ক্ষতচিহ্ন মুছে নতুন রূপ পাচ্ছে যাত্রাবাড়ী থানা
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ থানাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি যাত্রাবাড়ী থানা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরই ছাত্রজনতার তীব্র ক্ষোভে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে ছয়তলা বিশিষ্ট ভবনটি। দীর্ঘ দেড় মাস ধরে এই থানায় সংস্কার কাজ চলছে। ফলে নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ ঘটছে থানাটির।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) যাত্রাবাড়ী থানা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, যাত্রাবাড়ী থানার লালচে রঙের নতুন মূল গেইট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলে প্রথমেই হাতের দুপাশে আগুনে পুড়ে যাওয়া গাড়ির ধ্বংসস্তূপ চোখে পড়ে। জীর্ণশীর্ণ হয়ে পড়ে আছে গাড়িগুলো। ভবনের দিকে তাকালেই শ্রমিকেরা কাজ করছে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। কেউ ভবনে রঙের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। আবার কেউ রডের কাজ করছেন। কেউবা আবার ফ্লোর ও রুমগুলো পরিষ্কার করছেন। কেউ বৈদ্যুতিক কানেকশন ঠিক করছেন।
ছয়তলা বিশিষ্ট এই ভবনে প্রবেশ করলে এখনো পুড়ে যাওয়া বিভিন্ন ফ্লোরের ক্ষতচিহ্ন স্পষ্ট দেখা যায়। পরিষ্কার করার পরেও পোড়া ফ্লোরগুলো স্পষ্ট হয়ে আছে। রুমগুলোর ভেতরের দেয়ালে রঙ করা হয়েছে। নতুন ফ্যান লাগানোসহ জানালার কাচের গ্লাস পুনঃস্থাপন হয়েছে। থানার এরিয়ার মধ্যে পুড়ে যাওয়া ভবনগুলোও সংস্কার করে নতুন রূপ দেওয়া হয়েছে।
শ্রমিকরা জানান, আমরা দেড় মাস ধরে এখানে কাজ করছি। কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে।
থানায় সংস্কারের কাজ করা পুলিশ ট্রাস্ট কনস্ট্রাকশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. সুজন আলম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ২১ আগস্ট থেকে কাজ শুরু করেছি। কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ চলমান। ফার্নিচারগুলো আসলে আমরা সবকিছু সুন্দর করে সাজিয়ে দেবো। অতিদ্রুত থানার কার্যক্রম শুরু হয়ে জনদুর্ভোগ কমবে বলে আশা করছি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সংস্কারের কাজ চলমান থাকার কারণে যাত্রাবাড়ী থানার কার্যক্রম স্বল্প পরিসরে ডেমরা থানা থেকে পরিচালিত হচ্ছে। ফলে অনেকে যাত্রাবাড়ী থানায় বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে আসলেও পুলিশ প্রশাসনকে না পেয়ে খালি হাতে ফেরত যেতে হচ্ছে। এমনই একজন ভুক্তভোগী যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা মো. সারোয়ার মিয়া। তিনি বলেন, আজকে আমার একটি স্মার্টফোন হারিয়ে গেছে। সেজন্য হন্তদন্ত হয়ে জিডি করতে থানায় ছুটে এসেছি। কিন্তু এখানে এসে দেখি কেউ নেই। শুধু শ্রমিকরা কাজ করছে। এই মুহূর্তে আমার জিডি করা খুবই প্রয়োজন। কিন্তু, ডেমরা থানা থেকে যে এ থানার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এ বিষয়ে আমি জানি না।
জোনায়েদ নামের একজন শ্রমিক বলেন, প্রত্যেকদিন অনেক মানুষ বিভিন্ন রকমের অভিযোগ নিয়ে আসে। কিন্তু, কাউকে না পেয়ে আবার ফিরে যায়।
যাত্রাবাড়ী থানার কার্যক্রম ডেমরা থানা থেকে স্থানান্তরিত হয়ে কবে নব্য সংস্কারকৃত যাত্রাবাড়ী থানায় শুরু হবে সে ব্যাপারে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি ফারুক আহম্মেদকে বেশ কয়েকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি বারবার কল কেটে দেন।