি কমিশনার(ভূমি) শওকত মেহেদী সেতু। ঘটনার পর সহকারি কমিশনার(ভূমি) এর বিরুদ্ধে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করলে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় তাকে অন্যত্র বদলী করা হয়। পরবর্তীতে উপরোক্ত বিষয়ে প্রেক্ষিতে ডাঃ আবু জার গাফফারকে ১নং আসামী করে স্বাক্ষর জাল করার কারণে নওগাঁ ১ নং আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন সৌরভ।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডাঃ আবু জার গাফফার বলেন, অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ ব্যাপারে শ্যালক জুমাতুল এম ইসলাম সৌরভ বাদী হয়ে আমিসহ স্ত্রী নুরে ই-আফসানা জেরির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছিল। যা পরবর্তীতে আদালতে খারিজ হয়ে যায়। খারিজের বিরুদ্ধে পুনরায় শুনানি হয়েছে। আগামী ৮ অক্টোবর চূড়ান্ত রায় হবে।
সাবেক নওগাঁ সদর ও বর্তমান সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালি উপজেলার সহকারি কমিশনার(ভূমি) শওকত মেহেদী সেতু বলেন, আইনগত প্রক্রিয়ায় শুনানি নিয়ে সবকিছু মেনেই কাজ করা হয়েছে। জুমাতুল এম ইসলাম সৌরভ যদি বলে থাকেন তাহলে তিনি মিথ্যা বলেছেন। যে নামজারি হয়েছে সেখানে তিনি কোন পক্ষভুক্তই না। তারপরও অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে ডেকে শুনানি নেয়া হয়েছে। অর্থের বিনিময়ে কাজ করার অভিযোগটি সত্য নয়।
এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক) নওগাঁর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক নওসাদ আলী জানান, এটি আমাদের একটি তফশিলভুক্ত অভিযোগ। আমরা ঢাকা অফিসে পাঠানোর পর অনুমোদন হয়ে আসলে তদন্ত শুরু করা হবে।