অপেক্ষা পরিণত হয়েছে আক্ষেপে, এখনো হয়নি পাকা রাস্তা

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পটুয়াখালী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

এখন হয়নি পাকা রাস্তা/ছবি: সংগৃহীত

এখন হয়নি পাকা রাস্তা/ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মুচির পুল বাজার ব্রিজ থেকে শারিকখালী মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংযোগ সড়ক ও বসাক বাজার মহাসড়কের সংযোগ সড়ক পর্যন্ত অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ মাটির কাঁচা রাস্তাটি স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও পাকাকরণ করা হয়নি। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দাসহ কালিকাপুর ইউনিয়নের জনসাধারণের।

সরেজমিনে দেখা যায়, মুচির পুল বাজার ব্রিজের দক্ষিণ পাশে শুক্রবারের হাট হয়ে আবদুল স্টান ও হাজী করিম রাইস মিলের সামনে দিয়ে জবান গাজী বাড়ি (শারিকখালী মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংযোগ সড়ক) পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত ও চুঙ্গা ভেঙে খালে বাঁধ সৃষ্টি হয়ে গেছে। জোয়ারের পানি রাস্তার ওপর দিয়ে গড়িয়ে ফসলের মাঠ ডুবে যায় এবং বাড়িঘরে ঢুকে পড়ে। সাম্প্রতিক কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে রাস্তায় হাটুর উপরে পানি উঠে গেছে।

বিজ্ঞাপন

বিগত ৮-৯ বছর আগে জবান গাজী বাড়ি থেকে প্রায় মৃধা বাড়ি পর্যন্ত ৩০০ মিটার রাস্তায় ইটের সোলিং হয়েছিল, কিন্তু মেরামত, সংস্কার ও সম্প্রসারণের অভাবে তা ভেঙে গেছে এবং মাঝে মাঝে গর্ত হয়ে গেছে।

জনসাধারণের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এ রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ চলাচল করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ৩ ইউনিয়নের শিক্ষার্থীরা এই পথে শারীকখালী মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে থাকে।

এছাড়াও, রাস্তাটি পাকাকরণ করা হলে মুচির পুল বাজার থেকে আবদুল স্টান হয়ে বসাক বাজার হয়ে পটুয়াখালী চৌরাস্তা, শারিকখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ও বিপরীত দিকে মুচির পুল হয়ে ২নং বাধঘাট এবং বাদুরা বাজার যাতায়াতে সুবিধা হবে। এককথায়, মহাসড়কের সঙ্গে বিকল্প সড়ক যোগাযোগ মাধ্যম হতে পারে।

স্থানীয় শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “শারিকখালী মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়, বসাক বাজার ব্যতীত ইসলামিয়া হোসাইনিয়া মাদ্রাসা, বড় আউলিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শারিকখালী নূরানী তালিমুল কুরআন মাদ্রাসাসহ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং দক্ষিণাঞ্চলের বিদ্যাপীঠ পটুয়াখালী সরকারি কলেজের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের জন্য এই রাস্তাটি একমাত্র ভরসা। রাস্তাটি পাকাকরণ করা হলে এলাকার সর্বস্তরের মানুষের উপকার হবে।”

স্থানীয় ৮০ বছরের এক বৃদ্ধ বলেন, “উনিয়নে ১নং ওয়ার্ড পিছিয়ে আছে। চেয়ারম্যান ইচ্ছে করে আমাদের সাথে এমন করছে। সাবেক চেয়ারম্যানের বাড়ি এই রাস্তায়, তাই আমাদের কোনো উন্নতি হচ্ছে না।”

স্থানীয় হানিফ মৃধা বলেন, “এক যুগেও এখানে মাটি দেওয়া হয়নি। উন্নয়ন বঞ্চিত এ রাস্তাটি পাকাকরণ এখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। নির্বাচনের সময় প্রার্থীরা রাস্তাটি পাকা করার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে আর উদ্যোগ নেওয়া হয় না।”

দিন ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, “জন্মের পর রাস্তাটি মাটি দেওয়া দেখিনি। মেরামত, সংস্কার ও পাকা তো পরের কথা। মেম্বার-চেয়ারম্যানের বাড়ির লোক না হলে আমাদের রাস্তার কিছু হবে না।”

এ বিষয়ে পটুয়াখালী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হোসেন আলী বলেন, “এই সমস্যার কথা স্থানীয় কোনো জনপ্রতিনিধি আমাদের জানায়নি। আপনার কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম। খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে স্থানীয়রা আবেদন করলে রাস্তাটি দ্রুত পাকা করার চেষ্টা করব এবং এর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।”